তালিকা হালনাগাদে অন্তহীন অভিযোগ
অধিকাংশ বাড়িতে না গিয়েই শেষ হল নতুন ভোটারের তথ্য সংগ্রহের কাজ। ১৬ দিন ধরে (২৫ জুলাই-৯আগস্ট) তথ্য সংগ্রহের সময় মাঠকর্মীরা ঢাকাসহ দেশের বেশির ভাগ এলাকায় নতুন ভোটারের খোঁজে বাড়ি বাড়ি যাননি। প্রচার ছাড়াই তথ্য সংগ্রহের জন্য কর্মীরা স্থানীয় কোনো একটি স্কুলে বসেছেন। নির্দিষ্ট ওই স্থানে যারা নিজ আগ্রহে এসেছেন তাদের তথ্যই নেয়া হয়েছে। ফরম সংকট ছিল তীব্র। বরাদ্দ থাকার পরও ব্যাপকভাবে প্রচার চালানো হয়নি। কাজের ক্ষেত্রে কর্মকর্তাদের অনভিজ্ঞতার বিষয় উঠে এসেছে। ইসির কেন্দ্র ও মাঠ পর্যায়ের অনেক কর্মকর্তা দায়সারা মনোভাব দেখিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এসব কারণে ১৮ বছর হয়েছে এমন বিপুলসংখ্যক তরুণ-তরুণী ভোটার হতে পারেনি। বিদ্যমান তালিকা থেকে মৃতদের নামও যথাযথভাবে বাদ দেয়া হয়নি। কাজ না হলেও বড় অংকের অর্থব্যয় হয়ে গেছে। এখন ৪১ কোটি ২৭ লাখ টাকার বর্তমান বাজেট আরও বৃদ্ধির তোড়জোড় চলছে। এ অবস্থায় বুধবার শেষ হয়েছে ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রম। এদিকে তথ্য সংগ্রহকারীদের দেখা না পেয়ে অনেকেই নিজ দায়িত্বে ইসি ও এর অধীনস্থ অফিসগুলোতে ভিড় জমাচ্ছেন। তাদের কাছ থেকে তথ্য না রেখে উল্টো ফের তথ্য সংগ্রহকারীর সঙ্গে যোগাযোগ করতে পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। এতে ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন আগ্রহী তরুণ-তরুণী ও তাদের অভিভাবকরা। তারা বলেন, নতুন ভোটার সংগ্রহের জন্য ব্যাপক প্রচারণা চালানোর কথা থাকলেও নির্বাচন কমিশন (ইসি) কাজটি গুরুত্ব দেয়নি। এর নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে ভোটার হালনাগাদ কার্যক্রমে। ইসির সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, বর্তমান তালিকায় ১০ কোটি ১৮ লাখ ভোটার রয়েছে। এবার হালনাগাদের মাধ্যমে ৩৫ লাখ নতুন ভোটার তালিকাভুক্তির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। এর মধ্যে ৭ আগস্ট পর্যন্ত ১৪ লাখ ৫০ হাজার নতুন ভোটারের তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে, যা লক্ষ্যমাত্রার অর্ধেকেরও কম। ওই সময় পর্যন্ত ৬ লাখ ৯৪ হাজার মৃত ভোটার পাওয়া গেছে। যদিও বুধবার পর্যন্ত ওই সংখ্যা কিছুটা বাড়বে বলে জানিয়েছেন ইসির কর্মকর্তারা। এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) শাহাদত হোসেন চৌধুরী যুগান্তরকে বলেন, যেসব তথ্য সংগ্রহকারী বাড়ি বাড়ি যায়নি এমন সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পাওয়া গেলে তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। তিনি বলেন, এবার হালনাগাদে প্রাপ্তবয়স্ক সবাইকে ভোটার করা হবে। এক্ষেত্রে লক্ষ্যমাত্রা হয়তো পূরণ হবে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, পূর্ণবয়স্ক ভোটার হতে পারেননি এমন তরুণ-তরুণীর সংখ্যা বেশি হলে একটি সার্কুলার জারি করে তাদের সুযোগ দেয়া যেতে পারে। ইসি সূত্রে জানা গেছে, ২৫ জুলাই শুরু হয়ে ৯ আগস্ট পর্যন্ত বাড়ি বাড়ি গিয়ে তথ্য সংগ্রহ করার কথা ছিল। কিন্তু কাজটি পুরোপুরি হয়নি। এরপরও নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে যেসব তথ্য পাওয়া গেছে তা সারা দেশের নির্দিষ্ট নিবন্ধন কেন্দ্রে আগামী ২০ আগস্ট থেকে ৫ নভেম্বর পর্যন্ত তিন ধাপে নিবন্ধন করা হবে। ওই সময় তাদের ছবি তোলা ও আঙুলের ছাপ নেয়া হবে। এসব কেন্দ্রে গিয়েও ভোটার হওয়ার আবেদন করা যাবে। এরপর ২ জানুয়ারি হালনাগাদকৃত খসড়া ভোটার তালিকা ও ৩১ জানুয়ারি চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করবে ইসি। সরেজমিন দেখা গেছে, রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশনে বুধবার বেশ কয়েকজন ভোটার হওয়ার বিষয়ে খোঁজখবর নিতে এসেছেন। অভ্যর্থনা কেন্দ্রে কর্তব্যরতরা তাদের নির্বাচন অফিসে যোগাযোগের পরামর্শ দিচ্ছেন। মিরপুরের রূপনগর আবাসিক এলাকার ৯ নম্বর রোডের ১৮ নম্বর ভবনের বাসিন্দা মো. শহীদুর রহমান তার দুই মেয়েকে ভোটার করার বিষয়ে বুধবার কমিশনে আসেন। ইসির একজন উপসচিবের কাছে এ বিষয়ে করণীয় জানতে চাইলে তাকে মিরপুর থানা অফিসে যোগাযোগের পরামর্শ দেয়া হয়।
পরে এ প্রতিবেদককে তিনি অভিযোগ করেন, তার বাসায় এ পর্যন্ত কেউ তথ্য সংগ্রহ করতে যায়নি। ভোটার হালনাগাদ কার্যক্রম সম্পর্কে মাইকিং করতেও শোনেননি। পত্রিকায় ভোটার হালনাগাদ করা হচ্ছে এমন খবর পেয়ে খোঁজ নিতে কমিশনে এসেছেন। এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে মিরপুর থানা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. রাকিবুজ্জামান যুগান্তরকে বলেন, সব তথ্য সংগ্রহকারীর বাসায় বাসায় গিয়ে তথ্য সংগ্রহের কথা। আমি নিজেই অনেক স্থানে খোঁজ নিয়ে জেনেছি তারা বাড়ি বাড়ি গিয়েছেন। তবে ওই বাড়িতে তথ্য সংগ্রহকারীর না যাওয়ার বিষয়টি খতিয়ে দেখব। একই ধরনের অভিযোগ করেছেন মোহাম্মদপুরের শেখেরটেক ৭ নম্বর রোডের বাসিন্দা তোফায়েল আহমেদ। তিনি অভিযোগ করেন, তার কলেজ পড়–য়া মেয়েকে ভোটার করার জন্য স্ত্রীকে আগ থেকেই বলে রেখেছিলেন। কিন্তু তথ্য সংগ্রহকারীরা বাসায় না যাওয়ায় তার মেয়েকে ভোটার তালিকাভুক্তির জন্য ফরম পূরণ করতে পারেননি। এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে মোহাম্মদপুর থানা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. নজরুল ইসলাম বলেন, তথ্য সংগ্রহকারীরা যাতে প্রতিটি বাসায় যান সে বিষয়ে রাস্তায় থেকে নজরদারি করেছি। অনেক বাসায় আমি নিজে গিয়ে খোঁজখবর নিয়েছি। তথ্য সংগ্রহে বেশ কিছু সমস্যার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, অনেক বাসায় গিয়ে তালাবদ্ধ পাওয়া যায়। আবার অনেক বাড়ির দারোয়ান তথ্য সংগ্রহকারীদের ভবনে প্রবেশ করতে দেন না। কোনো কোনো বাড়িতে কুকুরের তাড়া খেয়ে তথ্য সংগ্রহকারীর ফেরত আসার ঘটনাও ঘটেছে। তবুও সব বাসায় তথ্য সংগ্রহকারীদের যেতে বলা হয়েছে। একই অভিযোগ করেছেন ধানমণ্ডি, গুলশান, রমনা, ক্যান্টনমেন্ট, উত্তরা, নবাবগঞ্জসহ কয়েকটি থানা ও উপজেলার বাসিন্দারা। নির্বাচন কমিশনের একজন কর্মকর্তা জানান, ঢাকায় ২০টি থানা অফিস আছে। গত ৬ মাসের মধ্যে ৫-৬টি বাদে সব থানা অফিসে নতুন কর্মকর্তা পদায়ন করা হয়েছে। এসব কর্মকর্তাদের অনেকেই ঢাকায় কাজ করার অভিজ্ঞতা এবং স্থানীয়দের সঙ্গে পরিচয় না থাকায় রাজধানীতে তুলনামূলক ভোটার কম হচ্ছে। অনেক বাড়িতে তথ্যসংগ্রহকারীরা যাচ্ছেন না- সেটিও তারা জানেন না। ইসির সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, ৭ আগস্ট পর্যন্ত সব থেকে কম সংখ্যক নতুন ভোটারের তথ্য সংগ্রহ হয়েছে বরিশাল অঞ্চলে। ইসির দশটি অঞ্চলের মধ্যে ঢাকা অঞ্চলে ২ লাখ ৬৬ হাজার ৩৭৩ জন ও বরিশাল অঞ্চলে ৫৭ হাজার ২৫৮ জন নাগরিকের তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। এছাড়া চট্টগ্রামে ১ লাখ ৫৭ হাজার ৭৩১, রাজশাহীতে ১ লাখ ৪৬ হাজার ১১২, খুলনায় ১ লাখ ৫৩ হাজার ৪৬১, সিলেটে ১ লাখ ৪৮ হাজার ৪৯৫, রংপুরে ১ লাখ ৫২ হাজার ৭৫৪ ও ময়মনসিংহে ১ লাখ ৩৯ হাজার ১৫৮ জনের তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। বাকি ফরিদপুরে ৮৪ হাজার ৫৩৯ জন এবং কুমিল্লা অঞ্চলে ১ লাখ ৪৪ হাজার ৮৩০ জন নতুন ভোটার হওয়ার ফরম পূরণ করেছেন। এছাড়া এ সময়ে ভোটার এলাকা স্থানান্তরের জন্য আবেদন করেছেন ৩৬ হাজার ৩৪১ জন নাগরিক। মৃত ভোটার পাওয়া গেছে ৬ লাখ ৯৪ হাজার ৯৪৮ জন। বরাদ্দ সত্ত্বেও প্রচারণা নেই : ভোটার হালনাগাদ কার্যক্রমে প্রচারণা ও জনসচেতনতা খাতে ২ কোটি ৮৮ লাখ ৪৯ হাজার টাকা বরাদ্দ রয়েছে। এর মধ্যে ১০টি পত্রিকায় বিজ্ঞাপন খাতে ৪ লাখ টাকা, জনসচেতনতামূলক গান ও টিভি স্পট ১০ লাখ টাকা, সব উপজেলা ও থানায় ব্যানার ৩৫ লাখ ৪৬ হাজার টাকা, সারা দেশে প্রতিটি উপজেলা বা থানায় ৩ দিন মাইকিং ১ কোটি ৬২ লাখ ৬৩ হাজার টাকা এবং ডকুমেন্টারি তৈরি খাতে ৫ লাখ টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দেয়া হলেও টিভিতে জনসচেতনতামূলক গান প্রচারের ব্যবস্থা করেনি ইসি। তৈরি করা হয়নি ডকুমেন্টারি। এছাড়া থানা ও উপজেলা পর্যায়ে ৩ দিন করে মাইকিংয়ের কথা থাকলেও বেশিরভাগ এলাকায় তা করা হয়নি বলে অভিযোগ রয়েছে। রাজশাহীতে স্কুলে বসেই তথ্য সংগ্রহ : আমাদের রাজশাহী ব্যুরো জানায়, তথ্য সংগ্রহকারীর অনেকেই বাড়ি বাড়ি না গিয়ে সংশ্লিষ্ট এলাকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বসেই তথ্য সংগ্রহ করেছেন। নগরীর ১৫নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আবদুস সোবহান লিটন জানান, কিছু তথ্য সংগ্রহকারী বাড়ি বাড়ি গেছেন। তবে অনেকেই বাড়ি যাননি। একই অবস্থা নগরীর ১৯নং ওয়ার্ডের। ওই ওয়ার্ডের শিরোইল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও ছোট বনগ্রাম সরকারি বিদ্যালয়ে বসে তথ্য সংগ্রহ করেছেন তথ্য সংগ্রহকারীরা। ২১নং ওয়ার্ডে তথ্য হাল নাগাদের কাজ করা হয়েছে সাবিত্রী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে বসে। নগরীর পাঠানপাড়া এলাকার বাসিন্দা শফিকুল আলম জানান, জুমার নামাজের পর মসজিদে ঘোষণা দেয়া হয়েছিল তথ্য হালনাগাদ করার। নতুন ভোটার হওয়ার জন্য তার বাড়ির লোকজন অপেক্ষা করছিলেন কিন্তু কেউ আসেননি। তাই ভোটার হতে পারেননি। এ বিষয়ে রাজশাহী জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আতিয়ার রহমান যুগান্তরকে বলেন, ভোটার হালনাগাদে আমরা শতভাগ সফল হতে পারিনি। তবে চেষ্টা করা হয়েছে সব বাড়িতেই পৌঁছানোর। কিন্তু নানা সীমাবদ্ধতা ছিল।
চট্টগ্রামে ফরম সংকট : আমাদের চট্টগ্রাম ব্যুরো জানায়, বিভিন্ন উপজেলায় ভোটার হালনাগাদের ফরম সংকট, তথ্য সংগ্রহকারীরা কোনো কোনো ক্ষেত্রে বাড়ি বাড়ি না যাওয়া এবং চাহিদামতো কাগজপত্র দিতে না পারায় অনেকেই ভোটার হতে পারবেন না এমন আশঙ্কায় আছেন। বিভিন্ন উপজেলা ও ইউনিয়ন পরিষদের জনপ্রতিনিধিরা জানান, ভোটার হালনাগাদের তথ্য সংগ্রহ করার জন্য পর্যাপ্ত ফরম দিতে পারেনি। এক্ষেত্রে ফরম সংকট রয়েছে বলে জানানো হয়। লোহাগাড়া উপজেলার ১ নম্বর বড়হাতিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এমডি জুনাইদ চৌধুরী বলেন, নতুন ভোটারের চাহিদা অনুযায়ী ফরম দিতে পারেননি। আবার তার ইউনিয়নে তথ্য সংগ্রহকারীদের অনেকে বাড়ি বাড়ি যাননি বলেও তিনি অভিযোগ করেন। এ ব্যাপারে চট্টগ্রাম আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মো. মঈন উদ্দীন খান বলেন, কোথাও ফরম সংকট হওয়ার কথা নয়। আমাদের কাছে পর্যাপ্ত পরিমাণ ফরম মজুদ রয়েছে। উপজেলা নির্বাচনী কর্মকর্তারা চাইলেই আমরা ফরম পাঠিয়ে দিয়েছি।
চট্টগ্রামে ফরম সংকট : আমাদের চট্টগ্রাম ব্যুরো জানায়, বিভিন্ন উপজেলায় ভোটার হালনাগাদের ফরম সংকট, তথ্য সংগ্রহকারীরা কোনো কোনো ক্ষেত্রে বাড়ি বাড়ি না যাওয়া এবং চাহিদামতো কাগজপত্র দিতে না পারায় অনেকেই ভোটার হতে পারবেন না এমন আশঙ্কায় আছেন। বিভিন্ন উপজেলা ও ইউনিয়ন পরিষদের জনপ্রতিনিধিরা জানান, ভোটার হালনাগাদের তথ্য সংগ্রহ করার জন্য পর্যাপ্ত ফরম দিতে পারেনি। এক্ষেত্রে ফরম সংকট রয়েছে বলে জানানো হয়। লোহাগাড়া উপজেলার ১ নম্বর বড়হাতিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এমডি জুনাইদ চৌধুরী বলেন, নতুন ভোটারের চাহিদা অনুযায়ী ফরম দিতে পারেননি। আবার তার ইউনিয়নে তথ্য সংগ্রহকারীদের অনেকে বাড়ি বাড়ি যাননি বলেও তিনি অভিযোগ করেন। এ ব্যাপারে চট্টগ্রাম আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মো. মঈন উদ্দীন খান বলেন, কোথাও ফরম সংকট হওয়ার কথা নয়। আমাদের কাছে পর্যাপ্ত পরিমাণ ফরম মজুদ রয়েছে। উপজেলা নির্বাচনী কর্মকর্তারা চাইলেই আমরা ফরম পাঠিয়ে দিয়েছি।
No comments