মৃদু ভূমিকম্প ও ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত সিলেট স্টেডিয়াম
সিলেটে শুক্রবার রাতের মৃদু ভূমিকম্প ও কালবৈশাখী ঝড়ে সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। স্টেডিয়ামের প্রেসিডেন্ট বক্স, হসপিটালিটি বক্স, প্রেসবক্সসহ বিভিন্ন স্থানে গ্লাস ভেঙে চুরমার হয়েছে। কাচের অবকাঠামোর প্রায় এক-তৃতীয়াংশ ভেঙে পড়েছে। গতকাল সরেজমিন দেখা যায়, স্টেডিয়ামের বিভিন্ন স্থানে চূর্ণ-বিচূর্ণ গ্লাসের গুঁড়া ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে ভিআইপি গ্যালারি ও মিডিয়া সেন্টারে। বেশকিছু গ্লাস না ভাঙলেও ঝুঁকিতে রয়েছে। সিলিং এবং টাইলস ছুটে গেছে। ভেঙে গেছে অনেক চেয়ার। মেঝেতে জমে রয়েছে বৃষ্টির পানি। শুক্রবার রাতে মৃদু ভূমিকম্পের পরপর কালবৈশাখী ঝড়ে স্টেডিয়ামের দক্ষিণ ও উত্তর পাশে থাকা গ্যালারি দুটির দ্বিতীয় তলা থেকে ওপরের প্রতিটি তলায় কিছু না কিছু ক্ষতি হয়েছে। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের পরিচালক ও বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল জানান, ‘শুক্রবার রাতের ঝড়ে স্টেডিয়ামের প্রেসিডেন্ট বক্সে লাগানো অর্ধেক কাচই ভেঙে পড়েছে।’ এছাড়া হসপিটালিটি বক্স ও মিডিয়া সেন্টারেরও ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। কাচের অবকাঠামোর প্রায় এক-তৃতীয়াংশ ভেঙে পড়েছে বলেও জানিয়েছেন তিনি। নাদেল বলেন, কাচ ভেঙে পড়ায় বৃষ্টির পানি স্টেডিয়ামে অভ্যন্তরে ঢুকেছে। এতে আসবাবপত্রেরও ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
তবে ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণ করতে ঢাকা থেকে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ ও বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের একটি দল সিলেটে আসছে। সিলেট বিভাগীয় স্টেডিয়াম নামে এর নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছিল ২০০৫ সালে। স্টেডিয়ামটিতে আন্তর্জাতিক মানের করতে বিগত আওয়ামী লীগ সরকার ১২০ কোটি টাকার সংস্কার কাজ করেন। আইসিসি স্টেডিয়ামটিকে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি দেয়। এ উপমহাদেশের মধ্যে গ্রিন গ্যালারি সমৃদ্ধ একমাত্র স্টেডিয়ামটি বিশ্বে অন্যতম সৌন্দর্যমণ্ডিত স্টেডিয়াম হিসেবে পরিচিতি লাভ করে। ২০১৪ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্টেডিয়ামের উদ্বোধন করেন। ওই বছর এ স্টেডিয়ামে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের কয়েকটি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়। প্রায় এক বছরের বেশি সময় ধরে ফের সংস্কার কাজ চলছে। স্টেডিয়ামের পূর্ব গ্যালারির দ্বিতীয় তলার কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। মৃদু ভূমিকম্পে নগরজুড়ে আতঙ্ক : সিলেটে মৃদু ভূকম্পন অনুভূত হয়েছে। শুক্রবার রাত ১০টা ৪৭ মিনিট ৪১ সেকেন্ডে ভূকম্পন অনুভূত হয়। রিখটার স্কেলে এর মাত্রা ছিল ৪.১। উৎপত্তিস্থল ছিল ভারতের মেঘালয়ে। ভূমিকম্পের সময় নগরীর বাসিন্দারা বাসা-বাড়ির বাইরে চলে আসেন। বহুতল ভবন ছেড়ে শঙ্কিত লোকজন দ্রুত বেরিয়ে পড়েন। নগরবাসী বলেছেন, এই ভূমিকম্পটি ব্যতিক্রম মনে হয়েছে। আগে কখনও এমন ভূকম্পন অনুভূত হয়নি। ভূমিকম্পে নগরীর ভাতালিয়া এলাকার হযরত মধুশহীদের (রহ.) মাজারের তিনশ’ বছরের পুরনো গাছ উপড়ে পড়েছে।
No comments