নিতীশ-লালুর জয়ের ১০ কারণ!
জয়ের পর লালু প্রসাদ-নীতিশ কুমারের সমর্থকদের উল্লাস |
ভারতের
বিহার রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনে দেশটির ক্ষমতাসীন দল বিজেপির
নেতৃত্বাধীন এনডিএ জোট বড় ব্যবধানে পরাজিত হয়েছে। রাজ্যের ২৪৩ আসনের
নির্বাচনের ভোট রোববার গণনা করা হয়েছে। ফলাফলে বিহারের বর্তমান
মুখ্যমন্ত্রী নিতীশ কুমার ও সাবেক মুখ্যমন্ত্রী লালু প্রসাদ যাদবের মহাজোট
১৭৮ আসনে জয়ী হয়েছে।
গত বছরের জাতীয় নির্বাচনে বিপুল ভোটে বিজয় অর্জন করেছিল মোদির দল বিজেপি। সম্প্রতি দেশটিতে অসহিষ্ণুতা বাড়ার পরিপ্রেক্ষিতে বিহারের এই নির্বাচনকে তাঁর জন্য একটি পরীক্ষা হিসেবে দেখা হচ্ছিল। কিন্তু সেই পরীক্ষায় তিনি হেরে গেলেন। এই পরাজয়কে মোদির জন্য একটি বড় ধাক্কা হিসেবে দেখা হচ্ছে। এর আগে দিল্লির নির্বাচনেও ভরাডুবি হয় বিজেপির।
নির্বাচনে নিতীশের বিজয় ও বিজেপির পরাজয়ের ১০টি কারণের কথা উল্লেখ করেছে ভারতের টাইমস অব ইন্ডিয়ার অনলাইন সংস্করণ। প্রথম আলোর পাঠকদের জন্য তা উল্লেখ করা হলো—
১. নিতীশের জনপ্রিয়তা
বিহারের ভোটারদের মধ্যে নিতীশ কুমারের জনপ্রিয়তাই সম্ভবত এ বিজয়ের সবচেয়ে বড় কারণ। প্রায় সব ধরনের জরিপেই নিতীশ কুমার মুখ্যমন্ত্রী প্রার্থীদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয় ছিলেন। এ ছাড়া ভারতের অতীতের নির্বাচনগুলোতেও দেখা গেছে যারা একবার মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালে কাজ করেছেন তাঁদের জনপ্রিয়তার জন্য পরেরবার ভোট দিয়ে আবার মুখ্যমন্ত্রী নির্বাচিত করেছেন ভারতের জনগণ। গুজরাটে নরেন্দ্র মোদি, মধ্য প্রদেশে শিবরাজ সিং চৌহান, ছত্তিশগড়ে রমন সিং এবং ওডিশাতে নবীন পাটনায়েক তাঁদের জনপ্রিয়তার জন্য পরেরবার আবার মুখ্যমন্ত্রী নির্বাচিত হয়েছিলেন। তৃতীয়বারের মতো বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নির্বাচিত হয়ে নিতীশ দেখিয়ে দিলেন জাতীয় পর্যায়ে বিপরীত ধারা থাকলেও জনপ্রিয় এবং রাজ্যের জন্য কাজ করা প্রার্থীরাই রাজ্যের নির্বাচনগুলোতে জয়ী হন।
২. রাজ্য বনাম লোকসভা
ভারতে জাতীয় পর্যায়ে এবং রাজ্য পর্যায়ে আলাদা আলাদা নির্বাচন হয়। আর ভোটাররাও বিভিন্ন ধরনের নির্বাচনে বিভিন্ন দলকে ক্ষমতায় বসিয়ে ভিন্নতা আনার চেষ্টা করেন। ভারতের ভোটাররা ‘যেখানে যাকে প্রয়োজন (হর্সেস ফর কোর্সেস) ’ নীতিতে বিশ্বাসী। এর সবচেয়ে বড় উদাহরণ দিল্লির নির্বাচন। যেখানে ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি দিল্লির সবগুলো আসনেই জয় লাভ করে সেখানে ২০১৫ সালের রাজ্যসভা নির্বাচনে ৭০টি আসনের মধ্যে মাত্র তিনটি আসন পায় বিজেপি।
৩. আরএসএস প্রধানের মন্তব্য
‘ভারতীয়রা আসলে ভোট দেয় না, তাঁদের গোত্রকেই নির্বাচিত করে’—এই মতবাদ বিহারে সমর্থন পেয়ে আসছে। বিহার এমন একটা রাজ্য যেখানে নির্বাচনে জাতপাতের রাজনীতি ভীষণভাবে প্রচলিত ও প্রমাণিত। কিন্তু রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ প্রধান মোহন ভাগওয়াতের মন্তব্য করেন ‘গোত্র অনুযায়ী কোটা’ বিষয়টি নিয়ে পুনরায় চিন্তা করা দরকার। তিনি জাতপাত প্রথা ফেলে দেওয়ার বিপক্ষে। আর এ মন্তব্যটিই বিজেপির জন্য নির্বাচনে একটি নেতিবাচক উপকরণ হিসেবে কাজ করেছে।
৪. মুসলিম এবং বিজেপির মধ্যে বিশ্বাসের কমতি
ভারতীয় মুসলমান এবং বিজেপির মধ্যে সব সময় বিশ্বাসের একটি ঘাটতি ছিল। বিহারে ১৫ শতাংশ লোক মুসলিম এবং এই লোকগুলো সব সময় বিজেপির জন্য একটি চ্যালেঞ্জ ছিল। ২০১৪ সালের সাধারণ নির্বাচনে মুসলিমদের মধ্যে বিভক্তি বিজেপির জন্য সুযোগ হয়েই এসেছিল। কিন্তু লালু প্রাসাদ এবং নিতীশ কুমারের এক হওয়ার ফলে মুসলিম ভোটাররাও আবার এক হয়ে যায়। এটিই কাল হয়ে দাঁড়ায় বিজেপির জন্য।
৫. আসাদুদ্দিন ওয়াসির কিছু করতে না পারা
বিহার নির্বাচনে আসাদুদ্দিন ওয়াসি এবং তাঁর সর্ব ভারতী মজলিশ-এ-ইত্তেহাদি-উল মুসলিমীন (এআইএমআইএম) ‘এক্স ফ্যাক্টর’ হিসেবে কাজ করার কথা ছিল। তাঁর নির্বাচনে যাওয়াটাও বিজেপির জন্য ইতিবাচক ছিল। কিন্তু ভোটের সময় যত গড়িয়েছে মহাজোট আসাদুদ্দিন ওয়াসিকে ভোটের ক্ষেত্রে নেতিবাচকভাবে মানুষের সামনে উপস্থাপন করেছে। যার কারণে নির্বাচনে তিনি কোনো প্রভাবই বিস্তার করতে পারেননি।
৬. কংগ্রেসের কৌশল
ভারতে কংগ্রেস ক্রমশই প্রাণশক্তি হারাচ্ছে। কিন্তু কংগ্রেসের এই প্রাণশক্তি হারানোটা বিজেপির জন্য ইতিবাচক না হয়ে বরং নেতিবাচক হয়েই দেখা দিয়েছে। এমনকি বিপুলসংখ্যক অসন্তুষ্ট কংগ্রেস ভোটার দিল্লির নির্বাচনে আম আদমি পার্টিকেই ভোট দিয়েছেন। কংগ্রেসের বিহারের হার নিশ্চিত জেনে দলটি মহাজোটে গেছে এবং চেষ্টা করেছে যেন বিজেপিও জিততে না পারে।
৭. মোদির ক্রমশ হ্রাসমান জনপ্রিয়তা
প্রধানমন্ত্রী মোদি ভারতের সবচেয়ে জনপ্রিয় নেতা। কিন্তু তাঁর নাম দিয়েই বিজেপি সব নির্বাচন জিতবে এটা সম্ভব না। ২০১৪ সালের সাধারণ নির্বাচনে মোদি যখন প্রচার চালাচ্ছিলেন তখন গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে তাঁর দুর্দান্ত রেকর্ড ছিল যা ভোটারদের আকৃষ্ট করেছে। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তাঁকে অনেক বিষয়ের, অনেক প্রশ্নে সম্মুখীন হতে হয়েছে। যদিও এটি মোদির দক্ষতা যে তিনি এখনো অনেককেই তাঁর পক্ষে রেখেছেন কিন্তু ভারতে তাঁর জনপ্রিয়তা ক্রমশ কমছে।
৮. বিজেপির স্থানীয় নেতার অভাব
একটা সময় ছিল যখন স্থানীয় নেতারাই বিজেপির সবচেয়ে বড় শক্তি ছিল। গুজরাটে মোদি, মধ্যপ্রদেশে শিবরাজ, ছত্তিশগড়ে রমন সিং এবং রাজস্থানে বসুন্ধরা রাজেসহ আরও অনেকে। তাঁরা সবাই ছিলেন কংগ্রেসের হিংসার পাত্র। কিন্তু মোদির প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর পর সবার কেন্দ্রে যাওয়ার একটি প্রবণতা তৈরি হয়েছে। বিহারের মতো জায়গায় স্থানীয় কোনো বড় নেতা না থাকার এই সুবিধাটাই পেয়েছে বিজেপি।
৯. ভিকে সিংহের ‘কুকুর’ মন্তব্য
ভারতের ফরিদাবাদে দলিত সম্প্রদায়ের দুটি শিশু খুন হওয়ার ঘটনায় ভারতের কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী ভিকে সিং মন্তব্য করেছিলেন, ‘কুকুরের দিকে কেউ ঢিল ছুড়ে মারলে তার দায়িত্ব সরকারের নয়।’ ভিকে সিংহের এই মন্তব্য ব্যাপক প্রভাব ফেলে নির্বাচনে। এই মন্তব্যের ফলে দলিত সম্প্রদায়ের ভোট নিজেদের দিকে টেনে নিতে সক্ষম হয় মহাজোট।
১০. হেলিকপ্টার প্রচারে ‘না’
অরবিন্দ কেজরিওয়াল বিহারে মহাজোটের পক্ষে নির্বাচনী প্রচারে অংশ নেননি, কিন্তু প্রচারের কিছু টোটকা তিনি নিতীশ কুমারকে ঠিকই দিয়েছিলেন। কেজরিওয়ালের দিল্লির ‘ঘরে ঘরে যেতে হবে’ স্লোগানের মতো নিতীশও টোকা দিয়েছেন প্রতি ঘরের দরজায়। এরপরে ভোটারদের সঙ্গে একটি ব্যক্তিগত সম্পর্ক তৈরি হয়েছিল নিতীশের। বড় র্যালিতে বক্তৃতা দেওয়ার চেয়েও নিতীশ ব্যক্তিগতভাবে বেশি মানুষের কাছে পৌঁছানোর চেষ্টা করেছেন। আর এই চেষ্টায় বিহারের মুখ্যমন্ত্রীর জন্য একটি বড় সফলতা হিসেবে দেখা দিয়েছে।
গত বছরের জাতীয় নির্বাচনে বিপুল ভোটে বিজয় অর্জন করেছিল মোদির দল বিজেপি। সম্প্রতি দেশটিতে অসহিষ্ণুতা বাড়ার পরিপ্রেক্ষিতে বিহারের এই নির্বাচনকে তাঁর জন্য একটি পরীক্ষা হিসেবে দেখা হচ্ছিল। কিন্তু সেই পরীক্ষায় তিনি হেরে গেলেন। এই পরাজয়কে মোদির জন্য একটি বড় ধাক্কা হিসেবে দেখা হচ্ছে। এর আগে দিল্লির নির্বাচনেও ভরাডুবি হয় বিজেপির।
নির্বাচনে নিতীশের বিজয় ও বিজেপির পরাজয়ের ১০টি কারণের কথা উল্লেখ করেছে ভারতের টাইমস অব ইন্ডিয়ার অনলাইন সংস্করণ। প্রথম আলোর পাঠকদের জন্য তা উল্লেখ করা হলো—
১. নিতীশের জনপ্রিয়তা
বিহারের ভোটারদের মধ্যে নিতীশ কুমারের জনপ্রিয়তাই সম্ভবত এ বিজয়ের সবচেয়ে বড় কারণ। প্রায় সব ধরনের জরিপেই নিতীশ কুমার মুখ্যমন্ত্রী প্রার্থীদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয় ছিলেন। এ ছাড়া ভারতের অতীতের নির্বাচনগুলোতেও দেখা গেছে যারা একবার মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালে কাজ করেছেন তাঁদের জনপ্রিয়তার জন্য পরেরবার ভোট দিয়ে আবার মুখ্যমন্ত্রী নির্বাচিত করেছেন ভারতের জনগণ। গুজরাটে নরেন্দ্র মোদি, মধ্য প্রদেশে শিবরাজ সিং চৌহান, ছত্তিশগড়ে রমন সিং এবং ওডিশাতে নবীন পাটনায়েক তাঁদের জনপ্রিয়তার জন্য পরেরবার আবার মুখ্যমন্ত্রী নির্বাচিত হয়েছিলেন। তৃতীয়বারের মতো বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নির্বাচিত হয়ে নিতীশ দেখিয়ে দিলেন জাতীয় পর্যায়ে বিপরীত ধারা থাকলেও জনপ্রিয় এবং রাজ্যের জন্য কাজ করা প্রার্থীরাই রাজ্যের নির্বাচনগুলোতে জয়ী হন।
২. রাজ্য বনাম লোকসভা
ভারতে জাতীয় পর্যায়ে এবং রাজ্য পর্যায়ে আলাদা আলাদা নির্বাচন হয়। আর ভোটাররাও বিভিন্ন ধরনের নির্বাচনে বিভিন্ন দলকে ক্ষমতায় বসিয়ে ভিন্নতা আনার চেষ্টা করেন। ভারতের ভোটাররা ‘যেখানে যাকে প্রয়োজন (হর্সেস ফর কোর্সেস) ’ নীতিতে বিশ্বাসী। এর সবচেয়ে বড় উদাহরণ দিল্লির নির্বাচন। যেখানে ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি দিল্লির সবগুলো আসনেই জয় লাভ করে সেখানে ২০১৫ সালের রাজ্যসভা নির্বাচনে ৭০টি আসনের মধ্যে মাত্র তিনটি আসন পায় বিজেপি।
৩. আরএসএস প্রধানের মন্তব্য
‘ভারতীয়রা আসলে ভোট দেয় না, তাঁদের গোত্রকেই নির্বাচিত করে’—এই মতবাদ বিহারে সমর্থন পেয়ে আসছে। বিহার এমন একটা রাজ্য যেখানে নির্বাচনে জাতপাতের রাজনীতি ভীষণভাবে প্রচলিত ও প্রমাণিত। কিন্তু রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ প্রধান মোহন ভাগওয়াতের মন্তব্য করেন ‘গোত্র অনুযায়ী কোটা’ বিষয়টি নিয়ে পুনরায় চিন্তা করা দরকার। তিনি জাতপাত প্রথা ফেলে দেওয়ার বিপক্ষে। আর এ মন্তব্যটিই বিজেপির জন্য নির্বাচনে একটি নেতিবাচক উপকরণ হিসেবে কাজ করেছে।
৪. মুসলিম এবং বিজেপির মধ্যে বিশ্বাসের কমতি
ভারতীয় মুসলমান এবং বিজেপির মধ্যে সব সময় বিশ্বাসের একটি ঘাটতি ছিল। বিহারে ১৫ শতাংশ লোক মুসলিম এবং এই লোকগুলো সব সময় বিজেপির জন্য একটি চ্যালেঞ্জ ছিল। ২০১৪ সালের সাধারণ নির্বাচনে মুসলিমদের মধ্যে বিভক্তি বিজেপির জন্য সুযোগ হয়েই এসেছিল। কিন্তু লালু প্রাসাদ এবং নিতীশ কুমারের এক হওয়ার ফলে মুসলিম ভোটাররাও আবার এক হয়ে যায়। এটিই কাল হয়ে দাঁড়ায় বিজেপির জন্য।
৫. আসাদুদ্দিন ওয়াসির কিছু করতে না পারা
বিহার নির্বাচনে আসাদুদ্দিন ওয়াসি এবং তাঁর সর্ব ভারতী মজলিশ-এ-ইত্তেহাদি-উল মুসলিমীন (এআইএমআইএম) ‘এক্স ফ্যাক্টর’ হিসেবে কাজ করার কথা ছিল। তাঁর নির্বাচনে যাওয়াটাও বিজেপির জন্য ইতিবাচক ছিল। কিন্তু ভোটের সময় যত গড়িয়েছে মহাজোট আসাদুদ্দিন ওয়াসিকে ভোটের ক্ষেত্রে নেতিবাচকভাবে মানুষের সামনে উপস্থাপন করেছে। যার কারণে নির্বাচনে তিনি কোনো প্রভাবই বিস্তার করতে পারেননি।
৬. কংগ্রেসের কৌশল
ভারতে কংগ্রেস ক্রমশই প্রাণশক্তি হারাচ্ছে। কিন্তু কংগ্রেসের এই প্রাণশক্তি হারানোটা বিজেপির জন্য ইতিবাচক না হয়ে বরং নেতিবাচক হয়েই দেখা দিয়েছে। এমনকি বিপুলসংখ্যক অসন্তুষ্ট কংগ্রেস ভোটার দিল্লির নির্বাচনে আম আদমি পার্টিকেই ভোট দিয়েছেন। কংগ্রেসের বিহারের হার নিশ্চিত জেনে দলটি মহাজোটে গেছে এবং চেষ্টা করেছে যেন বিজেপিও জিততে না পারে।
৭. মোদির ক্রমশ হ্রাসমান জনপ্রিয়তা
প্রধানমন্ত্রী মোদি ভারতের সবচেয়ে জনপ্রিয় নেতা। কিন্তু তাঁর নাম দিয়েই বিজেপি সব নির্বাচন জিতবে এটা সম্ভব না। ২০১৪ সালের সাধারণ নির্বাচনে মোদি যখন প্রচার চালাচ্ছিলেন তখন গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে তাঁর দুর্দান্ত রেকর্ড ছিল যা ভোটারদের আকৃষ্ট করেছে। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তাঁকে অনেক বিষয়ের, অনেক প্রশ্নে সম্মুখীন হতে হয়েছে। যদিও এটি মোদির দক্ষতা যে তিনি এখনো অনেককেই তাঁর পক্ষে রেখেছেন কিন্তু ভারতে তাঁর জনপ্রিয়তা ক্রমশ কমছে।
৮. বিজেপির স্থানীয় নেতার অভাব
একটা সময় ছিল যখন স্থানীয় নেতারাই বিজেপির সবচেয়ে বড় শক্তি ছিল। গুজরাটে মোদি, মধ্যপ্রদেশে শিবরাজ, ছত্তিশগড়ে রমন সিং এবং রাজস্থানে বসুন্ধরা রাজেসহ আরও অনেকে। তাঁরা সবাই ছিলেন কংগ্রেসের হিংসার পাত্র। কিন্তু মোদির প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর পর সবার কেন্দ্রে যাওয়ার একটি প্রবণতা তৈরি হয়েছে। বিহারের মতো জায়গায় স্থানীয় কোনো বড় নেতা না থাকার এই সুবিধাটাই পেয়েছে বিজেপি।
৯. ভিকে সিংহের ‘কুকুর’ মন্তব্য
ভারতের ফরিদাবাদে দলিত সম্প্রদায়ের দুটি শিশু খুন হওয়ার ঘটনায় ভারতের কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী ভিকে সিং মন্তব্য করেছিলেন, ‘কুকুরের দিকে কেউ ঢিল ছুড়ে মারলে তার দায়িত্ব সরকারের নয়।’ ভিকে সিংহের এই মন্তব্য ব্যাপক প্রভাব ফেলে নির্বাচনে। এই মন্তব্যের ফলে দলিত সম্প্রদায়ের ভোট নিজেদের দিকে টেনে নিতে সক্ষম হয় মহাজোট।
১০. হেলিকপ্টার প্রচারে ‘না’
অরবিন্দ কেজরিওয়াল বিহারে মহাজোটের পক্ষে নির্বাচনী প্রচারে অংশ নেননি, কিন্তু প্রচারের কিছু টোটকা তিনি নিতীশ কুমারকে ঠিকই দিয়েছিলেন। কেজরিওয়ালের দিল্লির ‘ঘরে ঘরে যেতে হবে’ স্লোগানের মতো নিতীশও টোকা দিয়েছেন প্রতি ঘরের দরজায়। এরপরে ভোটারদের সঙ্গে একটি ব্যক্তিগত সম্পর্ক তৈরি হয়েছিল নিতীশের। বড় র্যালিতে বক্তৃতা দেওয়ার চেয়েও নিতীশ ব্যক্তিগতভাবে বেশি মানুষের কাছে পৌঁছানোর চেষ্টা করেছেন। আর এই চেষ্টায় বিহারের মুখ্যমন্ত্রীর জন্য একটি বড় সফলতা হিসেবে দেখা দিয়েছে।
No comments