দীপু নাম্বার ওয়ান by চৌধুরী মুমতাজ আহমদ
বাবা
ছিলেন একাত্তরের মুক্তি সংগ্রামের লড়াইয়ে। ছেলের বয়স তখন মাত্র ৫। দেশের
জন্য বাবার জীবনপণ লড়াই তার স্মৃতিতে না থাকলেও বাবার কাছ থেকে দেশের প্রতি
প্রেম ঠিকই ছড়িয়েছিল ছেলের মাঝে। দেশের জন্য কাজ করার স্বপ্ন থেকেই যোগ
দিয়েছিলেন পুলিশ বাহিনীতে। দেশমাতার গায়ে ‘বিষফোঁড়া’ হয়ে ওঠা জঙ্গিদের
বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নিজের প্রাণ অকাতরে বিলিয়ে দিয়ে বাবার কাছ থেকে পাওয়া
দেশপ্রেমের শিক্ষাটাকে আরো উঁচুতেই যেন তুলে ধরলেন চৌধুরী মোহাম্মদ আবু
কায়সার। সিলেটের দক্ষিণ সুরমার শিববাড়িতে জঙ্গিবিরোধী অভিযান চলাকালে বোমা
বিস্ফোরণে নিহত আবু কায়সার চৌধুরী তার পরিবার ও চেনা-জানাদের কাছে বেশি
পরিচিত ‘দীপু’ নামেই। প্রিয় শহর সুনামগঞ্জও তাকে এ নামেই চেনে। সুনামগঞ্জের
ছাতক উপজেলার ছৈলা গ্রামে পৈতৃক নিবাস হলেও দীপুর জন্ম ও বেড়ে ওঠা
সুনামগঞ্জ শহরেই। ১৯৬৬ সালের ১৮ই সেপ্টেম্বর পৃথিবীর আলো দেখেছিলেন দীপু।
সুনামগঞ্জ শহরের কালিবাড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রথম ও দ্বিতীয়
শ্রেণির পাঠ শেষে ভর্তি হন সুনামগঞ্জ সরকারি জুবিলি উচ্চবিদ্যালয়ে। সেখান
থেকে ১৯৮২ সালে মাধ্যমিক পাস করেন, ভর্তি হন সুনামগঞ্জ ডিগ্রি কলেজে। উচ্চ
মাধ্যমিকের পর বিকম ডিগ্রিও নেন এ কলেজ থেকে। উচ্চতর পড়াশোনার জন্য প্রিয়
শহর ছেড়ে ঢাকামুখী হন দীপু। ১৯৮৮ সালে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে
স্নাতকোত্তর ডিগ্রি গ্রহণের পাশাপাশি সিটি ল’ কলেজ থেকে এলএলবি পাস করেন।
পড়াশোনার বাইরে দীপু ছিলেন খুব ভালো একজন ক্রিকেটার। সুনামগঞ্জ শহরের
সুপরিচিত মডার্ন ক্রিকেট ক্লাবের অধিনায়ক ছিলেন তিনি। খেলেছেন সুনামগঞ্জ
প্রথম বিভাগ লিগে। যুক্ত ছিলেন নানা সামাজিক কর্মকাণ্ডেও।
চৌধুরী মোহাম্মদ আবু কায়সার দীপুকে একজন নির্বিরোধী মানুষ হিসেবেই চেনে পুরো সুনামগঞ্জ। পুলিশ বিভাগেও তিনি তার একই পরিচয় ধরে রেখেছিলেন। সৎ ও দক্ষ অফিসার হিসেবে পুলিশ পরিবারে তার ভালোই পরিচিতি ছিল। বাবার কাছ থেকে পাওয়া দেশপ্রেমের শিক্ষা থেকেই পড়াশোনার পাঠ শেষে ১৯৯০ সালে পুলিশ বিভাগে ভর্তি হয়েছিলেন দীপু। সাব ইন্সপেক্টর হিসেবে তার প্রথম পোস্টিং হয় নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ থানায়। দক্ষতা ও সততার সঙ্গে দায়িত্ব পালনের পথ পরিক্রমায় ইন্সপেক্টর হিসেবে পদোন্নতি পান। এরই মাঝে ২০১৩ সালে শান্তিরক্ষী বাহিনীর সদস্য হিসেবে আইভরি কোস্টে ১ বছর ২ মাস কৃতিত্বের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেন।
পুলিশের চাকরিতে থাকাকালেই ২০০০ সালের ২৩শে জুন সংসারী হন চৌধুরী মোহাম্মদ আবু কায়সার দীপু। কোনো সন্তান না থাকলেও স্ত্রী সায়রা চৌধুরীকে নিয়ে সুখের সংসার গড়েছিলেন তিনি। চাইলে স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে অন্যরকম নিঝঞ্ঝাট জীবন কাটাতে পারতেন। জীবনটাকে অন্য রকম করে সাজানোর সুযোগ ছিল দীপুর সামনে। ভাগ্য তাকে পথ করে দিয়েছিল অনেকেরই স্বপ্নের দেশ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে স্থায়ী হওয়ার। ২০০৪ সালে ডিভি লটারি পেয়ে যুক্তরাষ্ট্রে গেলেও সেখানে স্থায়ী হননি দীপু। দেশের টানে ১৩ মাস পরই ফিরে আসেন। আবার যোগ দেন পুলিশ বাহিনীতে। মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত দেশের হয়েই দায়িত্ব পালন করেন তিনি।
পারিবারিকভাবেই চৌধুরী মোহাম্মদ আবু কায়সার দীপুর রক্তের মাঝেই মিশেছিল মুক্তিযুদ্ধের চেতনা। সুনামগঞ্জে তাদের পরিবারের আলাদা একটি পরিচয় রয়েছে। সুনামগঞ্জে মুক্তিযুদ্ধের ভিত্তিভূমি হিসেবে যে কটি বাড়ির পরিচিতি রয়েছে এর মধ্যে তাদের বাড়িটিও অন্যতম। একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের সময় যে কজন সুনামগঞ্জে মুক্তিবাহিনীর দিক নির্দেশনায় ছিলেন এর মাঝে ছিল দীপুর বাবা অ্যাডভোকেট আসদ্দর চৌধুরীর নামও। মুক্তি সংগ্রামে সক্রিয় থাকায় তার বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়েছিল সে সময়। বাবা ছিলেন বাংলাদেশ নামের রাষ্ট্রের জন্মক্ষণের লড়াইয়ের সৈনিক। সে দেশকে নিরাপদ রাখার দায়িত্ব কাঁধে তুলে নেন দীপু। নিজের জীবন দিয়েই সে দায়িত্ব পালন করে গেলেন দীপু। প্রমাণ করে দিলেন তিনি যোগ্য বাবার যোগ্য সন্তান। প্রমাণ করেছেন দেশপ্রেমের মিছিলে তিনিও নাম্বার ওয়ান।
চৌধুরী মোহাম্মদ আবু কায়সার দীপুকে একজন নির্বিরোধী মানুষ হিসেবেই চেনে পুরো সুনামগঞ্জ। পুলিশ বিভাগেও তিনি তার একই পরিচয় ধরে রেখেছিলেন। সৎ ও দক্ষ অফিসার হিসেবে পুলিশ পরিবারে তার ভালোই পরিচিতি ছিল। বাবার কাছ থেকে পাওয়া দেশপ্রেমের শিক্ষা থেকেই পড়াশোনার পাঠ শেষে ১৯৯০ সালে পুলিশ বিভাগে ভর্তি হয়েছিলেন দীপু। সাব ইন্সপেক্টর হিসেবে তার প্রথম পোস্টিং হয় নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ থানায়। দক্ষতা ও সততার সঙ্গে দায়িত্ব পালনের পথ পরিক্রমায় ইন্সপেক্টর হিসেবে পদোন্নতি পান। এরই মাঝে ২০১৩ সালে শান্তিরক্ষী বাহিনীর সদস্য হিসেবে আইভরি কোস্টে ১ বছর ২ মাস কৃতিত্বের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেন।
পুলিশের চাকরিতে থাকাকালেই ২০০০ সালের ২৩শে জুন সংসারী হন চৌধুরী মোহাম্মদ আবু কায়সার দীপু। কোনো সন্তান না থাকলেও স্ত্রী সায়রা চৌধুরীকে নিয়ে সুখের সংসার গড়েছিলেন তিনি। চাইলে স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে অন্যরকম নিঝঞ্ঝাট জীবন কাটাতে পারতেন। জীবনটাকে অন্য রকম করে সাজানোর সুযোগ ছিল দীপুর সামনে। ভাগ্য তাকে পথ করে দিয়েছিল অনেকেরই স্বপ্নের দেশ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে স্থায়ী হওয়ার। ২০০৪ সালে ডিভি লটারি পেয়ে যুক্তরাষ্ট্রে গেলেও সেখানে স্থায়ী হননি দীপু। দেশের টানে ১৩ মাস পরই ফিরে আসেন। আবার যোগ দেন পুলিশ বাহিনীতে। মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত দেশের হয়েই দায়িত্ব পালন করেন তিনি।
পারিবারিকভাবেই চৌধুরী মোহাম্মদ আবু কায়সার দীপুর রক্তের মাঝেই মিশেছিল মুক্তিযুদ্ধের চেতনা। সুনামগঞ্জে তাদের পরিবারের আলাদা একটি পরিচয় রয়েছে। সুনামগঞ্জে মুক্তিযুদ্ধের ভিত্তিভূমি হিসেবে যে কটি বাড়ির পরিচিতি রয়েছে এর মধ্যে তাদের বাড়িটিও অন্যতম। একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের সময় যে কজন সুনামগঞ্জে মুক্তিবাহিনীর দিক নির্দেশনায় ছিলেন এর মাঝে ছিল দীপুর বাবা অ্যাডভোকেট আসদ্দর চৌধুরীর নামও। মুক্তি সংগ্রামে সক্রিয় থাকায় তার বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়েছিল সে সময়। বাবা ছিলেন বাংলাদেশ নামের রাষ্ট্রের জন্মক্ষণের লড়াইয়ের সৈনিক। সে দেশকে নিরাপদ রাখার দায়িত্ব কাঁধে তুলে নেন দীপু। নিজের জীবন দিয়েই সে দায়িত্ব পালন করে গেলেন দীপু। প্রমাণ করে দিলেন তিনি যোগ্য বাবার যোগ্য সন্তান। প্রমাণ করেছেন দেশপ্রেমের মিছিলে তিনিও নাম্বার ওয়ান।
No comments