শিগগিরই রাষ্ট্রহীন হতে চলেছে ভারতের উত্তরপূর্বাঞ্চলের চার মিলিয়ন মানুষ
ভারতের প্রায় চার মিলিয়ন মানুষ রাষ্ট্রহীন হয়ে পড়বে,
যেটা বিশ্বের সবচেয়ে বড় রাষ্ট্রহীন মানুষের সমস্যায় রূপ নিতে চলেছে।
এই ঘটনা ঘটতে চলেছে ভারতের উত্তরপূর্বাঞ্চলীয় আসাম রাজ্যে। বাংলাদেশ সীমান্তের কাছাকাছি কিছুটা দরিদ্র এলাকা এটা।
যাদের নাগরিকত্ব বাতিল হতে চলেছে এদের একটা বড় অংশের জন্ম ভারতেই হয়েছে, এবং এতদিন পর্যন্ত তারা সেখানে মৌলিক অধিকারের পাশাপাশি নির্বাচনে ভোট দেয়ার অধিকারও ভোগ করে এসেছেন।
সরকার তাদের হিন্দু জাতীয়তাবাদী এজেন্ডা বাস্তবায়ন প্রচেষ্টা এগিয়ে নেয়ায় সেখানে অভিবাসী অনুসন্ধান শুরু হয়েছে।
যখন আমরা এই লেখা লিখছি, তখন রাষ্ট্রীয় কর্তৃপক্ষ সেখানে ফরেনার্স ট্রাইব্যুনালের সংখ্যা বাড়াচ্ছে এবং বন্দিশিবির নির্মাণ করছে।
প্রতিবেশী বাংলাদেশ থেকে আসা অভিবাসীরা দীর্ঘদিন ধরে এই অঞ্চলে একটা ইস্যু হিসেবে চলে আসছে। এই অভিবাসীদের এক-তৃতীয়াংশই হলো মুসলিম।
সত্তরের দশকের শুরুর দিকে বাংলাদেশ যখন পাকিস্তানের বিরুদ্ধে স্বাধীনতার জন্য লড়ছিল, তখন থেকেই সীমান্তে পাড়ি দিয়ে অভিবাসীরা এখানে আসা শুরু করে।
আশির দশকের মাঝামাঝি, এ ব্যাপারে চুক্তি হয়েছিল যে, ১৯৭১ সাল থেকে শুরু করে পরে যারা কোন ধরনের কাগজপত্র ছাড়া এখানে এসেছে – তারা ভারতীয় নাগরিক হিসেবে গণ্য হবে না।
তখন থেকেই ভারতীয় কর্মকর্তারা এটা নির্ণয় করার চেষ্টা করছেন যে, আসামের কোন কোন অধিবাসীদের এই মর্মে কাগজপত্র রয়েছে যে তারা ওই সময়ের আগে ভারতে এসেছিল।
বিগত কয়েক বছরে, এই ধরনের ১০০০ মানুষকে আটক রাখার জন্য বন্দিশিবির চালু করা হয়েছে।
আসামের ক্ষমতাসীন পার্টি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির জাতীয়তাবাদী ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) জোর দিয়ে বলে আসছে যে, অবৈধ বাঙালি অভিবাসীদের নাগরিকত্ব বাতিল করে তাদেরকে ফেরত পাঠানো হবে।
গত বছর তার একটি খসড়া তালিকা প্রকাশ করে যেখানে আসামের বৈধ অধিবাসীদের তালিকাভুক্ত করা হয়। তালিকায় যাদের নাম আসেনি, তাদের সংখ্যা প্রায় চার মিলিয়নের মতো, যাদের অধিকাংশই মুসলিম। পরে চলতি মাসের ৩১ তারিখ পর্যন্ত তাদের সময় দেয়া হয়, এবং এ সময়ের মধ্যে তাদের নিজেদের নাগরিকত্ব প্রমাণ করতে হবে।
কিন্তু তারা যদি তালিকা থেকে বাদ পড়ে, তাহলে বাংলাদেশ তাদেরকে ফেরত নেবে না। ফলে অভিবাসীরা কার্যত রাষ্ট্রহীন হয়ে পড়বে। ভোটাধিকার থাকবে না তাদের, সমাজকল্যাণের সুবিধা পাবে না তারা, এবং সম্পদের মালিকানা বা সেখানে বসবাসের কোন অধিকার থাকবে না তাদের।
অন্যভাবে বললে, ভারতে চার মিলিয়ন মানুষের আক্ষরিক অর্থে যাওয়ার মতো কোন জায়গা থাকবে না। এটা আগামী সপ্তাহ থেকেই শুরু হবে।
ভারতের মুসলিম সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মধ্যে আতঙ্ক ক্রমেই বাড়ছে। সবজায়গায় এই ধারণা ছড়িয়ে পড়েছে যে, ভারতের মুসলিমদের বিরুদ্ধে মোদির সরকারের বৈষম্যের এটা শুরু মাত্র।
যুক্তরাষ্ট্র-ভিত্তিক সংগঠন জেনোসাইড ওয়াচ – যারা সারা বিশ্বে গণহত্যার আশঙ্কা ও সেটা প্রতিরোধের জন্য সতর্কবার্তা দিয়ে থাকে – তারা সম্প্রতি আসাম রাজ্য নিয়ে সতর্কতা জানিয়েছে।
জেনোসাইড ওয়াচ এক বিবৃতিতে বলেছে, “বহু দশকের বৈষম্যের অংশ হিসেবে আসামের মুসলিমদের নাগরিক তালিকা থেকে বাদ দেয়া হতে পারে। নির্দিষ্ট কোন গ্রুপকে নাগরিকত্ব থেকে বাদ দেয়ার জন্য তাদেরকে অমানবিকভাবে ‘বিদেশী’ আখ্যা দেয়া হচ্ছে, এবং এর মাধ্যমে তারা মৌলিক, নাগরিক ও মানবাধিকার থেকে বঞ্চিত হবে”।
এই সঙ্কটকে প্রায়ই মিডিয়ায় মিয়ানমারের রোহিঙ্গা সঙ্কটের সাথে তুলনা করা হয়, যেখানে হাজার হাজার নির্যাতিত সংখ্যালঘু মুসলিম জাতিগত নিধন অভিযান থেকে বাঁচার জন্য ২০১৭ সালে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে।
ভারত এরই মধ্যে প্রায় ৪০,০০০ রোহিঙ্গা মুসলিমকে তাদের বিভিন্ন শহর থেকে বিতাড়ন শুরু করেছে, যাদেরকে নয়াদিল্লী নিরাপত্তা হুমকি মনে করে।
এই ঘটনা ঘটতে চলেছে ভারতের উত্তরপূর্বাঞ্চলীয় আসাম রাজ্যে। বাংলাদেশ সীমান্তের কাছাকাছি কিছুটা দরিদ্র এলাকা এটা।
যাদের নাগরিকত্ব বাতিল হতে চলেছে এদের একটা বড় অংশের জন্ম ভারতেই হয়েছে, এবং এতদিন পর্যন্ত তারা সেখানে মৌলিক অধিকারের পাশাপাশি নির্বাচনে ভোট দেয়ার অধিকারও ভোগ করে এসেছেন।
সরকার তাদের হিন্দু জাতীয়তাবাদী এজেন্ডা বাস্তবায়ন প্রচেষ্টা এগিয়ে নেয়ায় সেখানে অভিবাসী অনুসন্ধান শুরু হয়েছে।
যখন আমরা এই লেখা লিখছি, তখন রাষ্ট্রীয় কর্তৃপক্ষ সেখানে ফরেনার্স ট্রাইব্যুনালের সংখ্যা বাড়াচ্ছে এবং বন্দিশিবির নির্মাণ করছে।
প্রতিবেশী বাংলাদেশ থেকে আসা অভিবাসীরা দীর্ঘদিন ধরে এই অঞ্চলে একটা ইস্যু হিসেবে চলে আসছে। এই অভিবাসীদের এক-তৃতীয়াংশই হলো মুসলিম।
সত্তরের দশকের শুরুর দিকে বাংলাদেশ যখন পাকিস্তানের বিরুদ্ধে স্বাধীনতার জন্য লড়ছিল, তখন থেকেই সীমান্তে পাড়ি দিয়ে অভিবাসীরা এখানে আসা শুরু করে।
আশির দশকের মাঝামাঝি, এ ব্যাপারে চুক্তি হয়েছিল যে, ১৯৭১ সাল থেকে শুরু করে পরে যারা কোন ধরনের কাগজপত্র ছাড়া এখানে এসেছে – তারা ভারতীয় নাগরিক হিসেবে গণ্য হবে না।
তখন থেকেই ভারতীয় কর্মকর্তারা এটা নির্ণয় করার চেষ্টা করছেন যে, আসামের কোন কোন অধিবাসীদের এই মর্মে কাগজপত্র রয়েছে যে তারা ওই সময়ের আগে ভারতে এসেছিল।
বিগত কয়েক বছরে, এই ধরনের ১০০০ মানুষকে আটক রাখার জন্য বন্দিশিবির চালু করা হয়েছে।
আসামের ক্ষমতাসীন পার্টি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির জাতীয়তাবাদী ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) জোর দিয়ে বলে আসছে যে, অবৈধ বাঙালি অভিবাসীদের নাগরিকত্ব বাতিল করে তাদেরকে ফেরত পাঠানো হবে।
গত বছর তার একটি খসড়া তালিকা প্রকাশ করে যেখানে আসামের বৈধ অধিবাসীদের তালিকাভুক্ত করা হয়। তালিকায় যাদের নাম আসেনি, তাদের সংখ্যা প্রায় চার মিলিয়নের মতো, যাদের অধিকাংশই মুসলিম। পরে চলতি মাসের ৩১ তারিখ পর্যন্ত তাদের সময় দেয়া হয়, এবং এ সময়ের মধ্যে তাদের নিজেদের নাগরিকত্ব প্রমাণ করতে হবে।
কিন্তু তারা যদি তালিকা থেকে বাদ পড়ে, তাহলে বাংলাদেশ তাদেরকে ফেরত নেবে না। ফলে অভিবাসীরা কার্যত রাষ্ট্রহীন হয়ে পড়বে। ভোটাধিকার থাকবে না তাদের, সমাজকল্যাণের সুবিধা পাবে না তারা, এবং সম্পদের মালিকানা বা সেখানে বসবাসের কোন অধিকার থাকবে না তাদের।
অন্যভাবে বললে, ভারতে চার মিলিয়ন মানুষের আক্ষরিক অর্থে যাওয়ার মতো কোন জায়গা থাকবে না। এটা আগামী সপ্তাহ থেকেই শুরু হবে।
ভারতের মুসলিম সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মধ্যে আতঙ্ক ক্রমেই বাড়ছে। সবজায়গায় এই ধারণা ছড়িয়ে পড়েছে যে, ভারতের মুসলিমদের বিরুদ্ধে মোদির সরকারের বৈষম্যের এটা শুরু মাত্র।
যুক্তরাষ্ট্র-ভিত্তিক সংগঠন জেনোসাইড ওয়াচ – যারা সারা বিশ্বে গণহত্যার আশঙ্কা ও সেটা প্রতিরোধের জন্য সতর্কবার্তা দিয়ে থাকে – তারা সম্প্রতি আসাম রাজ্য নিয়ে সতর্কতা জানিয়েছে।
জেনোসাইড ওয়াচ এক বিবৃতিতে বলেছে, “বহু দশকের বৈষম্যের অংশ হিসেবে আসামের মুসলিমদের নাগরিক তালিকা থেকে বাদ দেয়া হতে পারে। নির্দিষ্ট কোন গ্রুপকে নাগরিকত্ব থেকে বাদ দেয়ার জন্য তাদেরকে অমানবিকভাবে ‘বিদেশী’ আখ্যা দেয়া হচ্ছে, এবং এর মাধ্যমে তারা মৌলিক, নাগরিক ও মানবাধিকার থেকে বঞ্চিত হবে”।
এই সঙ্কটকে প্রায়ই মিডিয়ায় মিয়ানমারের রোহিঙ্গা সঙ্কটের সাথে তুলনা করা হয়, যেখানে হাজার হাজার নির্যাতিত সংখ্যালঘু মুসলিম জাতিগত নিধন অভিযান থেকে বাঁচার জন্য ২০১৭ সালে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে।
ভারত এরই মধ্যে প্রায় ৪০,০০০ রোহিঙ্গা মুসলিমকে তাদের বিভিন্ন শহর থেকে বিতাড়ন শুরু করেছে, যাদেরকে নয়াদিল্লী নিরাপত্তা হুমকি মনে করে।
No comments