'ছৌপদী প্রথার' কুসংস্কারে প্রাণ গেল আরেক কিশোরীর
তথ্য-প্রযুক্তির এ যুগে এসেও অনেকে এখনো পড়ে আছেন অন্ধকার যুগের ধ্যান-ধারণা নিয়ে। কুসংস্কারে আচ্ছন্ন এমনই এক নেপালি পরিবারের কিশোরী রোশনি তিরুয়াকে (১৫) প্রাণ দিতে হলো কেবল 'মাসিক' শুরু হওয়ার কারণে। কাঠমান্ডু থেকে ৪৪০ কিলোমিটার পশ্চিমে আচাম জেলার গিজরা গ্রামে গত রোববার এ ঘটনা ঘটে। খবর আনন্দবাজার'র। মাসিক হলে কিশোরীদের পরিবার থেকে আলাদা রাখার এ প্রথাকে বলা হয় 'ছৌপদী প্রথা'। নেপালের পার্বত্য অঞ্চলে এ ধরনের ঘটনা অবশ্য নতুন নয়। 'ছৌপদী প্রথা'র বীজ পোঁতা এ অঞ্চলের ঘরে ঘরে। মাসখানেক আগে এ অঞ্চলে একইভাবে মৃত্যু হয়েছিল আরেক কিশোরীর। ঋতুমতী হওয়ায় সমাজের প্রথা অনুয়ায়ী ওই কিশোরীকে পাঠানো হয়েছিল কাদা, মাটি ও গোবরে ভর্তি গোয়ালের প্রায় বদ্ধ একটা ঘরে। সেখানেই অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে বদ্ধ-গুমোট ঘরে দম বন্ধ হয়ে মারা যায় পনেরো বছরের রোশনি তিরুয়া।
খুব স্বাভাবিকভাবে প্রকৃতির নিয়মে ঋতুমতী হয়েছিল রোশনি তিরুয়া। কিন্তু স্বাভাবিক ভাবে তা মানতে পারল না পরিবার। পরিবারের নির্দেশ- মাসের 'ওই' দিনগুলোয় বাড়ির অন্যদের সঙ্গে থাকতে পারবে না রোশনি। হাতের কাছে একমাত্র উপায় বাড়ির পাশের গোয়ালঘর। সেখানেই জোর করে ঠেলে পাঠানো হয় মেয়েটিকে। ঠান্ডার রাতে ঘুমনোর জন্য কোনো কম্বলও দেয়া হয়নি তাকে। কেন না সেটাই নাকি 'নিয়ম'। পুলিশ জানায়, ঠান্ডার হাত থেকে বাঁচতে রাতে ঘুমনোর আগে আগুন জ্বালিয়েছিল রোশনি। কিন্তু ওই গোয়ালঘরে যথেষ্ট বাতাস চলাচলের জায়গা ছিল না। ফলে গত শনিবার রাতে ঘুমের মধ্যেই দমবন্ধ হয়ে মৃত্যু হয় তার। রোববার সকালে রোশনির বাবা গোয়ালঘরে গিয়ে দেখতে পান মারা গেছে তার মেয়ে। সানফিবাগার পুলিশ সুপার বদরি প্রসাদ ধকল জানিয়েছেন, প্রাথমিক তদন্তের পর মনে করা হচ্ছে- শ্বাসরোধ হয়ে মৃত্যু হয়েছে রোশনির। তার লাশ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে।
No comments