আন্তর্জাতিক নারী দিবস -নারী উন্নয়ন হোক অন্যতম জাতীয় অগ্রাধিকার
আন্তর্জাতিক নারী দিবসের শতবর্ষ পূর্তিতে এবার বৈশ্বিক স্লোগান নির্ধারণ করা হয়েছে ‘সমান অধিকার, সমান সুযোগ: সকলের অগ্রগতি’। শতবর্ষ আগে দিবসটি পালন শুরু হয়েছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে, সমাজতন্ত্রীদের দ্বারা। তারপর সোভিয়েত ইউনিয়ন ও পূর্ব ইউরোপের সমাজতান্ত্রিক শিবিরে এ দিবসকে ঘিরে নানামুখী কর্মসূচির আয়োজন চলেছে। কিন্তু দিনে দিনে এটি সারা বিশ্বের সব নারীর দিবস হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করে এবং বিশ্বব্যাপী নারীর আর্থসামাজিক ও রাজনৈতিক অধিকার অর্জনের আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ একটি আনুষ্ঠানিকতার স্মারক হয়ে ওঠে। অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও প্রতিবছর গুরুত্বের সঙ্গে এই দিবসটি পালিত হয়ে আসছে।
বাংলাদেশের নারীর বাস্তবতা বিশ্বের অনেক উন্নত দেশের থেকে ভিন্ন। এখানে জনসংখ্যার প্রায় অর্ধেক নারী; কিন্তু রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক—কোনো ক্ষেত্রেই তাঁর অংশগ্রহণের সুযোগ পর্যাপ্ত নয়। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মেয়েশিশুর ভর্তির হার ছেলেশিশুর সমান হয়েছে, কিন্তু মাধ্যমিক থেকে উচ্চতর পর্যায়ে তাদের অংশগ্রহণ ক্রমশ কমতে থাকে। আবার উচ্চশিক্ষায় নারীদের ভালো ফলের সঙ্গে সংগতিপূর্ণভাবে কর্মক্ষেত্রে তাঁদের অংশগ্রহণ বাড়েনি। পুষ্টি ও স্বাস্থ্যগত অবস্থানেও নারীর অবস্থা পুরুষের সমান নয়।
অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে নারীর অংশগ্রহণ আগের তুলনায় অনেক বেড়েছে বটে, কিন্তু এখনো তাঁরা পুরুষের চেয়ে অনেক পিছিয়ে রয়েছেন। আবার অর্থনৈতিক অংশগ্রহণ ও ক্ষমতায়নের সঙ্গে তাল মিলিয়ে ঘটেনি রাজনৈতিক ক্ষমতায়ন। পরিবার থেকে শুরু করে সর্বক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় নারীর অংশগ্রহণ এখনো অনেকটা পিছিয়ে। সম্পত্তির মালিকানার ক্ষেত্রেও নারীরা অসমতার শিকার। নিরাপত্তার প্রশ্নে নারীর অবস্থা পুরুষের চেয়ে অনেক বেশি নাজুক। খুন, ধর্ষণ, এসিড-সন্ত্রাসসহ যেকোনো ধরনের অন্যায়-অপরাধের শিকার হলে নারীর ক্ষেত্রে ন্যায়বিচার পাওয়া অপেক্ষাকৃত কঠিন। সামাজিকভাবে নানা পশ্চাত্পদ ধারণা ও কুসংস্কার নাগরিক হিসেবে নারীর সমমর্যাদার অন্যতম অন্তরায়। প্রান্তিক বা তৃণমূল পর্যায়ে ক্ষুধা, দারিদ্র্য বা প্রাকৃতিক দুর্যোগের ক্ষেত্রেও নারীর অবস্থা অপেক্ষাকৃত বেশি নাজুক।
নারীসমাজের এই অসম অবস্থা থেকে উত্তরণের লক্ষ্যে এই দেশে সরকারি-বেসরকারি উভয় পর্যায়ে নানা উদ্যোগ চলে আসছে অনেক বছর ধরে। অবস্থার অগ্রগতিও হচ্ছে, তবে বেশ ধীরে এবং বিক্ষিপ্তভাবে। অগ্রগতি আরও বেগবান করতে হলে কয়েকটি উদ্যোগ সম্পন্ন করতে হবে। নারী উন্নয়ন নীতিমালার যে খসড়া চূড়ান্ত হয়েছে, তা পাস করে বাস্তবায়নের কাজ শুরু করা দরকার। আওয়ামী লীগ সরকার এর আগের মেয়াদে ১৯৯৭ সালে যে নীতিমালা তৈরি করেছিল, পরবর্তী সরকার এসে সেখানে গোপনে নানা পরিবর্তন করেছিল। খবর বেরিয়েছে, সেই দলিলটির অধিকাংশ বিষয় নতুন নীতিমালার খসড়ায় নেওয়া হয়েছে। এটি সঠিক উদ্যোগ। আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ দীর্ঘ সময় ধরে আটকে রয়েছে: সেটি হচ্ছে সিডও বা নারীর প্রতি সব ধরনের বৈষম্য বিলোপ সনদ বাস্তবায়ন। নারীকে সম্পত্তির সমান অধিকার দেওয়ার লক্ষ্যেও প্রয়োজনীয় আইনি বিধান করা প্রয়োজন। নীতিমালা ও আইন-বিধানের ক্ষেত্রে এসব বুনিয়াদি কাজ সম্পন্ন হলে নারীসমাজের অগ্রগতির পথ আগের চেয়ে অনেক সুগম হবে।
আন্তর্জাতিক নারী দিবসের শতবর্ষ পূর্তির সুবাদে আমরা এই বিষয়গুলোকে জাতীয় অগ্রাধিকারের অন্তর্ভুক্ত দেখতে চাই, এবং এসবের আশু বাস্তবায়নের উদ্যোগ প্রত্যাশা করি।
বাংলাদেশের নারীর বাস্তবতা বিশ্বের অনেক উন্নত দেশের থেকে ভিন্ন। এখানে জনসংখ্যার প্রায় অর্ধেক নারী; কিন্তু রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক—কোনো ক্ষেত্রেই তাঁর অংশগ্রহণের সুযোগ পর্যাপ্ত নয়। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মেয়েশিশুর ভর্তির হার ছেলেশিশুর সমান হয়েছে, কিন্তু মাধ্যমিক থেকে উচ্চতর পর্যায়ে তাদের অংশগ্রহণ ক্রমশ কমতে থাকে। আবার উচ্চশিক্ষায় নারীদের ভালো ফলের সঙ্গে সংগতিপূর্ণভাবে কর্মক্ষেত্রে তাঁদের অংশগ্রহণ বাড়েনি। পুষ্টি ও স্বাস্থ্যগত অবস্থানেও নারীর অবস্থা পুরুষের সমান নয়।
অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে নারীর অংশগ্রহণ আগের তুলনায় অনেক বেড়েছে বটে, কিন্তু এখনো তাঁরা পুরুষের চেয়ে অনেক পিছিয়ে রয়েছেন। আবার অর্থনৈতিক অংশগ্রহণ ও ক্ষমতায়নের সঙ্গে তাল মিলিয়ে ঘটেনি রাজনৈতিক ক্ষমতায়ন। পরিবার থেকে শুরু করে সর্বক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় নারীর অংশগ্রহণ এখনো অনেকটা পিছিয়ে। সম্পত্তির মালিকানার ক্ষেত্রেও নারীরা অসমতার শিকার। নিরাপত্তার প্রশ্নে নারীর অবস্থা পুরুষের চেয়ে অনেক বেশি নাজুক। খুন, ধর্ষণ, এসিড-সন্ত্রাসসহ যেকোনো ধরনের অন্যায়-অপরাধের শিকার হলে নারীর ক্ষেত্রে ন্যায়বিচার পাওয়া অপেক্ষাকৃত কঠিন। সামাজিকভাবে নানা পশ্চাত্পদ ধারণা ও কুসংস্কার নাগরিক হিসেবে নারীর সমমর্যাদার অন্যতম অন্তরায়। প্রান্তিক বা তৃণমূল পর্যায়ে ক্ষুধা, দারিদ্র্য বা প্রাকৃতিক দুর্যোগের ক্ষেত্রেও নারীর অবস্থা অপেক্ষাকৃত বেশি নাজুক।
নারীসমাজের এই অসম অবস্থা থেকে উত্তরণের লক্ষ্যে এই দেশে সরকারি-বেসরকারি উভয় পর্যায়ে নানা উদ্যোগ চলে আসছে অনেক বছর ধরে। অবস্থার অগ্রগতিও হচ্ছে, তবে বেশ ধীরে এবং বিক্ষিপ্তভাবে। অগ্রগতি আরও বেগবান করতে হলে কয়েকটি উদ্যোগ সম্পন্ন করতে হবে। নারী উন্নয়ন নীতিমালার যে খসড়া চূড়ান্ত হয়েছে, তা পাস করে বাস্তবায়নের কাজ শুরু করা দরকার। আওয়ামী লীগ সরকার এর আগের মেয়াদে ১৯৯৭ সালে যে নীতিমালা তৈরি করেছিল, পরবর্তী সরকার এসে সেখানে গোপনে নানা পরিবর্তন করেছিল। খবর বেরিয়েছে, সেই দলিলটির অধিকাংশ বিষয় নতুন নীতিমালার খসড়ায় নেওয়া হয়েছে। এটি সঠিক উদ্যোগ। আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ দীর্ঘ সময় ধরে আটকে রয়েছে: সেটি হচ্ছে সিডও বা নারীর প্রতি সব ধরনের বৈষম্য বিলোপ সনদ বাস্তবায়ন। নারীকে সম্পত্তির সমান অধিকার দেওয়ার লক্ষ্যেও প্রয়োজনীয় আইনি বিধান করা প্রয়োজন। নীতিমালা ও আইন-বিধানের ক্ষেত্রে এসব বুনিয়াদি কাজ সম্পন্ন হলে নারীসমাজের অগ্রগতির পথ আগের চেয়ে অনেক সুগম হবে।
আন্তর্জাতিক নারী দিবসের শতবর্ষ পূর্তির সুবাদে আমরা এই বিষয়গুলোকে জাতীয় অগ্রাধিকারের অন্তর্ভুক্ত দেখতে চাই, এবং এসবের আশু বাস্তবায়নের উদ্যোগ প্রত্যাশা করি।
No comments