নিশ্চিত গন্তব্যে এগিয়ে যাচ্ছে আফগান দাবার বোর্ড by সালমান রাফি শেখ
যদিও
কিছু মূলধারার পশ্চিমা মিডিয়া এবং কিছু নেতৃস্থানীয় রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব
যুক্তরাষ্ট্র ও তালেবানদের মধ্যকার প্রায় চূড়ান্ত চুক্তি নিয়ে এখনও সন্দেহ
পোষণ করে যাচ্ছেন, তবে দোহা-৯ আলোচনা এখনও চলছে এবং এখান থেকে কিছু
অসামান্য গুরুত্বপূর্ণ ফলাফলের আশা করা হচ্ছে, যেটা শুধু মার্কিন সেনা
প্রত্যাহার নয়, বরং আফগানিস্তানের ভবিষ্যতের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। বিভিন্ন
পক্ষ এরই মধ্যে যুদ্ধ শেষ করার জন্য সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সেটা আরও স্পষ্ট
হয়েছে আফগানিস্তানে ইসলামিক স্টেটের সাম্প্রতিক হামলার পর। হামলায় কয়েক ডজন
মানুষ মারা গেলেও সেটা আলোচনার উপর কোন প্রভাব ফেলতে পারেনি, যদিও পরে
‘ইসলামিক স্টেট কর্তৃক’ দেশের কর্তৃত্ব নেয়ার বিষয়ে আশঙ্কা ব্যক্ত করা
হয়েছে।
চুক্তিটা যে এখন চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ২০ আগস্ট হোয়াইট হাউজে এক সংবাদ সম্মেলনে সেটা জানিয়েছেন। ট্রাম্প যেভাবে আত্মবিশ্বাসের সাথে জানিয়েছেন যে আফগানিস্তানে সব কিছু সঠিকভাবেই চলছে, তাতে বোঝা গেছে যে তিনি আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের ব্যাপারে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। বেশ কিছুকাল ধরেই উদ্দেশ্যটা স্পষ্ট হলেও, আরও কিছু বিষয় স্পষ্ট করেছেন ট্রাম্প, তাতে একটা ধারণা পাওয়া গেছে যে ভবিষ্যতের চেহারাটা কেমন হতে পারে।
এ সবের মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো এই ধারণা যে, এতদিন যে ‘আফগান নেতৃত্বাধীন ও আফগান কর্তৃত্বাধীন’ সংলাপের কথা বলা হয়েছে, সে ধারণা এখন মৃত। তালেবানরা অব্যাহতভাবে আফগান সরকারের সাথে আলোচনার ব্যাপারে অস্বীকৃতি জানিয়েছে, যাদেরকে তারা অবৈধ মনে করে এবং যতটুকু বা বৈধতা ছিল অব্যাহতভাবে নির্বাচন স্থগিত করার কারণে সেটাও তারা হারিয়েছে।
ট্রাম্প বলেছেন, “তালেবানরা আফগান সরকারকে শ্রদ্ধা করে না। আফগান সরকারের জন্য তাদের কোন শ্রদ্ধা নেই। আমি সেটা বুঝি এবং আমি সেটা জানি। এবং তারা দীর্ঘ সময় ধরে ঠিক সেভাবে একসাথে থাকতে পারেনি”।
এমনকি তিনি যদিও তালেবান এবং আফগান সরকারের মধ্যে যোগাযোগ না থাকার কথা বলেছেন, তবে তিনি কোনভাবেই উল্লেখ করেননি যে, তারা বা অন্য কোন দেশ – পাকিস্তান ও কাতার – কোনভাবে তালেবানদের চাপ দিচ্ছে বা চাপ দেয়ার ইচ্ছে রয়েছে যাতে তারা আফগান সরকারের সাথে আলোচনায় অংশ নেয়। এটা পরিষ্কার হয়ে গেছে যে যুক্তরাষ্ট্র আফগানিস্তানে ‘যথেষ্ট’ সময় পার করেছে এবং তালেবানরা যদি আফগানিস্তানের রাজনীতিতে প্রাধান্য বিস্তার করে – যেটা তারা করবে – সে অবস্থাতেই তালেবানদের রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে তাদের সাথে বিনিময়ে যুক্তরাষ্ট্রের কোন সমস্যা নেই।
অন্যদিকে, মার্কিন প্রেসিডেন্টের এই আত্মবিশ্বাস জন্মেছে যে, তালেবানরা তাদের লড়াই অব্যাহত রাখবে না এবং তারা বরং এটা নিশ্চিত করার চেষ্টা করবে যাতে আফগানিস্তান প্রাক ৯/১১ পরিস্থিতিতে ফিরে না যায়। ট্রাম্প বলেছেন, “আর তালেবানরা যদি সত্যিই সঠিক হয় – যেটা তারা বলছে, তাহলে তারা সেটা ঘটতে দেবে না। কারণ তারা সহজেই সেটা করতে পারবে”।
এটা শুনতে অদ্ভুত শোনালেও এই সম্ভাবনাটা বাড়ছে যে, ইসলামিক স্টেট যাতে নিয়ন্ত্রণ নিতে না পারে, সেটা ঠেকানোর ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্র তালেবানকে সহযোগিতাও করতে পারে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট যদিও সরাসরি সে রকম কোন ইঙ্গিত দেননি, তবে সেনা প্রত্যাহার পরবর্তীকালে আফগানিস্তানে শক্তিশালী গোয়েন্দা উপস্থিতি রাখার কথা তিনি বলেছেন, যারা তালেবানদের উপর নজরদারীর সাথে সাথে ইসলামিক স্টেটের শক্তিবৃদ্ধির উপরও নজর রাখবে। আর যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বাস করে যে তালেবানরা এই আইএসকে প্রতিহত করতে পারবে।
একটা পর্যায়ে এবং একটা জায়গাতে সে কারণে একটা অভিন্ন শত্রু আইএসের বিরুদ্ধে তাদের লড়াই একটা যৌথ প্রচেষ্টায় রূপ নিতে পারে, যেখানে মার্কিন গোয়েন্দারা তালেবানদের সহযোগিতা করবে, যারা মূলত অধিকাংশ যুদ্ধ পরিচালনা করবে।
অন্যভাবে বললে, তালেবানদের দেয়ার মাধ্যমে এবং ঘানি প্রশাসনকে অবজ্ঞা করার মাধ্যমে একটা চুক্তি তাদের স্বার্থ রক্ষা করবে, যুক্তরাষ্ট্র তাদেরকে সহায়তা দেয়ার এবং দেশে তাদেরকে নতুন মিত্র বানানোর আশা করছে, যদিও এই মিত্রতার মধ্যে গভীর সমন্বয়ের অভাব থেকেই যাবে।
সেনা প্রত্যাহার-পরবর্তীকালেও যুক্তরাষ্ট্র ও তালেবানদের মধ্যে একটা সহযোগিতার সম্পর্ক থাকার অর্থ হলো দুই পক্ষের মধ্যে এই সম্পর্ক বজায় রাখার ক্ষেত্রে পাকিস্তানের ভূমিকাও এখানে সক্রিয় থাকবে, যে দুই পক্ষ দুই দশক ধরে একে অন্যের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছে। এর আরেকটি অর্থ হলো আফগানিস্তান নীতির ক্ষেত্রে পাকিস্তানের উপর যুক্তরাষ্ট্রের নির্ভরতাও জারি থাকবে। ট্রাম্পের প্রেসিডেন্টের প্রথম দুই বছরে শীতল সম্পর্কের পর তাদের এ উপলব্ধি হয়েছে যে, পাকিস্তানের ভূমিকা এখানে গুরুত্বপূর্ণ।
যুক্তরাষ্ট্র যে হঠাৎ করে পাকিস্তানের সাথে সম্পর্ক উষ্ণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, সেটা নিজেরই একটা পরিষ্কার ইঙ্গিত যে, পরবর্তী মার্কিন নির্বাচনের আগে যুদ্ধ শেষ করার ব্যাপারে হোয়াইট হাউজ এবার অনেক সিরিয়াস।
সে কারণেই এতে অবাক হওয়ার কিছু নেই যে যুক্তরাষ্ট্র তাদের বিদ্যমান সকল উপায় ও পন্থা কাজে লাগানোর চেষ্টা করছে। এর মধ্যে তালেবানদের সাথে বন্ধুত্ব এবং ঘানি সরকারকে পরিবর্তিত স্বার্থের বেদিতে উৎসর্গ করাটাও রয়েছে, যেমন, দীর্ঘতম যুদ্ধ লড়ার পর এখন সেটা শেষ করার জন্য যাদের সাথে তারা চুক্তি করছে, গতকাল তারা ছিল ‘সন্ত্রাসী, আজ তারা ‘গেরিলা’ আর আগামীকাল তারা ‘মিত্র’ হতে চলেছে।
চুক্তিটা যে এখন চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ২০ আগস্ট হোয়াইট হাউজে এক সংবাদ সম্মেলনে সেটা জানিয়েছেন। ট্রাম্প যেভাবে আত্মবিশ্বাসের সাথে জানিয়েছেন যে আফগানিস্তানে সব কিছু সঠিকভাবেই চলছে, তাতে বোঝা গেছে যে তিনি আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের ব্যাপারে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। বেশ কিছুকাল ধরেই উদ্দেশ্যটা স্পষ্ট হলেও, আরও কিছু বিষয় স্পষ্ট করেছেন ট্রাম্প, তাতে একটা ধারণা পাওয়া গেছে যে ভবিষ্যতের চেহারাটা কেমন হতে পারে।
এ সবের মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো এই ধারণা যে, এতদিন যে ‘আফগান নেতৃত্বাধীন ও আফগান কর্তৃত্বাধীন’ সংলাপের কথা বলা হয়েছে, সে ধারণা এখন মৃত। তালেবানরা অব্যাহতভাবে আফগান সরকারের সাথে আলোচনার ব্যাপারে অস্বীকৃতি জানিয়েছে, যাদেরকে তারা অবৈধ মনে করে এবং যতটুকু বা বৈধতা ছিল অব্যাহতভাবে নির্বাচন স্থগিত করার কারণে সেটাও তারা হারিয়েছে।
ট্রাম্প বলেছেন, “তালেবানরা আফগান সরকারকে শ্রদ্ধা করে না। আফগান সরকারের জন্য তাদের কোন শ্রদ্ধা নেই। আমি সেটা বুঝি এবং আমি সেটা জানি। এবং তারা দীর্ঘ সময় ধরে ঠিক সেভাবে একসাথে থাকতে পারেনি”।
এমনকি তিনি যদিও তালেবান এবং আফগান সরকারের মধ্যে যোগাযোগ না থাকার কথা বলেছেন, তবে তিনি কোনভাবেই উল্লেখ করেননি যে, তারা বা অন্য কোন দেশ – পাকিস্তান ও কাতার – কোনভাবে তালেবানদের চাপ দিচ্ছে বা চাপ দেয়ার ইচ্ছে রয়েছে যাতে তারা আফগান সরকারের সাথে আলোচনায় অংশ নেয়। এটা পরিষ্কার হয়ে গেছে যে যুক্তরাষ্ট্র আফগানিস্তানে ‘যথেষ্ট’ সময় পার করেছে এবং তালেবানরা যদি আফগানিস্তানের রাজনীতিতে প্রাধান্য বিস্তার করে – যেটা তারা করবে – সে অবস্থাতেই তালেবানদের রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে তাদের সাথে বিনিময়ে যুক্তরাষ্ট্রের কোন সমস্যা নেই।
অন্যদিকে, মার্কিন প্রেসিডেন্টের এই আত্মবিশ্বাস জন্মেছে যে, তালেবানরা তাদের লড়াই অব্যাহত রাখবে না এবং তারা বরং এটা নিশ্চিত করার চেষ্টা করবে যাতে আফগানিস্তান প্রাক ৯/১১ পরিস্থিতিতে ফিরে না যায়। ট্রাম্প বলেছেন, “আর তালেবানরা যদি সত্যিই সঠিক হয় – যেটা তারা বলছে, তাহলে তারা সেটা ঘটতে দেবে না। কারণ তারা সহজেই সেটা করতে পারবে”।
এটা শুনতে অদ্ভুত শোনালেও এই সম্ভাবনাটা বাড়ছে যে, ইসলামিক স্টেট যাতে নিয়ন্ত্রণ নিতে না পারে, সেটা ঠেকানোর ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্র তালেবানকে সহযোগিতাও করতে পারে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট যদিও সরাসরি সে রকম কোন ইঙ্গিত দেননি, তবে সেনা প্রত্যাহার পরবর্তীকালে আফগানিস্তানে শক্তিশালী গোয়েন্দা উপস্থিতি রাখার কথা তিনি বলেছেন, যারা তালেবানদের উপর নজরদারীর সাথে সাথে ইসলামিক স্টেটের শক্তিবৃদ্ধির উপরও নজর রাখবে। আর যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বাস করে যে তালেবানরা এই আইএসকে প্রতিহত করতে পারবে।
একটা পর্যায়ে এবং একটা জায়গাতে সে কারণে একটা অভিন্ন শত্রু আইএসের বিরুদ্ধে তাদের লড়াই একটা যৌথ প্রচেষ্টায় রূপ নিতে পারে, যেখানে মার্কিন গোয়েন্দারা তালেবানদের সহযোগিতা করবে, যারা মূলত অধিকাংশ যুদ্ধ পরিচালনা করবে।
অন্যভাবে বললে, তালেবানদের দেয়ার মাধ্যমে এবং ঘানি প্রশাসনকে অবজ্ঞা করার মাধ্যমে একটা চুক্তি তাদের স্বার্থ রক্ষা করবে, যুক্তরাষ্ট্র তাদেরকে সহায়তা দেয়ার এবং দেশে তাদেরকে নতুন মিত্র বানানোর আশা করছে, যদিও এই মিত্রতার মধ্যে গভীর সমন্বয়ের অভাব থেকেই যাবে।
সেনা প্রত্যাহার-পরবর্তীকালেও যুক্তরাষ্ট্র ও তালেবানদের মধ্যে একটা সহযোগিতার সম্পর্ক থাকার অর্থ হলো দুই পক্ষের মধ্যে এই সম্পর্ক বজায় রাখার ক্ষেত্রে পাকিস্তানের ভূমিকাও এখানে সক্রিয় থাকবে, যে দুই পক্ষ দুই দশক ধরে একে অন্যের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছে। এর আরেকটি অর্থ হলো আফগানিস্তান নীতির ক্ষেত্রে পাকিস্তানের উপর যুক্তরাষ্ট্রের নির্ভরতাও জারি থাকবে। ট্রাম্পের প্রেসিডেন্টের প্রথম দুই বছরে শীতল সম্পর্কের পর তাদের এ উপলব্ধি হয়েছে যে, পাকিস্তানের ভূমিকা এখানে গুরুত্বপূর্ণ।
যুক্তরাষ্ট্র যে হঠাৎ করে পাকিস্তানের সাথে সম্পর্ক উষ্ণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, সেটা নিজেরই একটা পরিষ্কার ইঙ্গিত যে, পরবর্তী মার্কিন নির্বাচনের আগে যুদ্ধ শেষ করার ব্যাপারে হোয়াইট হাউজ এবার অনেক সিরিয়াস।
সে কারণেই এতে অবাক হওয়ার কিছু নেই যে যুক্তরাষ্ট্র তাদের বিদ্যমান সকল উপায় ও পন্থা কাজে লাগানোর চেষ্টা করছে। এর মধ্যে তালেবানদের সাথে বন্ধুত্ব এবং ঘানি সরকারকে পরিবর্তিত স্বার্থের বেদিতে উৎসর্গ করাটাও রয়েছে, যেমন, দীর্ঘতম যুদ্ধ লড়ার পর এখন সেটা শেষ করার জন্য যাদের সাথে তারা চুক্তি করছে, গতকাল তারা ছিল ‘সন্ত্রাসী, আজ তারা ‘গেরিলা’ আর আগামীকাল তারা ‘মিত্র’ হতে চলেছে।
No comments