ট্রট-ব্রডের ইতিহাস
জিওফ বয়কটের মুখে প্রশংসা মানে বুঝতে হবে বিশেষ কিছু। ‘ঠোঁটকাটা’ হিসেবে ক্রিকেট-বিশ্বে বেশ খ্যাতি আছে সাবেক ইংলিশ ওপেনারের, সহজে কারও প্রশংসা করেন না। সেই বয়কটই একবার বলেছিলেন, স্টুয়ার্ট ব্রডের ব্যাকফুট কভার ড্রাইভ দেখে তাঁর নাকি গ্যারি সোবার্সের কথা মনে পড়ে যায়!
সোবার্সের সঙ্গে তুলনা যেকোনো বাঁহাতির জন্যই প্রশংসার সর্বোচ্চ। সর্বকালের সেরা ব্যাটসম্যান হিসেবে স্যার ডন ব্র্যাডম্যান যেমন সর্বজনস্বীকৃত, সেরা বাঁহাতি ব্যাটসম্যানই শুধু নয়, সেরা অলরাউন্ডার হিসেবেও সবার আগে আসে সোবার্সের নাম। ব্রড ‘সোবার্স’ হবেন, এই উচ্চাশা কেউ কখনো করেনি, তবে তাঁকে পরবর্তী ‘অ্যান্ড্রু ফ্লিনটফ’ ভেবেছিলেন অনেকেই। ব্যাট হাতেও ব্রড মাঝেমধ্যেই জানান দিতেন, প্রত্যাশা পূরণের সামর্থ্য তাঁর আছে। কিন্তু বছরখানেক ধরে ব্যাট হাতে টানা বাজে পারফরম্যান্সে সেই প্রত্যাশা অনেকটাই উবে গিয়েছিল। সেই ব্রডই ইতিহাসে নাম লেখালেন ব্যাটিং-কীর্তি গড়ে। সঙ্গী হিসেবে অবশ্য পেয়েছিলেন জোনাথন ট্রটকে।
টেস্টে অষ্টম উইকেট জুটির রেকর্ড নতুন করে লিখিয়েছেন দুজন লর্ডসে ৩৩২ রানের জুটি গড়ে। ১৯৯৬ সালে শেখুপুরায় জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ওয়াসিম আকরাম ও সাকলায়েন মুশতাক গড়েছিলেন ৩১৩ রানের জুটি। ইংলিশ রেকর্ডটির বয়স অবশ্য ছিল প্রায় ঊনশতাব্দী। ১৯৩১ সালে এই লর্ডসেই নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ২৪৬ রান করেছিলেন উইকেটকিপার ব্যাটসম্যান লেস অ্যামিস ও ফাস্ট বোলার স্যার গাবি অ্যালেন। পাকিস্তানের বিপক্ষে এটা যেকোনো উইকেট জুটিতেই ইংল্যান্ডের সর্বোচ্চ। জুটিটার কৃতিত্ব বাড়িয়ে দিচ্ছে ম্যাচের পরিস্থিতি, ১০২ রানের ৭ উইকেট পড়ার পর জুটি বেঁধেছিলেন দুজন। অষ্টম উইকেটে আড়াই শর বেশি রান করা আর কোনো জুটিই এত বাজে পরিস্থিতি কাটিয়ে আসেনি।
রান ১৫ বেশি করেছেন ট্রট, তবে উচ্ছ্বাসটা বেশি ব্রডকে নিয়েই। ট্রটের কাজই এমন সব ইনিংস খেলা। কিন্তু ব্রডের কাছ থেকে এমন কিছুর প্রত্যাশা ছিল না, এটা একটা কারণ। আরেকটা কারণ, সহযোগীর ভূমিকায় নয়, জুটিতে বেশি আগ্রাসী ছিলেন ব্রডই। ৩৩২ রানের জুটিতে ১৬৯ রানের জোগান তাঁর ব্যাটের, ট্রটের ১৩৫। এমন ইনিংস খেলে যেন ক্রিকেট-বিধাতার মনটাও জয় করে নিয়েছিলেন ব্রড, না হলে ইংলিশ রেকর্ড আর বিশ্ব রেকর্ড—দুটিই কেন আসবে তাঁর ব্যাট থেকে!
এমন কীর্তির পরও সামান্য আফসোস থাকার কথা ব্রডের। মাত্র ৪ রানের জন্য ছোঁয়া হয়নি নয় নম্বরে নেমে সবচেয়ে বড় ইনিংসের বিশ্ব রেকর্ড। দ্বিতীয় দিন শেষে অবশ্য দারুণ উচ্ছ্বসিত ছিলেন তিনি। ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরির উচ্ছ্বাস দ্বিগুণ হয়ে গিয়েছিল বাবাকে ছাড়িয়ে যাওয়ায়। বাবা সাবেক ওপেনার ক্রিস ব্রড ২৫ টেস্টের ক্যারিয়ারে ৬টি সেঞ্চুরি করেছিলেন, কিন্তু একটিও ‘হোম অব ক্রিকেট’ লর্ডসে নয়। দেশের মাটিতেই কোনো সেঞ্চুরি করতে পারেননি ক্রিস। লর্ডসের ‘অনার্স বোর্ডে’ ব্রড পরিবারের একমাত্র প্রতিনিধি তাই ছেলে স্টুয়ার্ট। সুযোগ পেয়ে বাবাকে মজা করার সুযোগটা হাতছাড়া করেননি ব্রড, ‘এটা এমন একটা অনুভূতি, যা আমার স্মৃতিতে থেকে যাবে সারা জীবন। ‘‘প্রথম ব্রড’’ হিসেবে অনার্স বোর্ডে নাম তোলাটা দারুণ।’ কাল বাবাকে ছাড়িয়ে গেছেন আরেকটি ক্ষেত্রেও। টেস্টে ক্রিসের সর্বোচ্চ ছিল ১৬২, স্টুয়ার্ট করেছেন ১৬৯। ছেলের কীর্তিতে অবশ্য ইতিহাসে ঢুকে গেছেন বাবাও। ইংল্যান্ডের হয়ে বাবা-ছেলের টেস্ট সেঞ্চুরির প্রথম নজির গড়লেন ব্রডরাই।
গত বছরের আগস্টে অ্যাশেজে হাফ সেঞ্চুরির পর ব্যাট হাতে নিজেকে হারিয়ে ফেলেছিলেন। ব্যাটিং-অর্ডারেও তাঁকে টপকে ওপরে উঠে যান গ্রায়েম সোয়ান। ‘অলরাউন্ডার’ ব্রডের যথেষ্টই আঁতে ঘা লাগার কথা। ফিরলেনও তাই দারুণভাবে। গত টেস্টেই ৯৪ রানে ৭ উইকেট পড়ার পর ম্যাট প্রিয়রের সঙ্গে ১১৯ রানের জুটি গড়ে ইংল্যান্ডের মান বাঁচিয়েছিলেন। এবার গড়লেন ইতিহাস। ফ্লিনটফের শূন্যতা পূরণের স্বপ্ন এখন নতুন করে দেখতে পারে ইংলিশরা।
সোবার্সের সঙ্গে তুলনা যেকোনো বাঁহাতির জন্যই প্রশংসার সর্বোচ্চ। সর্বকালের সেরা ব্যাটসম্যান হিসেবে স্যার ডন ব্র্যাডম্যান যেমন সর্বজনস্বীকৃত, সেরা বাঁহাতি ব্যাটসম্যানই শুধু নয়, সেরা অলরাউন্ডার হিসেবেও সবার আগে আসে সোবার্সের নাম। ব্রড ‘সোবার্স’ হবেন, এই উচ্চাশা কেউ কখনো করেনি, তবে তাঁকে পরবর্তী ‘অ্যান্ড্রু ফ্লিনটফ’ ভেবেছিলেন অনেকেই। ব্যাট হাতেও ব্রড মাঝেমধ্যেই জানান দিতেন, প্রত্যাশা পূরণের সামর্থ্য তাঁর আছে। কিন্তু বছরখানেক ধরে ব্যাট হাতে টানা বাজে পারফরম্যান্সে সেই প্রত্যাশা অনেকটাই উবে গিয়েছিল। সেই ব্রডই ইতিহাসে নাম লেখালেন ব্যাটিং-কীর্তি গড়ে। সঙ্গী হিসেবে অবশ্য পেয়েছিলেন জোনাথন ট্রটকে।
টেস্টে অষ্টম উইকেট জুটির রেকর্ড নতুন করে লিখিয়েছেন দুজন লর্ডসে ৩৩২ রানের জুটি গড়ে। ১৯৯৬ সালে শেখুপুরায় জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ওয়াসিম আকরাম ও সাকলায়েন মুশতাক গড়েছিলেন ৩১৩ রানের জুটি। ইংলিশ রেকর্ডটির বয়স অবশ্য ছিল প্রায় ঊনশতাব্দী। ১৯৩১ সালে এই লর্ডসেই নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ২৪৬ রান করেছিলেন উইকেটকিপার ব্যাটসম্যান লেস অ্যামিস ও ফাস্ট বোলার স্যার গাবি অ্যালেন। পাকিস্তানের বিপক্ষে এটা যেকোনো উইকেট জুটিতেই ইংল্যান্ডের সর্বোচ্চ। জুটিটার কৃতিত্ব বাড়িয়ে দিচ্ছে ম্যাচের পরিস্থিতি, ১০২ রানের ৭ উইকেট পড়ার পর জুটি বেঁধেছিলেন দুজন। অষ্টম উইকেটে আড়াই শর বেশি রান করা আর কোনো জুটিই এত বাজে পরিস্থিতি কাটিয়ে আসেনি।
রান ১৫ বেশি করেছেন ট্রট, তবে উচ্ছ্বাসটা বেশি ব্রডকে নিয়েই। ট্রটের কাজই এমন সব ইনিংস খেলা। কিন্তু ব্রডের কাছ থেকে এমন কিছুর প্রত্যাশা ছিল না, এটা একটা কারণ। আরেকটা কারণ, সহযোগীর ভূমিকায় নয়, জুটিতে বেশি আগ্রাসী ছিলেন ব্রডই। ৩৩২ রানের জুটিতে ১৬৯ রানের জোগান তাঁর ব্যাটের, ট্রটের ১৩৫। এমন ইনিংস খেলে যেন ক্রিকেট-বিধাতার মনটাও জয় করে নিয়েছিলেন ব্রড, না হলে ইংলিশ রেকর্ড আর বিশ্ব রেকর্ড—দুটিই কেন আসবে তাঁর ব্যাট থেকে!
এমন কীর্তির পরও সামান্য আফসোস থাকার কথা ব্রডের। মাত্র ৪ রানের জন্য ছোঁয়া হয়নি নয় নম্বরে নেমে সবচেয়ে বড় ইনিংসের বিশ্ব রেকর্ড। দ্বিতীয় দিন শেষে অবশ্য দারুণ উচ্ছ্বসিত ছিলেন তিনি। ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরির উচ্ছ্বাস দ্বিগুণ হয়ে গিয়েছিল বাবাকে ছাড়িয়ে যাওয়ায়। বাবা সাবেক ওপেনার ক্রিস ব্রড ২৫ টেস্টের ক্যারিয়ারে ৬টি সেঞ্চুরি করেছিলেন, কিন্তু একটিও ‘হোম অব ক্রিকেট’ লর্ডসে নয়। দেশের মাটিতেই কোনো সেঞ্চুরি করতে পারেননি ক্রিস। লর্ডসের ‘অনার্স বোর্ডে’ ব্রড পরিবারের একমাত্র প্রতিনিধি তাই ছেলে স্টুয়ার্ট। সুযোগ পেয়ে বাবাকে মজা করার সুযোগটা হাতছাড়া করেননি ব্রড, ‘এটা এমন একটা অনুভূতি, যা আমার স্মৃতিতে থেকে যাবে সারা জীবন। ‘‘প্রথম ব্রড’’ হিসেবে অনার্স বোর্ডে নাম তোলাটা দারুণ।’ কাল বাবাকে ছাড়িয়ে গেছেন আরেকটি ক্ষেত্রেও। টেস্টে ক্রিসের সর্বোচ্চ ছিল ১৬২, স্টুয়ার্ট করেছেন ১৬৯। ছেলের কীর্তিতে অবশ্য ইতিহাসে ঢুকে গেছেন বাবাও। ইংল্যান্ডের হয়ে বাবা-ছেলের টেস্ট সেঞ্চুরির প্রথম নজির গড়লেন ব্রডরাই।
গত বছরের আগস্টে অ্যাশেজে হাফ সেঞ্চুরির পর ব্যাট হাতে নিজেকে হারিয়ে ফেলেছিলেন। ব্যাটিং-অর্ডারেও তাঁকে টপকে ওপরে উঠে যান গ্রায়েম সোয়ান। ‘অলরাউন্ডার’ ব্রডের যথেষ্টই আঁতে ঘা লাগার কথা। ফিরলেনও তাই দারুণভাবে। গত টেস্টেই ৯৪ রানে ৭ উইকেট পড়ার পর ম্যাট প্রিয়রের সঙ্গে ১১৯ রানের জুটি গড়ে ইংল্যান্ডের মান বাঁচিয়েছিলেন। এবার গড়লেন ইতিহাস। ফ্লিনটফের শূন্যতা পূরণের স্বপ্ন এখন নতুন করে দেখতে পারে ইংলিশরা।
No comments