‘আমি গুপ্তচর’
ডিজিটাল
নিরাপত্তা আইনের খসড়া মন্ত্রিসভায় সোমবার অনুমোদনের পর থেকেই তা নিয়ে
বিভিন্ন মহলে ব্যাপক সমালোচনা শুরু হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও দেখা
গেছে নানা ধরনের প্রতিক্রিয়া। বিশেষ করে ‘#আমিগুপ্তচর’ হ্যাশট্যাগ জনপ্রিয়
হয়ে উঠছে সাংবাদিকদের কাছে। ওই আইনের খসড়ার প্রতিবাদে সোমবার থেকেই অনেকে
নিজের ফেসবুক প্রোফাইলের ছবি পরিবর্তন করতে শুরু করেছেন। সাংবাদিক পারভেজ
নাদির রেজা, মিল্টন আনোয়ার, কাবেরী মৈত্রেয়, হাবিবুর রহমানসহ আরও অনেকেই
ফেসবুকে লিখেছেন, কোনো ব্যক্তি বেআইনি প্রবেশের মাধ্যমে কোনো সরকারি,
আধাসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত বা বিধিবদ্ধ কোনো সংস্থার অতিগোপনীয় বা গোপনীয়
তথ্য-উপাত্ত কম্পিউটার, ডিজিটাল যন্ত্র, কম্পিউটার নেটওয়ার্ক, ডিডিটাল
নেটওয়ার্ক বা অন্য কোন ইলেকট্রনিক মাধ্যমে ধারণ, প্রেরণ বা সংরক্ষণ করেন বা
করতে সহায়তা করেন তাহলে সেই কাজ হবে কম্পিউটার বা ডিটিটাল গুপ্তচরবৃত্তির
অপরাধ। আর এই অপরাধের জন্য সর্বোচ্চ ১৪ বছরের কারাদণ্ড বা সর্বোচ্চ ২৫ লাখ
টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ড হবে। কেউ যদি এই অপরাধ দ্বিতীয়বার বা বারবার
করেন, তাহলে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড বা সর্বোচ্চ এক কোটি টাকা অর্থদণ্ড বা উভয়
দণ্ডে দণ্ডিত হবে। তারা আরও লিখেছেন, মন্ত্রিসভায় পাস হওয়া ডিজিটাল
নিরাপত্তা আইনের ৩২ নম্বর ধারার এই অপরাধ আমি আমার সাংবাদিকতা জীবনে বহুবার
করেছি। যেহেতু আমি আমার অনেক সহকর্মীর মতো এই পেশা এখনও ছেড়ে যাইনি,
বিদেশে পাড়ি দেইনি। যেহেতু আগামী দিনগুলোতেও সাংবাদিকতা করেই যেতে চাই।
সেহেতু আমি নিজেকে আইনের ভাষায় গুপ্তচর হিসেবে ঘোষণা করলাম। আজ থেকে শুরু
হোক ‘#আমিগুপ্তচর’ স্লোগানের আন্দোলন। আসুন স্বঘোষিত এই গুপ্তচরকে গ্রেফতার
করুন এবং সাংবাদিকতাকে গলা টিপে হত্যা করার মিশনে সফল হয়ে দেশকে এগিয়ে
নিয়ে যান। #আমিগুপ্তচর মাজহার মিলন লিখেছেন, #আমিগুপ্তচর। এই দেশে অসাধুরাই
সবচেয়ে শক্তিশালী। গোপনীয়তার সংস্কৃতি চর্চায় কঠোর অবস্থান তাদেরই। কোনটা
গোপনীয় আর কোনটা পাবলিক বা ন্যাশনাল ইন্টারেস্ট সেই ব্যাখ্যা কে দেবে?
অসাধুদের মুখোশ উন্মোচনের উপায় তাহলে কি? অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার দিন কি
শেষ হয়ে এলো? গণমাধ্যম আর সাংবাদিকতার টুঁটি চেপে ধরতে এই আইনের ব্যবহার
হবে না, সে নিশ্চয়তা কে দেবে? বদরুদ্দোজা বাবু লিখেছেন, আমি বদরুদ্দোজা
বাবু। অনুসন্ধান করি, সাংবাদিকতা করি। মানুষের স্বার্থে কাজ করি। অনিয়ম আর
দুর্নীতি খুঁজি। ফলে আমাকে সরকারি অনেক নথি জোগাড় করতে হয়! ডিজিটাল
নিরাপত্তা আইনের ভাষায়, এখন আমি গুপ্তচর! সাইফুল ইসলাম হৃদয়, ওবায়দুল কবির
বাবুসহ আরও অনেকেই লিখেছেন, ৫৭ থেকে ৩২, প্রতিবাদ থেকে ধিক্কার। মশিউর
রহমান রুবেল লিখেছেন, সাংবাদিকতা করি, অনুসন্ধান করি অনিয়ম ও দুর্নীতি। ফলে
আমাকে যেতে হয় সরকারি, আধাসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে অনেক নথিপত্র
জোগাড় করতে হয়।
যা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ভাষায়, এখন আমি গুপ্তচর! #আমিগুপ্তচর আনোয়ার হোসেন লিখেছেন, সাংবাদিকদের কেন #আমিগুপ্তচর লিখে প্রতিবাদ করতে হয়? ৫৭, ৩২, ২৫, ২৯ আর যেই নম্বরই দিন না কেন! সাংবাদিকতাকে বাধাগ্রস্ত করবেন না। আমাদের কর্মকাণ্ডকে গুপ্তচরের সার্টিফিকেট ধরিয়ে দেয়া কখনোই কল্যাণকর কিছু নয়। দ্রুত এর সমাধান হওয়া প্রয়োজন। মাসুদ রায়হান পলাশ লিখেছেন, আমি গোপন ক্যামেরা দিয়ে ডিডিও ধারণ করব। ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের অপরাধমূলক গোপন তথ্য প্রকাশ করব। আমাকে ২০ লাখ টাকা জরিমানাসহ ১৪ বছরের জেল দিন। #আমিগুপ্তচর এম এ কবির লিখেছেন, প্রিয় দেশবাসী, আমি সাংবাদিক। সত্য উদ্ঘাটনে কখনো কখনো আমাকে মিথ্যার আশ্রয় নিতে হয় এবং ভবিষ্যতে হবে। যেমন গাজীপুরে শহীদ তাজউদ্দীন আহমেদ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের অনিয়ম উদ্ঘাটনে আমাকে কখনো কখনো রোগী সাজতে হবে। কাশিমপুর কারাগারের অনিয়ম উদ্ঘাটনে আমাকে আসামি সাজতেও হতে পারে। এসবই জনগণের জন্য, দেশের মঙ্গলের জন্য। ব্যক্তিগত লাভের আশায় না। শুধু গণমাধ্যমকর্মী নয়, জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থে রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানকেও এ ধরনের গোপনীয়তা রক্ষা করে জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুর সমাধান করতে হয়। রোগী বা আসামি সাজার প্রক্রিয়ায় যদি আমাকে গুপ্তচর বলে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ২০১৮ এর ৩২ নম্বর ধারায় দণ্ডিত করে তাহলে যাবে কোথায় জনগণ, কোথায় ন্যায়বিচার? প্রস্তাবিত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের প্রতিবাদে ‘#আমিগুপ্তচর’ প্রসঙ্গত, সমালোচনার মুখে তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি (আইসিটি) আইনের বিতর্কিত ৫৭ ধারা বিলুপ্ত করার উদ্যোগ নেয় সরকার। তবে প্রস্তাবিত নতুন আইনের খসড়ায় দেখা যায় বিতর্কিত ৫৭ ধারার অপরাধগুলোকেই ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন’– ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে রাখা হয়েছে। প্রস্তাবিত আইনে চারটি ধারায় ৫৭ ধারার অপরাধগুলো ভাগ করে রাখা হয়েছে। তবে এই আইনের ৩২ ধারা নিয়েই বিতর্ক হচ্ছে সবচেয়ে বেশি। এই ধারায় ডিজিটাল অপরাধের বদলে গুপ্তচরবৃত্তির জন্য সাজা দেওয়ার বিধান রাখা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে- কোনো সরকারি, আধাসরকারি বা স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে ঢুকে কেউ কোনো কিছু রেকর্ড করলে তা গুপ্তচরবৃত্তির অপরাধ হবে। এর জন্য ১৪ বছরের জেল এবং ২০ লাখ টাকা জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে। এর প্রতিবাদেই সোচ্চার হয়েছেন অনেকে। বিশেষ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বইছে সমালোচনার ঝড়।
যা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ভাষায়, এখন আমি গুপ্তচর! #আমিগুপ্তচর আনোয়ার হোসেন লিখেছেন, সাংবাদিকদের কেন #আমিগুপ্তচর লিখে প্রতিবাদ করতে হয়? ৫৭, ৩২, ২৫, ২৯ আর যেই নম্বরই দিন না কেন! সাংবাদিকতাকে বাধাগ্রস্ত করবেন না। আমাদের কর্মকাণ্ডকে গুপ্তচরের সার্টিফিকেট ধরিয়ে দেয়া কখনোই কল্যাণকর কিছু নয়। দ্রুত এর সমাধান হওয়া প্রয়োজন। মাসুদ রায়হান পলাশ লিখেছেন, আমি গোপন ক্যামেরা দিয়ে ডিডিও ধারণ করব। ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের অপরাধমূলক গোপন তথ্য প্রকাশ করব। আমাকে ২০ লাখ টাকা জরিমানাসহ ১৪ বছরের জেল দিন। #আমিগুপ্তচর এম এ কবির লিখেছেন, প্রিয় দেশবাসী, আমি সাংবাদিক। সত্য উদ্ঘাটনে কখনো কখনো আমাকে মিথ্যার আশ্রয় নিতে হয় এবং ভবিষ্যতে হবে। যেমন গাজীপুরে শহীদ তাজউদ্দীন আহমেদ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের অনিয়ম উদ্ঘাটনে আমাকে কখনো কখনো রোগী সাজতে হবে। কাশিমপুর কারাগারের অনিয়ম উদ্ঘাটনে আমাকে আসামি সাজতেও হতে পারে। এসবই জনগণের জন্য, দেশের মঙ্গলের জন্য। ব্যক্তিগত লাভের আশায় না। শুধু গণমাধ্যমকর্মী নয়, জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থে রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানকেও এ ধরনের গোপনীয়তা রক্ষা করে জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুর সমাধান করতে হয়। রোগী বা আসামি সাজার প্রক্রিয়ায় যদি আমাকে গুপ্তচর বলে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ২০১৮ এর ৩২ নম্বর ধারায় দণ্ডিত করে তাহলে যাবে কোথায় জনগণ, কোথায় ন্যায়বিচার? প্রস্তাবিত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের প্রতিবাদে ‘#আমিগুপ্তচর’ প্রসঙ্গত, সমালোচনার মুখে তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি (আইসিটি) আইনের বিতর্কিত ৫৭ ধারা বিলুপ্ত করার উদ্যোগ নেয় সরকার। তবে প্রস্তাবিত নতুন আইনের খসড়ায় দেখা যায় বিতর্কিত ৫৭ ধারার অপরাধগুলোকেই ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন’– ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে রাখা হয়েছে। প্রস্তাবিত আইনে চারটি ধারায় ৫৭ ধারার অপরাধগুলো ভাগ করে রাখা হয়েছে। তবে এই আইনের ৩২ ধারা নিয়েই বিতর্ক হচ্ছে সবচেয়ে বেশি। এই ধারায় ডিজিটাল অপরাধের বদলে গুপ্তচরবৃত্তির জন্য সাজা দেওয়ার বিধান রাখা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে- কোনো সরকারি, আধাসরকারি বা স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে ঢুকে কেউ কোনো কিছু রেকর্ড করলে তা গুপ্তচরবৃত্তির অপরাধ হবে। এর জন্য ১৪ বছরের জেল এবং ২০ লাখ টাকা জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে। এর প্রতিবাদেই সোচ্চার হয়েছেন অনেকে। বিশেষ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বইছে সমালোচনার ঝড়।
No comments