নওগাঁয় মাকে হত্যার পর মেয়েকে ধর্ষণ: ৫ স্কুলছাত্রীসহ ৭ নারী ধর্ষিত
মানবজমিন, ১৯ জুন ২০১৯ বুধবারঃ
সাত জেলায় ৫ স্কুলছাত্রীসহ ৭ নারী ধর্ষণের শিকার হয়েছে। এর মধ্যে নওগাঁর
মান্দায় মাকে হত্যার পর মেয়েকে ধর্ষণ করেছে দুর্বৃত্তরা। এ ছাড়া হোমনায়
স্কুল থেকে ডেকে নিয়ে স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণ করে এক বখাটে। শেরপুরের
নালিতাবাড়িতে এক গৃহবধূকে গণধর্ষণ করে দুই দুর্বৃত্ত। গোপালগঞ্জে স্বামী
সেজে প্রতিবন্ধী এক নারীকে ধর্ষণ করে আরেক দুর্বৃত্ত। এদিকে চাঁদপুরের
কচুয়ায় এক স্কুলছাত্রী, জগন্নাথপুরে মাদরাসা ছাত্রী ও আড়াইহাজারে এক
শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিস্তারিত আমাদের প্রতিনিধিদের
পাঠানো রিপোর্টে-
মান্দা (নওগাঁ) প্রতিনিধি জানান, মান্দায় মাকে গলা কেটে হত্যার পর অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে মেয়েকে ধর্ষণ করা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। নিহতের নাম নাসিমা আক্তার সাথী (৪০)।
তিনি উপজেলার প্রসাদপুর ইউনিয়নের দ্বারিয়াপুর গ্রামের এমদাদুল হক মণ্ডলের স্ত্রী। গত সোমবার দিবাগত গভীর রাতে নিহতের ঘরে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার পরপরই অভিযান চালিয়ে ঘাতক ধর্ষক সামিউল ইসলাম সাগরকে (২২) আটক করেছে পুলিশ। আটক সাগর উপজেলার কুসুম্বা ইউনিয়নের চকশ্যামরা গ্রামের জান মোহাম্মদের ছেলে। নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নওগাঁ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। নিহতের স্বামী এমদাদুল হক জানান, আমি নাটোরের একটি ফার্মে নৈশপ্রহরীর চাকরি করি। বাড়িতে স্ত্রী সার্থী ও ছোটমেয়ে একসঙ্গে থাকতেন। সোমবার গভীর রাতে মোবাইলফোনের মাধ্যমে স্ত্রী সাথীর মৃত্যুর সংবাদ জানতে পারি।
মান্দা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোজাফফর হোসেন জানান, নিহতের ছোটমেয়ে রীমা আক্তারের সঙ্গে আটক সাগরের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। সম্প্রতি সেই সম্পর্কে টানাপড়েন শুরু হয়। ঘটনার রাতে রীমাকে হত্যার উদ্দেশ্যে একটি চাকু নিয়ে তাদের বাড়িতে যায় সাগর। বাড়ির পেছনের দিক দিয়ে ছাদে উঠে অপেক্ষা করতে থাকে। এ সময় সাগর যৌন উত্তেজক পানীয় পান করে। পরে ছাদ থেকে নেমে রীমার ঘরে যায়। এ সময় নিহত সাথী ও মেয়ে রীমা একই ঘরে ঘুমিয়ে ছিলেন। ওসি আরো জানান, সাগর ও রীমা কথা বলার সময় নিহত সাথী জেগে উঠে। তখন সাগরের কাছে থাকা চাকু দিয়ে সাথীর শরীরের একাধিক আঘাত করে। এতে সাথী জ্ঞান হারিয়ে ফেললে তাকে গলা কেটে হত্যা করে সাগর। পরে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে নিহতের মেয়েকে ধর্ষণ করে সে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আটক সাগর এ ধরনের তথ্য দিয়েছে বলে জানিয়েছেন ওসি। সাগর জিজ্ঞাসাবাদে আরো জানায়, অপরাধকর্ম সংঘটিত করে পায়ে হেঁটে বুড়িদহ খেয়াঘাটের বাঁশের সাকো দিয়ে নদী পার হওয়ার সময় হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত চাকুটি নদীতে ফেলে দিয়ে সে বাড়ি চলে আসে।
শেরপুর প্রতিনিধি জানান, শেরপুরের নালিতাবাড়ীতে এক গৃহবধূকে (৩৫) গণধর্ষণের অভিযোগে ১ মোখলেছুর রহমান নামে এক যুবককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গত সোমবার দুপুরে ভিন্ন জেলার অধিবাসী ওই অভিযোগকারী গৃহবধূকে তদন্ত কর্মকর্তা নিরাপদ হেফাজতে রাখার আবেদনসহ আদালতে সোপর্দ করলে জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ আল মামুন পৃথক আবেদনের প্রেক্ষিতে তাকে স্বামীর জিম্মায় প্রদান করেন।
মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, জামালপুর শহরের বগাবাড়ি বোর্ডঘর এলাকার ওই গৃহবধূ শুক্রবার বিকেলে জামালপুর ব্রিজ থেকে শেরপুরের উদ্দেশ্যে সদর উপজেলার মুন্সীরচর এলাকার ইয়াসিনের (৩৫) সিএনজিতে উঠলে ইয়াসিন কৌশলে কৃষ্ণপুরের দিকে গিয়ে ওই গাড়িতে মালিক স্থানীয় জুয়েল মিয়াকে উঠায়। এরপর নন্দীরবাজার থেকে একই গাড়িতে মুন্সীরচর এলাকার হামিদুল (২২) ও মোখলেছকে (২৬) কে উঠায়। এরপর ইচ্ছার বিরুদ্ধে ওই গৃহবধূকে নালিতাবাড়ীর সূর্যনগর এলাকার কাশেমপুর বাজার সংলগ্ন ব্রিজের পাশে থাকা হামিদুলের এক খালার বাড়িতে নিয়ে গিয়ে সন্ধ্যায় তালাবদ্ধ করে রাখে। রাতে হামিদুল ও মোখলেছ ওই ঘরে গিয়ে গৃহবধূকে ধর্ষণ করে। শনিবার সকালে ইয়াসিন ও জুয়েল সিএনজি নিয়ে গিয়ে হামিদুল ও মোখলেছসহ গৃহবধূকে ওই বাড়ি থেকে নিয়ে এসে নানাভাবে চাপ দিয়ে ফের জামালপুর ব্রিজে নামিয়ে দেয়। পরে ওইদিনই ওই গৃহবধূ নালিতাবাড়ী থানায় ৪ জনকে আসামী করে অভিযোগ দায়ের করলে থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে মোখলেসুর রহমানকে গ্রেপ্তার করে।
হোমনা (কুমিল্লা) প্রতিনিধি জানান, হোমনায় ৫ম শ্রেণিতে পড়ুয়া এক ছাত্রীকে স্কুল থেকে নিজ রুমে ডেকে নিয়ে ধর্ষণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। গতকাল ছাত্রীটিকে উদ্ধার করে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য কুমেক হাসপাতালে এবং জবানবন্দি রেকর্ডের জন্য আদালতে পাঠিয়েছে পুলিশ। এ ব্যাপারে ভিকটিমের বাবা শ্রমিক লীগ নেতা বাদী হয়ে সোমবার রাতে চার জনকে আসামি করে হোমনা থানায় মামলা দায়ের করেছেন। এ ঘটনায় পুলিশ তাৎক্ষণিক আবু সালেহ নামে একজনকে আটক করে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠিয়েছে।
মামলার বিবরণে জানা যায়, উপজেলার বাগমারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৫ম শ্রেণির ওই ছাত্রী স্কুলে যাওয়া-আসার পথে একই গ্রামের মুফতি নূরুজ্জামানের ছেলে জালাল মিয়া প্রেম নিবেদনসহ উত্ত্যক্ত করতো। বিষয়টি বার বার জালালের পরিবারের সদস্যদের জানালেও তারা কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। এভাবে দীর্ঘদিন প্রেম নিবেদন করার এক পর্যায়ে তাদের মধ্যে বন্ধুত্ব হয়ে যায়। এরই সূত্র ধরে জালাল গত এক বছর আগে ছাত্রীটিকে ফুসলিয়ে বাগমারা মহিলা মাদরাসা ছুটির সময় মাদরাসার একটি কক্ষে নিয়ে মেয়েটিকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। তখন মেয়েটির পরিবার বিষয়টি জানতে পেরে জালালের অভিভাবকদের নিকট বিচার দিলেও তারা এ ব্যাপারে কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। লোক লজ্জার ভয়ে মেয়েটির পরিবার তখন থানায় জানানো বা কোনো দেন-দরবারও করেননি।
গত সোমবার বিকাল তিনটায় ছাত্রীটি স্কুলে ছিল। এরই এক ফাঁকে তাকে আবারো জালাল বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ফুসলিয়ে স্কুল থেকে ডেকে স্কুলের পাশে নিজ বাড়িতে তার থাকার রুমে নিয়ে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। এ সময় জালালের বন্ধু আবু সালেহ তাদের পাহারা দেয়। ছাত্রীটির আর্তচিৎকারে লোকজন ছুটে এলে জালাল দৌড়ে পালিয়ে যায় এবং তারা ছাত্রীটিকে উদ্ধার করে মর্মে অভিযোগ করা হয়েছে।
গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি জানান, গোপালগঞ্জে ৩ সন্তানের জননী এক প্রতিবন্ধী নারীকে ধর্ষণের অভিযোগে শিমুল মোল্লা নামে এক রাজমিস্ত্রিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। শিমুলের বাড়ি সদর উপজেলার লতিফপুর ইউনিয়নের চরমানিকদহ গ্রামে। গত রোববার দিবাগত রাত ১০টার দিকে একই গ্রামের গুচ্ছপল্লীতে এ ঘটনা ঘটে। ধর্ষিত প্রতিবন্ধী ওই নারী বাদী হয়ে গোপালগঞ্জ সদর থানায় একটি ধর্ষণ মামলা দায়ের করেছেন।
ধর্ষিত নারীর ও থানায় জমা দেয়া অভিযোগের বরাত দিয়ে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. মুকুল হোসেন জানান, সদর উপজেলার লতিফপুর ইউনিয়নের চরমানিকদহ গ্রামের (গুচ্ছপল্লীতে) দীর্ঘদিন ধরে বসবাসকারী ধর্ষিতা ৩ সন্তানের জননীর স্বামী পেশায় একজন পুরি বিক্রেতা। গত রোববার রাতে খাওয়া-দাওয়া শেষ করে দরজা খোলা রেখে ঘুমিয়ে যায় ওই প্রতিবন্ধী নারী। আনুমানিক রাত ১০টার পর একই গ্রামের শিমুল মোল্লা (রাজমিস্ত্রি) ওই নারীর অন্ধকার ঘরে ঢুকে স্বামী সেজে প্রতারণার মাধ্যমে ওই নারীকে ধর্ষণ করে। কিছুক্ষণ পর ওই নারী বুঝতে পারে যে, ওই পুরুষ তার স্বামী নয়। রাত ১১টার পর তার স্বামী ঘরে ফিরলে ঘটনাটি তাকে জানায়। সোমবার তার স্বামী প্রতিবন্ধী স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে থানায় গিয়ে একটি লিখিত অভিযোগ করে।
জগন্নাথপুর (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধি জানান, জগন্নাথপুর উপজেলার আশারকান্দি ইউনিয়নের জামালপুর গ্রামে আট বছরের এক শিশুকে ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় শিশুটির বাবা বাদী হয়ে ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগে অভিযুক্ত লাল মিয়া (৩৫) কে আসামি করে গত সোমবার জগন্নাথপুর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করেন।
পুলিশ এলাকাবাসী ও শিশুটির পরিবার সূত্র জানায়, জামালপুর রোডস্থ এলাকার বাসিন্দা সাদেক মিয়ার আট বছরের মেয়ে স্থানীয় একটি মাদ্রাসার তৃতীয় শ্রেণীর ছাত্রীকে গত শনিবার সন্ধ্যায় প্রতিবেশী যুক্তরাজ্য প্রবাসী আব্দুন নূরের বাড়িতে বসবাসকারী হবিগঞ্জ জেলা সদরের হাসপাড়া বাসিন্দা আব্দুল হাশিমের চার সন্তানের জনক লাল মিয়া ঘরে ডেকে নিয়ে মেয়েটিকে বিবস্ত্র করে ধর্ষণের চেষ্টা চালায়। মেয়েটির চিৎকার শুনে পরিবারের লোকজন এগিয়ে এলে লাল মিয়া পালিয়ে যায়। পরদিন মেয়েটির বাবা যুক্তরাজ্য প্রবাসী আব্দুন নূরের কাছে এ ঘটনার বিচার প্রার্থী হলে তিনি বিচার না করে মেয়েটির বাবাকে ঘটনাটি কাউকে না বলতে নিষেধ করেন এবং লাল মিয়াকে তার বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দিবেন বলে জানান। পরে মেয়েটির বাবা জগন্নাথপুর থানায় লাল মিয়াকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন।
আড়াইহাজার (নারায়ণগঞ্জ) প্রতিনিধি: সপ্তম শ্রেণিতে পড়ুয়া এক মাদরাসাছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে আড়াইহাজারে ইয়াছিন নামে স্থানীয় এক কাপড় ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। সে স্থানীয় জোকারদিয়ার নয়াপাড়া এলাকার মোতালিবের ছেলে। ওই ছাত্রীর বাবা বাদী হয়ে গতকাল মামলাটি করেন। তবে ধর্ষককে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। এরই মধ্যে ছাত্রীটি সাড়ে চার মাসের অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েছে। সে স্থানীয় লতবদী মহিলা মাদরাসায় সপ্তম শ্রেণিতে পড়ছে। পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য তাকে নারায়ণগঞ্জের ভিক্টোরিয়া হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ওই ছাত্রী জানায়, ৪ঠা জানুয়ারি তাকে বাড়ির পাশে একা পেয়ে তুলে নিয়ে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে কাপড় ব্যবসায়ী ইয়াছিন। বিষয়টি জানাজানি না করতে তাকে প্রাণে মেরে ফেলার ভয় দেখানো হয়। এতে তার পরিবারের লোকজনের কাছে তা সে গোপন রাখে। আড়াইহাজার থানার ওসি নজরুল ইসলাম বলেন, ধর্ষককে গ্রেপ্তারে পুলিশের অভিযান চলছে। ওই ছাত্রীকে শারীরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষায় পাঠানো হয়েছে।
কচুয়া (চাঁদপুর) প্রতিনিধি জানান, কচুয়ায় বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ধর্ষণের অভিযোগে রাকিবুল হাসান জয়েল মীর(২৮)কে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল সকালে কচুয়া পৌর বাজার থেকে ধর্ষণের মামলার ওয়ারেন্টভুক্ত পলাতক আসামি কাদলা ইউনিয়নের সখিপুরা গ্রামের আঃ মালেকের ছেলে রাকিবুল হাসান জয়েল মীরকে গ্রেপ্তার করা হয়। মামলার এজাহার মর্মে জানা যায়, কচুয়া বঙ্গবন্ধু সরকারি ডিগ্রি কলেজের স্নাতক প্রথম বর্ষের ছাত্রীর সাথে রাকিবুল হাসান জয়েল দীর্ঘদিন কলেজ ছাত্রীর সাথে প্রেমের অভিনয় করে কোর্টে বিয়ে করবে বলে কলেজ থেকে নিয়ে চাঁদপুরের শরিয়তপুর আবাসিক হোটেল নিয়ে ধর্ষণ করে পালিয়ে যায় । এ ঘটনায় কলেজ ছাত্রী বাদী হয়ে ২২শে ফেব্রুয়ারি রাকিবুল হাসান জুয়েলসহ ৬ জনকে আসামি করে চাঁদপুরের নারী ও শিশু নির্যতন ট্রাইবুনালে একটি মামলা দায়ের করেন।
মান্দা (নওগাঁ) প্রতিনিধি জানান, মান্দায় মাকে গলা কেটে হত্যার পর অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে মেয়েকে ধর্ষণ করা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। নিহতের নাম নাসিমা আক্তার সাথী (৪০)।
তিনি উপজেলার প্রসাদপুর ইউনিয়নের দ্বারিয়াপুর গ্রামের এমদাদুল হক মণ্ডলের স্ত্রী। গত সোমবার দিবাগত গভীর রাতে নিহতের ঘরে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার পরপরই অভিযান চালিয়ে ঘাতক ধর্ষক সামিউল ইসলাম সাগরকে (২২) আটক করেছে পুলিশ। আটক সাগর উপজেলার কুসুম্বা ইউনিয়নের চকশ্যামরা গ্রামের জান মোহাম্মদের ছেলে। নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নওগাঁ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। নিহতের স্বামী এমদাদুল হক জানান, আমি নাটোরের একটি ফার্মে নৈশপ্রহরীর চাকরি করি। বাড়িতে স্ত্রী সার্থী ও ছোটমেয়ে একসঙ্গে থাকতেন। সোমবার গভীর রাতে মোবাইলফোনের মাধ্যমে স্ত্রী সাথীর মৃত্যুর সংবাদ জানতে পারি।
মান্দা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোজাফফর হোসেন জানান, নিহতের ছোটমেয়ে রীমা আক্তারের সঙ্গে আটক সাগরের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। সম্প্রতি সেই সম্পর্কে টানাপড়েন শুরু হয়। ঘটনার রাতে রীমাকে হত্যার উদ্দেশ্যে একটি চাকু নিয়ে তাদের বাড়িতে যায় সাগর। বাড়ির পেছনের দিক দিয়ে ছাদে উঠে অপেক্ষা করতে থাকে। এ সময় সাগর যৌন উত্তেজক পানীয় পান করে। পরে ছাদ থেকে নেমে রীমার ঘরে যায়। এ সময় নিহত সাথী ও মেয়ে রীমা একই ঘরে ঘুমিয়ে ছিলেন। ওসি আরো জানান, সাগর ও রীমা কথা বলার সময় নিহত সাথী জেগে উঠে। তখন সাগরের কাছে থাকা চাকু দিয়ে সাথীর শরীরের একাধিক আঘাত করে। এতে সাথী জ্ঞান হারিয়ে ফেললে তাকে গলা কেটে হত্যা করে সাগর। পরে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে নিহতের মেয়েকে ধর্ষণ করে সে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আটক সাগর এ ধরনের তথ্য দিয়েছে বলে জানিয়েছেন ওসি। সাগর জিজ্ঞাসাবাদে আরো জানায়, অপরাধকর্ম সংঘটিত করে পায়ে হেঁটে বুড়িদহ খেয়াঘাটের বাঁশের সাকো দিয়ে নদী পার হওয়ার সময় হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত চাকুটি নদীতে ফেলে দিয়ে সে বাড়ি চলে আসে।
শেরপুর প্রতিনিধি জানান, শেরপুরের নালিতাবাড়ীতে এক গৃহবধূকে (৩৫) গণধর্ষণের অভিযোগে ১ মোখলেছুর রহমান নামে এক যুবককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গত সোমবার দুপুরে ভিন্ন জেলার অধিবাসী ওই অভিযোগকারী গৃহবধূকে তদন্ত কর্মকর্তা নিরাপদ হেফাজতে রাখার আবেদনসহ আদালতে সোপর্দ করলে জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ আল মামুন পৃথক আবেদনের প্রেক্ষিতে তাকে স্বামীর জিম্মায় প্রদান করেন।
মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, জামালপুর শহরের বগাবাড়ি বোর্ডঘর এলাকার ওই গৃহবধূ শুক্রবার বিকেলে জামালপুর ব্রিজ থেকে শেরপুরের উদ্দেশ্যে সদর উপজেলার মুন্সীরচর এলাকার ইয়াসিনের (৩৫) সিএনজিতে উঠলে ইয়াসিন কৌশলে কৃষ্ণপুরের দিকে গিয়ে ওই গাড়িতে মালিক স্থানীয় জুয়েল মিয়াকে উঠায়। এরপর নন্দীরবাজার থেকে একই গাড়িতে মুন্সীরচর এলাকার হামিদুল (২২) ও মোখলেছকে (২৬) কে উঠায়। এরপর ইচ্ছার বিরুদ্ধে ওই গৃহবধূকে নালিতাবাড়ীর সূর্যনগর এলাকার কাশেমপুর বাজার সংলগ্ন ব্রিজের পাশে থাকা হামিদুলের এক খালার বাড়িতে নিয়ে গিয়ে সন্ধ্যায় তালাবদ্ধ করে রাখে। রাতে হামিদুল ও মোখলেছ ওই ঘরে গিয়ে গৃহবধূকে ধর্ষণ করে। শনিবার সকালে ইয়াসিন ও জুয়েল সিএনজি নিয়ে গিয়ে হামিদুল ও মোখলেছসহ গৃহবধূকে ওই বাড়ি থেকে নিয়ে এসে নানাভাবে চাপ দিয়ে ফের জামালপুর ব্রিজে নামিয়ে দেয়। পরে ওইদিনই ওই গৃহবধূ নালিতাবাড়ী থানায় ৪ জনকে আসামী করে অভিযোগ দায়ের করলে থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে মোখলেসুর রহমানকে গ্রেপ্তার করে।
হোমনা (কুমিল্লা) প্রতিনিধি জানান, হোমনায় ৫ম শ্রেণিতে পড়ুয়া এক ছাত্রীকে স্কুল থেকে নিজ রুমে ডেকে নিয়ে ধর্ষণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। গতকাল ছাত্রীটিকে উদ্ধার করে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য কুমেক হাসপাতালে এবং জবানবন্দি রেকর্ডের জন্য আদালতে পাঠিয়েছে পুলিশ। এ ব্যাপারে ভিকটিমের বাবা শ্রমিক লীগ নেতা বাদী হয়ে সোমবার রাতে চার জনকে আসামি করে হোমনা থানায় মামলা দায়ের করেছেন। এ ঘটনায় পুলিশ তাৎক্ষণিক আবু সালেহ নামে একজনকে আটক করে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠিয়েছে।
মামলার বিবরণে জানা যায়, উপজেলার বাগমারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৫ম শ্রেণির ওই ছাত্রী স্কুলে যাওয়া-আসার পথে একই গ্রামের মুফতি নূরুজ্জামানের ছেলে জালাল মিয়া প্রেম নিবেদনসহ উত্ত্যক্ত করতো। বিষয়টি বার বার জালালের পরিবারের সদস্যদের জানালেও তারা কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। এভাবে দীর্ঘদিন প্রেম নিবেদন করার এক পর্যায়ে তাদের মধ্যে বন্ধুত্ব হয়ে যায়। এরই সূত্র ধরে জালাল গত এক বছর আগে ছাত্রীটিকে ফুসলিয়ে বাগমারা মহিলা মাদরাসা ছুটির সময় মাদরাসার একটি কক্ষে নিয়ে মেয়েটিকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। তখন মেয়েটির পরিবার বিষয়টি জানতে পেরে জালালের অভিভাবকদের নিকট বিচার দিলেও তারা এ ব্যাপারে কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। লোক লজ্জার ভয়ে মেয়েটির পরিবার তখন থানায় জানানো বা কোনো দেন-দরবারও করেননি।
গত সোমবার বিকাল তিনটায় ছাত্রীটি স্কুলে ছিল। এরই এক ফাঁকে তাকে আবারো জালাল বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ফুসলিয়ে স্কুল থেকে ডেকে স্কুলের পাশে নিজ বাড়িতে তার থাকার রুমে নিয়ে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। এ সময় জালালের বন্ধু আবু সালেহ তাদের পাহারা দেয়। ছাত্রীটির আর্তচিৎকারে লোকজন ছুটে এলে জালাল দৌড়ে পালিয়ে যায় এবং তারা ছাত্রীটিকে উদ্ধার করে মর্মে অভিযোগ করা হয়েছে।
গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি জানান, গোপালগঞ্জে ৩ সন্তানের জননী এক প্রতিবন্ধী নারীকে ধর্ষণের অভিযোগে শিমুল মোল্লা নামে এক রাজমিস্ত্রিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। শিমুলের বাড়ি সদর উপজেলার লতিফপুর ইউনিয়নের চরমানিকদহ গ্রামে। গত রোববার দিবাগত রাত ১০টার দিকে একই গ্রামের গুচ্ছপল্লীতে এ ঘটনা ঘটে। ধর্ষিত প্রতিবন্ধী ওই নারী বাদী হয়ে গোপালগঞ্জ সদর থানায় একটি ধর্ষণ মামলা দায়ের করেছেন।
ধর্ষিত নারীর ও থানায় জমা দেয়া অভিযোগের বরাত দিয়ে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. মুকুল হোসেন জানান, সদর উপজেলার লতিফপুর ইউনিয়নের চরমানিকদহ গ্রামের (গুচ্ছপল্লীতে) দীর্ঘদিন ধরে বসবাসকারী ধর্ষিতা ৩ সন্তানের জননীর স্বামী পেশায় একজন পুরি বিক্রেতা। গত রোববার রাতে খাওয়া-দাওয়া শেষ করে দরজা খোলা রেখে ঘুমিয়ে যায় ওই প্রতিবন্ধী নারী। আনুমানিক রাত ১০টার পর একই গ্রামের শিমুল মোল্লা (রাজমিস্ত্রি) ওই নারীর অন্ধকার ঘরে ঢুকে স্বামী সেজে প্রতারণার মাধ্যমে ওই নারীকে ধর্ষণ করে। কিছুক্ষণ পর ওই নারী বুঝতে পারে যে, ওই পুরুষ তার স্বামী নয়। রাত ১১টার পর তার স্বামী ঘরে ফিরলে ঘটনাটি তাকে জানায়। সোমবার তার স্বামী প্রতিবন্ধী স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে থানায় গিয়ে একটি লিখিত অভিযোগ করে।
জগন্নাথপুর (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধি জানান, জগন্নাথপুর উপজেলার আশারকান্দি ইউনিয়নের জামালপুর গ্রামে আট বছরের এক শিশুকে ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় শিশুটির বাবা বাদী হয়ে ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগে অভিযুক্ত লাল মিয়া (৩৫) কে আসামি করে গত সোমবার জগন্নাথপুর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করেন।
পুলিশ এলাকাবাসী ও শিশুটির পরিবার সূত্র জানায়, জামালপুর রোডস্থ এলাকার বাসিন্দা সাদেক মিয়ার আট বছরের মেয়ে স্থানীয় একটি মাদ্রাসার তৃতীয় শ্রেণীর ছাত্রীকে গত শনিবার সন্ধ্যায় প্রতিবেশী যুক্তরাজ্য প্রবাসী আব্দুন নূরের বাড়িতে বসবাসকারী হবিগঞ্জ জেলা সদরের হাসপাড়া বাসিন্দা আব্দুল হাশিমের চার সন্তানের জনক লাল মিয়া ঘরে ডেকে নিয়ে মেয়েটিকে বিবস্ত্র করে ধর্ষণের চেষ্টা চালায়। মেয়েটির চিৎকার শুনে পরিবারের লোকজন এগিয়ে এলে লাল মিয়া পালিয়ে যায়। পরদিন মেয়েটির বাবা যুক্তরাজ্য প্রবাসী আব্দুন নূরের কাছে এ ঘটনার বিচার প্রার্থী হলে তিনি বিচার না করে মেয়েটির বাবাকে ঘটনাটি কাউকে না বলতে নিষেধ করেন এবং লাল মিয়াকে তার বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দিবেন বলে জানান। পরে মেয়েটির বাবা জগন্নাথপুর থানায় লাল মিয়াকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন।
আড়াইহাজার (নারায়ণগঞ্জ) প্রতিনিধি: সপ্তম শ্রেণিতে পড়ুয়া এক মাদরাসাছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে আড়াইহাজারে ইয়াছিন নামে স্থানীয় এক কাপড় ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। সে স্থানীয় জোকারদিয়ার নয়াপাড়া এলাকার মোতালিবের ছেলে। ওই ছাত্রীর বাবা বাদী হয়ে গতকাল মামলাটি করেন। তবে ধর্ষককে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। এরই মধ্যে ছাত্রীটি সাড়ে চার মাসের অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েছে। সে স্থানীয় লতবদী মহিলা মাদরাসায় সপ্তম শ্রেণিতে পড়ছে। পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য তাকে নারায়ণগঞ্জের ভিক্টোরিয়া হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ওই ছাত্রী জানায়, ৪ঠা জানুয়ারি তাকে বাড়ির পাশে একা পেয়ে তুলে নিয়ে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে কাপড় ব্যবসায়ী ইয়াছিন। বিষয়টি জানাজানি না করতে তাকে প্রাণে মেরে ফেলার ভয় দেখানো হয়। এতে তার পরিবারের লোকজনের কাছে তা সে গোপন রাখে। আড়াইহাজার থানার ওসি নজরুল ইসলাম বলেন, ধর্ষককে গ্রেপ্তারে পুলিশের অভিযান চলছে। ওই ছাত্রীকে শারীরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষায় পাঠানো হয়েছে।
কচুয়া (চাঁদপুর) প্রতিনিধি জানান, কচুয়ায় বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ধর্ষণের অভিযোগে রাকিবুল হাসান জয়েল মীর(২৮)কে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল সকালে কচুয়া পৌর বাজার থেকে ধর্ষণের মামলার ওয়ারেন্টভুক্ত পলাতক আসামি কাদলা ইউনিয়নের সখিপুরা গ্রামের আঃ মালেকের ছেলে রাকিবুল হাসান জয়েল মীরকে গ্রেপ্তার করা হয়। মামলার এজাহার মর্মে জানা যায়, কচুয়া বঙ্গবন্ধু সরকারি ডিগ্রি কলেজের স্নাতক প্রথম বর্ষের ছাত্রীর সাথে রাকিবুল হাসান জয়েল দীর্ঘদিন কলেজ ছাত্রীর সাথে প্রেমের অভিনয় করে কোর্টে বিয়ে করবে বলে কলেজ থেকে নিয়ে চাঁদপুরের শরিয়তপুর আবাসিক হোটেল নিয়ে ধর্ষণ করে পালিয়ে যায় । এ ঘটনায় কলেজ ছাত্রী বাদী হয়ে ২২শে ফেব্রুয়ারি রাকিবুল হাসান জুয়েলসহ ৬ জনকে আসামি করে চাঁদপুরের নারী ও শিশু নির্যতন ট্রাইবুনালে একটি মামলা দায়ের করেন।
No comments