কেরমানশাহ: বিস্তুন ও ত্বক বোস্তন
আজকের আসরে আপনাদের নিয়ে যাবো ইরান
ভ্রমণে। হ্যাঁ বন্ধুরা! বহুদিন আমরা ভ্রমণ থেকে বঞ্চিত ছিলাম। বিশাল একটি
দেশ ইরান। এ দেশের আনাচে কানাচে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে ইতিহাস-ঐতিহ্য,
পুরাতত্ত্ব আর সংস্কৃতির বিচিত্র সমৃদ্ধ উপাদান। দেখার দেশ ইরান। ঘুরে
বেড়ানোর দেশ ইরান। নতুন এই ধারাবাহিকের নাম দিয়েছি ইরান-ভ্রমণ। আর্যভূমির
এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্তে ঘুরে বেড়াবো আমরা।
এই আসরটি ইরান ভ্রমণ বিষয়ক আগেকার অনুষ্ঠানগুলো থেকে আলাদা। কারণ এ আসরটি প্রামাণ্য। বিভিন্ন শহরের দর্শনীয় স্থানগুলোর সঙ্গে আমরা পরিচিত হবার চেষ্টা করবো ঐতিহাসিক ও প্রামাণ্য তথ্যপঞ্জির আলোকে। শুরু করা যাক কেরমানশাহ প্রদেশ ও শহর থেকে।আপনারা নিশ্চয়ই শুনে থাকবেন যে এই কেরমানশাহ প্রদেশে ২০১৭ সালের নভেম্বরে ভয়াবহ ভূমিকম্প হয়েছিল।ওই ভূ-কম্পনে প্রদেশের শহরগুলো ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছিল। জেনে রাখা ভালো যে কেরমানশাহের শহরগুলো ইরানের ঐতিহাসিক এবং সুন্দরতম শহরগুলোর অন্তর্ভুক্ত। স্বয়ং কেরমানশাহ শহর ইরানের ঐতিহাসিক এবং সুন্দর শহরগুলোর অন্যতম। এতো সুন্দর প্রাকৃতিক ও ঐতিহাসিক নিদর্শনে সমৃদ্ধ এই শহর যে শুনলেই যে-কেউ পশ্চিমাঞ্চলীয় এই শহর সফরে আসতে আকর্ষণ বোধ করে।
যখনই কেরমানশাহের নাম উচ্চারিত হয় কিংবা মনে আসে তখন কোন কোন জিনিস স্মৃতিপটে ভেসে ওঠে? চালের গুঁড়োর রুটি, ত্বক বোস্তন কিংবা বিস্তুনের দৃশ্য? হুমম, কেরমানশাহের কথা উঠলেই প্রথমেই অনেকের মনে পড়ে যায় বিস্তুনের শিলালিপির কথা।এই শিলালিপিটি ফরহাদের প্রস্তরলিপি নামেই বেশি পরিচিত।শুধু তাই নয়,বিশ্বের সর্ববৃহৎ শিলালিপি এটি।বিশাল এই শিল্পকর্মের সামনে দাঁড়ালে আপনি বিস্মিত হয়ে যাবেন। দৃষ্টিতে আপনার বিভ্রম সৃষ্টি হতে পারে, ঝলসানো চোখ দুটো বুঁদ হয়ে উঠতে পারে। বিস্তুনের এই এলাকাটি বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকার অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। এই এলাকায় বহু মূল্যবান কিছু শিল্পকর্ম স্থান পেয়েছে। এর অবস্থান বিস্তুন পাহাড়ে। বিস্তুন মানে হলো খোদা'দের স্থান। হাখামানেশিয় বাদশাহ দারিয়ুশের আদেশে এখানে শিলালিপির কাজ করা হয়েছে তিনটি বিশেষ ফন্টে। এগুলো হলো প্রাচীন পার্সি, ইলামি এবং আকদিয়ান পেরেকি ফন্ট।
এই আসরটি ইরান ভ্রমণ বিষয়ক আগেকার অনুষ্ঠানগুলো থেকে আলাদা। কারণ এ আসরটি প্রামাণ্য। বিভিন্ন শহরের দর্শনীয় স্থানগুলোর সঙ্গে আমরা পরিচিত হবার চেষ্টা করবো ঐতিহাসিক ও প্রামাণ্য তথ্যপঞ্জির আলোকে। শুরু করা যাক কেরমানশাহ প্রদেশ ও শহর থেকে।আপনারা নিশ্চয়ই শুনে থাকবেন যে এই কেরমানশাহ প্রদেশে ২০১৭ সালের নভেম্বরে ভয়াবহ ভূমিকম্প হয়েছিল।ওই ভূ-কম্পনে প্রদেশের শহরগুলো ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছিল। জেনে রাখা ভালো যে কেরমানশাহের শহরগুলো ইরানের ঐতিহাসিক এবং সুন্দরতম শহরগুলোর অন্তর্ভুক্ত। স্বয়ং কেরমানশাহ শহর ইরানের ঐতিহাসিক এবং সুন্দর শহরগুলোর অন্যতম। এতো সুন্দর প্রাকৃতিক ও ঐতিহাসিক নিদর্শনে সমৃদ্ধ এই শহর যে শুনলেই যে-কেউ পশ্চিমাঞ্চলীয় এই শহর সফরে আসতে আকর্ষণ বোধ করে।
যখনই কেরমানশাহের নাম উচ্চারিত হয় কিংবা মনে আসে তখন কোন কোন জিনিস স্মৃতিপটে ভেসে ওঠে? চালের গুঁড়োর রুটি, ত্বক বোস্তন কিংবা বিস্তুনের দৃশ্য? হুমম, কেরমানশাহের কথা উঠলেই প্রথমেই অনেকের মনে পড়ে যায় বিস্তুনের শিলালিপির কথা।এই শিলালিপিটি ফরহাদের প্রস্তরলিপি নামেই বেশি পরিচিত।শুধু তাই নয়,বিশ্বের সর্ববৃহৎ শিলালিপি এটি।বিশাল এই শিল্পকর্মের সামনে দাঁড়ালে আপনি বিস্মিত হয়ে যাবেন। দৃষ্টিতে আপনার বিভ্রম সৃষ্টি হতে পারে, ঝলসানো চোখ দুটো বুঁদ হয়ে উঠতে পারে। বিস্তুনের এই এলাকাটি বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকার অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। এই এলাকায় বহু মূল্যবান কিছু শিল্পকর্ম স্থান পেয়েছে। এর অবস্থান বিস্তুন পাহাড়ে। বিস্তুন মানে হলো খোদা'দের স্থান। হাখামানেশিয় বাদশাহ দারিয়ুশের আদেশে এখানে শিলালিপির কাজ করা হয়েছে তিনটি বিশেষ ফন্টে। এগুলো হলো প্রাচীন পার্সি, ইলামি এবং আকদিয়ান পেরেকি ফন্ট।
বিস্তুন এলাকায়
রয়েছে হেরাক্লিয়াসের ভাস্কর্য। এই ভাস্কর্যের কথাও ভুলে গেলে চলবে না। এই
ভাস্কর্যটি পুরো বিস্তুন এলাকার এক বিস্ময়। হেলান দিয়ে বিশ্রাম করছেন
হেরাক্লিয়াস-এরকম দৃশ্যের ভাস্কর্য করা হয়েছে নিখুঁতভাবে। সত্যি এটা এক
বিস্ময়কর শিল্পকর্ম। আর্মেনিয়ার শাহজাদি শিরিনের প্রতি পাথর খোদাইকারী
শিল্পী ফরহাদের প্রেমের সেই ঐতিহাসিক রূপকথার গল্পের কথা স্মরণ করিয়ে দেয়
এই ভাস্কর্য। এই বিস্তুন অঞ্চলের অপরাপর সুন্দর ও দর্শনীয় স্থাপনার মধ্যে
রয়েছে শাহ আব্বাসিয়া সরাইখানা। এটি বিস্তুনের দিকে মুখ করে বানানো হয়েছিল।
সরাইখানাটি তৈরি করা হয়েছিল চার ঝুলবারান্দা স্টাইলে। এভাবে অতীত ক্রিয়ায়
বলার কারণ হলো এখন আর সরাইখানাটি আগের অবস্থায় নেই। এখন এটিকে আধুনিক
হোটেলে রূপান্তর করা হয়েছে। নাম দেওয়া হয়েছে ললেহ বিস্তুন হোটেল।
ঐতিহাসিক পাহাড় বিস্তুন ছেড়ে কেরমানশাহ মূল শহরের দিকে যেতে যেতে কয়েক কিলোমিটার পরই পড়বে পর্যটক আকর্ষণীয় ঐতিহাসিক আরেকটি পাথুরে শিল্প স্থাপনা 'ত্বক বোস্তন'। শিল্প স্থাপনা বলার কারণ হলো এই ত্বক বোস্তনে রয়েছে নজিরবিহীন এক প্রাচীন শিলালিপিকর্ম। ঐতিহাসিক শিল্প এজন্য যে এই শিলালিপিতে রয়েছে তৎকালীন অর্থাৎ সাসানি আমলের রাজার মুকুট পরানোর আনুষ্ঠানিকতার চিত্র। রয়েছে রাজা-বাদশাদের শিকারেরও দৃশ্য। ত্বক ফার্সি শব্দ। এর মানে হলো খিলান। দুটি খিলান রয়েছে এখানে নতুন চন্দ্রাকৃতির। একটি অপরটির চেয়ে একটু ছোট-বড়ো। ত্বকের সামনে রয়েছে ছোট্ট একটি হ্রদ। ওই হ্রদের স্বচ্ছ পানিতে ত্বকের প্রতিচ্ছবি পড়লে অন্যরকম এক দৃশ্যের অবতারণা হয়। পুরো এলাকায় রয়েছে প্রচুর গাছগাছালি। যার ফলে এলাকাটি হয়ে উঠেছে অবকাশ যাপনেরও অন্যতম উপভোগ্য স্থান। খসরু পারভেজের সময় এই এলাকাটি একটি শিকারের স্থান ছিল।
একটু ভাবুন তো! ত্বক বোস্তনের দিকে প্রবেশ করার সময় আপনার নাকে যদি দান্দে কাবাবের ঘ্রাণ ভেসে আসে তাহলে কেমন লাগবে!দান্দে কাবাব নিশ্চয়ই বুঝতে একটু অসুবিধা হচ্ছে, তাই না! কিছুই না। সিনার মাংসকে হাড্ডি থেকে আলাদা করে নিয়ে ওই মাংশকে শিকে পোড়ালে যে কাবাব হয় সেটাই দান্দে কাবাব।ভাতের সঙ্গে এই কাবাব খেতে কেমন লাগে সেটা আপনার রুচির ওপর নির্ভর করবে।তবে ইরানিরা এই কাবাবের ভীষণ ভক্ত। ইরানে বসবাসকারী ভিনদেশিদের মতো বাঙালিরাও বেশ পছন্দ করে এই কাবাব।কেরমানশাহের বিশেষ খাবার এই দান্দে কাবাব। ভ্রাম্যমাণ রেস্টুরেন্টগুলো এখানে পর্যটকদের সেবায় সদা প্রস্তুত থাকে।
এই ত্বক বোস্তন এরিয়াতেই রয়েছে পার্বত্য পার্ক। সিঁড়ি ভেঙে একটু উপরে উঠে যেতে হয়। উপরে গেলেই চমৎকার প্রাকৃতিক পার্ক দেখে মন জুড়িয়ে যায়। পুরো এলাকাটাই যেহেতু পার্বত্য। সেজন্য একটু উঁচু-নীচু রয়েছে, একেবারে সমান্তরাল বলা যাবে না। সমান্তরালের সুযোগও আছে কিনা সন্দেহ, কেননা এখানকার পাহাড়গুলো পাথুরে। তাছাড়া পার্বত্য এলাকার সৌন্দর্যই অসমান্তরালে। যাই হোক এই পার্কটি বিনোদনের জন্য বা অবকাশ যাপনের জন্য খুবই উপযোগী একটি জায়গা। দর্শক বা পর্যটকরা এই পার্কে গেলে কিছুটা সময় না কাটিয়ে ফেরেন না।
কেরমানশাহ-তে আরও অনেক দর্শনীয় স্থান ও স্থাপনা রয়েছে। সেগুলো নিয়ে আজ আর কথা বলার মতো সময় কিংবা সুযোগ কোনোটাই নেই। পরবর্তী আসরে আরও কিছু নিদর্শন ও দর্শনীয় স্থানের সঙ্গে আপনাদের পরিচয় করিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করবো ইনশাআল্লাহ।
ঐতিহাসিক পাহাড় বিস্তুন ছেড়ে কেরমানশাহ মূল শহরের দিকে যেতে যেতে কয়েক কিলোমিটার পরই পড়বে পর্যটক আকর্ষণীয় ঐতিহাসিক আরেকটি পাথুরে শিল্প স্থাপনা 'ত্বক বোস্তন'। শিল্প স্থাপনা বলার কারণ হলো এই ত্বক বোস্তনে রয়েছে নজিরবিহীন এক প্রাচীন শিলালিপিকর্ম। ঐতিহাসিক শিল্প এজন্য যে এই শিলালিপিতে রয়েছে তৎকালীন অর্থাৎ সাসানি আমলের রাজার মুকুট পরানোর আনুষ্ঠানিকতার চিত্র। রয়েছে রাজা-বাদশাদের শিকারেরও দৃশ্য। ত্বক ফার্সি শব্দ। এর মানে হলো খিলান। দুটি খিলান রয়েছে এখানে নতুন চন্দ্রাকৃতির। একটি অপরটির চেয়ে একটু ছোট-বড়ো। ত্বকের সামনে রয়েছে ছোট্ট একটি হ্রদ। ওই হ্রদের স্বচ্ছ পানিতে ত্বকের প্রতিচ্ছবি পড়লে অন্যরকম এক দৃশ্যের অবতারণা হয়। পুরো এলাকায় রয়েছে প্রচুর গাছগাছালি। যার ফলে এলাকাটি হয়ে উঠেছে অবকাশ যাপনেরও অন্যতম উপভোগ্য স্থান। খসরু পারভেজের সময় এই এলাকাটি একটি শিকারের স্থান ছিল।
একটু ভাবুন তো! ত্বক বোস্তনের দিকে প্রবেশ করার সময় আপনার নাকে যদি দান্দে কাবাবের ঘ্রাণ ভেসে আসে তাহলে কেমন লাগবে!দান্দে কাবাব নিশ্চয়ই বুঝতে একটু অসুবিধা হচ্ছে, তাই না! কিছুই না। সিনার মাংসকে হাড্ডি থেকে আলাদা করে নিয়ে ওই মাংশকে শিকে পোড়ালে যে কাবাব হয় সেটাই দান্দে কাবাব।ভাতের সঙ্গে এই কাবাব খেতে কেমন লাগে সেটা আপনার রুচির ওপর নির্ভর করবে।তবে ইরানিরা এই কাবাবের ভীষণ ভক্ত। ইরানে বসবাসকারী ভিনদেশিদের মতো বাঙালিরাও বেশ পছন্দ করে এই কাবাব।কেরমানশাহের বিশেষ খাবার এই দান্দে কাবাব। ভ্রাম্যমাণ রেস্টুরেন্টগুলো এখানে পর্যটকদের সেবায় সদা প্রস্তুত থাকে।
এই ত্বক বোস্তন এরিয়াতেই রয়েছে পার্বত্য পার্ক। সিঁড়ি ভেঙে একটু উপরে উঠে যেতে হয়। উপরে গেলেই চমৎকার প্রাকৃতিক পার্ক দেখে মন জুড়িয়ে যায়। পুরো এলাকাটাই যেহেতু পার্বত্য। সেজন্য একটু উঁচু-নীচু রয়েছে, একেবারে সমান্তরাল বলা যাবে না। সমান্তরালের সুযোগও আছে কিনা সন্দেহ, কেননা এখানকার পাহাড়গুলো পাথুরে। তাছাড়া পার্বত্য এলাকার সৌন্দর্যই অসমান্তরালে। যাই হোক এই পার্কটি বিনোদনের জন্য বা অবকাশ যাপনের জন্য খুবই উপযোগী একটি জায়গা। দর্শক বা পর্যটকরা এই পার্কে গেলে কিছুটা সময় না কাটিয়ে ফেরেন না।
কেরমানশাহ-তে আরও অনেক দর্শনীয় স্থান ও স্থাপনা রয়েছে। সেগুলো নিয়ে আজ আর কথা বলার মতো সময় কিংবা সুযোগ কোনোটাই নেই। পরবর্তী আসরে আরও কিছু নিদর্শন ও দর্শনীয় স্থানের সঙ্গে আপনাদের পরিচয় করিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করবো ইনশাআল্লাহ।
No comments