অতিকায় ডায়াট্রিমা ছিল তৃণভোজী
বিলুপ্ত প্রজাতির অতিকায় পাখি ডায়াট্রিমা তৃণভোজী ছিল। বিজ্ঞানীরা পাখিটির পায়ের ছাপ দেখে নতুন এই তথ্য দিয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্রের একদল বিজ্ঞানীর গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, শান্ত স্বভাবের ডায়াট্রিমা মাংসাশী ছিল না।
ওয়াশিংটনের গবেষকেরা ২০০৯ সালে ভূমিধসের পর উন্মোচিত একটি স্থান থেকে ডায়াট্রিমার পায়ের ছাপ সংগ্রহ করেন। ডায়াট্রিমা মাংসাশী বলে পূর্ববর্তী গবেষকেরা ধারণা করলেও এই পাখির নতুন যে ছাপ শনাক্ত করা হয়েছে, তাতে ধারালো নখের চিহ্ন মেলেনি। তাই এরা মাংসাশী নয় বলেই যুক্তি সুদৃঢ় হয়েছে।সাত ফুট লম্বা দেহ, বিশাল মাথা ও ঠোঁটওয়ালা ডায়াট্রিমা পাখিদের সাধারণত হিংস্র শিকারি বলেই গণমাধ্যম এবং বৈজ্ঞানিক কার্যক্রমে বর্ণনা করা হয়ে থাকে।
ওয়েস্টার্ন ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটির ভূতত্ত্ববিদ ও গবেষক জর্জ মাস্টো বলেন, ডায়াট্রিমাদের হটিয়ে দিয়ে ডাইনোসররা শীর্ষ শিকারির স্থান দখল করে নিয়েছিল বলে ধারণা প্রচলিত রয়েছে। এমনিতে হিংস্র মাংসাশী প্রাণীরাই নিরীহ তৃণভোজীদের তুলনায় বেশি মনোযোগ আকর্ষণ করে। দক্ষিণ আমেরিকার প্রায়-গ্রীষ্মমণ্ডলীয় অরণ্যে বসবাসকারী নম্র স্বভাবের এই পাখি কেবল গাছের পাতা খাওয়ার জন্যই ঠোঁট ব্যবহার করত।
প্যালিওনটোলজি সাময়িকীতে প্রকাশিত গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, ওই পায়ের ছাপ পাঁচ কোটি ৫৮ লাখ থেকে চার কোটি ৮৬ লাখ বছর আগের। ওয়াশিংটনের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে চুকানাট শিলাস্তরের বিন্যাসের বেলেপাথরে ডায়াট্রিমার পায়ের একাধিক ছাপ সংরক্ষিত রয়েছে।
ওয়েস্টার্ন ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটির গবেষক ডেভিড টাকার বলেন, পায়ের ছাপ দেখে পাখিটির খাদ্যাভ্যাস সম্পর্কে নতুন ধারণা পাওয়া যাচ্ছে। এদের তীক্ষ ও বাঁকালো নখর না থাকার বিষয়টি এখন স্পষ্ট হয়েছে। ডায়াট্রিমার পায়ের নখ ছিল শিকারি পাখিদের তুলনায় ছোট।
ডায়াট্রিমার বিশাল আকৃতি, বড় মাথা ও ঠোঁটের কারণেই জীবাশ্ম গবেষক বিজ্ঞানীরা পাখিটিকে হিংস্র শিকারি বলে ধরে নিয়েছিলেন। ডায়াট্রিমার প্রথম যে কঙ্কালটি পাওয়া গিয়েছিল সেটি এখন ঘোড়া ও স্তন্যপায়ী অন্যান্য প্রাণীর কঙ্কালের সঙ্গে সংরক্ষিত রয়েছে। তবে ডায়াট্রিমার পায়ের আকৃতিও তুলনামূলক ছোট হওয়াতে বিজ্ঞানীদের কেউ কেউ বলেছিলেন, এটি তৃণভোজী পাখি। কারণ, ছোট পা নিয়ে শিকারের পেছনে ধাওয়া করা সম্ভব নয়। বিবিসি।
No comments