এসডিজির লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে শ্রম আইন বাস্তবায়নের আহ্বান
কর্মক্ষেত্রে
শ্রমিকের মান উন্নয়ন হলেও, ভবিষ্যতে টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যে সবক্ষেত্রে
শ্রম আইন বাস্তবায়ন জরুরি বলে মত দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। এ ছাড়া এসডিজি
বাস্তবায়নের সঙ্গে সঙ্গে শ্রমিকের মান উন্নয়নের কাজগুলোও করে যেতে হবে।
এক্ষেত্রে আইএলও’র ১৫টি সনদ কার্যকর করা জরুরি। গতকাল গুলশানের একটি হোটেলে
বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) আয়োজিত এলডিসির
এসডিজি বাস্তবায়নে মানসম্মত শ্রম অধিকার সংক্রান্ত এক সেমিনারে বক্তারা এ
আহ্বান জানান। অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন সিপিডির অতিরিক্ত ফেলো ড.
মোস্তাফিজুর রহমান ও মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সংস্থাটির গবেষণা পরিচালক
ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম। এ ছাড়া বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনের নেতারা অংশ
নেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, রানা প্লাজা দুর্ঘটনার আগে আমরা শ্রম অধিকার নিয়ে খুব একটা কাজ করিনি। তবে আমরা অল্প সময়ে যা করেছি তা অনেক দেশের চেয়ে অনেক ভালো। তিনি বলেন, কারখানার মালিক ও পরিদর্শকের মধ্যে ঘুষ বাণিজ্য হয়। পরিদর্শক অনেক সময় ভাবেন, মালিক অনেক ক্ষমতাবান তার বিরুদ্ধে যাওয়ার দরকার নেই। আবার মালিক পক্ষ ভাবেন পরিদর্শককে কিছু টাকা দিলেই সবকিছু ঠিক হয়ে যাবে। এক্ষেত্রে উভয় পক্ষকে সংশোধন হওয়ার আহ্বান জানান প্রতিমন্ত্রী। এ ছাড়া দেশের ৭০ শতাংশ ট্রেড ইউনিয়নই কার্যকর নয় বলেও জানান তিনি।
সিপিডির ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, আমরা এমন একটা অর্থনীতিতে যেন না যাই যেখানে শিল্পখাতে ভালো শ্রম আইন পালিত হচ্ছে অথচ অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতে পালিত হচ্ছে না। তবে বৈশ্বিক এজেন্ডাই যে পালন করতে হবে এমন নয়, এসডিজি অর্জনে আমাদের লক্ষ্য আমরাই নির্ধারণ করে নিতে পারি। এক্ষেত্রে শ্রম আইন ও শ্রমমান নিয়ে সচেতন থাকতে হবে। তিনি বলেন, আমরা এমডিজির ধারাবাহিকতায় এসডিজি বাস্তবায়ন করছি। কিন্তু আমাদের গতি আরো বাড়াতে হবে। সমপ্রতি এক প্রতিবেদনে দেখা গেছে, শ্রমিকদের কর্মসংস্থান বাড়লেও প্রকৃত আয় কমেছে। এর মানে হলো মানসম্মত কাজের সুযোগ কমে গেছে। এসডিজির লক্ষ্য অর্জনে এ বিষয়টিতে নজর দেয়া জরুরি।
আইএলও’র বাংলাদেশ অফিসের নির্বাহী পরিচালক গগন রাজবান্ড্রি বলেন, শ্রম আইন ও শ্রমিকের অধিকার রক্ষায় বাংলাদেশ অনেক সাফল্য দেখিয়েছে। তবে এটি একটি চলমান প্রক্রিয়া। শ্রমিদের স্বার্থ রক্ষায় আমাদের আরো কাজ করতে হবে।
মুক্ত আলোচনায় অংশ নিয়ে দেশি-বিদেশি বিভিন্ন পক্ষের বক্তারা বলেন, শ্রম আইন বাস্তবায়নে অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতের শ্রমিকদের দিকেও নজর দেয়া দরকার। শ্রম মান উন্নয়নে যে সাফল্য এসেছে তা বিদেশিদেরকেও জানাতে হবে। এসডিজি বাস্তবায়নের সঙ্গে সঙ্গে শ্রম মান উন্নয়নের কাজগুলোও করে যেতে হবে।
খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে বলেন, ২০১৭ সালের পর ডিউটি ও কোটামুক্ত বাণিজ্যের সুযোগ বন্ধ হয়ে যাবে। এখনই উদ্যোগ না নিলে বাংলাদেশ বড় ধরনের ধাক্কা খাবে। তবে সুযোগ রয়েছে এসডিজি বাস্তবায়ন করে শ্রীলংকা ও পাকিস্তানের মতো এসডিজি প্লাসের সুবিধা নিতে। এসডিজি প্লাসের সুযোগ পেতে হলে শ্রমের মান, শ্রমিকের অধিকার, নিরাপত্তা, কর্মের পরিবেশসহ বেশ কিছু বিষয় নিশ্চিত করতে হবে। সরকার অনেকগুলো কনভেনশনে স্বাক্ষর করেছে। শুধু মানলে হবে না বাস্তবায়ন করতে হবে বলে মন্তব্য করেন মোয়াজ্জেম হোসেন। তিনি বলেন, মধ্যম আয়ের দেশ থেকে উন্নত রাষ্ট্রে পরিণত হতে হলে নন ফরমাল শ্রমিক আউটসোর্সিংসহ অনেক বিষয় নীতিমালায় আনতে হবে।
আলোচনায় অংশ নিয়ে বিজিএমইএ সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান বলেন, আমরা মোটেই চিন্তিত নই। আমরা অ্যাকর্ড’র ৯০ শতাংশ শর্ত পূরণ করেছি। অন্যান্য শর্ত পূরণের লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছি। আমার মনে হয় আগামী ১০ বছরে বাংলাদেশ অনেক দূর পৌঁছে যাবে। তিনি বলেন, আমরা ব্যবসায়ীরা ব্যবসা পরিবর্তন করতে পারবো। কিন্তু পোশাক খাতে ৪৪ লাখ শ্রমিক রয়েছে, তাদের কথা ভাবতে হবে। তারা তো দ্রুত অন্য কাজ শিখতে পারবে না। বিজিএমইএ’র সভাপতি বলেন, তাদের নিরাপত্তার বিষয়ে আমরা যথেষ্ট কাজ করেছি। সেফটি ইস্যুতে আমরা পিছিয়ে আছি এটা ঠিক না। রানা প্লাজার পর দেশে বড় কোনো দুর্ঘটনা ঘটেনি। তিনি বলেন, চুরি বা খোয়া যাওয়া সমস্যা থাকার পরও বর্তমানে আমরা সব ফ্যাক্টরির দরজা খোলা রাখি। যে কেউ ইচ্ছে করলে পর্যবেক্ষণে আসতে পারেন। তাহলে কেন বলবো সেফটি ইস্যুতে আমরা পিছিয়ে আছি? নেতিবাচক প্রচারণাটা ঘর থেকেই শুরু হয়। আমরা যা করিনি তা বলতে বলছি না, কিন্তু যা করেছি তা স্বীকার করুন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, রানা প্লাজা দুর্ঘটনার আগে আমরা শ্রম অধিকার নিয়ে খুব একটা কাজ করিনি। তবে আমরা অল্প সময়ে যা করেছি তা অনেক দেশের চেয়ে অনেক ভালো। তিনি বলেন, কারখানার মালিক ও পরিদর্শকের মধ্যে ঘুষ বাণিজ্য হয়। পরিদর্শক অনেক সময় ভাবেন, মালিক অনেক ক্ষমতাবান তার বিরুদ্ধে যাওয়ার দরকার নেই। আবার মালিক পক্ষ ভাবেন পরিদর্শককে কিছু টাকা দিলেই সবকিছু ঠিক হয়ে যাবে। এক্ষেত্রে উভয় পক্ষকে সংশোধন হওয়ার আহ্বান জানান প্রতিমন্ত্রী। এ ছাড়া দেশের ৭০ শতাংশ ট্রেড ইউনিয়নই কার্যকর নয় বলেও জানান তিনি।
সিপিডির ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, আমরা এমন একটা অর্থনীতিতে যেন না যাই যেখানে শিল্পখাতে ভালো শ্রম আইন পালিত হচ্ছে অথচ অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতে পালিত হচ্ছে না। তবে বৈশ্বিক এজেন্ডাই যে পালন করতে হবে এমন নয়, এসডিজি অর্জনে আমাদের লক্ষ্য আমরাই নির্ধারণ করে নিতে পারি। এক্ষেত্রে শ্রম আইন ও শ্রমমান নিয়ে সচেতন থাকতে হবে। তিনি বলেন, আমরা এমডিজির ধারাবাহিকতায় এসডিজি বাস্তবায়ন করছি। কিন্তু আমাদের গতি আরো বাড়াতে হবে। সমপ্রতি এক প্রতিবেদনে দেখা গেছে, শ্রমিকদের কর্মসংস্থান বাড়লেও প্রকৃত আয় কমেছে। এর মানে হলো মানসম্মত কাজের সুযোগ কমে গেছে। এসডিজির লক্ষ্য অর্জনে এ বিষয়টিতে নজর দেয়া জরুরি।
আইএলও’র বাংলাদেশ অফিসের নির্বাহী পরিচালক গগন রাজবান্ড্রি বলেন, শ্রম আইন ও শ্রমিকের অধিকার রক্ষায় বাংলাদেশ অনেক সাফল্য দেখিয়েছে। তবে এটি একটি চলমান প্রক্রিয়া। শ্রমিদের স্বার্থ রক্ষায় আমাদের আরো কাজ করতে হবে।
মুক্ত আলোচনায় অংশ নিয়ে দেশি-বিদেশি বিভিন্ন পক্ষের বক্তারা বলেন, শ্রম আইন বাস্তবায়নে অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতের শ্রমিকদের দিকেও নজর দেয়া দরকার। শ্রম মান উন্নয়নে যে সাফল্য এসেছে তা বিদেশিদেরকেও জানাতে হবে। এসডিজি বাস্তবায়নের সঙ্গে সঙ্গে শ্রম মান উন্নয়নের কাজগুলোও করে যেতে হবে।
খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে বলেন, ২০১৭ সালের পর ডিউটি ও কোটামুক্ত বাণিজ্যের সুযোগ বন্ধ হয়ে যাবে। এখনই উদ্যোগ না নিলে বাংলাদেশ বড় ধরনের ধাক্কা খাবে। তবে সুযোগ রয়েছে এসডিজি বাস্তবায়ন করে শ্রীলংকা ও পাকিস্তানের মতো এসডিজি প্লাসের সুবিধা নিতে। এসডিজি প্লাসের সুযোগ পেতে হলে শ্রমের মান, শ্রমিকের অধিকার, নিরাপত্তা, কর্মের পরিবেশসহ বেশ কিছু বিষয় নিশ্চিত করতে হবে। সরকার অনেকগুলো কনভেনশনে স্বাক্ষর করেছে। শুধু মানলে হবে না বাস্তবায়ন করতে হবে বলে মন্তব্য করেন মোয়াজ্জেম হোসেন। তিনি বলেন, মধ্যম আয়ের দেশ থেকে উন্নত রাষ্ট্রে পরিণত হতে হলে নন ফরমাল শ্রমিক আউটসোর্সিংসহ অনেক বিষয় নীতিমালায় আনতে হবে।
আলোচনায় অংশ নিয়ে বিজিএমইএ সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান বলেন, আমরা মোটেই চিন্তিত নই। আমরা অ্যাকর্ড’র ৯০ শতাংশ শর্ত পূরণ করেছি। অন্যান্য শর্ত পূরণের লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছি। আমার মনে হয় আগামী ১০ বছরে বাংলাদেশ অনেক দূর পৌঁছে যাবে। তিনি বলেন, আমরা ব্যবসায়ীরা ব্যবসা পরিবর্তন করতে পারবো। কিন্তু পোশাক খাতে ৪৪ লাখ শ্রমিক রয়েছে, তাদের কথা ভাবতে হবে। তারা তো দ্রুত অন্য কাজ শিখতে পারবে না। বিজিএমইএ’র সভাপতি বলেন, তাদের নিরাপত্তার বিষয়ে আমরা যথেষ্ট কাজ করেছি। সেফটি ইস্যুতে আমরা পিছিয়ে আছি এটা ঠিক না। রানা প্লাজার পর দেশে বড় কোনো দুর্ঘটনা ঘটেনি। তিনি বলেন, চুরি বা খোয়া যাওয়া সমস্যা থাকার পরও বর্তমানে আমরা সব ফ্যাক্টরির দরজা খোলা রাখি। যে কেউ ইচ্ছে করলে পর্যবেক্ষণে আসতে পারেন। তাহলে কেন বলবো সেফটি ইস্যুতে আমরা পিছিয়ে আছি? নেতিবাচক প্রচারণাটা ঘর থেকেই শুরু হয়। আমরা যা করিনি তা বলতে বলছি না, কিন্তু যা করেছি তা স্বীকার করুন।
No comments