কৃমিনাশক খেয়ে আরও ২ শতাধিক শিক্ষার্থী অসুস্থ
ঝিনাইদহ-কুষ্টিয়ার
পর এবার মেহেরপুর ও চুয়াডাঙ্গায় কৃমিনাশক খেয়ে দুই শতাধিক শিক্ষার্থী
অসুস্থ হয়ে পড়েছে। তাদের চিকিৎসা দিতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ হিমশিম খাচ্ছে।
এর আগে গতকাল শনিবার কৃমিনাশক খেয়ে ঝিনাইদহ ও কুষ্টিয়ার বিভিন্ন প্রাথমিক ও
হাইস্কুলের তিন শতাধিক শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়ে। মেহেরপুর প্রতিনিধি
জানান, জেলার গাংনী উপজেলায় কৃমিনাশক ওষুধ খেয়ে শতাধিক শিক্ষার্থী অসুস্থ
হয়ে পড়েছে। রোববার সকাল ৮টায় উপজেলার গাড়াডোব গ্রামের গাড়াডোব মাধ্যমিক
বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে। অসুস্থ শিক্ষার্থীদের গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য
কমপ্লেক্স ও মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বিদ্যালয়ের
প্রধান শিক্ষক আবদুল মানান জানান, বিদ্যালয়ে সাড়ে ৫শ’ শিক্ষার্থী। সকাল ৯টা
থেকে কৃমিনাশক ওষুধ খাওয়ানো শুরু হয়। ওষুধ সেবনের ঘণ্টাখানেক পর থেকে তারা
অসুস্থ হতে শুরু করে। মেহেরপুর জেলা সিভিল সার্জন (ভারপ্রাপ্ত) অলোক কুমার
দাস জানান, এটি ম্যাস সাইকিয়াটিক রোগ। একজনের দেখাদেখি অরেকজন আক্রান্ত
হয়। তবে আতংকের কিছু নয়। ঘণ্টা দু'য়েকের মধ্যে আক্রান্তরা স্বাভাবিক হয়ে
যাবে। চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি জানান, জেলায় কৃমিনাশক ট্যাবলেট খেয়ে শতাধিক
শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়েছে। তাদের হাসপাতালসহ বিভিন্ন ক্লিনিকে ভর্তি করা
হয়েছে। রোববার বেলা ১১টার দিকে দামুড়হুদা উপজেলার একটি বালিকা বিদ্যালয়সহ
তিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এ ঘটনা ঘটে।
পরে ওইসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে
দিয়ে শিক্ষক অভিভাবকরা মিলে অসুস্থ শিক্ষার্থীদের হাসপাতালে নিয়ে যান। জানা
গেছে, চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার কার্পাসডাঙ্গা হাদিকাতুল উলুম দাখিল
মাদ্রাসায় রোববার সকাল ১০টায় স্বাস্থ্য কর্মীরা কৃমিনাশক ট্যাবলেট দিয়ে
যান। মাদ্রাসার সুপার মাওলানা নুরুল আমিন জানান, ট্যাবলেটগুলো পাওয়ার পর
আমরা শতাধিক ছাত্রীকে একটি করে ট্যাবলেট খেতে বলি। ছাত্রীরা বেলা ১১টার
দিকে অসুস্থ হতে শুরু করে। কেউ মাথা ঘুরে পড়ে যায়, কেউ কেউ বমি করতে থাকে।
পুরো মাদ্রাসায় আতংক নেমে আসে। এ সময় পার্শ্ববর্তী এলাকার অভিভাবকদের
সহযোগিতায় শিক্ষক-শিক্ষিকারা অসুস্থ ছাত্রীদের দামুড়হুদা উপজেলা স্বাস্থ্য
কমপ্লেক্সে ও স্থানীয় ক্লিনিকে ভর্তি করেন। একইভাবে পার্শ্ববর্তী
পীরপুরকুল্লা মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও চন্দ্রবাস সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের
অধিকাংশ শিক্ষার্থী কৃমিনাশক ট্যাবলেট খেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েছে। এ ব্যাপারে
দামুড়হুদা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আবু হেনা
মোহাম্মদ জামাল যুগান্তরকে জানান, ‘প্রচণ্ড গরমের কারণে এমনটি হয়ে থাকতে
পারে। তবে ট্যাবলেট সেবনে এমনটি হওয়ার কথা নয়। শিক্ষার্থীরা মানসিকভাবে
দুর্বল হয়ে পড়ার কারণে হয়তো এমন হয়েছে। তবে তাদের চিকিৎসা চলছে। আতংকিত
হওয়ার কিছু নেই।’ এদিকে শিক্ষার্থীদের এমন অসুস্থ হয়ে পড়ার খবর শুনে অনেক
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রধান কৃমিনাশক ট্যাবলেট শিক্ষার্থীদের হাতে দেননি। তারা
বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করছেন।
No comments