ফ্রি লাভ গুরু, অবাধ যৌনতার এক রাজত্ব: বৃটিশ মিডিয়ার খবর
ভারতের
পুনে। সেখান থেকে বিশ্বজুড়ে এক সংস্কৃতি গড়ে তুলেছিলেন ‘ফ্রি লাভ গুরু’
বলে পরিচিত ভগবান শ্রী রজনীশ। তার ডেরা যেন এক মাতালখানা। সেখানে নানা রকম
নির্যাতন হতো। সহিংসতা হতো। এসব করে তিনি অবাধ যৌনতার এক সংস্কৃতি গড়ে
তুলেছিলেন। এই সংস্কৃতির অংশ হিসেবে তিনি নারী ও শিশুদের ওপর যৌন নির্যাতন
করেছেন। অন্যদিকে নিজে গড়ে তুলেছিলেন বিশাল বিত্তবৈভব। এ জন্য তাকে বলা হয়
‘গুচি গুরু’ও।
তার আছে ডায়মন্ডের ঘড়ি। আরও আছে বিস্ময়কর বিলাসবহুল রোলস-রয়সে গাড়ি। ১৪ বছর ধরে তার ভক্ত ছিলেন বৃটিশ সাংবাদিক সুভুতি আনন্দ ওয়েট। যার জন্মগত নাম ছিল পিটার ওয়েট। তিনি এই ভগবানের পাল্লায় পড়েছিলেন। বার্মিংহাম মেইলে তিনি রাজনৈতিক সাংবাদিকতা শুরু করেছিলেন। এক পর্যায়ে তিনি ভারতে ভগবানের জালে ধরা পড়েন। ১৯৮১ সালে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের অরিগন রাজ্যে তার ধ্যানধারণাকে অনুসরণ করা শুরু করেন। সেখানে ভক্তরা করিডোরের মাঝে অবাধে যৌন সম্পর্ক স্থাপন করছিলেন মেডিটেশন সেশনে। ৬ পর্বের নেটফ্লিক্স ডকুমেন্টারি ‘ওয়াইল্ড ওয়াইল্ট কান্ট্রি’তে এসব তুলে ধরা হয়েছে। আর সুভুতি তার অভিজ্ঞতার কথা বর্ণনা করেছেন একটি বইয়ে। এ খবর দিয়ে ছবিসহ বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে বৃটিশ একটি ট্যাবলয়েড পত্রিকার অনলাইন সংস্কার।
সুভুটি আনন্দ ওয়েটের বয়স এখন ৭৩ বছর। তিনি স্বীকার করেন ওই গুরু ভগবান যেসব মেথড বা পদ্ধতি ব্যবহার করতেন তা বিপদজনক। এটা হতে পারে প্ররোচণা সৃষ্টিকারী। প্রচুর প্রচারণা পাওয়া। ভগবান তাদেরকে বলতেন, বেশি ভাগ মানুষ তোমাকে ঘৃণা করবে। কেউ কেউ তোমাকে ভালবাসবে। এটাই ঠিক।
ভগবান রজনীশের এই মিশনে হাজার হাজার ভক্ত। তাদেরকে ব্যবহার করে তিনি সম্পদের পাহাড় গড়ে তুলেছিলেন। একবার ভারতে তার ঘাঁটি পরিদর্শন করেন মোটাউন কিংবদন্তি ডায়ানা রস। আর একবার এই গুরুর কাছে একটি প্রশ্ন পাঠিয়েছিলেন প্রিন্স চার্লস। অর্থাৎ তার ভক্তকুল ছিলেন অনেক উঁচু মাপের। বৃটিশ ওই পত্রিকাটি লিখেছে, এই সংস্কৃতির নিচেই ছিল অন্ধকার। সেখানে নারী ও শিশুদের ওপর যৌন নির্যাতনের অভিযোগ আছে। এমনকি ৮ বছর বয়সী শিশুর ওপরও এমন নির্যাতন করা হতো। যুক্তরাষ্ট্রের অরিগনে ভগবান রজনীশের উচ্চাভিলাষী পরিকল্পনার বিরুদ্ধে কেউ কোনো কথা বললে তার বিরুদ্ধে সহিংস হয়ে উঠতেন তারই সেনাপতি হিসেবে পরিচিত মা আনন্দ শীলা। এর মধ্যে একবার পাবলিক প্রসিকিউটর চার্লস টার্নারকে হত্যা চেষ্টার ষড়যন্ত্রের অভিযোগ আছে। কাউন্টি পরিকল্পনাকারীর অফিসে একবার একটি বিমান বিধ্বস্ত করে ফেলার পরিকল্পনা ছিল। সালাদ বার-এ সালমোনেলা ব্যাকটেরিয়া সংক্রমিত করে স্থানীয় প্রায় ৭৫০ জনের ওপর বিষ প্রয়োগ করা হয়েছিল। বোমা তৈরির চেষ্টাও ব্যর্থ হয়েছে। তবে এতে কেউ মারা যায়নি যে, এটাকে ‘অলৌকিক’ বলে মন্তব্য সুভুতি’র।
সত্তরের দশকের মধ্যভাগে পার্লামেন্টারি রিপোর্টার হিসেবে কাজ করছিলেন সুভুতি। ওই সময় তিনি প্রথম ভগবান রজনীশের নাম শোনেন। তার সম্পর্কে তিনি সন্দিহান ছিলেন। অবশেষে লন্ডনে একটি মেডিটেশন অনুষ্ঠানে যোগ দেন। সেখানে একজন ভক্তের সঙ্গে তিনি চমৎকার এক যৌন সম্পর্ক স্থাপন করেন। মনের ভিতরকার সব কিছুকে বের করে দিতে এখানে কখনো কখনো নগ্ন হয়ে ভিতরকে পরিষ্কার করে দিতে হতো। সেখানকার পরিস্থিতি বর্ণনা করে সুভুতি বলেছেন, প্রত্যেকেই গোঙরাচ্ছিল। চিৎকার করছিল। মনে হচ্ছিল যেন এটা একটি পাগলাগারদ। প্রথমবার সেখানে যৌন সম্পর্ক স্থাপনের পর আমি ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম।
এরপর সুভুতির ওই মেয়ে বন্ধু ভারতে ভগবান রজনীশের ডেরায় ফেরেন। সুভুতি বলেন, এর আগে আমার জীবনের সবচেয়ে আনন্দঘন যৌন জীবন উপভোগ করেছি তার সঙ্গে। আমি অতোটা পর্নোগ্রাফিক হতে চাইনি। কিন্তু আমাদের ওই সম্পর্ক অনেক গভীরের ছিল।
এরপর ১৯৭৬ সালে পুনেতে ভগবান রজনীশের সঙ্গে সাক্ষাত করতে ভারত আসেন সুভুতি। এই আশ্রমের বেশির ভাগ স্টাফ হলেন বৃটিশ। ১৯৬৮ সালে লেখা তার বই ‘ফ্রম সেক্স টু সুপারকনসাসনেশ’-এর সঙ্গে এর খুব বেশি মিল পেলেন। সুভুতি বলেন, এটা ছিল একেবারে ফ্রি লাভ। ওই আশ্রম ছিল ‘জ্বালানি ফুরানোর জন্য একটি প্রেসার কুকার’। সেখানে আপনাকে কেউ আলিঙ্গন করলেন, আর তাতে যদি আপনার মধ্যে শক্তি সঞ্চার হয়, আপনি যদি উত্তেজিত হন, তাহলে আপনি একটি রুমে চলে যেতে পারেন। সেখানে গড়তে পারেন শারীরিক সম্পর্ক। ওই আশ্রমের ভিতর দিয়ে যদি রাতে হেঁটে যান তাহলে এমন সবই শুনতে পাবেন আপনার চারপাশে।
(চলমান)
তার আছে ডায়মন্ডের ঘড়ি। আরও আছে বিস্ময়কর বিলাসবহুল রোলস-রয়সে গাড়ি। ১৪ বছর ধরে তার ভক্ত ছিলেন বৃটিশ সাংবাদিক সুভুতি আনন্দ ওয়েট। যার জন্মগত নাম ছিল পিটার ওয়েট। তিনি এই ভগবানের পাল্লায় পড়েছিলেন। বার্মিংহাম মেইলে তিনি রাজনৈতিক সাংবাদিকতা শুরু করেছিলেন। এক পর্যায়ে তিনি ভারতে ভগবানের জালে ধরা পড়েন। ১৯৮১ সালে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের অরিগন রাজ্যে তার ধ্যানধারণাকে অনুসরণ করা শুরু করেন। সেখানে ভক্তরা করিডোরের মাঝে অবাধে যৌন সম্পর্ক স্থাপন করছিলেন মেডিটেশন সেশনে। ৬ পর্বের নেটফ্লিক্স ডকুমেন্টারি ‘ওয়াইল্ড ওয়াইল্ট কান্ট্রি’তে এসব তুলে ধরা হয়েছে। আর সুভুতি তার অভিজ্ঞতার কথা বর্ণনা করেছেন একটি বইয়ে। এ খবর দিয়ে ছবিসহ বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে বৃটিশ একটি ট্যাবলয়েড পত্রিকার অনলাইন সংস্কার।
সুভুটি আনন্দ ওয়েটের বয়স এখন ৭৩ বছর। তিনি স্বীকার করেন ওই গুরু ভগবান যেসব মেথড বা পদ্ধতি ব্যবহার করতেন তা বিপদজনক। এটা হতে পারে প্ররোচণা সৃষ্টিকারী। প্রচুর প্রচারণা পাওয়া। ভগবান তাদেরকে বলতেন, বেশি ভাগ মানুষ তোমাকে ঘৃণা করবে। কেউ কেউ তোমাকে ভালবাসবে। এটাই ঠিক।
ভগবান রজনীশের এই মিশনে হাজার হাজার ভক্ত। তাদেরকে ব্যবহার করে তিনি সম্পদের পাহাড় গড়ে তুলেছিলেন। একবার ভারতে তার ঘাঁটি পরিদর্শন করেন মোটাউন কিংবদন্তি ডায়ানা রস। আর একবার এই গুরুর কাছে একটি প্রশ্ন পাঠিয়েছিলেন প্রিন্স চার্লস। অর্থাৎ তার ভক্তকুল ছিলেন অনেক উঁচু মাপের। বৃটিশ ওই পত্রিকাটি লিখেছে, এই সংস্কৃতির নিচেই ছিল অন্ধকার। সেখানে নারী ও শিশুদের ওপর যৌন নির্যাতনের অভিযোগ আছে। এমনকি ৮ বছর বয়সী শিশুর ওপরও এমন নির্যাতন করা হতো। যুক্তরাষ্ট্রের অরিগনে ভগবান রজনীশের উচ্চাভিলাষী পরিকল্পনার বিরুদ্ধে কেউ কোনো কথা বললে তার বিরুদ্ধে সহিংস হয়ে উঠতেন তারই সেনাপতি হিসেবে পরিচিত মা আনন্দ শীলা। এর মধ্যে একবার পাবলিক প্রসিকিউটর চার্লস টার্নারকে হত্যা চেষ্টার ষড়যন্ত্রের অভিযোগ আছে। কাউন্টি পরিকল্পনাকারীর অফিসে একবার একটি বিমান বিধ্বস্ত করে ফেলার পরিকল্পনা ছিল। সালাদ বার-এ সালমোনেলা ব্যাকটেরিয়া সংক্রমিত করে স্থানীয় প্রায় ৭৫০ জনের ওপর বিষ প্রয়োগ করা হয়েছিল। বোমা তৈরির চেষ্টাও ব্যর্থ হয়েছে। তবে এতে কেউ মারা যায়নি যে, এটাকে ‘অলৌকিক’ বলে মন্তব্য সুভুতি’র।
সত্তরের দশকের মধ্যভাগে পার্লামেন্টারি রিপোর্টার হিসেবে কাজ করছিলেন সুভুতি। ওই সময় তিনি প্রথম ভগবান রজনীশের নাম শোনেন। তার সম্পর্কে তিনি সন্দিহান ছিলেন। অবশেষে লন্ডনে একটি মেডিটেশন অনুষ্ঠানে যোগ দেন। সেখানে একজন ভক্তের সঙ্গে তিনি চমৎকার এক যৌন সম্পর্ক স্থাপন করেন। মনের ভিতরকার সব কিছুকে বের করে দিতে এখানে কখনো কখনো নগ্ন হয়ে ভিতরকে পরিষ্কার করে দিতে হতো। সেখানকার পরিস্থিতি বর্ণনা করে সুভুতি বলেছেন, প্রত্যেকেই গোঙরাচ্ছিল। চিৎকার করছিল। মনে হচ্ছিল যেন এটা একটি পাগলাগারদ। প্রথমবার সেখানে যৌন সম্পর্ক স্থাপনের পর আমি ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম।
এরপর সুভুতির ওই মেয়ে বন্ধু ভারতে ভগবান রজনীশের ডেরায় ফেরেন। সুভুতি বলেন, এর আগে আমার জীবনের সবচেয়ে আনন্দঘন যৌন জীবন উপভোগ করেছি তার সঙ্গে। আমি অতোটা পর্নোগ্রাফিক হতে চাইনি। কিন্তু আমাদের ওই সম্পর্ক অনেক গভীরের ছিল।
এরপর ১৯৭৬ সালে পুনেতে ভগবান রজনীশের সঙ্গে সাক্ষাত করতে ভারত আসেন সুভুতি। এই আশ্রমের বেশির ভাগ স্টাফ হলেন বৃটিশ। ১৯৬৮ সালে লেখা তার বই ‘ফ্রম সেক্স টু সুপারকনসাসনেশ’-এর সঙ্গে এর খুব বেশি মিল পেলেন। সুভুতি বলেন, এটা ছিল একেবারে ফ্রি লাভ। ওই আশ্রম ছিল ‘জ্বালানি ফুরানোর জন্য একটি প্রেসার কুকার’। সেখানে আপনাকে কেউ আলিঙ্গন করলেন, আর তাতে যদি আপনার মধ্যে শক্তি সঞ্চার হয়, আপনি যদি উত্তেজিত হন, তাহলে আপনি একটি রুমে চলে যেতে পারেন। সেখানে গড়তে পারেন শারীরিক সম্পর্ক। ওই আশ্রমের ভিতর দিয়ে যদি রাতে হেঁটে যান তাহলে এমন সবই শুনতে পাবেন আপনার চারপাশে।
(চলমান)
No comments