২০৫০ সালের মধ্যে সরকারে নিজেদের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে চায় মাওবাদীরা
ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রসচিব জি কে পিল্লাই বলেছেন, সশস্ত্র মাওবাদীরা ২০৫০ সালের মধ্যে ভারতে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার উত্খাত করে সরকার পরিচালনায় নিজেদের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করার পরিকল্পনা করছে। মাওবাদীদের অভিযানে সহায়তা করছেন সাবেক সেনা কর্মকর্তারাও। গড়ে তুলছে সেনাবাহিনীর ধাঁচে আলাদা বাহিনী। গত শুক্রবার দিল্লিতে ইনস্টিটিউট অব ডিফেন্স স্টাডিজ ও অ্যানালিসিস আয়োজিত ‘ভারতে বাম চরমপন্থীদের অবস্থা’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে পিল্লাই এ কথা বলেন।
স্বরাষ্ট্রসচিব জি কে পিল্লাই মাওবাদীদের সম্পর্কে প্রাপ্ত তথ্যের আলোকে বলেন, মাওবাদীরা সামরিক বাহিনীর ধাঁচে একটি আলাদা বাহিনী গড়ে রাষ্ট্রব্যবস্থার সঙ্গে লড়াই করতে চাইছে। এ লক্ষ্যে তারা গরিব এবং উন্নয়নহীন ও প্রশাসনিক দুর্বলতাযুক্ত এলাকাকে বেছে নিয়েছে। কাছে টানছে সামরিক ও আধাসামরিক বাহিনীর সাবেক সেনা কর্মকর্তাদের। লক্ষ্য এসব সামরিক ও আধাসামরিক সেনা কর্মকর্তাদের কাছ থেকে বিস্ফোরক ব্যবহার, দুর্বল পুলিশ চৌকি ও পুলিশ শিবিরে সমান্তরাল গোয়েন্দা খবরের ভিত্তিতে নিখুঁতভাবে সফল আক্রমণ চালানো এবং নিরাপত্তা বাহিনীর বিরুদ্ধে ঝড়ের গতিতে আক্রমণ চালিয়ে অস্ত্রশস্ত্র লুট করে নির্বিঘ্নে চম্পট দেওয়ার বিদ্যা শিখে নেওয়া।
পিল্লাই বলেন, হামলা চালানোর আগে ব্যাপক পরিকল্পনা করে মাওবাদীরা। তাদের কাজ অনেকটাই দক্ষ প্রশিক্ষণ নেওয়া সেনা কর্মকর্তার মতো। যেমন: হামলার স্থান নিয়ে জরিপ, নোট তৈরি করা ও প্রতিটি ক্ষেত্রে পড়াশোনা করা। প্রতিটি হামলার পর ময়নাতদন্ত ও বিশ্লেষণ করে তারা। এ বিশ্লেষণ যেকোনো দেশের সশস্ত্র বাহিনীর মতোই ভালো।
স্বরাষ্ট্রসচিব মাওবাদীদের কাছ থেকে পাওয়া বিভিন্ন তথ্যের আলোকে বলেন, কমিউনিস্ট পার্টি অব ইন্ডিয়ার (সিপিআই-মাওবাদী) পলিটব্যুরো স্থির করেছে, ২০৫০ সালের মধ্যে সশস্ত্র অভ্যুত্থান বা প্রত্যক্ষ যুদ্ধের মাধ্যমে তারা গণতান্ত্রিক সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করবে। তিনি বলেন, ভারতে ১৯৭১ সালে নকশাল আন্দোলনের পর মাওবাদীদের হামলায় গত বছর সবচেয়ে বেশি ৯০৮ জন নিহত হয়েছে। তিনি সতর্ক করে বলেন, ২০১০ বা ২০১১ সালেও একই রকম সহিংসতা হতে পারে।
জি কে পিল্লাই বলেন, ভারতজুড়ে নকশালবিরোধী অভিযান চালানো হলেও বিদ্রোহীদের তাত্পর্যপূর্ণ ক্ষতি হয়নি। মাওবাদীদের কাছে হারানো এলাকাগুলোর পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ নিতে সরকারের সাত থেকে আট বছর সময় লাগতে পারে। তিনি আরও বলেন, এখন পর্যন্ত যত মাওবাদী মারা গেছে বা গ্রেপ্তার হয়েছে, তা মাওবাদীদের আসল শক্তির ৫ শতাংশও নয়। কারণ, মাওবাদীদের গড়া আসল বাহিনী এখনো তারা মাঠে নামায়নি। তাদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে গোপনে বৃহত্তর যুদ্ধের জন্য।
স্বরাষ্ট্রসচিব বলেন, মাওবাদীদের শান্তি আলোচনার প্রস্তাব কৌশলগত। এর আড়ালে মাওবাদীরা নিজেদের সংগঠনের শক্তি বাড়িয়ে নতুন করে সংঘবদ্ধ হতে চাইছে। ঠিক যেমনটা একসময় করেছিল উলফা। তারা যদি সরকারের সঙ্গে আলোচনা করতে চায়, প্রথমেই তাদের সহিংসতা ত্যাগ করতে হবে।
ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সূত্র জানায়, গত ২২ ফেব্রুয়ারি মাওবাদী ও সরকারের মধ্যে আলোচনার প্রস্তাব দেওয়ার নয় দিনের মধ্যে মাওবাদীরা ২২টি সহিংসতার ঘটনা ঘটিয়েছে। এর মধ্যে বিহারে সাতটি, ঝাড়খন্ডে ছয়টি, ছত্তিশগড়ে চারটি, পশ্চিমবঙ্গে তিনটি এবং কর্ণাটক ও উড়িষ্যায় একটি করে সহিংসতার ঘটনায় ১২ জন বেসামরিক নাগরিক ও দুজন নিরাপত্তাকর্মী নিহত হয়েছে।
ইতিমধ্যে মাওবাদীরা বলেছে, আলোচনার আগে উভয় পক্ষের একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত যুদ্ধ বন্ধ রাখা দরকার। সিপিআইর (মাওবাদী) মুখপাত্র আজাদ এক বিবৃতিতে বলেন, শাসকগোষ্ঠী যদি মনে করে দুর্বল হওয়ায় মাওবাদীরা যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব করছে, তবে তারা বড় ভুল করবে। এর কারণ, সিপিআই (মাওবাদী) ব্যক্তিরা শোষিত মানুষদের সম্পর্কে ভালোভাবে অবগত। যুদ্ধবিরতি হলে তা দশকব্যাপী রাষ্ট্রীয় সহিংসতায় ক্ষতিগ্রস্ত দরিদ্র আদিবাসীদের কিছুটা সাহায্য করবে।
গণতন্ত্র ও নাগরিক অধিকার নিয়ে কাজ করা সংগঠনের কর্মীরা শুক্রবার বলেছেন, যুদ্ধবিরতি ও নকশালপন্থীদের সঙ্গে আলোচনার বিষয়টি এগোচ্ছে না। তাঁদের দাবি, সরকারকে সামরিক ও অপারেশন গ্রিনহার্ট অভিযান বন্ধ করতে হবে। উদ্যোগ নিতে হবে সিপিআইর (মাওবাদী) সঙ্গে আলোচনার।
এদিকে দিল্লিতে এক সংবাদ সম্মেলনে লেখক ও মানবাধিকার কর্মী অরুন্ধতী রায় বলেছেন, সেনাবাহিনী দিয়ে সরকারের রাজনৈতিক সমস্যা সমাধানের চেষ্টা নতুন নয়। সরকার দীর্ঘদিন ধরে মাওবাদীদের আন্দোলন চিরতরে নির্মূল করার নীতি অনুসরণ করছে। কিন্তু প্রতিবারই আন্দোলন আরও শক্তিশালী ও সংগঠিত হয়েছে। কারণ এটা জনগণের ওপর হামলা চালানোর ব্যাপার নয়, মতাদর্শগত ব্যাপার। মাওবাদীদের পরাস্ত করার নামে আদিবাসীদের ওপর হামলা চালিয়ে এই মতাদর্শ উপড়ে ফেলা যাবে না।
মূলধারার সাময়িক পত্রিকার সম্পাদক সুমিত চক্রবর্তী বলেন, মাওবাদীদের যখন সহিংসতা ত্যাগ করার কথা বলা হচ্ছে, কেন্দ্রেরও তখন একই কাজ করা উচিত এবং আলোচনার উদ্যোগ নেওয়া উচিত।
স্বরাষ্ট্রসচিব জি কে পিল্লাই মাওবাদীদের সম্পর্কে প্রাপ্ত তথ্যের আলোকে বলেন, মাওবাদীরা সামরিক বাহিনীর ধাঁচে একটি আলাদা বাহিনী গড়ে রাষ্ট্রব্যবস্থার সঙ্গে লড়াই করতে চাইছে। এ লক্ষ্যে তারা গরিব এবং উন্নয়নহীন ও প্রশাসনিক দুর্বলতাযুক্ত এলাকাকে বেছে নিয়েছে। কাছে টানছে সামরিক ও আধাসামরিক বাহিনীর সাবেক সেনা কর্মকর্তাদের। লক্ষ্য এসব সামরিক ও আধাসামরিক সেনা কর্মকর্তাদের কাছ থেকে বিস্ফোরক ব্যবহার, দুর্বল পুলিশ চৌকি ও পুলিশ শিবিরে সমান্তরাল গোয়েন্দা খবরের ভিত্তিতে নিখুঁতভাবে সফল আক্রমণ চালানো এবং নিরাপত্তা বাহিনীর বিরুদ্ধে ঝড়ের গতিতে আক্রমণ চালিয়ে অস্ত্রশস্ত্র লুট করে নির্বিঘ্নে চম্পট দেওয়ার বিদ্যা শিখে নেওয়া।
পিল্লাই বলেন, হামলা চালানোর আগে ব্যাপক পরিকল্পনা করে মাওবাদীরা। তাদের কাজ অনেকটাই দক্ষ প্রশিক্ষণ নেওয়া সেনা কর্মকর্তার মতো। যেমন: হামলার স্থান নিয়ে জরিপ, নোট তৈরি করা ও প্রতিটি ক্ষেত্রে পড়াশোনা করা। প্রতিটি হামলার পর ময়নাতদন্ত ও বিশ্লেষণ করে তারা। এ বিশ্লেষণ যেকোনো দেশের সশস্ত্র বাহিনীর মতোই ভালো।
স্বরাষ্ট্রসচিব মাওবাদীদের কাছ থেকে পাওয়া বিভিন্ন তথ্যের আলোকে বলেন, কমিউনিস্ট পার্টি অব ইন্ডিয়ার (সিপিআই-মাওবাদী) পলিটব্যুরো স্থির করেছে, ২০৫০ সালের মধ্যে সশস্ত্র অভ্যুত্থান বা প্রত্যক্ষ যুদ্ধের মাধ্যমে তারা গণতান্ত্রিক সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করবে। তিনি বলেন, ভারতে ১৯৭১ সালে নকশাল আন্দোলনের পর মাওবাদীদের হামলায় গত বছর সবচেয়ে বেশি ৯০৮ জন নিহত হয়েছে। তিনি সতর্ক করে বলেন, ২০১০ বা ২০১১ সালেও একই রকম সহিংসতা হতে পারে।
জি কে পিল্লাই বলেন, ভারতজুড়ে নকশালবিরোধী অভিযান চালানো হলেও বিদ্রোহীদের তাত্পর্যপূর্ণ ক্ষতি হয়নি। মাওবাদীদের কাছে হারানো এলাকাগুলোর পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ নিতে সরকারের সাত থেকে আট বছর সময় লাগতে পারে। তিনি আরও বলেন, এখন পর্যন্ত যত মাওবাদী মারা গেছে বা গ্রেপ্তার হয়েছে, তা মাওবাদীদের আসল শক্তির ৫ শতাংশও নয়। কারণ, মাওবাদীদের গড়া আসল বাহিনী এখনো তারা মাঠে নামায়নি। তাদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে গোপনে বৃহত্তর যুদ্ধের জন্য।
স্বরাষ্ট্রসচিব বলেন, মাওবাদীদের শান্তি আলোচনার প্রস্তাব কৌশলগত। এর আড়ালে মাওবাদীরা নিজেদের সংগঠনের শক্তি বাড়িয়ে নতুন করে সংঘবদ্ধ হতে চাইছে। ঠিক যেমনটা একসময় করেছিল উলফা। তারা যদি সরকারের সঙ্গে আলোচনা করতে চায়, প্রথমেই তাদের সহিংসতা ত্যাগ করতে হবে।
ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সূত্র জানায়, গত ২২ ফেব্রুয়ারি মাওবাদী ও সরকারের মধ্যে আলোচনার প্রস্তাব দেওয়ার নয় দিনের মধ্যে মাওবাদীরা ২২টি সহিংসতার ঘটনা ঘটিয়েছে। এর মধ্যে বিহারে সাতটি, ঝাড়খন্ডে ছয়টি, ছত্তিশগড়ে চারটি, পশ্চিমবঙ্গে তিনটি এবং কর্ণাটক ও উড়িষ্যায় একটি করে সহিংসতার ঘটনায় ১২ জন বেসামরিক নাগরিক ও দুজন নিরাপত্তাকর্মী নিহত হয়েছে।
ইতিমধ্যে মাওবাদীরা বলেছে, আলোচনার আগে উভয় পক্ষের একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত যুদ্ধ বন্ধ রাখা দরকার। সিপিআইর (মাওবাদী) মুখপাত্র আজাদ এক বিবৃতিতে বলেন, শাসকগোষ্ঠী যদি মনে করে দুর্বল হওয়ায় মাওবাদীরা যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব করছে, তবে তারা বড় ভুল করবে। এর কারণ, সিপিআই (মাওবাদী) ব্যক্তিরা শোষিত মানুষদের সম্পর্কে ভালোভাবে অবগত। যুদ্ধবিরতি হলে তা দশকব্যাপী রাষ্ট্রীয় সহিংসতায় ক্ষতিগ্রস্ত দরিদ্র আদিবাসীদের কিছুটা সাহায্য করবে।
গণতন্ত্র ও নাগরিক অধিকার নিয়ে কাজ করা সংগঠনের কর্মীরা শুক্রবার বলেছেন, যুদ্ধবিরতি ও নকশালপন্থীদের সঙ্গে আলোচনার বিষয়টি এগোচ্ছে না। তাঁদের দাবি, সরকারকে সামরিক ও অপারেশন গ্রিনহার্ট অভিযান বন্ধ করতে হবে। উদ্যোগ নিতে হবে সিপিআইর (মাওবাদী) সঙ্গে আলোচনার।
এদিকে দিল্লিতে এক সংবাদ সম্মেলনে লেখক ও মানবাধিকার কর্মী অরুন্ধতী রায় বলেছেন, সেনাবাহিনী দিয়ে সরকারের রাজনৈতিক সমস্যা সমাধানের চেষ্টা নতুন নয়। সরকার দীর্ঘদিন ধরে মাওবাদীদের আন্দোলন চিরতরে নির্মূল করার নীতি অনুসরণ করছে। কিন্তু প্রতিবারই আন্দোলন আরও শক্তিশালী ও সংগঠিত হয়েছে। কারণ এটা জনগণের ওপর হামলা চালানোর ব্যাপার নয়, মতাদর্শগত ব্যাপার। মাওবাদীদের পরাস্ত করার নামে আদিবাসীদের ওপর হামলা চালিয়ে এই মতাদর্শ উপড়ে ফেলা যাবে না।
মূলধারার সাময়িক পত্রিকার সম্পাদক সুমিত চক্রবর্তী বলেন, মাওবাদীদের যখন সহিংসতা ত্যাগ করার কথা বলা হচ্ছে, কেন্দ্রেরও তখন একই কাজ করা উচিত এবং আলোচনার উদ্যোগ নেওয়া উচিত।
No comments