প্রধান বিচারপতির রায় ‘বিদ্বেষতাড়িত’
আপিল বিভাগ যে যুক্তিতে সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বাতিল করেছেন, সেই যুক্তি তাঁদের কাছে গ্রহণযোগ্য নয় বলে জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। তিনি বলেন, তবে রায়ের সঙ্গে দ্বিমত থাকলেও রায়ের প্রতি তাঁরা শ্রদ্ধাশীল। সংবিধানের ১৬ অনুচ্ছেদ প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘আমার মনে হয়, প্রধান বিচারপতির যে রায়, তা যুক্তিতাড়িত নয়; বরং আবেগ ও বিদ্বেষতাড়িত। আমাদের সকলকে মনে রাখতে হবে, প্রধান বিচারপতির আসন সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান এবং যেকোনো ব্যক্তি সেই আসন অলংকৃত করলে তাঁকেও আমরা সেই প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে এক করে ফেলি। তাই আমাদের সবার দায়িত্ব এই প্রাতিষ্ঠানিক আসনটির মর্যাদা রক্ষা করা। আমি শুধু বলতে চাই, ব্যক্তির চেয়ে প্রতিষ্ঠান বড় এবং প্রতিষ্ঠানের চেয়ে দেশ বড়।’ আজ বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে রায় নিয়ে সরকারের পক্ষ থেকে ব্যাখ্যা দিতে ডাকা সংবাদ সম্মেলনে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক এ কথা বলেন। আইনমন্ত্রী বলেন, রায়ের প্রেক্ষাপটে প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা যেসব অবজারভেশন বা বক্তব্য দিয়েছেন, এতে অনেক অপ্রাসঙ্গিক কথা বলা হয়েছে। তিনি বলেন, প্রধান বিচারপতি জাতীয় সংসদ সম্পর্কে কটূক্তি করেছেন। এই প্রতিষ্ঠানকে হেয়প্রতিপন্ন করেছেন। এ ছাড়া বাংলাদেশের স্বাধীনতা কোনো একক ব্যক্তির কারণে হয়নি বলে যে বক্তব্য দেওয়া হয়েছে, তাতে তিনি মর্মাহত। আনিসুল হক বলেন, ‘আমাদের নিরীক্ষায় মাননীয় প্রধান বিচারপতির রায়ে যেসব “আপত্তিকর” ও “অপ্রাসঙ্গিক” বক্তব্য আছে, সেগুলো এক্সপাঞ্জ করার উদ্যোগও আমরা নেব।’ আনিসুল হক বলেন, সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল পদ্ধতি অত্যন্ত অস্বচ্ছ ও নাজুক। তবে তিনি এও বলেন, ষোড়শ সংশোধনী নিয়ে সংসদ বিচার বিভাগের সঙ্গে কোনো পাওয়ার কনটেস্টে অবতীর্ণ হয়নি। এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, রায়ের পরপরই তড়িঘড়ি করে সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের বৈঠক ডাকা দুঃখজনক। এই রায়ে রিভিউ করার বিষয়ে আইনমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা যেহেতু এই রায়ে সংক্ষুব্ধ, তাই আমরা নিশ্চয়ই চিন্তাভাবনা করছি যে এই রায়ে রিভিউ করা হবে কি না। তবে এখনো কোনো সিদ্ধান্তে উপনীত হইনি। কারণ, রায়ের খুঁটিনাটি বিষয়গুলো এখনো নিবিড়ভাবে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হচ্ছে।’
No comments