হৃদির ছুটির সকাল by মনিরা মিতা
অলঙ্করণ- সুমাইয়া রাত্রী রিয়া |
আজ
শুক্রবার, স্কুল নেই। তাই আজ হৃদিকে কেউ ডাকেনি কিন্তু সকাল ৭টা বাজতে না
বাজতেই ওর ঘুম ভেঙে গেল। রোজ এ সময় উঠতে হয়তো তাই অভ্যাস হয়ে গেছে। অন্যদিক
হলে মা এতক্ষণে হৃদিকে স্কুল ড্রেস পরিয়ে দিতেন। পিছন পিছন ছুটতেন রুটি আর
ভাঁজি নিয়ে। আজ মাও আরাম করে ঘুমোচ্ছে। হৃদির সবচেয়ে প্রিয় জায়গা বেলকনি,
তাই ঘুম থেকে উঠে ফ্রেস হয়েই সে ওখানে গিয়ে দাঁড়াল। সকালের রোদে ঝলমল করছে
চারপাশ। হৃদি বেলকনি তে দাঁড়াতেই দুটো কাক এসে বসল কার্নিশে। প্রতিদিন
সকালে হৃদি বেলকনি এলেই ওরা হাজির হয়। হৃদি ওদের মুড়ি খেতে দেয়, ওরা
মহাআনন্দে খেয়ে উড়ে যায়। আজও তার ব্যতিক্রম হলো না, ওরা হৃদির বন্ধু। হৃদি
ওদের সঙ্গে গল্প করে আকাশের গল্প, পাহাড়ের গল্প, বাতাসের গল্প, আকাশও ওর
খুব পছন্দ। আকাশি রঙের আকাশ আর আকাশের মেঘ বড় মেঘ, ছোট মেঘ, ফুলো মেঘ, তুলো
মেঘ। ওরা অনেক মজা করে আকাশে, উড়ে বেড়ায় ঘুরে বেড়ায়।
রাতের বেলা সূয্যি মামা ঘুমাতে যায় তখন আলো থাকে না, অন্ধকার হয়ে যায় দুনিয়া, তারাদের পৃথিবী হয়ে যায় তখন আকাশ। ওরা মিটমিট করে জ্বলে আর আকাশের গায়ে লেপটে থাকে।
সাগরও খুব পছন্দ হৃদির। গতবছর বাবা-মায়ের সঙ্গে কুয়াকাটা গিয়েছিল সে। কি যে মজা করেছিল! বড় বড় ঢেউ আছড়ে পড়ছে সাগর কোলে। বাতাসের শোঁ শোঁ শব্দ। ঢেউয়ের গর্জন। অনেক সময় গোসল করেছিল সে সাগরে। হৃদি প্রতিদিন মাকে বলে ‘আম্মু আবার করে যাব কুয়াটাকা?’ আম্মু বলে তুমি বড় হও তারপর। কিন্তু হৃদিও এখন অনেক বড় হয়েছে। বৃষ্টিও খুব ভালো লাগে হৃদির। মেঘেদের যখন খুব মন খারাপ হয় তখন ওরা কালো হয়ে যায়। তারপর একসময় কেঁদে ফেলে আর ওদের কান্নাই বৃষ্টি হয়ে ভিজিয়ে দেয় গাছ, পাতা, ফুল। হৃদি এসব আনমনে ভাবছে আর কাক দুটোকে মুড়ি খেতে দিচ্ছে। হঠাৎ দেখে খুব সুন্দর একটা প্রজাপতি বেলকনির কোনে বসে পাখা দুটো মেলছে আর বন্ধ করছে। কি সুন্দর নকশা করা ওর পাখা দুটো যেন রূপকথার নকশী কাঁথা। হৃদি হাত বারিয়ে ধরতে চায় ওকে কিন্তু পারে না। হৃদির খুব ইচ্ছে করে ওকে ধরতে। হঠাৎ প্রজাপতি উড়ে দিয়ে হৃদিদের বিল্ডিংয়ের নিচের ঘাসে বসে।
হৃদির মন বলে ওখানে গেলে ঠিকই সে ধরতে পারবে প্রজাপতিটা তাই সে কাউকে কিছু না বলে ঘর ছেড়ে নিচে নেমে যায়। হৃদি সেই ঘাসের কাছে এগিয়ে গেল ওকে ধরতে, সেও ফুড়–ত করে উড়ে অন্য জায়গায় চলে গেল। হৃদিও ছোটে ওর পিছু পিছু। এভাবে অনেকক্ষণ সে দৌঁড়াতে থাকে প্রজাপতির পিছু পিছু, ছুটতে ছুটতে প্রজাপতিটা হারিয়ে ফেলে হৃদি। গাড়ির হর্নে চমকে ওঠে হৃদি। একি সে কোথায় দাঁড়িয়ে আছে! চারিদিকে তাকায় হৃদি। সব অচেনা, এ কোথায় এসে পড়েছে সে! প্রজাপতির পিছু ছুটতে ছুটতে কোথায় কোন গলিতে এসেছে হৃদি বুঝতে পারে না। এখন কিভাবে ঘরে ফিরবে সে? কোথায় পাবে আব্বু-আম্মুকে? দু’চোখ ফেটে-কান্না আসে ওর। পাগলের মতো দৌঁড় দেয়। হঠাৎ একটা গাড়ি এসে ... আহ্। জোড়ে কেঁদে ফেলে হৃদি।
কারো মমতা ভরা ডাক কানে আসে হৃদির। চোখ খুলে দেখে সে ঘরের মেঝেতে, মা-বাবা পাশে বসে আছে। মা বলছে খাট থেকে পরে গেছ মা? খুব ব্যথা পেয়েছ?
তাহলে এতক্ষণ কি স্বপ্ন দেখছিল হৃদি? উহ্... স্বপ্নের শেষটা কি ভয়ঙ্করই না ছিল। না, স্বপ্নেও হৃদি কখনো একা ঘরের বাহিরে যাবে না।
রাতের বেলা সূয্যি মামা ঘুমাতে যায় তখন আলো থাকে না, অন্ধকার হয়ে যায় দুনিয়া, তারাদের পৃথিবী হয়ে যায় তখন আকাশ। ওরা মিটমিট করে জ্বলে আর আকাশের গায়ে লেপটে থাকে।
সাগরও খুব পছন্দ হৃদির। গতবছর বাবা-মায়ের সঙ্গে কুয়াকাটা গিয়েছিল সে। কি যে মজা করেছিল! বড় বড় ঢেউ আছড়ে পড়ছে সাগর কোলে। বাতাসের শোঁ শোঁ শব্দ। ঢেউয়ের গর্জন। অনেক সময় গোসল করেছিল সে সাগরে। হৃদি প্রতিদিন মাকে বলে ‘আম্মু আবার করে যাব কুয়াটাকা?’ আম্মু বলে তুমি বড় হও তারপর। কিন্তু হৃদিও এখন অনেক বড় হয়েছে। বৃষ্টিও খুব ভালো লাগে হৃদির। মেঘেদের যখন খুব মন খারাপ হয় তখন ওরা কালো হয়ে যায়। তারপর একসময় কেঁদে ফেলে আর ওদের কান্নাই বৃষ্টি হয়ে ভিজিয়ে দেয় গাছ, পাতা, ফুল। হৃদি এসব আনমনে ভাবছে আর কাক দুটোকে মুড়ি খেতে দিচ্ছে। হঠাৎ দেখে খুব সুন্দর একটা প্রজাপতি বেলকনির কোনে বসে পাখা দুটো মেলছে আর বন্ধ করছে। কি সুন্দর নকশা করা ওর পাখা দুটো যেন রূপকথার নকশী কাঁথা। হৃদি হাত বারিয়ে ধরতে চায় ওকে কিন্তু পারে না। হৃদির খুব ইচ্ছে করে ওকে ধরতে। হঠাৎ প্রজাপতি উড়ে দিয়ে হৃদিদের বিল্ডিংয়ের নিচের ঘাসে বসে।
হৃদির মন বলে ওখানে গেলে ঠিকই সে ধরতে পারবে প্রজাপতিটা তাই সে কাউকে কিছু না বলে ঘর ছেড়ে নিচে নেমে যায়। হৃদি সেই ঘাসের কাছে এগিয়ে গেল ওকে ধরতে, সেও ফুড়–ত করে উড়ে অন্য জায়গায় চলে গেল। হৃদিও ছোটে ওর পিছু পিছু। এভাবে অনেকক্ষণ সে দৌঁড়াতে থাকে প্রজাপতির পিছু পিছু, ছুটতে ছুটতে প্রজাপতিটা হারিয়ে ফেলে হৃদি। গাড়ির হর্নে চমকে ওঠে হৃদি। একি সে কোথায় দাঁড়িয়ে আছে! চারিদিকে তাকায় হৃদি। সব অচেনা, এ কোথায় এসে পড়েছে সে! প্রজাপতির পিছু ছুটতে ছুটতে কোথায় কোন গলিতে এসেছে হৃদি বুঝতে পারে না। এখন কিভাবে ঘরে ফিরবে সে? কোথায় পাবে আব্বু-আম্মুকে? দু’চোখ ফেটে-কান্না আসে ওর। পাগলের মতো দৌঁড় দেয়। হঠাৎ একটা গাড়ি এসে ... আহ্। জোড়ে কেঁদে ফেলে হৃদি।
কারো মমতা ভরা ডাক কানে আসে হৃদির। চোখ খুলে দেখে সে ঘরের মেঝেতে, মা-বাবা পাশে বসে আছে। মা বলছে খাট থেকে পরে গেছ মা? খুব ব্যথা পেয়েছ?
তাহলে এতক্ষণ কি স্বপ্ন দেখছিল হৃদি? উহ্... স্বপ্নের শেষটা কি ভয়ঙ্করই না ছিল। না, স্বপ্নেও হৃদি কখনো একা ঘরের বাহিরে যাবে না।
No comments