২ টাকায় কাঁঠাল, আমের কেজি ১ টাকা! by শাহেদ মতিউর রহমান
২ টাকায় কাঁঠাল, আমের কেজি ১ টাকা! |
মাত্র
দুই টাকায় পাওয়া যায় কাঁঠাল। প্রতি কেজি আমের দামও এক টাকার বেশি নয়। রসে
ভরপুর টসটসে জাম মিলছে ৬ টাকা কেজি দরে। ভাদ্রের ফল তাল কেনা হয়েছে প্রতিটি
২ টাকায়। এমন আজগুবি আর ভুতুরে হিসেব শুধুমাত্র ঢাকার জাতীয় চিড়িয়াখানার
মৌসুমী ফলের গাছ ইজারার হিসেবেই দেখানো হয়েছে। ভাগ্যবান ইজারাদার কমদামে
চিড়িয়াখানার ফল কেনার সুযোগ পেলেও খুচরা ক্রেতাদের চিড়িয়াখানার ভিতরে কিংবা
বাইরে কিনতে হচ্ছে চড়া দামেই। নয়া দিগন্তের অনুসন্ধানে চিড়িয়াখানার এ
বছরের দুই হাজারেরও বেশি ফলের গাছ ইজারা দেয়ার অন্তরালের ঘটনায় উঠে এসেছে
ফলের মূল্যের এমন গরমিলের নানা তথ্য। ইজারাদারের কেনা ফলের দাম ও মোট ফল
গাছের হিসেবেই এই অনিয়মের তথ্য উঠে এসেছে।
দীর্ঘ ১০ বছর ধরেই চিড়িয়াখানার ভিতরের বিভিন্ন ফলগাছের ইজারার সাথে জড়িত থেকে ব্যবসা করেন নাজমুল হোসেন রনি। চিড়িয়াখানার ভেতরের মসজিদের বাম পাশের টিনের চালা একটি খুপরি ঘরে রাখা কাঁঠাল, আম, জামসহ অন্যান্য ফলের হিসাব রাখেন তিনি। এখানকার প্রতিটি গাছের সাথে তার নিবিড় সম্পর্ক। কোন গাছের ফল ভালো, কোনটি মন্দ, এছাড়া কোন গাছের ফলন কেমন- সবই তার জানা আছে। তিনি জানালেন, চিড়িয়াখানার ভিতরে কাঁঠাল গাছ আছে এক হাজার ৮ শ’, আম গাছ আছে আড়াই শ’, তাল গাছ আছে ২৮টি আর জাম গাছ আছে ২২টি।
এবছর সবগুলো ফলের গাছের ইজারা নিয়েছেন জৈনিক ব্যবসায়ী আমির হোসেন আমু। এবছর দরপত্রের মাধ্যমে সর্বোচ্চ দাম উঠেছিল তিন লাখ ৪০ হাজার টাকা। তবে পরে অবশ্য আমু সাহেব থার্ট পার্টির কাছে ইজারার লাভসহ সমুদয় অর্থ নিয়ে গেছেন। এখান ইজারাদার বাইরের কয়েকজন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী। তারা সংখ্যায় দশজন। এদের মধ্যে ম্যানেজারের দায়িত্ব পালন করছেন নাজমুল হোসেন রনি ও আবদুর রহিম।
চিড়িয়াখানার ফল সংগ্রহ ও বিক্রির সাথে সরাসরি জড়িত এমন একজন ব্যবসায়ী নাম প্রকাশ না করার শর্তে নয়া দিন্তকে জানান, ফলগাছের দাম এ বছর মোট তিন লাখ ৪০ হাজার টাকা দেয়া হলেও আমাদের হিসেব মতে শুধুমাত্র ১৮০০ কাঁঠাল গাছের জন্য মূল্য ধরা হয়েছে দুই লাখ টাকা। অর্থাৎ প্রতিটি কাঁঠাল গাছের জন্য মূল্য দেয়া হয়েছে এক শ’ ১১ টাকা। আর প্রতিটি গাছে যদি গড়ে ৫০/৫৫টি কাঁঠালও ধরা হয় তাহলে প্রতিটি কাঁঠালের দাম ইজারাদার দিয়েছেন মাত্র ২ টাকা করে।
বাগানের ২২টি জাম গাছের ফলের জন্য মূল্য ধরা হয়েছে ৮ হাজার টাকা। অর্থাৎ প্রতিটি গাছের জন্য ধরা হয়েছে গড়ে ৩৬৩ টাকা। প্রতিটি গাছে মাত্র দেড় মণ (৬০ কেজি) জামের ফলন ধরা হলে প্রতি কেজি জামের দাম দেয়া হয়েছে মাত্র ৬ টাকা ।
চিড়িয়াখানার ভিতরের আড়াই শ’ আম গাছের সমুদয় আমের মূল্য ধরা হয়েছে এক লাখ ২০ হাজার টাকা। এতে প্রতিটি আম গাছের মূল্য পড়েছে ৪৮ টাকা মাত্র। প্রতিটি গাছে গড়ে ২৪ কেজি আমের ফলন ধরা হলে প্রতি কেজি আমের দাম ইজারাদার দিয়েছেন মাত্র দুই টাকা করে।
বাগানে মোট তালগাছ আছে ২৮ টি। দাম ধরা হয়েছে ১২ হাজার টাকা। এতে প্রতি গাছের দাম পড়েছে ৪২৮ টাকা। প্রতিগাছে ২ শ’ তালের হিসেবে প্রতিটি তালের দাম ইজারাদারের জন্য পড়েছে মাত্র দুই টাকা।
ফল গাছের দরদাম নিয়েইজারাদার আমির হোসেন আমুর সাথে যোগাযোগ করা হলে নয়া দিগন্তকে তিনি জানান, যেন দামে এ বছর ইজারা নেয়া হয়েছে সেই আসল টাকা আসবে কিনা তা নিয়েই চিন্তা করছি। তিনি গাণিতিক হিসেব দিয়ে বলেন প্রতিদিন ১২ জন শ্রমিক কাজ করে ফল সংগ্রহ ও বিক্রির কাজে। তাদের দৈনিক মজুরি ৫ শ’ টাকা হলে প্রতিদিন ৬ হাজার টাকা শুধু শ্রমিকের মজুরি বাবদই ব্যয় হচ্ছে। এভাবে তিন মাস কাজ হলে আমার তো ৫ লাখ ৪০ হাজার টাকা শুধু শ্রমিকের পিছনেই ব্যয় হচ্ছে। এরপর তো আমাকে ফল বিক্রি করে লাভ করতে হবে। এছাড়া ঈদের মধ্যে অনেক দর্শনার্থী আম কাঁঠাল চুরি করে নিয়ে যায়। সব সময় তো আর পাহাড়া বসিয়ে রাখা যায় না। তাই আমি এ বছর লাভের আশা ছেড়েই দিয়েছি।
গাছের ফলের ইজারা বিষয়ে জাতীয় চিড়িয়াখানার কিউরেটর ড. এস এম নজরুল ইসলাম নয়া দিগন্তকে বলেন, এবছর অনেক গাছে ফলন কম হয়েছে। এছাড়া ঝড়ে কিংবা বৃষ্টিতেও কিছু ফল নষ্ট হয়েছে। আর আমার অফিসের ভেতরের গাছগুলো ইজারার হিসেবের বাইরে থাকে। তাই হয়তো দরদাম কম মনে হচেছ। তবে ইজারার পুরো প্রক্রিয়া স্বচ্ছতার সাথে হয়েছে বলেও দাবি করেন তিনি।
দীর্ঘ ১০ বছর ধরেই চিড়িয়াখানার ভিতরের বিভিন্ন ফলগাছের ইজারার সাথে জড়িত থেকে ব্যবসা করেন নাজমুল হোসেন রনি। চিড়িয়াখানার ভেতরের মসজিদের বাম পাশের টিনের চালা একটি খুপরি ঘরে রাখা কাঁঠাল, আম, জামসহ অন্যান্য ফলের হিসাব রাখেন তিনি। এখানকার প্রতিটি গাছের সাথে তার নিবিড় সম্পর্ক। কোন গাছের ফল ভালো, কোনটি মন্দ, এছাড়া কোন গাছের ফলন কেমন- সবই তার জানা আছে। তিনি জানালেন, চিড়িয়াখানার ভিতরে কাঁঠাল গাছ আছে এক হাজার ৮ শ’, আম গাছ আছে আড়াই শ’, তাল গাছ আছে ২৮টি আর জাম গাছ আছে ২২টি।
এবছর সবগুলো ফলের গাছের ইজারা নিয়েছেন জৈনিক ব্যবসায়ী আমির হোসেন আমু। এবছর দরপত্রের মাধ্যমে সর্বোচ্চ দাম উঠেছিল তিন লাখ ৪০ হাজার টাকা। তবে পরে অবশ্য আমু সাহেব থার্ট পার্টির কাছে ইজারার লাভসহ সমুদয় অর্থ নিয়ে গেছেন। এখান ইজারাদার বাইরের কয়েকজন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী। তারা সংখ্যায় দশজন। এদের মধ্যে ম্যানেজারের দায়িত্ব পালন করছেন নাজমুল হোসেন রনি ও আবদুর রহিম।
চিড়িয়াখানার ফল সংগ্রহ ও বিক্রির সাথে সরাসরি জড়িত এমন একজন ব্যবসায়ী নাম প্রকাশ না করার শর্তে নয়া দিন্তকে জানান, ফলগাছের দাম এ বছর মোট তিন লাখ ৪০ হাজার টাকা দেয়া হলেও আমাদের হিসেব মতে শুধুমাত্র ১৮০০ কাঁঠাল গাছের জন্য মূল্য ধরা হয়েছে দুই লাখ টাকা। অর্থাৎ প্রতিটি কাঁঠাল গাছের জন্য মূল্য দেয়া হয়েছে এক শ’ ১১ টাকা। আর প্রতিটি গাছে যদি গড়ে ৫০/৫৫টি কাঁঠালও ধরা হয় তাহলে প্রতিটি কাঁঠালের দাম ইজারাদার দিয়েছেন মাত্র ২ টাকা করে।
বাগানের ২২টি জাম গাছের ফলের জন্য মূল্য ধরা হয়েছে ৮ হাজার টাকা। অর্থাৎ প্রতিটি গাছের জন্য ধরা হয়েছে গড়ে ৩৬৩ টাকা। প্রতিটি গাছে মাত্র দেড় মণ (৬০ কেজি) জামের ফলন ধরা হলে প্রতি কেজি জামের দাম দেয়া হয়েছে মাত্র ৬ টাকা ।
চিড়িয়াখানার ভিতরের আড়াই শ’ আম গাছের সমুদয় আমের মূল্য ধরা হয়েছে এক লাখ ২০ হাজার টাকা। এতে প্রতিটি আম গাছের মূল্য পড়েছে ৪৮ টাকা মাত্র। প্রতিটি গাছে গড়ে ২৪ কেজি আমের ফলন ধরা হলে প্রতি কেজি আমের দাম ইজারাদার দিয়েছেন মাত্র দুই টাকা করে।
বাগানে মোট তালগাছ আছে ২৮ টি। দাম ধরা হয়েছে ১২ হাজার টাকা। এতে প্রতি গাছের দাম পড়েছে ৪২৮ টাকা। প্রতিগাছে ২ শ’ তালের হিসেবে প্রতিটি তালের দাম ইজারাদারের জন্য পড়েছে মাত্র দুই টাকা।
ফল গাছের দরদাম নিয়েইজারাদার আমির হোসেন আমুর সাথে যোগাযোগ করা হলে নয়া দিগন্তকে তিনি জানান, যেন দামে এ বছর ইজারা নেয়া হয়েছে সেই আসল টাকা আসবে কিনা তা নিয়েই চিন্তা করছি। তিনি গাণিতিক হিসেব দিয়ে বলেন প্রতিদিন ১২ জন শ্রমিক কাজ করে ফল সংগ্রহ ও বিক্রির কাজে। তাদের দৈনিক মজুরি ৫ শ’ টাকা হলে প্রতিদিন ৬ হাজার টাকা শুধু শ্রমিকের মজুরি বাবদই ব্যয় হচ্ছে। এভাবে তিন মাস কাজ হলে আমার তো ৫ লাখ ৪০ হাজার টাকা শুধু শ্রমিকের পিছনেই ব্যয় হচ্ছে। এরপর তো আমাকে ফল বিক্রি করে লাভ করতে হবে। এছাড়া ঈদের মধ্যে অনেক দর্শনার্থী আম কাঁঠাল চুরি করে নিয়ে যায়। সব সময় তো আর পাহাড়া বসিয়ে রাখা যায় না। তাই আমি এ বছর লাভের আশা ছেড়েই দিয়েছি।
গাছের ফলের ইজারা বিষয়ে জাতীয় চিড়িয়াখানার কিউরেটর ড. এস এম নজরুল ইসলাম নয়া দিগন্তকে বলেন, এবছর অনেক গাছে ফলন কম হয়েছে। এছাড়া ঝড়ে কিংবা বৃষ্টিতেও কিছু ফল নষ্ট হয়েছে। আর আমার অফিসের ভেতরের গাছগুলো ইজারার হিসেবের বাইরে থাকে। তাই হয়তো দরদাম কম মনে হচেছ। তবে ইজারার পুরো প্রক্রিয়া স্বচ্ছতার সাথে হয়েছে বলেও দাবি করেন তিনি।
No comments