বিশ্বে ৩০ কোটি মানুষ হতাশায় ভুগছে
বিশ্ব
স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) জানিয়েছে, বিশ্বে বর্তমানে ৩০ কোটি মানুষ
হতাশায় ভুগছেন। বিশ্বজুড়ে মানুষের অসুস্থতা ও অক্ষমতাই হতাশার প্রধান কারণ
হয়ে দাঁড়িয়েছে। আগামী ৭ এপ্রিল বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবসকে সামনে রেখে
বৃহস্পতিবার এ তথ্য জানিয়েছে ডব্লিউএইচও। শুক্রবার রয়টার্সের প্রতিবেদনে
বলা হয়, স্মৃতিবিভ্রাট ও ভ্রান্ত ধ্যান-ধারণা থেকে মানুষকে মুক্ত রাখতে
প্রচারাভিযান চালিয়ে থাকে ডব্লিউএইচও। এই সংস্থার মানসিক স্বাস্থ্য বিভাগের
পরিচালক শেখর স্যাক্সেনা বলেন, ‘হতাশায় ভোগা কেউ যদি বিশ্বস্ত মানুষের
সঙ্গে কথা বলেন, তাহলে এটি হয় তার চিকিৎসা ও সুস্থ হয়ে ওঠার প্রথম
পদক্ষেপ।’ ২০০৫ সাল থেকে এ পর্যন্ত হতাশাগ্রস্ত মানুষের সংখ্যা বেড়েছে ১৮
শতাংশ। তবে যথাযথ সহযোগিতা ও চিকিৎসকার অভাবে মানসিকতা ভালো রেখে
স্বাস্থ্যসম্মত ও উৎপাদনশীল জীবনযাপন করতে পারছে না অনেকে। ডব্লিউএইচওর
মহাপরিচালক মার্গারেট চান বলেছেন, এই পরিসংখ্যান সব দেশের সরকারকে তার
জনগণের মানসিক স্বাস্থ্যের প্রতি সজাগ হতে মনে করিয়ে দিচ্ছে এবং প্রয়োজনমতো
জরুরি সেবা দেয়ার উদ্যোগ গ্রহণে সতর্ক করছে। মানসিক অসুস্থতা একটি সাধারণ
রোগ। টানা বিষাদের মধ্যে থাকা,
স্বার্থহানি এবং প্রতিদিনের কাজকর্মে অক্ষম
হওয়া থেকে মানসিক অসুস্থতায় আক্রান্ত হয় মানুষ। কিছু মারাত্মক রোগ এবং
মানসিক বৈকল্যের ঝুঁকি বাড়ায় হতাশা। মানুষ হতাশ হয়ে পড়লে তাদের মধ্যে
আত্মহননের প্রবণতা, নেশাগ্রস্ত হওয়া, ডায়াবেটিস ও হার্ট অ্যাটাকে আক্রান্ত
হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়। এসব কারণে বিশ্বের বড় অংশের মানুষ মারা যায়।
ডব্লিউএইচও উদ্বেগ প্রকাশ করেছে, বিশ্বের অনেক দেশে হতাশাগ্রস্ত মানুষের
চিকিৎসার কোনো ব্যবস্থা নেই অথবা থাকলেও তা খুবই অপ্রতুল। তা ছাড়া ধনী
দেশগুলোতে হতাশায় ভোগা মানুষের মাত্র অর্ধেক চিকিৎসার আওতায় আসে। সংস্থাটির
তথ্যানুযায়ী, মোটের ওপর বিশ্বে সরকারগুলো তাদের স্বাস্থ্য খাতের বাজেটের
মাত্র ৩ শতাংশ মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর ব্যয় করে, যা দরিদ্র দেশগুলোতে ১
শতাংশেরও কম। আর উন্নত দেশগুলোতে সর্বোচ্চ ৫ শতাংশ ব্যয় করা হয়। পরিচালক
স্যাক্সেনা বলেছেন, ‘হতাশা বিষয়টি ভালোভাবে বুঝতে এবং এর চিকিৎসার উপায়
জানতে যা করতে হবে, তা হল- এখনই শুরু করুন।’ মানসিক স্বাস্থ্য ঠিক আছে
বুঝতে টেকসই আচরণকে বোঝায়। এর অর্থ সবার কাছে, এমনকি প্রত্যন্ত অঞ্চলের
মানুষের কাছেও গ্রহণযোগ্য হয়, এমন আচরণকে বোঝায়।
No comments