নিম্নমানের কাগজে ছাপা হচ্ছে পাঠ্যবই
বিনামূল্যে
বিতরণের জন্য ছাপা হওয়া পাঠ্যবইয়ে ব্যবহার করা হচ্ছে নিম্নমানের কাগজ।
ছাপা হচ্ছে অখ্যাত মুদ্রণ প্রতিষ্ঠানে। জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক
বোর্ডের (এনসিটিবি) অধীনে প্রাক-প্রাথমিক, প্রাথমিক, ইবতেদায়ী, মাধ্যমিক,
দাখিল, ভোকেশনাল ও উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের পাঠ্যবইয়ের ক্ষেত্রে নিম্নমানের
কাগজ ও ছাপাখানা ব্যবহারের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এনসিটিবির কিছু অসাধু
কর্মকর্তা মানসম্পন্ন কাগজ ও ছাপাখানার বিপরীতে পাঠ্যবই মুদ্রণে নিম্ন
মানের কাগজে ও অখ্যাত ছাপাখানায় বই ছাপছেন।
পাঠ্যপুস্তক মুদ্রণের জন্য এনসিটিবি দরপত্রের মাধ্যমে কাগজ কিনে তা মুদ্রণকারীদের সরবরাহ করে। সরবরাহ করা এসব কাগজেই বই ছাপানো হয়। এছাড়া, কাগজসহ পাঠ্যপুস্তক মুদ্রণ, বাঁধাই ও সরবরাহের জন্য মুদ্রণ প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে দরপত্র আহবান করা হয়। শিক্ষার্থী ও এই প্রক্রিয়ার সাথে জড়িতদের সঙ্গে কথা বলে পাঠ্যবই ছাপার অনিয়মের বিষয়ে বেশ কিছু তথ্য-প্রমাণ পাওয়া গেছে।
কয়েকটি সূত্র জানিয়েছে, দরপত্রে দেয়া স্পেসিফিকেশন অনুযায়ী মানসম্মত কাগজে বই ছাপানো হচ্ছে না। ছাপার কাজে ব্যবহার হওয়া কাগজের মিল ও ছাপাখানাগুলোর অধিকাংশের বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ড অ্যান্ড টেস্টিং ইন্সটিটিউট (বিএসটিআই) সনদ ও পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র নেই। ছাপা হওয়া বইয়ের বেশিরভাগই প্রক্রিয়াজাত করা কাগজে ছাপানো হচ্ছে।
উল্টোদিকে নিয়ম না মেনে এসব বই কিনছে এনসিটিবি। প্রতিষ্ঠানটির মুদ্রণ কাজে তদরককারী ইউনিটের প্রচ্ছন্ন আশ্রয়-প্রশয়ে গত কয়েক বছর ধরে এমন দুর্নীতি হচ্ছে বলেও জানা গেছে। পাঠ্যপুস্তক সংশ্লিষ্টরা বলছেন, নিম্ন মানের কাগজে বই ছাপা হলে ছাপার মান খারাপ হয় এবং একই সাথে বইও তেমন টেকসই হয় না। এসব নিম্নমানের কাগজে নানা ধরনের জীবানুর সংক্রমণ থাকে, যা শিক্ষার্থীদের জন্য ক্ষতিকর। পাশাপাশি, ভালো মানের ছাপা না হওয়ায় বই পড়তে গিয়ে চোখের সমস্যায় পড়তে হয় অনেক শিক্ষার্থীকে। এরকম বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী জানান, ২০১৯ সালের পাঠ্যবইয়ে ছাপা থেকে কালি উঠে যাচ্ছে, ছবিও বোঝা যায় না ঠিক মত। সূত্র জানায়, ২০১৯ শিক্ষাবর্ষের জন্য ছাপা হওয়া বইয়ের গুনগত মান পরীক্ষায় ভয়ঙ্কর চিত্র উঠে এসেছে। বাংলাদেশ শিল্প ও গবেষণা পরিষদের (বিসিএসআইআর) এক নমুনা পরীক্ষায় দেখা গেছে, পাঠ্যবইয়ে ৬০ জিএসএম ও ৮৫% ব্রাইটনেসের বদলে পাওয়া গেছে ৪৬.৫৬ ও ৬৬.৪৪%। এতে করে বছরের অর্ধেক সময় পার না হতেই ছিঁড়ে যাচ্ছে বইয়ের পাতা।
বেশ কিছু অসাধু মুদ্রণ প্রতিষ্ঠান এনসিটিবির সাথে আঁতাত করে এমন অপকর্ম করে যাচ্ছে বলে জানা গেছে। বিএসটিআই মানসনদ ও পরিবেশ ছাড়পত্র ছাড়াই প্রাক্কলিত দরের তুলনায় অনেক টাকায় নিম্নমানের কাগজ ও ছাপাখানায় বই ছাপছে। আগামী ২০২০ শিক্ষাবর্ষেও বিএসটিআই সনদ ও পরিবেশ ছাড়পত্র ছাড়া বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান মুদ্রণের কাজ পেয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এগুলো হলো: আজাদ পেপার মিল, বগুড়া, বেইস পেপার মিল, ঢাকা, মাস্টার সিমেক্স পেপার লিমিটেড, ঢাকা, গাজীপুর পেপার মিল, আল-নূর পেপার মিল, বাগদাদ পেপার মিল। এসব বিষয়ে সবশেষ গত ২রা এপ্রিল বিএসটিআইয়ের সিনিয়র সচিব মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বিভাগ, শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা বিভাগের সচিব বরাবর একটি চিঠি দিয়েছেন। চিঠিতে, দেশে বর্তমানে ১০৬টি পেপার মিল থাকলেও এর মধ্যে মাত্র ১৯টি বিএসটিআই’র মান সনদ নিয়ে কাজ করছে বলে জানানো হয়েছে। এনসিটিবির প্রায় ৫০ কোটি পাঠ্যবই ছাপতে কাগজের প্রয়োজন হয় প্রায় ৮০ হাজার টন।
টন প্রতি ৮৪ হাজার টাকা প্রাক্কলিত দরে কাগজের বিক্রয়মূল হয় প্রায় ৬৭২ কোটি টাকা। বিএসটিআই নির্ধারিত মার্কিং ফি বিক্রয় মূল্যের ওপর শতকরা ০.১% হারে বছরের রাজস্ব ক্ষতি হচ্ছে প্রায় ৬৭ লাখ ২০ হাজার টাকা। এদিকে, বিএসটিআই মান সনদ ও পরিবেশ ছাড়পত্র আছে এমন পেপার মিল থেকে কাগজ সংগ্রহ করতে শিল্পমন্ত্রী, শিক্ষামন্ত্রী, অর্থমন্ত্রী, এনসিটিবি ও বিএসটিআইকে চিঠি দিয়েছে বাংলাদেশ পেপার মিলস অ্যাসোসিয়েশন (বিপিএমএ)। আবেদনে বিএসটিআই মান ছাড়া কাগজ ক্রয় ও মুদ্রণের বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছে। এতে করে বইয়ের গুনগত মান ঠিক থাকছে না বলেও অভিযোগ করেছে বিপিএমএ। এমন ভয়াবহ পরিস্থিতিতে দ্রুত ব্যবস্থা নিতেও সংশ্লিষ্টদের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছে বাংলাদেশ পেপার মিলস অ্যাসোসিয়েশন।
পাঠ্যপুস্তক মুদ্রণের জন্য এনসিটিবি দরপত্রের মাধ্যমে কাগজ কিনে তা মুদ্রণকারীদের সরবরাহ করে। সরবরাহ করা এসব কাগজেই বই ছাপানো হয়। এছাড়া, কাগজসহ পাঠ্যপুস্তক মুদ্রণ, বাঁধাই ও সরবরাহের জন্য মুদ্রণ প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে দরপত্র আহবান করা হয়। শিক্ষার্থী ও এই প্রক্রিয়ার সাথে জড়িতদের সঙ্গে কথা বলে পাঠ্যবই ছাপার অনিয়মের বিষয়ে বেশ কিছু তথ্য-প্রমাণ পাওয়া গেছে।
কয়েকটি সূত্র জানিয়েছে, দরপত্রে দেয়া স্পেসিফিকেশন অনুযায়ী মানসম্মত কাগজে বই ছাপানো হচ্ছে না। ছাপার কাজে ব্যবহার হওয়া কাগজের মিল ও ছাপাখানাগুলোর অধিকাংশের বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ড অ্যান্ড টেস্টিং ইন্সটিটিউট (বিএসটিআই) সনদ ও পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র নেই। ছাপা হওয়া বইয়ের বেশিরভাগই প্রক্রিয়াজাত করা কাগজে ছাপানো হচ্ছে।
উল্টোদিকে নিয়ম না মেনে এসব বই কিনছে এনসিটিবি। প্রতিষ্ঠানটির মুদ্রণ কাজে তদরককারী ইউনিটের প্রচ্ছন্ন আশ্রয়-প্রশয়ে গত কয়েক বছর ধরে এমন দুর্নীতি হচ্ছে বলেও জানা গেছে। পাঠ্যপুস্তক সংশ্লিষ্টরা বলছেন, নিম্ন মানের কাগজে বই ছাপা হলে ছাপার মান খারাপ হয় এবং একই সাথে বইও তেমন টেকসই হয় না। এসব নিম্নমানের কাগজে নানা ধরনের জীবানুর সংক্রমণ থাকে, যা শিক্ষার্থীদের জন্য ক্ষতিকর। পাশাপাশি, ভালো মানের ছাপা না হওয়ায় বই পড়তে গিয়ে চোখের সমস্যায় পড়তে হয় অনেক শিক্ষার্থীকে। এরকম বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী জানান, ২০১৯ সালের পাঠ্যবইয়ে ছাপা থেকে কালি উঠে যাচ্ছে, ছবিও বোঝা যায় না ঠিক মত। সূত্র জানায়, ২০১৯ শিক্ষাবর্ষের জন্য ছাপা হওয়া বইয়ের গুনগত মান পরীক্ষায় ভয়ঙ্কর চিত্র উঠে এসেছে। বাংলাদেশ শিল্প ও গবেষণা পরিষদের (বিসিএসআইআর) এক নমুনা পরীক্ষায় দেখা গেছে, পাঠ্যবইয়ে ৬০ জিএসএম ও ৮৫% ব্রাইটনেসের বদলে পাওয়া গেছে ৪৬.৫৬ ও ৬৬.৪৪%। এতে করে বছরের অর্ধেক সময় পার না হতেই ছিঁড়ে যাচ্ছে বইয়ের পাতা।
বেশ কিছু অসাধু মুদ্রণ প্রতিষ্ঠান এনসিটিবির সাথে আঁতাত করে এমন অপকর্ম করে যাচ্ছে বলে জানা গেছে। বিএসটিআই মানসনদ ও পরিবেশ ছাড়পত্র ছাড়াই প্রাক্কলিত দরের তুলনায় অনেক টাকায় নিম্নমানের কাগজ ও ছাপাখানায় বই ছাপছে। আগামী ২০২০ শিক্ষাবর্ষেও বিএসটিআই সনদ ও পরিবেশ ছাড়পত্র ছাড়া বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান মুদ্রণের কাজ পেয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এগুলো হলো: আজাদ পেপার মিল, বগুড়া, বেইস পেপার মিল, ঢাকা, মাস্টার সিমেক্স পেপার লিমিটেড, ঢাকা, গাজীপুর পেপার মিল, আল-নূর পেপার মিল, বাগদাদ পেপার মিল। এসব বিষয়ে সবশেষ গত ২রা এপ্রিল বিএসটিআইয়ের সিনিয়র সচিব মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বিভাগ, শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা বিভাগের সচিব বরাবর একটি চিঠি দিয়েছেন। চিঠিতে, দেশে বর্তমানে ১০৬টি পেপার মিল থাকলেও এর মধ্যে মাত্র ১৯টি বিএসটিআই’র মান সনদ নিয়ে কাজ করছে বলে জানানো হয়েছে। এনসিটিবির প্রায় ৫০ কোটি পাঠ্যবই ছাপতে কাগজের প্রয়োজন হয় প্রায় ৮০ হাজার টন।
টন প্রতি ৮৪ হাজার টাকা প্রাক্কলিত দরে কাগজের বিক্রয়মূল হয় প্রায় ৬৭২ কোটি টাকা। বিএসটিআই নির্ধারিত মার্কিং ফি বিক্রয় মূল্যের ওপর শতকরা ০.১% হারে বছরের রাজস্ব ক্ষতি হচ্ছে প্রায় ৬৭ লাখ ২০ হাজার টাকা। এদিকে, বিএসটিআই মান সনদ ও পরিবেশ ছাড়পত্র আছে এমন পেপার মিল থেকে কাগজ সংগ্রহ করতে শিল্পমন্ত্রী, শিক্ষামন্ত্রী, অর্থমন্ত্রী, এনসিটিবি ও বিএসটিআইকে চিঠি দিয়েছে বাংলাদেশ পেপার মিলস অ্যাসোসিয়েশন (বিপিএমএ)। আবেদনে বিএসটিআই মান ছাড়া কাগজ ক্রয় ও মুদ্রণের বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছে। এতে করে বইয়ের গুনগত মান ঠিক থাকছে না বলেও অভিযোগ করেছে বিপিএমএ। এমন ভয়াবহ পরিস্থিতিতে দ্রুত ব্যবস্থা নিতেও সংশ্লিষ্টদের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছে বাংলাদেশ পেপার মিলস অ্যাসোসিয়েশন।
No comments