রোহিঙ্গাদের ঠেকাতে স্টেনগান মরিচ গুঁড়া নিয়ে সীমান্তে বিএসএফ
আশ্রয়ের
সন্ধানে জড়ো হওয়া মিয়ানমারের রোহিঙ্গাদের প্রবেশ বন্ধ করতে সীমান্তে
স্টেনগান, ও মরিচ গুঁড়া নিয়ে কড়া নজরদারি চালাচ্ছে ভারতীয় সীমান্ত
রক্ষীবাহিনী-বিএসএফ। তারা রোহিঙ্গাদের সীমান্ত থেকেই ফেরত পাঠিয়ে দিচ্ছে।
ভারতের সুপ্রিমকোর্টে এ অভিযোগ জানিয়ে অসহায় রোহিঙ্গাদের প্রতি ‘ন্যূনতম
মানবিকতা, নৈতিকতা’ দেখানোর আবেদন জানিয়েছেন তাদের আইনজীবী প্রশান্ত ভূষণ।
এ আবেদনের পর প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্রের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চকে কেন্দ্রীয়
সরকারের পক্ষে আইনজীবী তুষার মেহতা জানিয়েছেন, ভারত সরকার রোহিঙ্গাদের
প্রবেশের বিষয়ে নমনীয়তা দেখাতে চায় না। তিনি বলেন, সরকারের সাধারণ অবস্থান
হল তারা চান না ভারত শরণার্থীদের রাজধানী হয়ে উঠুক। তা হলে দুনিয়ার সব
দেশের লোক ভারতে চলে আসবে। এটি এমন বিষয় যা নিয়ে আমরা কোনো ধরনের নমনীয়তা
দেখাতে পারি না। ভারতে বসবাসকারী রোহিঙ্গা শরণার্থীদের ফেরত পাঠানো থেকে
কেন্দ্রীয় সরকারকে নিরস্ত করার আবেদন জানিয়ে করা পিটিশনের শুনানিতে
প্রশান্ত ভূষণ বলেন, কেউ সীমান্তে এসে যদি বলেন, ‘আমি শরণার্থী, আশ্রয়
চাই’; তাকে সোজা মুখের ওপর ‘না’ বলে দেয়া যায় না।
সিনিয়র আইনজীবী রাজীব
ধবন এ বক্তব্যে সায় দেন। বলেন, আবেদনকারী শরণার্থী কিনা তা স্থির করতে হবে।
তবে সরকার যেমন কূটনৈতিকভাবে বিষয়টি মোকাবেলার চেষ্টা করছে, আদালতেরও
নিজের মতো সিদ্ধান্ত নেয়া উচিত। বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় জানান,
প্রশান্ত ভূষণের বক্তব্যের মানবতাবাদী দৃষ্টিকোণকে আদালত প্রাধান্য
দিচ্ছে। তবে এ দেশের যে আইন ভারতের মাটিতে বসবাসকারী শরণার্থীদের ক্ষেত্রে
প্রযোজ্য, তা কি এ দেশে ঢোকার চেষ্টা করা লোকজনের ক্ষেত্রেও চলতে পারে?
গত বছর এ মামলার শুনানির সময় ভারত সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল-
রোহিঙ্গা শরণার্থীদের পরিণতির বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণের ভার সরকারের হাতেই
যেন বিচারপতিরা ছেড়ে দেন। তবে সুপ্রিমকোর্ট সরকারের এ বক্তব্য খারিজ করে
দেন। প্রধান বিচারপতি মিয়ানমারের রোহিঙ্গা শরণার্থীদের নিয়ে তৈরি হওয়া
পরিস্থিতিকে ‘বড় ধরনের মানবতাবাদী সংকট’ বলে মন্তব্যও করেন। তবে আদালত
ভারত থেকে রোহিঙ্গাদের বহিষ্কারের পরিকল্পনা স্থগিত করে কোনো আদেশ দেয়নি।
জাতিসংঘ মানবাধিকার সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, ভারতে বসবাসকারী রোহিঙ্গা
শরণার্থীর সংখ্যা প্রায় ১৬ হাজার। তবে সরকারের দাবি, প্রকৃত শরণার্থীর
সংখ্যা এর তিন গুণ।
No comments