কেন মানুষ মাজারে যায়? by হাফিজ মুহাম্মদ ও সুদীপ অধিকারী
দিন-রাত
মানুষের ভিড়। হরেক রকমের মানুষ। কারো কাছে নিছক জিয়ারত। কেউবা আসেন মনের
আশা পূরণে। মাজারে এসে চাওয়া-পাওয়ার হিসাব মেলান তারা। শুধু সাধারণ মানুষ
নয়, রাজনীতিবিদ থেকে শুরু করে অনেক সিনে তারকাও ভিড় করেন মাজারে।
সম্প্রতি দেশের বড় তিন রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জাতীয় পার্টির প্রধানকে দেখা যায় সিলেটের হজরত শাহজালাল ও শাহপরান (রহ.)-এর মাজার জিয়ারত করতে। তাদের দু’জন নির্বাচনী প্রচারণাও শুরু করেছেন সেখান থেকে। হজরত শাহজালালের মাজার থেকে নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করা বড় দলগুলোর জন্য একটা প্রথা হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিগত কয়েকটি নির্বাচনে এমনটাই দেখা গেছে। মাজার থেকে প্রচারণা শুরু করতে বাদ যান না বিভিন্ন দলের নেতাকর্মীরাও।
রাজধানীর মিরপুর শাহ আলী মাজারের খাদেম সৈয়দ আনোয়ারুল হক। তিন পুরুষ ধরে তারা এখানে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন। তার দাদা, বাবা এবং তিনি। ২০০৪ সালে তার বাবার মৃত্যুর পরে তিনি দায়িত্ব পালন করছেন। সৈয়দ আনোয়ারুল হক মানবজমিনকে বলেন, আমরা পাপী বান্দারা তো সরাসরি আল্লাহ কিংবা তার রাসুলকে দেখিনি। তাদের তো ডায়রেক্ট পাওয়ার কোনো উপায়ও নাই। এই অলির মাজারে খেদমতের মাধ্যমে যদি আল্লাহকে পাই। বাবার দরবারে বসে আছি। মাগফিরাত, হাকিকত অনুযায়ী কাজ করে চলছি। রাজনীতিবিদরা মাজারে কেন যান তা জানতে চাইলে এ খাদেম বলেন, প্রত্যেকের উদ্দেশ্য ভালো থাকা। নির্বাচনে জয়লাভ করা, অলির আশীর্বাদ পাওয়াসহ নানা চাওয়া। এ কারণে তারা মাজার থেকে নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করেন। সময় পেলে মাজারে যান। পীরের কবরের পাশে যেয়ে ভালোমন্দ বলেন। তবে সবকিছুর মালিক তো আল্লাহ। পীর তো দিতে পারবে না। তারা মাত্র সুপারিশ করতে পারেন। এ মাজারের ভক্ত মাসুমা বেগম। বাবার দরবারে এসেছেন ‘মানত’ পৌঁছে দিতে। এ ভক্ত বলেন, আমি প্রায় সময় এখানে আসি। বাবার মাধ্যমে আল্লাহর কাছে সাহায্য চাই। মাসুমার মতে বড় বড় লিডাররা মাজারে যাওয়ার সময় কম পায়। যে জন্য শুধু নির্বাচনের আগে তাদের মাজারে দেখা যায়। মো. মুস্তাকিম আশরাফি নামে এক ভক্ত বলেন, আমরা বাবার দরবারে আসি একটু ভালো থাকার আশায়। অন্য আরেক ভক্ত মো. সেলিম বলেন, রাজনীতিবিদদের বেশিরভাগ দেশ পরিচালনার সময় অনেক ভুল করে থাকেন। তাই নির্বাচনে পরিত্রাণ পাবার লক্ষ্যে মাজারে যান তারা। এছাড়া আর অন্য কোনো উদ্দেশ্য নেই বলে আমি মনে করি। মো. জুলফিকার নামের এক খাদেম বলেন, মাজারের বিরুদ্ধে নানাজন নানা কথা বললেও নির্বাচন আসলেই রাজনীতিবিদদের মাজারে ভিড় পড়ে যায়। পীরদের কবর জিয়ারত করে নিজেদের পরিশুদ্ধি চান। পরিত্রাণ চান মন্দ কাজের। পরবর্তী নির্বাচনে জয়লাভের আশাও করেন অনেকে। জাহিদুল হাসান শাহ নামে এক ভক্ত বলেন, সবার চাওয়া-পাওয়া ভিন্ন। তবে অন্তর তো আলাদা নয়। পীরেরা ছিলেন পবিত্র মানুষ। তাদের মাধ্যমেই আমাদের পরিত্রাণ পেতে হবে। এজন্য নির্দিষ্ট পীরের ভক্ত ছাড়াও রাজনীতিবিদরা চলে যান মাজার ও দরবারে। তাদের মনের আশা সেসব পীর বাবারা অন্তর থেকে দেখতে পান।
সরজমিন রাজধানীর গুলিস্তান জামে মসজিদের বিপরীত পাশে অবস্থিত বাবা হজরত গোলাপ শাহ আউলিয়ার মাজারে গিয়ে দেখা যায়, বেশ কিছু সংখ্যক ভক্তের উপস্থিতি। শুধু ইসলাম ধর্মানুসারী নয়, হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টানসহ সকল ধর্মের মানুষেরই আসা-যাওয়া আছে এই মাজার প্রাঙ্গণে। মূলত মানুষ তাদের মনের না পাওয়া আকাঙ্ক্ষা পূরণের লক্ষ্যেই আসে এখানে। অন্যদিনের তুলনায় শুক্র ও বৃহস্পতিবার এখানে ভক্তের সংখ্যা বেড়ে যায় কয়েকগুণ। জানা যায়, প্রায় ২০০ বছর আগে হজরত সেকান্দার শাহ ইয়ামেনি (রহ.) ইসলাম ধর্ম প্রচারের উদ্দেশে এদেশে আসেন। তার মৃত্যুর পর তাকে নিমগাছতলি নামক স্থানে সমাহিত করা হয়। তখন এই মাজার নিমগাছতলির মাজার নামে লোকমুখে পরিচিত ছিল। এর কয়েক দশক পর হজরত গোলাপ শাহ (রহ.) নামক এক সুফি ভারত থেকে এসে সারা জীবন সেকান্দার শাহ বাবার খেদমত করে কাটিয়ে দেন। তার ইন্তেকালের পর তাকে সেকান্দার শাহ বাবার ডান পাশে সমাহিত করা হয়। তখন থেকেই এই মাজার গোলাপ শাহ বাবার মাজার নামে সবার কাছে পরিচিতি লাভ করে। সিলেট, চট্টগ্রাম, রাজধানীর আগারগাঁও, আরামবাগ, লালবাগসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে গড়ে ওঠা প্রায় সকল মাজারেই মানুষ যায়, তাদের না পাওয়া চাহিদা পূরণের লক্ষ্যে।
সম্প্রতি দেশের বড় তিন রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জাতীয় পার্টির প্রধানকে দেখা যায় সিলেটের হজরত শাহজালাল ও শাহপরান (রহ.)-এর মাজার জিয়ারত করতে। তাদের দু’জন নির্বাচনী প্রচারণাও শুরু করেছেন সেখান থেকে। হজরত শাহজালালের মাজার থেকে নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করা বড় দলগুলোর জন্য একটা প্রথা হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিগত কয়েকটি নির্বাচনে এমনটাই দেখা গেছে। মাজার থেকে প্রচারণা শুরু করতে বাদ যান না বিভিন্ন দলের নেতাকর্মীরাও।
রাজধানীর মিরপুর শাহ আলী মাজারের খাদেম সৈয়দ আনোয়ারুল হক। তিন পুরুষ ধরে তারা এখানে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন। তার দাদা, বাবা এবং তিনি। ২০০৪ সালে তার বাবার মৃত্যুর পরে তিনি দায়িত্ব পালন করছেন। সৈয়দ আনোয়ারুল হক মানবজমিনকে বলেন, আমরা পাপী বান্দারা তো সরাসরি আল্লাহ কিংবা তার রাসুলকে দেখিনি। তাদের তো ডায়রেক্ট পাওয়ার কোনো উপায়ও নাই। এই অলির মাজারে খেদমতের মাধ্যমে যদি আল্লাহকে পাই। বাবার দরবারে বসে আছি। মাগফিরাত, হাকিকত অনুযায়ী কাজ করে চলছি। রাজনীতিবিদরা মাজারে কেন যান তা জানতে চাইলে এ খাদেম বলেন, প্রত্যেকের উদ্দেশ্য ভালো থাকা। নির্বাচনে জয়লাভ করা, অলির আশীর্বাদ পাওয়াসহ নানা চাওয়া। এ কারণে তারা মাজার থেকে নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করেন। সময় পেলে মাজারে যান। পীরের কবরের পাশে যেয়ে ভালোমন্দ বলেন। তবে সবকিছুর মালিক তো আল্লাহ। পীর তো দিতে পারবে না। তারা মাত্র সুপারিশ করতে পারেন। এ মাজারের ভক্ত মাসুমা বেগম। বাবার দরবারে এসেছেন ‘মানত’ পৌঁছে দিতে। এ ভক্ত বলেন, আমি প্রায় সময় এখানে আসি। বাবার মাধ্যমে আল্লাহর কাছে সাহায্য চাই। মাসুমার মতে বড় বড় লিডাররা মাজারে যাওয়ার সময় কম পায়। যে জন্য শুধু নির্বাচনের আগে তাদের মাজারে দেখা যায়। মো. মুস্তাকিম আশরাফি নামে এক ভক্ত বলেন, আমরা বাবার দরবারে আসি একটু ভালো থাকার আশায়। অন্য আরেক ভক্ত মো. সেলিম বলেন, রাজনীতিবিদদের বেশিরভাগ দেশ পরিচালনার সময় অনেক ভুল করে থাকেন। তাই নির্বাচনে পরিত্রাণ পাবার লক্ষ্যে মাজারে যান তারা। এছাড়া আর অন্য কোনো উদ্দেশ্য নেই বলে আমি মনে করি। মো. জুলফিকার নামের এক খাদেম বলেন, মাজারের বিরুদ্ধে নানাজন নানা কথা বললেও নির্বাচন আসলেই রাজনীতিবিদদের মাজারে ভিড় পড়ে যায়। পীরদের কবর জিয়ারত করে নিজেদের পরিশুদ্ধি চান। পরিত্রাণ চান মন্দ কাজের। পরবর্তী নির্বাচনে জয়লাভের আশাও করেন অনেকে। জাহিদুল হাসান শাহ নামে এক ভক্ত বলেন, সবার চাওয়া-পাওয়া ভিন্ন। তবে অন্তর তো আলাদা নয়। পীরেরা ছিলেন পবিত্র মানুষ। তাদের মাধ্যমেই আমাদের পরিত্রাণ পেতে হবে। এজন্য নির্দিষ্ট পীরের ভক্ত ছাড়াও রাজনীতিবিদরা চলে যান মাজার ও দরবারে। তাদের মনের আশা সেসব পীর বাবারা অন্তর থেকে দেখতে পান।
সরজমিন রাজধানীর গুলিস্তান জামে মসজিদের বিপরীত পাশে অবস্থিত বাবা হজরত গোলাপ শাহ আউলিয়ার মাজারে গিয়ে দেখা যায়, বেশ কিছু সংখ্যক ভক্তের উপস্থিতি। শুধু ইসলাম ধর্মানুসারী নয়, হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টানসহ সকল ধর্মের মানুষেরই আসা-যাওয়া আছে এই মাজার প্রাঙ্গণে। মূলত মানুষ তাদের মনের না পাওয়া আকাঙ্ক্ষা পূরণের লক্ষ্যেই আসে এখানে। অন্যদিনের তুলনায় শুক্র ও বৃহস্পতিবার এখানে ভক্তের সংখ্যা বেড়ে যায় কয়েকগুণ। জানা যায়, প্রায় ২০০ বছর আগে হজরত সেকান্দার শাহ ইয়ামেনি (রহ.) ইসলাম ধর্ম প্রচারের উদ্দেশে এদেশে আসেন। তার মৃত্যুর পর তাকে নিমগাছতলি নামক স্থানে সমাহিত করা হয়। তখন এই মাজার নিমগাছতলির মাজার নামে লোকমুখে পরিচিত ছিল। এর কয়েক দশক পর হজরত গোলাপ শাহ (রহ.) নামক এক সুফি ভারত থেকে এসে সারা জীবন সেকান্দার শাহ বাবার খেদমত করে কাটিয়ে দেন। তার ইন্তেকালের পর তাকে সেকান্দার শাহ বাবার ডান পাশে সমাহিত করা হয়। তখন থেকেই এই মাজার গোলাপ শাহ বাবার মাজার নামে সবার কাছে পরিচিতি লাভ করে। সিলেট, চট্টগ্রাম, রাজধানীর আগারগাঁও, আরামবাগ, লালবাগসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে গড়ে ওঠা প্রায় সকল মাজারেই মানুষ যায়, তাদের না পাওয়া চাহিদা পূরণের লক্ষ্যে।
No comments