রনিল বিক্রমাসিঙ্গে : একজন উদার নেতা ও চিন্তাবিদ by পি রাধাকৃষ্ণান
লাস্ট আপডেট- ১৪ মে ২০১৭: দিনেশ বিরাকোডির লেখা ‘রনিল বিক্রমাসিঙ্গে-
একটি রাজনৈতিক জীবনী’ বইটি চারবারের প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক পথপরিক্রমার
দারুণ একটি ভাষ্য। অনেক ঝড়-ঝাপটা সহ্যকারী এক রাষ্ট্রনায়কের চারিত্রিক
শক্তি এবং রাষ্ট্রনায়োকোচিত অধ্যবসায়ের চিত্র সহজ ভাষায় ফুটিয়ে তোলা হয়েছে।
শ্রীলঙ্কায় যারা সর্বোচ্চ রাজনৈতিক পদে বসতে চান, তাদের জন্য প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিঙ্গের
জীবনীটি পড়া অত্যাবশ্যক। এখানে আকাশছোঁয়া উচ্চতায় ওঠতে যেমন দেখা যায়
প্রধানমন্ত্রীকে, আবার মর্মান্তিক পতনের দৃশ্যও ভাসে। বইটি আমাদের মনে
করিয়ে দেয়, মহানায়কেরাও নানা দোষ-ত্রুটির মানুষ।
দিনেশ চমৎকারভাবে রনিলের আগমন এবং উত্থানের বিবরণ দিয়েছেন। কয়েকটি অধ্যায় পড়ার সময় তো উপন্যাসের স্বাদই পাওয়া যাবে। বিশেষ করে শ্রীলঙ্কার ইতিহাসের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি দশকের আলোচনা চমৎকারভাবে ফুটে ওঠেছে। আমাদের বর্তমান ও ভবিষ্যত নেতাদের উচিত ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি ঠেকানোর জন্য এই বইটি থেকে শিক্ষা নিয়ে বার বার কাজে লাগাবেন।
তবে বইটির সবচেয়ে মুগ্ধতা সৃষ্টিকারী বিষয় হলো ডাডলি সেনানায়েকের মতো নেতাদের কথা প্রসঙ্গে। এসব নেতা কখনো বলেন না তারা নির্ভুল কিংবা এই দাবিও করেন, নীতিনির্ধারণে তাদের বিশেষ ক্ষমতা রয়েছে। কিন্তু তারপরও তাদের অবিশ্বাস্য সাফল্য পাওয়ার সাদামাটা কারণ হলো তারা অন্যদের সাথে কাজ করেন এবং প্রয়োজনের সময় তাদের কাছ থেকে উপদেশ গ্রহণ করেন।
শক্তিশালী নেতার মিথ যদিও রাজনৈতিক নেতৃত্বের বিষয়, কিন্তু সাধারণভাবে নেতৃত্ব সম্পর্কে গভীরতর উপলব্ধি ধারণ করে দিনেশের বিশ্লেষণে অভিভূত হতেই হবে। নেতারা যখন এককভাবে সিদ্ধান্ত নেন, তখন পরিস্থিতি কতটা বিপজ্জনক হতে পারে এবং তারা একসাথে কাজ করলে তা কতটা কল্যাণকর হতে পারে, দিনেশ তার বইতে বিষয়টা বেশ প্রাঞ্জলভাবে তুলে ধরেছেন। নেতাদের কেন তাদের নিজেদেরই চ্যালেঞ্জ করতে হবে সেটাও গুরুত্বসহকারে তুলে ধরেছেন। তার মতে নেতাদের উচিত নয় কেবল বন্ধুবান্ধব বা স্বজনের ওপর নির্ভর করা। তাদের উচিত নতুন চিন্তাভাবনা করা, বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নেওয়া, বিরোধী দৃষ্টিভঙ্গিকে সাদরে আমন্ত্রণ জানানো।
দিনেশ ১৮১ নম্বর পৃষ্ঠার দ্বিতীয় প্যারায় প্রধানমন্ত্রীর একটি নিদারুণ দুর্বলতার কথা উল্লেখ করেছেন এভাবে : তার একটি প্রবণতা হলো বন্ধুবান্ধবদের কাছে রাখা। অথচ এসব লোক রাজনৈতিক দুঃসময়ে বলতে গেলে কোনোই উপকার করতে পারে না। তবে তিনি ক্ষমতায় থাকলে তারা চারপাশ ঘিরে থাকে। আর এর মাধ্যমে তিনি অনেক সমালোচনা ডেকে আনেন।
প্রধানমন্ত্রীর প্রতি দিনেশের শ্রদ্ধা খুবই গভীর। তার জন্য তিনি স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে ২৫ বছর তার সাথে কাজ করেছেন। তিনি বলেছেন, আমাদের সৌভাগ্য, দেশকে নেতৃত্ব দিতে আমরা তার মতো একজন রাজনৈতিক নেতা পেয়েছি। তাকে টেনে নামানোর বদলে কল্যাণকামী ও প্রভাবশালী লোকদের উচিত তার দিকে হাত বাড়ানো যাতে তিনি দেশকে এগিয়ে নিয়ে এই অঞ্চলের শীর্ষ জাতিতে পরিণত করতে পারেন।
জাতি যার ওপর যে আস্থা স্থাপন করেছে, প্রধানমন্ত্রী তার সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করেননি। সত্যিকারের উদার মানসিকতার যে গুটিকতেক নেতা রয়েছেন, রনিল বিক্রমাসিঙ্গে তার অন্যতম। ফলে সব সম্প্রদায় ও ধর্মকে নিয়ে সত্যিকারের শ্রীলঙ্কান পরিচিতি সৃষ্টির কাজে তিনিই সর্বোত্তম নেতা।
[লেখক : সাবেক এমপি এবং সাবেক উপমন্ত্রী]
দিনেশ চমৎকারভাবে রনিলের আগমন এবং উত্থানের বিবরণ দিয়েছেন। কয়েকটি অধ্যায় পড়ার সময় তো উপন্যাসের স্বাদই পাওয়া যাবে। বিশেষ করে শ্রীলঙ্কার ইতিহাসের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি দশকের আলোচনা চমৎকারভাবে ফুটে ওঠেছে। আমাদের বর্তমান ও ভবিষ্যত নেতাদের উচিত ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি ঠেকানোর জন্য এই বইটি থেকে শিক্ষা নিয়ে বার বার কাজে লাগাবেন।
তবে বইটির সবচেয়ে মুগ্ধতা সৃষ্টিকারী বিষয় হলো ডাডলি সেনানায়েকের মতো নেতাদের কথা প্রসঙ্গে। এসব নেতা কখনো বলেন না তারা নির্ভুল কিংবা এই দাবিও করেন, নীতিনির্ধারণে তাদের বিশেষ ক্ষমতা রয়েছে। কিন্তু তারপরও তাদের অবিশ্বাস্য সাফল্য পাওয়ার সাদামাটা কারণ হলো তারা অন্যদের সাথে কাজ করেন এবং প্রয়োজনের সময় তাদের কাছ থেকে উপদেশ গ্রহণ করেন।
শক্তিশালী নেতার মিথ যদিও রাজনৈতিক নেতৃত্বের বিষয়, কিন্তু সাধারণভাবে নেতৃত্ব সম্পর্কে গভীরতর উপলব্ধি ধারণ করে দিনেশের বিশ্লেষণে অভিভূত হতেই হবে। নেতারা যখন এককভাবে সিদ্ধান্ত নেন, তখন পরিস্থিতি কতটা বিপজ্জনক হতে পারে এবং তারা একসাথে কাজ করলে তা কতটা কল্যাণকর হতে পারে, দিনেশ তার বইতে বিষয়টা বেশ প্রাঞ্জলভাবে তুলে ধরেছেন। নেতাদের কেন তাদের নিজেদেরই চ্যালেঞ্জ করতে হবে সেটাও গুরুত্বসহকারে তুলে ধরেছেন। তার মতে নেতাদের উচিত নয় কেবল বন্ধুবান্ধব বা স্বজনের ওপর নির্ভর করা। তাদের উচিত নতুন চিন্তাভাবনা করা, বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নেওয়া, বিরোধী দৃষ্টিভঙ্গিকে সাদরে আমন্ত্রণ জানানো।
দিনেশ ১৮১ নম্বর পৃষ্ঠার দ্বিতীয় প্যারায় প্রধানমন্ত্রীর একটি নিদারুণ দুর্বলতার কথা উল্লেখ করেছেন এভাবে : তার একটি প্রবণতা হলো বন্ধুবান্ধবদের কাছে রাখা। অথচ এসব লোক রাজনৈতিক দুঃসময়ে বলতে গেলে কোনোই উপকার করতে পারে না। তবে তিনি ক্ষমতায় থাকলে তারা চারপাশ ঘিরে থাকে। আর এর মাধ্যমে তিনি অনেক সমালোচনা ডেকে আনেন।
প্রধানমন্ত্রীর প্রতি দিনেশের শ্রদ্ধা খুবই গভীর। তার জন্য তিনি স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে ২৫ বছর তার সাথে কাজ করেছেন। তিনি বলেছেন, আমাদের সৌভাগ্য, দেশকে নেতৃত্ব দিতে আমরা তার মতো একজন রাজনৈতিক নেতা পেয়েছি। তাকে টেনে নামানোর বদলে কল্যাণকামী ও প্রভাবশালী লোকদের উচিত তার দিকে হাত বাড়ানো যাতে তিনি দেশকে এগিয়ে নিয়ে এই অঞ্চলের শীর্ষ জাতিতে পরিণত করতে পারেন।
জাতি যার ওপর যে আস্থা স্থাপন করেছে, প্রধানমন্ত্রী তার সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করেননি। সত্যিকারের উদার মানসিকতার যে গুটিকতেক নেতা রয়েছেন, রনিল বিক্রমাসিঙ্গে তার অন্যতম। ফলে সব সম্প্রদায় ও ধর্মকে নিয়ে সত্যিকারের শ্রীলঙ্কান পরিচিতি সৃষ্টির কাজে তিনিই সর্বোত্তম নেতা।
[লেখক : সাবেক এমপি এবং সাবেক উপমন্ত্রী]
No comments