দুইবারের উপজেলা চেয়ারম্যান জীবিকা নির্বাহ করছেন বাইক চালিয়ে: এ এক অন্যরকম রাজনীতিবিদ by ইব্রাহিম খলিল
হেলমেট
মাথায় শহর ঘুরে বেড়ান তিনি। এ জায়গা থেকে ও জায়গা। অলি থেকে গলি সর্বত্র
তার বিচরণ। তবে এ বিচরণ তার নিজের ইচ্ছায় নয়। অন্যের ইচ্ছায়। অর্থের জন্য।
অথচ এ লোকটিই ছিলেন পরপর দুইবারের উপজেলা চেয়ারম্যান। জনপ্রিয় জনপ্রতিনিধি।
এই তিনিই রাজনীতিতে সততার উদাহরণ এখন সবার কাছে। তিনি আর কেউ নন। চট্টগ্রামের কক্সবাজার জেলার পেকুয়া উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান শাফায়েত আজিজ রাজু। পেকুয়া বিএনপি নেতা। শুধু তাই নয়, তার পিতা মাহামুদুল করিম চৌধুরীও ছিলেন বিএনপির টিকেটে নির্বাচিত সংসদ সদস্য। পিতা সংসদ সদস্য ও নিজে উপজেলা চেয়ারম্যান থাকলেও এখন তিনি সংসার চালাতে বেছে নিয়েছেন অ্যাপ ভিত্তিক রাইড শেয়ারকে। অথচ তারা রাজনীতি করেছেন, কিন্তু পারেননি সম্পদের পাহাড় গড়তে। তাইতো দেখা যায়, তার বাড়িতে শুধুমাত্র একটি সেমিপাকা বাড়ি। পেকুয়া উপজেলার মগনামা ইউনিয়নে তাদের বাড়ি।
এক সময় যিনি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হিসাবে গোটা উপজেলার উন্নয়ন বাস্তবায়ন করেছেন। পিতা এমপি হওয়ার সুবাদেও উপজেলার উন্নয়নের খোঁজ রেখেছেন। এখন তার একমাত্র সম্বল একটি মোটরবাইক। বাইকটি রাইড শেয়ার প্রতিষ্ঠান সহজ ও পাঠাও অ্যাপসে নিবন্ধন করে সংসারের খরচ জোগাচ্ছেন তিনি। পেকুয়ায় রাজু চেয়ারম্যান হিসাবে ব্যাপক পরিচিত শাফায়েত আজিজ রাজুর এই রাইড শেয়ার নিয়ে গোটা কক্সবাজারে এখন আলোচনা। কিন্তু এতে রাজুর কোনও দুঃখবোধ নেই। তিনি মানবজমিনকে বলেন, বাইক নিয়ে আমি রাইড শেয়ার করছি। তাতে আমার কোনো দুঃখ নেই। বরং ঘুষ-দুর্নীতিসহ নানা অপকর্মে লিপ্ত কেউ শান্তিতে নেই। সেদিক থেকে আল্লাহ আমাকে শান্তিতে রেখেছেন- এটাই আমার সুখ। গতকাল মানবজমিন অনলাইনে রাজুকে নিয়ে রিপোর্ট হলে গোটা দেশে এ নিয়ে আলোচনা শুরু হয়। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, মানবজমিন অনলাইনে এমন একটি প্রতিবেদন হবে এটা আমি বিশ্বাস করতে পারিনি। এ প্রতিবেদনের পর আমার শুভাকাঙ্ক্ষীরা অনেকে আমার সঙ্গে ফোনে ও ফেসবুকে যোগাযোগ করেছেন। বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটি থেকে আমার খোঁজ নেয়া হয়েছে।
বিবিসি’র সাংবাদিক আমার একটি ফটোশ্যুট করেছেন। ঢাকা ও চট্টগ্রাম থেকে বিভিন্ন গণমাধ্যমের সাংবাদিকরা আমার সঙ্গে কথা বলেছেন। এটা আমার জন্য গর্বের। এটাই স্বস্তির। এ জন্য মানবজমিনের কাছে আমি অত্যন্ত কৃতজ্ঞ।
তিনি বলেন, সবার কাছে আমার চাওয়া, আমি যেন কোনোরকম লোভের বশবর্তী হয়ে আমার সততার অবস্থান থেকে সরে না পড়ি। এ জন্য দোয়া করবেন।
তিনি বলেন, ২০০৯ সালে আমি পেকুয়া উপজেলা পরিষদের প্রথম নির্বাচিত প্রতিষ্ঠাতা উপজেলা চেয়ারম্যান। তখন আমি বিএনপির বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে সাড়ে চার হাজার ভোটের ব্যবধানে আওয়ামী লীগের প্রার্থীকে হারাই।
২০১৪ সালেও শেষ মুহূর্তে এসে বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী হিসেবে ২২ হাজার ভোটের ব্যবধানে জয়লাভ করি। শেষ নির্বাচনে তো মানুষ ভোটই দিতে পারেনি। তবে ওই নির্বাচনে বিএনপি অংশ না নেয়ায় আমি নির্বাচনে লড়িনি। এরপর আমি ব্যবসায় মনোযোগী হই। কিন্তু বিএনপির রাজনীতিতে সম্পৃক্ত থাকার কারণে আমি ও আমার হাজারো নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে ৫টি মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয়। ফলে ব্যবসায় সময় দিতে না পেরে লোকসানের সম্মুখীন হই। পুঁজি হারিয়ে প্রায় ৪ মাস বেকার সময় কাটাই।
এমতাবস্থায়, শেষমেশ চট্টগ্রাম শহরে রাইডারদের দেখে মাথায় আসে আমার তো এখনো শেষ সম্বল হিসেবে একখানা মোটরসাইকেল আছে। তাই গত ১৫ দিন আগে প্রথমে পাঠাও, পরে সহজ অ্যাপসে নিবন্ধন করি। তাদের মাধ্যমে রাইড করে দিনে ৯০০ থেকে ১৫০০ টাকা পর্যন্ত আয় করছি। যা দিয়ে আমার সংসারের খরচ জোগানোর চেষ্টা করছি।
তিনি আরো বলেন, চট্টগ্রাম শহরে আমি মা-ভাই, স্ত্রী-সন্তান নিয়ে ভাড়া বাসায় থাকছি। এতে আমার অন্তত ৫০ হাজার টাকারও বেশি খরচ যাবে। এ ছাড়া ৫টি মামলায় জামিনে থাকলেও আদালতে হাজির হতে হচ্ছে। খরচ হচ্ছে সেখানেও। সুতরাং যে আয় হচ্ছে তাতে হয়তো খরচ মিটবে না। তবে আশায় আছি সবে তো শুরু, ক্রমেই আয় বাড়বে।
চট্টগ্রামের শেয়ার রাইডারদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে তিনি বলেন, ওরা আমাক বেঁচে থাকার পথ দেখিয়েছে। আমিও কাজটাকে ছোট করে দেখিনি। বরং একজন উপজেলা চেয়ারম্যান হিসেবে শেয়ার রাইডিং করছি, তা দেখে আমার মতো শত শত বেকার তরুণ শিখবে। কাজটাকে ছোট করে না দেখে বেঁচে থাকার পথ খুঁজে নেবে। এটাই আশা করছি আমি।
রাজু চেয়ারম্যান আরো বলেন, আমার বাবা একজন বিএনপির মনোনীত সংসদ সদস্য ছিলেন। বাবাকেও দুর্নীতি ও অনিয়ম এতটুকু স্পর্শ করতে পারেনি। বাবা লবণের ব্যবসা করতেন। বাবার তৈরি সেমিপাকা ঘরই এখনো আমাদের মাথাগোঁজার একমাত্র সম্বল।
স্থানীয় লোকজনের মতে, সংসদ সদস্য হিসেবে মাহামুদুল করিম চৌধুরীর বিরুদ্ধে কোনো দুর্নাম নেই। বরং নিজের ঘরের খাবার দরিদ্রদের বিলিয়ে খাওয়াতেন তিনি। সৎজন হিসেবে তিনি বেশ পরিচিত। সেই বাবার যোগ্য উত্তরসূরি রাজু চেয়ারম্যান। ফলে দু’বার উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন তিনি। কিন্তু নিজের জন্য এতটুকু সম্পদ গড়েনি ।
পেকুয়া উপজেলা সদরের বাসিন্দা নজির আহমদ (৪৬) বলেন, ঘুষ-দুর্নীতি, লুটপাট-দখলবাজি, মাদক-জুয়া-ক্যাসিনোসহ নানা অনিয়ম ও অপকর্মে যখন সারা দেশ ছেয়ে গেছে তখনও এরমধ্যে রাজু চেয়ারম্যান সততার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। চট্টগ্রাম শহরে মোটরসাইকেল ভাড়া চালিয়ে টাকা কামাই করতে হচ্ছে তার। এ ঘটনা পেকুয়া উপজেলাবাসীর মুখে মুখে বলে জানান তিনি।
এই তিনিই রাজনীতিতে সততার উদাহরণ এখন সবার কাছে। তিনি আর কেউ নন। চট্টগ্রামের কক্সবাজার জেলার পেকুয়া উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান শাফায়েত আজিজ রাজু। পেকুয়া বিএনপি নেতা। শুধু তাই নয়, তার পিতা মাহামুদুল করিম চৌধুরীও ছিলেন বিএনপির টিকেটে নির্বাচিত সংসদ সদস্য। পিতা সংসদ সদস্য ও নিজে উপজেলা চেয়ারম্যান থাকলেও এখন তিনি সংসার চালাতে বেছে নিয়েছেন অ্যাপ ভিত্তিক রাইড শেয়ারকে। অথচ তারা রাজনীতি করেছেন, কিন্তু পারেননি সম্পদের পাহাড় গড়তে। তাইতো দেখা যায়, তার বাড়িতে শুধুমাত্র একটি সেমিপাকা বাড়ি। পেকুয়া উপজেলার মগনামা ইউনিয়নে তাদের বাড়ি।
এক সময় যিনি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হিসাবে গোটা উপজেলার উন্নয়ন বাস্তবায়ন করেছেন। পিতা এমপি হওয়ার সুবাদেও উপজেলার উন্নয়নের খোঁজ রেখেছেন। এখন তার একমাত্র সম্বল একটি মোটরবাইক। বাইকটি রাইড শেয়ার প্রতিষ্ঠান সহজ ও পাঠাও অ্যাপসে নিবন্ধন করে সংসারের খরচ জোগাচ্ছেন তিনি। পেকুয়ায় রাজু চেয়ারম্যান হিসাবে ব্যাপক পরিচিত শাফায়েত আজিজ রাজুর এই রাইড শেয়ার নিয়ে গোটা কক্সবাজারে এখন আলোচনা। কিন্তু এতে রাজুর কোনও দুঃখবোধ নেই। তিনি মানবজমিনকে বলেন, বাইক নিয়ে আমি রাইড শেয়ার করছি। তাতে আমার কোনো দুঃখ নেই। বরং ঘুষ-দুর্নীতিসহ নানা অপকর্মে লিপ্ত কেউ শান্তিতে নেই। সেদিক থেকে আল্লাহ আমাকে শান্তিতে রেখেছেন- এটাই আমার সুখ। গতকাল মানবজমিন অনলাইনে রাজুকে নিয়ে রিপোর্ট হলে গোটা দেশে এ নিয়ে আলোচনা শুরু হয়। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, মানবজমিন অনলাইনে এমন একটি প্রতিবেদন হবে এটা আমি বিশ্বাস করতে পারিনি। এ প্রতিবেদনের পর আমার শুভাকাঙ্ক্ষীরা অনেকে আমার সঙ্গে ফোনে ও ফেসবুকে যোগাযোগ করেছেন। বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটি থেকে আমার খোঁজ নেয়া হয়েছে।
বিবিসি’র সাংবাদিক আমার একটি ফটোশ্যুট করেছেন। ঢাকা ও চট্টগ্রাম থেকে বিভিন্ন গণমাধ্যমের সাংবাদিকরা আমার সঙ্গে কথা বলেছেন। এটা আমার জন্য গর্বের। এটাই স্বস্তির। এ জন্য মানবজমিনের কাছে আমি অত্যন্ত কৃতজ্ঞ।
তিনি বলেন, সবার কাছে আমার চাওয়া, আমি যেন কোনোরকম লোভের বশবর্তী হয়ে আমার সততার অবস্থান থেকে সরে না পড়ি। এ জন্য দোয়া করবেন।
তিনি বলেন, ২০০৯ সালে আমি পেকুয়া উপজেলা পরিষদের প্রথম নির্বাচিত প্রতিষ্ঠাতা উপজেলা চেয়ারম্যান। তখন আমি বিএনপির বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে সাড়ে চার হাজার ভোটের ব্যবধানে আওয়ামী লীগের প্রার্থীকে হারাই।
২০১৪ সালেও শেষ মুহূর্তে এসে বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী হিসেবে ২২ হাজার ভোটের ব্যবধানে জয়লাভ করি। শেষ নির্বাচনে তো মানুষ ভোটই দিতে পারেনি। তবে ওই নির্বাচনে বিএনপি অংশ না নেয়ায় আমি নির্বাচনে লড়িনি। এরপর আমি ব্যবসায় মনোযোগী হই। কিন্তু বিএনপির রাজনীতিতে সম্পৃক্ত থাকার কারণে আমি ও আমার হাজারো নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে ৫টি মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয়। ফলে ব্যবসায় সময় দিতে না পেরে লোকসানের সম্মুখীন হই। পুঁজি হারিয়ে প্রায় ৪ মাস বেকার সময় কাটাই।
এমতাবস্থায়, শেষমেশ চট্টগ্রাম শহরে রাইডারদের দেখে মাথায় আসে আমার তো এখনো শেষ সম্বল হিসেবে একখানা মোটরসাইকেল আছে। তাই গত ১৫ দিন আগে প্রথমে পাঠাও, পরে সহজ অ্যাপসে নিবন্ধন করি। তাদের মাধ্যমে রাইড করে দিনে ৯০০ থেকে ১৫০০ টাকা পর্যন্ত আয় করছি। যা দিয়ে আমার সংসারের খরচ জোগানোর চেষ্টা করছি।
তিনি আরো বলেন, চট্টগ্রাম শহরে আমি মা-ভাই, স্ত্রী-সন্তান নিয়ে ভাড়া বাসায় থাকছি। এতে আমার অন্তত ৫০ হাজার টাকারও বেশি খরচ যাবে। এ ছাড়া ৫টি মামলায় জামিনে থাকলেও আদালতে হাজির হতে হচ্ছে। খরচ হচ্ছে সেখানেও। সুতরাং যে আয় হচ্ছে তাতে হয়তো খরচ মিটবে না। তবে আশায় আছি সবে তো শুরু, ক্রমেই আয় বাড়বে।
চট্টগ্রামের শেয়ার রাইডারদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে তিনি বলেন, ওরা আমাক বেঁচে থাকার পথ দেখিয়েছে। আমিও কাজটাকে ছোট করে দেখিনি। বরং একজন উপজেলা চেয়ারম্যান হিসেবে শেয়ার রাইডিং করছি, তা দেখে আমার মতো শত শত বেকার তরুণ শিখবে। কাজটাকে ছোট করে না দেখে বেঁচে থাকার পথ খুঁজে নেবে। এটাই আশা করছি আমি।
রাজু চেয়ারম্যান আরো বলেন, আমার বাবা একজন বিএনপির মনোনীত সংসদ সদস্য ছিলেন। বাবাকেও দুর্নীতি ও অনিয়ম এতটুকু স্পর্শ করতে পারেনি। বাবা লবণের ব্যবসা করতেন। বাবার তৈরি সেমিপাকা ঘরই এখনো আমাদের মাথাগোঁজার একমাত্র সম্বল।
স্থানীয় লোকজনের মতে, সংসদ সদস্য হিসেবে মাহামুদুল করিম চৌধুরীর বিরুদ্ধে কোনো দুর্নাম নেই। বরং নিজের ঘরের খাবার দরিদ্রদের বিলিয়ে খাওয়াতেন তিনি। সৎজন হিসেবে তিনি বেশ পরিচিত। সেই বাবার যোগ্য উত্তরসূরি রাজু চেয়ারম্যান। ফলে দু’বার উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন তিনি। কিন্তু নিজের জন্য এতটুকু সম্পদ গড়েনি ।
পেকুয়া উপজেলা সদরের বাসিন্দা নজির আহমদ (৪৬) বলেন, ঘুষ-দুর্নীতি, লুটপাট-দখলবাজি, মাদক-জুয়া-ক্যাসিনোসহ নানা অনিয়ম ও অপকর্মে যখন সারা দেশ ছেয়ে গেছে তখনও এরমধ্যে রাজু চেয়ারম্যান সততার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। চট্টগ্রাম শহরে মোটরসাইকেল ভাড়া চালিয়ে টাকা কামাই করতে হচ্ছে তার। এ ঘটনা পেকুয়া উপজেলাবাসীর মুখে মুখে বলে জানান তিনি।
No comments