রিজার্ভ চুরিতে রাষ্ট্রীয় মদদ ছিল: হোতাদের নাম প্রকাশ করা হবে
যুক্তরাষ্ট্রের
ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক থেকে বাংলাদেশের রিজার্ভ চুরির নেপথ্যে রাষ্ট্রীয়
মদদ ছিল বলে উল্লেখ করেছেন ওই ঘটনার তদন্তে ফিলিপাইনে থাকা এক এফবিআই
কর্মকর্তা। এ ব্যাপারে বিস্তারিত না জানালেও এফবিআই রিজার্ভ চুরির হোতাদের
নাম-পরিচয় প্রকাশের খুব কাছাকাছি রয়েছে বলে তিনি জানিয়েছেন। ফিলিপাইনে
মার্কিন দূতাবাসের আইন-বিষয়ক কর্মকর্তা লেমন্ট সিলার বার্তা সংস্থা
রয়টার্সকে এসব তথ্য জানিয়েছেন। ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের এই ঘটনার
তদন্তে নেতৃত্ব দিচ্ছে মার্কিন তদন্ত সংস্থা এফবিআই। গত সপ্তাহে ওয়াশিংটন
পোস্টের খবরে বলা হয়, একজন চীনা মধ্যস্থতাকারীর সহায়তায় উ. কোরিয়া এই
হ্যাকিংয়ের ঘটনা ঘটিয়েছে বলে মার্কিন প্রসিকিউটররা জানতে পেরেছেন। এ
ব্যাপারে মামলার প্রস্তুতি নেয়ার কথাও জানিয়েছিলেন তারা। সিলার জানান,
ফিলিপাইনের সরকারের সঙ্গে যৌথভাবে ঘটনার তদন্ত করছে এফবিআই। তিনি বলেন,
‘আমাদের কাজ শেষ হয়ে যায়নি। আমরা দোষীদের বিচারের আওতায় আনতে চাই। এর মধ্য
দিয়ে আমরা বার্তা দিতে চাই যে, এমনকি রাষ্ট্রীয় মদদে এমন বিচার হলেও সাজা
ভোগ না করে উপায় নাই।’ গত বছর ৫ ফেব্রুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ
ব্যাংক অব নিউইয়র্কে থাকা বাংলাদেশ ব্যাংকের অ্যাকাউন্ট সেপ্টেম্বরে এ
চুরির ঘটনা ঘটে।
ধারণা করা হয়, বাংলাদেশ ব্যাংকের কম্পিউটার সিস্টেমে
প্রবেশে সুইফট কোড ব্যবহার করে নিউইয়র্ক ফেড থেকে প্রায় ১ বিলিয়ন ডলার
ট্রান্সফারের চেষ্টা করে। নিউইয়র্ক ফেড পুরো অর্থ ট্রান্সফার করতে
অস্বীকৃতি জানালেও ৮ কোটি ১০ লাখ ডলার ফিলিপাইনের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের
মাধ্যমে ওই দেশের রিজাল কমার্স ব্যাংকের ৫ জন গ্রাহকের হিসাবে স্থানান্তরিত
হয়। যুক্তরাষ্ট্রের ব্যাংক অব নিউইয়র্ক, সিটি ব্যাংক ও ওয়েলস্ ফারগো এই
তিনটি ব্যাংকের মাধ্যমে ৮১ মিলিয়ন ডলার ফিলিপাইনের ব্যাংকে পাঠানো হয়েছিল।
এই অর্থ গত বছরের মে মাসে খোলা ৫টি হিসাবে জমা করা হয়েছে। এ হিসাবগুলো ওই
মে মাসেই ভুয়া তথ্য দিয়ে খোলা হয়েছিল। এদিকে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ
সার্ভার হ্যাক করে ৬ হাজার ৯৯০ কোটি টাকা (৮৭০ মিলিয়ন ডলার) ফিলিপাইনের
রিজাল কমার্স ব্যাংকে পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু অর্থ স্থানান্তরের বিষয়টি
অস্বাভাবিক মনে করে ফিলিপাইন কেন্দ্রীয় ব্যাংক অর্থ ছাড় না করার নির্দেশ
দেয়ায় বিপুল অর্থ চুরির হাত থেকে বাংলাদেশ ব্যাংক রক্ষা পায়।
No comments