শারমিনের হাতে সাহসিকতার পুরস্কার তুলে দিলেন মেলানিয়া ট্রাম্প
বাংলাদেশের
ঝালকাঠির মেয়ে শারমিন আক্তারের হাতে সাহসিকতার পুরস্কার ‘ইন্টারন্যাশনাল
উইমেন অব কারেজ অ্যাওয়ার্ড’ তুলে দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের ফার্স লেডি
মেলানিয়া ট্রাম্প। বুধবার ওয়াশিংটনের ডিন এচেসন মিলনায়তনে মেলানিয়া ট্রাম্প
শারমিনের হাতে এ পদক তুলে দেন বলে যুক্তরাষ্ট্র পররাষ্ট্র দফতরের
ওয়েবসাইটে জানানো হয়েছে। নিজের বাল্যবিয়ে ঠেকিয়ে বিশ্বজুড়ে প্রশংসিত হয়েছেন
শারমিন। যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতি বিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারি থমাস শ্যাননের
উপস্থাপনায় ওই অনুষ্ঠানে শারমিনের সঙ্গে বিভিন্ন দেশের আরও ১২ জন নারীকে এই
সম্মাননা দেওয়া হয়। এর আগে বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের এক
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, মাত্র ১৫ বছর বয়সে জোরপূর্বক বিয়ে ঠেকিয়ে দক্ষিণ
এশিয়ার কিশোরীদের জন্য দৃষ্টান্ত সৃষ্টি করায় এই বছর শারমিন আক্তারকে
‘সাহসী নারী’ পুরস্কার দেওয়া হয়। ২০১৫ সালের অগাস্টের ওই ঘটনায় শারমিন তার
মা এবং ৩২ বছর বয়সী ‘হবু স্বামী’ প্রতিবেশী স্বপন খলিফার বিরুদ্ধে মামলাও
করেছিলেন। শারমিনের মা গোলনূর মেয়েকে বিয়ে দেওয়ার জন্য চাপ দিয়েও রাজি
করাতে পারেনি বলে গণমাধ্যমের খবর। এরপর মিথ্যা কথা বলে খুলনায় নিয়ে গিয়ে
স্বপনের সঙ্গে মেয়েকে একঘরে আটকে রাখারও অভিযোগ আছে তার বিরুদ্ধে। পরদিন
সেখান থেকে কৌশলে পালিয়ে গেলেও ধরা পড়ে যান শারমিন।
এরপর তাকে ঝালকাঠিতে
নিজের বাড়িতে আটকে রাখা হয়। ১৬ অগাস্ট শারমিন ফের বাড়ি থেকে পালিয়ে এক
সহপাঠীকে নিয়ে থানায় গিয়ে মামলা করেন। পুলিশ গোলনূর ও স্বপনকে গ্রেফতার
করার পর আদালত শারমিনকে দাদির জিম্মায় দেয়। বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়,
সাহসিকতার জন্য প্রশংসিত শারমিন বর্তমানে রাজাপুর পাইলট বালিকা
উচ্চবিদ্যালয়ের একজন শিক্ষার্থী এবং সমাজের ক্ষতিকর প্রথা বাল্যবিবাহ ও
জোরপূর্বক বিয়ের বিরুদ্ধে প্রচারণা চালাতে তিনি ভবিষ্যতে একজন আইনজীবী
হওয়ার স্বপ্ন দেখেন। বিশ্বব্যাপী শান্তি, ন্যায়বিচার, মানবাধিকার, লৈঙ্গিক
সমতা এবং নারীর ক্ষমতায়নের পক্ষে জোরালো ভূমিকা ও সাহসী পদক্ষেপের স্বীকৃতি
হিসেবে ২০০৭ সাল থেকে এ পুরস্কার দিয়ে আসছে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র
দফতর। বিশ্বের ৬০টি দেশে সমাজ বদলে সাহসী ভূমিকা রাখছেন এমন শতাধিক নারীকে
এই সম্মাননা দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে তারা। শারমিনের সঙ্গে আরও যাদের
সাহসিকতার স্বীকৃতির পুরস্কার দেওয়া হয়েছে, তারা হলেন- বতসোয়ানার মালেবোগো
মালেফে, কলম্বিয়ার নাতালিয়া পনসে দো লিয়ো, ডেমোক্রেটিক রিপাবলিক অব কঙ্গোর
রেবেকা কাবুঘো, ইরাকের জান্নাত আল গাজি, নাইজারের আইশাতু ইসাকা উসমানে,
পাপুয়া নিউ গিনির ভেরোনিকা সিমোগুন। এছাড়াও আছেন পেরুর সিন্ডি আর্লেট
কন্ট্রেরাস বৌতিস্তা, শ্রীলঙ্কার সন্ধ্যা একনেলিগোডা, সিরিয়ার ক্যারোলিন
তাহান ফাচাখ, তুরস্কের সাদেত অজকান, ভিয়েতনামের নগুয়েন গক নু কুইন এবং
ইয়েমেনের ফাদিয়া নাজিব থাবেত।
No comments