ইয়াবা আসক্ত নারীর সংখ্যা বাড়ছে by আল-আমিন
প্রথমে
কৌতূহল। প্রেমিকের কাছ থেকে নিয়ে টান দেয়া। এভাবেই ধূমপান শুরু রুপার।
ঢাকার একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। বনানীতে ক্যাম্পাস।
বন্ধুর সঙ্গে পার্টিতে সেবন করতেন সিসা। এক পর্যায়ে তা আর ভালো লাগতো না।
রুপা এখন ইয়াবায় আসক্ত। রুপা একা নন, এখন অনেক মেয়েই ইয়াবায় আসক্ত হয়ে
পড়ছেন। দিন দিন তাদের সংখ্যা বাড়ছে।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ২০১৭ সালের এপ্রিলের পরিসংখ্যান অনুযায়ী সারা দেশে নারী মাদকসেবীর সংখ্যা ৫ লাখ ৯০ হাজার। তার মধ্যে ইয়াবায় আসক্ত হচ্ছে ৩০ শতাংশ অর্থাৎ ১ লাখ ৭৭ হাজার। ১৬ থেকে ৭০ বছর বয়সী পর্যন্ত নারীরা ইয়াবায় আসক্ত। তার মধ্যে প্রায় ১০ হাজার নারী শিক্ষার্থী ইয়াবা সেবন করে। নারী শিক্ষার্থীদের বয়স ১৭ থেকে ২৮-এর মধ্যে। বেশির ভাগ প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর তাদের নিজস্ব চিকিৎসালয় ও বেসরকারি মাদক নিরাময় কেন্দ্রগুলোতে এক প্রাথমিক জরিপ চালিয়ে এমন তথ্য পেয়েছে। মানসিক হতাশা, পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে না পারা, সহপাঠীর প্ররোচনায় এবং প্রেম বিচ্ছেদের কারণে নারীরা ইয়াবায় আসক্ত হচ্ছেন। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, ইয়াবাসক্ত নারীদের নিউরোলজি আস্তে আস্তে নষ্ট হয়ে যায়। মস্তিষ্কে ধারণক্ষমতা কমে যায়। আসক্ত নারী একসময় মানসিক রোগীতে পরিণত হয়।
এ বিষয়ে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক (গোয়েন্দা) মো. নজরুল ইসলাম মানবজমিনকে জানান, দেশে যতো নারী মাদকসেবী রয়েছে তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক নারী ইয়াবা সেবন করে। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর তাদের নিজস্ব চিকিৎসালয় এবং মাদক নিরাময় কেন্দ্রে একটি জরিপ চালিয়েছিল। সেখানে যেসব চিকিৎসারত নারী রোগী ছিলেন তাদের প্রত্যেককেই কোন কোন মাদক সেবন করে তা জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল। তার মধ্যে ৩০ শতাংশ নারী ইয়াবা সেবন করার কথা জানিয়েছিল। তিনি জানান, যেসব নারী ইয়াবা সেবন করে তাদের মধ্যে প্রায় ৭৫ শতাংশ উচ্চবিত্ত পরিবারের সন্তান। যারা রাজধানী ঢাকা, বিভাগীয় শহর ও জেলা শহরে বসবাস করে। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, স্বাধীনতার পর নারীরা সিগারেট, গাঁজা, ফেনসিডিল ও অ্যালকোহলে আসক্ত ছিল। ৯০-এর দশকে ঢাকা শহরের উচ্চবিত্ত পরিবারের সন্তানেরা ইয়াবা সেবন শুরু করে। এর প্রভাব সারা দেশে পড়তে শুরু করে। ইয়াবা ট্যাবলেট সিসার চাইতে কয়েকগুণ বেশি নেশা সৃষ্টি করে।
গত বুধবার সকালে রুপার সঙ্গে তার বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে কথা হয়। তিনি জানান, ২০১৬ সালে স্প্রিং সেমিস্টারে তিনি বিবিএতে ভর্তি হন। বন্ধু ও প্রেমিক আরজুর সঙ্গে থেকে সিগারেট, সিসা আর ইয়াবায় আসক্ত হয়ে পড়েন তিনি। ইয়াবায় আসক্ত এই নারী শিক্ষার্থীকে তার পরিবারের লোকজন মাদক নিরাময় কেন্দ্রে দুই মাস রেখেছিলেন। কিন্তু, ইয়াবার নেশা তিনি এখনো ছাড়তে পারেননি। তিনি জানান, অন্যান্য নেশার তুলনায় ইয়াবা সেবন করতে অনেক সুবিধা। সিগারেট ও সিসার ধোঁয়া সেবন করা তার কাছে বিরক্তিকর মনে হয়েছে। ফেনসিডিল সেবন করা তার কাছে ওষুধের মতো মনে হয়। ইয়াবা তার কাছে এখন মজার একটি নেশা। একটি মাত্র ইয়াবার বড়ি সেবন করলে অন্যরকম নেশা সৃষ্টি হয়। তিনি আরো জানান, যখন মানসিক হতাশা এবং জীবনে না পাওয়ার বেদনার উত্তেজনা আসে তখন ইয়াবা ট্যাবলেট সেবন করি। এই নেশা করার কারণে তার ভবিষ্যৎ অন্ধকারে নিমজ্জিত হচ্ছে তিনি এটি বুঝতে পারছেন কিনা এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি জানান, এখন আর বুঝে কি হবে। সহপাঠী আমার জীবন ধ্বংস করেছে। চতুর্থ সেমিস্টারে তার রেজাল্ট ভালো হয়নি। একারণে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তাকে পরের সেমিস্টারে প্রমোশন দেননি।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ২০১৫ সালে দেশে নারী মাদকসেবী ছিল ৪ লাখ ৯০ হাজার। তার মধ্যে ২২ শতাংশ অর্থাৎ ১ লাখ ৭ হাজার ৮০০ জন নারী ইয়াবাসেবী ছিল। ২০১৬ সালে নারী মাদকসেবীর সংখ্যা দাঁড়ায় ৫ লাখ ৬০ হাজারে। তার মধ্যে ২৭ শতাংশ অর্থাৎ ১ লাখ ৫১ হাজার ২০০ জন নারী ইয়াবাসেবী ছিল। ২০১৭ সালের এপ্রিল মাসের পরিসংখ্যান অনুযায়ী সারা দেশে নারী মাদকসেবীর সংখ্যা হচ্ছে ৫ লাখ ৯০ হাজার। তার মধ্যে ইয়াবায় আসক্ত নারী হচ্ছে ৩০ শতাংশ অর্থাৎ ১ লাখ ৭৭ হাজার। পরিসংখ্যানে দেখা গেছে প্রত্যেক বছর এই সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে।
এ বিষয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজের মেডিসিন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. সদীপ রঞ্জন দেব মানবজমিনকে জানান, ইয়াবা সেবনে নারীদের যে ভয়াবহ ক্ষতি হয় তা হচ্ছে নিউরোলজি নষ্ট হয়ে যাওয়া। কর্ম করার জন্য শরীরের যেসব অর্গানগুলো রয়েছে তা অকেজো হয়ে যায়। কিডনি নষ্ট হয়ে যায়। তিনি আরো জানান, ইয়াবা সেবন করার কারণে মস্তিষ্কে ধারণ ক্ষমতা কমে যায়। গৃহবধূরা সংসারের কাজকর্মে মনোযোগ দিতে পারেন না। নারী শিক্ষার্থীরা পড়া মনে রাখতে পারেন না। কেউ কেউ আবার মানসিক রোগী হয়ে যায়। অনেক নারী যৌন উত্তেজনা ও মিলনকে আরো দীর্ঘস্থায়ী করার জন্য ইয়াবা ট্যাবলেট সেবন করে। এই ধারণা তাদের ভুল। কারণ, ইয়াবা ট্যাবলেট যৌন শক্তি বৃদ্ধি করে না বরং দিন দিন আরো নিস্তেজ করে দেয়।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ২০১৭ সালের এপ্রিলের পরিসংখ্যান অনুযায়ী সারা দেশে নারী মাদকসেবীর সংখ্যা ৫ লাখ ৯০ হাজার। তার মধ্যে ইয়াবায় আসক্ত হচ্ছে ৩০ শতাংশ অর্থাৎ ১ লাখ ৭৭ হাজার। ১৬ থেকে ৭০ বছর বয়সী পর্যন্ত নারীরা ইয়াবায় আসক্ত। তার মধ্যে প্রায় ১০ হাজার নারী শিক্ষার্থী ইয়াবা সেবন করে। নারী শিক্ষার্থীদের বয়স ১৭ থেকে ২৮-এর মধ্যে। বেশির ভাগ প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর তাদের নিজস্ব চিকিৎসালয় ও বেসরকারি মাদক নিরাময় কেন্দ্রগুলোতে এক প্রাথমিক জরিপ চালিয়ে এমন তথ্য পেয়েছে। মানসিক হতাশা, পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে না পারা, সহপাঠীর প্ররোচনায় এবং প্রেম বিচ্ছেদের কারণে নারীরা ইয়াবায় আসক্ত হচ্ছেন। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, ইয়াবাসক্ত নারীদের নিউরোলজি আস্তে আস্তে নষ্ট হয়ে যায়। মস্তিষ্কে ধারণক্ষমতা কমে যায়। আসক্ত নারী একসময় মানসিক রোগীতে পরিণত হয়।
এ বিষয়ে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক (গোয়েন্দা) মো. নজরুল ইসলাম মানবজমিনকে জানান, দেশে যতো নারী মাদকসেবী রয়েছে তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক নারী ইয়াবা সেবন করে। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর তাদের নিজস্ব চিকিৎসালয় এবং মাদক নিরাময় কেন্দ্রে একটি জরিপ চালিয়েছিল। সেখানে যেসব চিকিৎসারত নারী রোগী ছিলেন তাদের প্রত্যেককেই কোন কোন মাদক সেবন করে তা জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল। তার মধ্যে ৩০ শতাংশ নারী ইয়াবা সেবন করার কথা জানিয়েছিল। তিনি জানান, যেসব নারী ইয়াবা সেবন করে তাদের মধ্যে প্রায় ৭৫ শতাংশ উচ্চবিত্ত পরিবারের সন্তান। যারা রাজধানী ঢাকা, বিভাগীয় শহর ও জেলা শহরে বসবাস করে। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, স্বাধীনতার পর নারীরা সিগারেট, গাঁজা, ফেনসিডিল ও অ্যালকোহলে আসক্ত ছিল। ৯০-এর দশকে ঢাকা শহরের উচ্চবিত্ত পরিবারের সন্তানেরা ইয়াবা সেবন শুরু করে। এর প্রভাব সারা দেশে পড়তে শুরু করে। ইয়াবা ট্যাবলেট সিসার চাইতে কয়েকগুণ বেশি নেশা সৃষ্টি করে।
গত বুধবার সকালে রুপার সঙ্গে তার বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে কথা হয়। তিনি জানান, ২০১৬ সালে স্প্রিং সেমিস্টারে তিনি বিবিএতে ভর্তি হন। বন্ধু ও প্রেমিক আরজুর সঙ্গে থেকে সিগারেট, সিসা আর ইয়াবায় আসক্ত হয়ে পড়েন তিনি। ইয়াবায় আসক্ত এই নারী শিক্ষার্থীকে তার পরিবারের লোকজন মাদক নিরাময় কেন্দ্রে দুই মাস রেখেছিলেন। কিন্তু, ইয়াবার নেশা তিনি এখনো ছাড়তে পারেননি। তিনি জানান, অন্যান্য নেশার তুলনায় ইয়াবা সেবন করতে অনেক সুবিধা। সিগারেট ও সিসার ধোঁয়া সেবন করা তার কাছে বিরক্তিকর মনে হয়েছে। ফেনসিডিল সেবন করা তার কাছে ওষুধের মতো মনে হয়। ইয়াবা তার কাছে এখন মজার একটি নেশা। একটি মাত্র ইয়াবার বড়ি সেবন করলে অন্যরকম নেশা সৃষ্টি হয়। তিনি আরো জানান, যখন মানসিক হতাশা এবং জীবনে না পাওয়ার বেদনার উত্তেজনা আসে তখন ইয়াবা ট্যাবলেট সেবন করি। এই নেশা করার কারণে তার ভবিষ্যৎ অন্ধকারে নিমজ্জিত হচ্ছে তিনি এটি বুঝতে পারছেন কিনা এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি জানান, এখন আর বুঝে কি হবে। সহপাঠী আমার জীবন ধ্বংস করেছে। চতুর্থ সেমিস্টারে তার রেজাল্ট ভালো হয়নি। একারণে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তাকে পরের সেমিস্টারে প্রমোশন দেননি।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ২০১৫ সালে দেশে নারী মাদকসেবী ছিল ৪ লাখ ৯০ হাজার। তার মধ্যে ২২ শতাংশ অর্থাৎ ১ লাখ ৭ হাজার ৮০০ জন নারী ইয়াবাসেবী ছিল। ২০১৬ সালে নারী মাদকসেবীর সংখ্যা দাঁড়ায় ৫ লাখ ৬০ হাজারে। তার মধ্যে ২৭ শতাংশ অর্থাৎ ১ লাখ ৫১ হাজার ২০০ জন নারী ইয়াবাসেবী ছিল। ২০১৭ সালের এপ্রিল মাসের পরিসংখ্যান অনুযায়ী সারা দেশে নারী মাদকসেবীর সংখ্যা হচ্ছে ৫ লাখ ৯০ হাজার। তার মধ্যে ইয়াবায় আসক্ত নারী হচ্ছে ৩০ শতাংশ অর্থাৎ ১ লাখ ৭৭ হাজার। পরিসংখ্যানে দেখা গেছে প্রত্যেক বছর এই সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে।
এ বিষয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজের মেডিসিন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. সদীপ রঞ্জন দেব মানবজমিনকে জানান, ইয়াবা সেবনে নারীদের যে ভয়াবহ ক্ষতি হয় তা হচ্ছে নিউরোলজি নষ্ট হয়ে যাওয়া। কর্ম করার জন্য শরীরের যেসব অর্গানগুলো রয়েছে তা অকেজো হয়ে যায়। কিডনি নষ্ট হয়ে যায়। তিনি আরো জানান, ইয়াবা সেবন করার কারণে মস্তিষ্কে ধারণ ক্ষমতা কমে যায়। গৃহবধূরা সংসারের কাজকর্মে মনোযোগ দিতে পারেন না। নারী শিক্ষার্থীরা পড়া মনে রাখতে পারেন না। কেউ কেউ আবার মানসিক রোগী হয়ে যায়। অনেক নারী যৌন উত্তেজনা ও মিলনকে আরো দীর্ঘস্থায়ী করার জন্য ইয়াবা ট্যাবলেট সেবন করে। এই ধারণা তাদের ভুল। কারণ, ইয়াবা ট্যাবলেট যৌন শক্তি বৃদ্ধি করে না বরং দিন দিন আরো নিস্তেজ করে দেয়।
No comments