হামলে পড়তে আইএস স্বীকারোক্তির চেষ্টা
বাংলাদেশে
আইএস আছে তা স্বীকার করাতে চাপ আছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
বলেছেন, যদি স্বীকার করানো যায় তাহলে বাংলাদেশের ওপর হামলে পড়তে পারবে।
সিরিয়া, ইরাক, আফগানিস্তান বা পাকিস্তানের মতো জায়গায় বাংলাদেশকে নিয়ে আসার
জন্য আন্তর্জাতিক ও দেশীয় ষড়যন্ত্র রয়েছে। বাংলাদেশে এ ধরনের পরিস্থিতি
তৈরি হোক তা আমাদের কাম্য নয়। গতকাল এক সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী এসব
কথা বলেন। নেদারল্যান্ডসে তার সাম্প্রতিক সফরের অভিজ্ঞতা তুলে ধরতে ডাকা এ
সংবাদ সম্মেলনে সাম্প্রতিক বিষয়ে প্রায় এক ঘণ্টাব্যাপী বিভিন্ন প্রশ্নের
জবাব দেন প্রধানমন্ত্রী। সম্প্রতি বিদেশী নাগরিক হত্যা, বিভিন্ন দেশের
ভ্রমণ সতর্কতা, আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্য ও ব্লগার-প্রকাশক খুনের বিষয়ে
একাধিক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী সরকারের অবস্থান তুলে ধরেন। বিএনপি
চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সংলাপ ও জাতীয় ঐক্যের আহ্বানের বিষয়েও কথা বলেন
প্রধানমন্ত্রী। যারা আন্দোলনের নামে মানুষ খুন করে তাদের সঙ্গে সংলাপ হতে
পারে না উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, গত নির্বাচনের আগে জাতীয় সরকার
গঠনে তিনি যে সংলাপ প্রস্তাব দিয়েছিলেন তাতে সাড়া না দিয়ে বিএনপি
চেয়ারপারসন বড় সুযোগ হারিয়েছেন। তথ্যপ্রযুক্তির সুযোগ নিয়ে অপরাধীরা
রাষ্ট্রবিরোধী কাজ করছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রয়োজনে কিছু
সময়ের জন্য তথ্যপ্রযুক্তির কিছু সেবা বন্ধ করে হলেও তাদের বিরুদ্ধে
ব্যবস্থা নেয়া হবে।
কারও ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দিয়ে লেখা ও বক্তব্য দেয়া থেকে বিরত থাকার পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেছেন, ধর্মনিরপেক্ষতা মানে ধর্মহীনতা নয়। প্রত্যেক হত্যাকাণ্ডকে হত্যাকাণ্ড হিসেবে নিয়ে বিচার করা হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, সাম্প্রতিক ঘটনাবলী বিচ্ছিন্ন হলেও পরিকল্পিত ঘটনা। এসব ঘটনা যাতে না ঘটে সেজন্য দেশের জনগণকে সচেতন হওয়ার আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী। একই সঙ্গে এসব ঘটনার নেপথ্যে থাকাদের খুঁজে বের করতে জনগণ ও দেশবাসীর সহযোগিতা কামনা করেন প্রধানমন্ত্রী।
গণভবনের ব্যাঙ্কুইট হলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে প্রথমে নেদারল্যান্ডস সফরের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনান প্রধানমন্ত্রী। এরপর সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন। এ সময় আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম, পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী, প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, প্রধানমন্ত্রীর তথ্য উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী প্রধানমন্ত্রীর পাশে ছিলেন।
প্রশ্নোত্তর পর্বের শুরুতেই একজন সাংবাদিক ‘বাংলাদেশ ডেল্টা প্ল্যান ২১০০’ এর বিষয়ে জানতে চান প্রধানমন্ত্রীর কাছে। এরপর তিনি প্রশ্ন রাখেন, সাম্প্রতিক কিছু ঘটনার কারণে বিদেশীরা তাদের নাগরিকদের জন্য ভ্রমণ সতর্কতা দিয়েছে। সাধারণ নাগরিকদের মধ্যেও নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ রয়েছে। এ অবস্থায় সরকার প্রধানের অবস্থান কি।
নিরাপত্তার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আপনারা জানেন যে, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন ঘটনা ঘটছে। বাংলাদেশকে কোনমতে অনিরাপদ ঘোষণা করা, বাংলাদেশে ওই আইএস আছে, জঙ্গি আছে এ ধরনের একটা স্বীকার করানো। আর এটা যদি কারনো যায় তাহলে বাংলাদেশের ওপর তারা হামলে পড়তে পারে। সে ধরনের একটা পরিকল্পনা কিন্তু অনেকের আছে। এই ব্যাপারে আমি বাংলাদেশের জনগণকে আহ্বান করবো যে, বাংলাদেশ একটি শান্তিপূর্ণ দেশ হিসেবে থাকতে চায়। একসময় এখানে জঙ্গির উত্থান হয়েছিল। কিন্তু আমরা তা কঠোর হাতে দমন করেছি এবং জনগণের সাহায্য আমরা পেয়েছি। বাংলাদেশে সরকার উৎখাতের নাম করে জ্বালাও পোড়াও থেকে শুরু করে মানুষ খুন করা, ২০১৩ থেকে ২০১৪ সালের ৫ই জানুয়ারি নির্বাচন ঠোকনোর নামে ৩টা মাস যেভাবে মানুষ খুন করা, ককটেল আগুন দিয়ে মানুষকে পুড়িয়ে মারা, এসব করার পরেও যখন দেখেছে যে না কিছু করা যাচ্ছে না তখন স্বাভাবিকভাবে একটা শ্রেণী গুপ্ত হত্যায় নেমে পড়েছে। বিভিন্ন গুপ্ত হত্যার মাধ্যমে দেশকে অস্থিতিশীলতায় নিয়ে আসা।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের মানুষ ভেবে দেখবেন আজকে ইরাকে কি হয়েছে, সিরিয়া, মিশরে কি হয়েছে। আফগানিস্তান ও পাকিস্তানের কথাই চিন্তা করেন। এই সব জায়গায় যে ঘটনাগুলো ঘটে যাচ্ছে বাংলাদেশকে ঠিক এমন জায়গায় নিয়ে আসার যে ষড়যন্ত্র এটি আন্তর্জাতিকভাবেও যেমন আছে, তেমনি আমাদের দেশের কিছু মানুষও এতে সম্পৃক্ত আছে। এ ব্যাপারে জাতি হিসেবে আমরা যদি সচেতনতা অর্জন না করি তাহলে এদেশের সর্বনাশ হবে। বাংলাদেশে ইরাক, সিরিয়া, লিবিয়া এসব দেশের অবস্থা সৃষ্টি হোক তা আমাদের কাম্য নয়।
তিনি বলেন, মুসলমান হয়ে মুসলমানদের কেন মারবে? শেষ বিচার করবেন আল্লাহ রাব্বুল আলামিন। তো আল্লাহর উপর কি ভরসা নেই? জুমার নামাজের সময়ও মসজিদে বোমা মেরে মুসলমানদের হত্যা করা বা এক মুসলমান আরেক মুসলমানকে হত্যা করছে। যদি বিশ্বের দিকে তাকাই তাহলে দেখবো মুসলমানই কিন্তু মুসলমানদের হত্যা করছে। কিন্তু খেলছেটা কে? সুতোটা কার হাতে? তাদের হাতের ক্রীড়নক কেন হচ্ছে? কেন এদের সচেতনতা আসবে না। কাজেই এ বিষয়গুলোতে বাংলাদেশের মানুষের আরও সচেতন হতে হবে। আমরা চাইনা আমাদের এই ভূখণ্ড কেউ ব্যবহার করুক বা এখানে কোন ঘটনা ঘটুক। আপনারা জানেন, প্রচণ্ড চাপ, আমরা কেন স্বীকার করি না। আমার কথা স্পষ্ট যে, আমরাতো দেখতে পাচ্ছি এসব কারা করছে। আমাদের যে সমাজ একে অপরের খুব চেনা। অচেনা কেউ না। কাজেই যে-ই এসব করছে সে-ই ধরা পড়ছে। আমরা দেখছি যে তারা একটি বিশেষ দলের সদস্য। ছাত্রজীবনে তারা হয়তো শিবির করেছে অথবা বিএনপি করেছে। তারাই এর সঙ্গে সম্পৃক্ত রয়েছে। তারাই একেকটা ঘটনা ঘটাচ্ছে। এর বাইরেতো আমরা কাউকে দেখছি না।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, যখন আমরা এগিয়ে যাচ্ছি তখন বাংলাদেশকে একটি ‘অনিরাপদ’ ‘অনিরাপদ’ বলে আওয়াজ তোলা হচ্ছে। আমি আপনাদের মাধ্যমে এটুক চাইবো যে অন্তত আপনারাও (সাংবাদিক) গণসচেতনতা সৃষ্টির জন্য সাহায্য করুন। আমি দেশবাাসীকে বলবো, বাংলাদেশকে যারা অনিরাপদ, জঙ্গি, সন্ত্রাস এসব করতে চাইছে এগুলোতো কৃত্রিমভাবে তৈরি করা হচ্ছে। আমাদের দেশের মানুষতো এ ধরনের নয়। আমাদের মধ্যে সবসময় একটা সামপ্রদায়িক সমপ্রীতি বজায় আছে। ইমামবাড়ায় যে বোমা হামলা হলো সেখানে যারা মারা গেলো তারাও সুন্নি, যারা আহত হলো তারাও সুন্নি। এখানেও শিয়া সুন্নি গোলমাল দেখানোর একটা চেষ্টা ছিল। বাংলাদেশে কিন্তু সেই গোলমাল হয় না, হবেও না। কাজেই আমরা দেখতে পাচ্ছি যে সবসময় এরকম একটা প্রচেষ্টা চলছে। আর অর্থের উৎসের বিষয়ে আমরা যথেষ্ট সচেতন। কারা এসব ঘটনায় অর্থায়ন করছে তা আমরা খুঁজে বের করার চেষ্টা করছি। এ বিষয়ে কিছু তথ্যও আমরা পেয়েছি। মূলত একটি দল অর্থায়ন করছে আর মাঠে এই খুন খারাবি করছে আরেকটি দল। এটি একেবারেই স্পষ্ট। এর বেশকিছু তথ্য আমাদের কাছে আছে। এ বিষয়ে আরও তথ্য সংগ্রহের জন্য আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি।
প্রধানমন্ত্রীর কাছে প্রশ্ন ছিল সাম্প্রতিক ঘটনাগুলোর বিষয়ে সরকারের মন্ত্রী ও দলের নেতারা বিচ্ছিন্ন বলে বক্তব্য দিচ্ছেন। প্রধানমন্ত্রী হিসেবে আপনি কি এগুলোকে বিচ্ছিন্ন ঘটনা মনে করেন নাকি রাজনৈতিক সংকট বা আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি মনে করেন।
জবাবে পাল্টা প্রশ্ন রেখে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কিছু দিন আগে আমেরিকায় আওয়ামী লীগের ভাইস প্রেসিডেন্ট নজমুলকে নিউ ইয়র্ক শহরের রাস্তায় হত্যা করা হয়েছে। কানেকটিকাটে আওয়ামী লীগের জয়েন্ট সেক্রেটারি এবং পরবর্তী সময়ে ইউএস আওয়ামী লীগের জয়েন্ট সেক্রেটারি তাকেও নিউ ইয়র্কের রাস্তায় হত্যা করা হয়েছে। ফ্লোরিডায় একজন মুক্তিযোদ্ধাকে হত্যা করা হয়েছে। আপনি যে প্রশ্নটা আমাকে করেছেন সেই প্রশ্নটা আমেরিকানদের করতে পারবেন? আমেরিকার প্রেসিডেন্টকে জিজ্ঞাসা করেন যে এটা কি ঘটনা?
তিনি বলেন, এই ঘটনাগুলোতো পরিকল্পিতভাবে ঘটানো হয়েছে। সামনে তাদের আরও পরিকল্পনা রয়েছে। তারা শুধু একটা উদ্দেশ্য নিয়ে আরও বেশি দূর যেতে চায় সেটা হলো বাংলাদেশ অনিরাপদ। বাংলাদেশে যেন আফগানিস্তান, পাকিস্তানের মতো যখন তখন হামলা হতে পারে। তারা সেই ধরনের একটি পরিবেশ সৃষ্টি করতে চায়। তো আপনারা কি সেই পরিবেশ সৃষ্টি করতে দিতে চান? আমি জানি আমার কথাগুলো খুবই স্পষ্ট। এত স্পষ্ট করে কোন সরকার প্রধান কখনও বলবে না। কিন্তু আমার দেশকে আমি ভালোবাসি।
আর আমি আমার মা, বাবা, ভাইকে হারিয়েছি। তারপরও আমি এদেশে রাজনীতি করছি। অনেক বাধা অতিক্রম করেছি। এজন্য কাউকে পরোয়া বা ভয় আমি করি না। তিনি বলেন, ১৬ কোটি মানুষের দেশ, ৫৪ হাজার বর্গমাইল। ১ মাইলের মধ্যে ৮শ থেকে ১২শ মানুষ বাস করে। সেখানে এরকম ঘটনা যে খুব অস্বাভাবিক তা নয়। আমেরিকা, ইংল্যান্ড বা অন্য শহরে প্রতিদিন প্রতি মিনিটে যত মানুষ মারা যাচ্ছে তা খোঁজ নিয়ে দেখেন। তারপর তুলনা করেন। এতটুকু জায়গায় ১৬ কোটি মানুষের দেশ। ওখানে প্রতি মিনিটে কত অপরাধ হচ্ছে আর আমাদের এখানে কত অপরাধ হচ্ছে সেই তুলনায় বাংলাদেশ অনেক নিরাপদ। মোটেও অনিরাপদ নয়।
পরিস্থিতি উত্তরণে খালেদা জিয়া জাতীয় ঐক্যের আহ্বান জানিয়েছেন। এ বিষয়ে সরকার প্রধান হিসেবে অবস্থান জানতে চাইলে প্রধানমন্ত্রী প্রশ্নকারী সাংবাদিকের দিকে পাল্টা প্রশ্ন রেখে বলেন, আপনি যদি কারও বাড়িতে যান আর তিনি যদি দরজা বন্ধ করে দেন তাহলে তার সঙ্গে আপনি সংলাপ করবেন কিনা? জবাব দেন? তাহলে আমাকে প্রশ্ন করেন কেন? আমি মানুষ। আমার একটি দেশ আছে, দল আছে। আমি তাকে ফোন করেছি। ফোন করে কী ধরনের কথা শুনতে হয়েছে। কী ধরনের ঝাড়ি খেতে হয়েছে। আপনাকে যদি কেউ ঝাড়ি মারে আপনি কী তার সঙ্গে কথা বলবেন। আমি নির্বাচনের আগে তাকে অফার দিয়েছিলাম, আসুন আমরা সর্বদলীয় সরকার গঠন করি। এমনকি এটাও বলেছিলাম, আপনি যে মন্ত্রণালয় চান সেটি দেবো। তিনি কী এসেছিলেন? যখন সত্যিকারভাবে জাতীয় ঐক্যমতের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছিল তখন তিনি সাড়া দিলেন না। তিনি নির্বাচন বানচাল করার জন্য শত শত মানুষকে হত্যা করেছেন। পুড়িয়ে পুড়িয়ে মানুষ হত্যা করেছেন। ওনার কাছে গেলেই তো পোড়া মানুষের গন্ধ পাওয়া যাবে। এত রাজনৈতিক সঙ্কটে দেশ পড়েনি যে এ ধরনের একটা খুনির সঙ্গে বসতে হবে। তাকে বলবো, যেসব মানুষ পুড়িয়ে মারা হয়েছে তাদের ফিরিয়ে দেয়া হোক। তাদের জীবন ফিরিয়ে দিক। তারপর ভেবে দেখবো। যে মানুষ পোড়ে তার সঙ্গে বসার আমার কোন ইচ্ছা নেই। তারপরও আমি অনেক সহ্য করেছি। রাজনীতির স্বার্থে, দেশের স্বার্থে তারপরও তার সঙ্গে বসেছি।
তিনি বসার যোগ্যতা তখনই অর্জন করবেন যখন বলবেন যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হওয়া উচিত। বিচার হোক, যা হচ্ছে তা সঠিক হচ্ছে। ওদের সঙ্গ ছাড়তে বলেন। দয়া করে আমাকে ওই খুনির সঙ্গে বসতে বলবেন না।
একজন সাংবাদিক সাম্প্রতিক ঘটনাবলীর প্রেক্ষিতে নিজের পেশার জায়গায় নিরাপত্তাহীনতাবোধ করছেন উল্লেখ করে বলেন, সাংবাদিকদের নাম, লেখক প্রকাশক ও মন্ত্রিসভার সদস্যদের নামও তালিকায় দেয়া হচ্ছে। ঘটনাগুলো জঙ্গিবাদ কিনা, আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র কিনা সেটা না, আমি আমার কাজের জায়গায় নিরাপত্তা চাই। এই যে আমি আপনার সামনে কথা বলছি এতেও আমি নিরাপদবোধ করছি না। পুলিশ সদস্যরা নিরাপদবোধ করছেন না। আপনার কাছ থেকে আমরা আশার কথা শুনতে চাই। যাতে আমি এখান থেকে বাইরে যাওয়ার পর আমাকে নিয়ে আমার পরিবারের সদস্যরা নিরাপদবোধ করবে। এছাড়া সরকারের কারও কারও পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে লেখালেখির ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বনের জন্য। এই সতর্কতার মাত্রা কী এ বিষয়টি আপনার কাছ থেকে আমরা জানতে চাই।
জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, একটা কথা আছে, বাংলাদেশে বনের বাঘ খায় না মনের বাঘ খায়। বনের বাঘের চেয়ে মনের বাঘ বেশি ভয়ের। আপনারা দেখতে পাচ্ছেন, জানতে পারছেন যে এটি একটি গভীর চক্রান্ত। বাংলাদেশ যখনই উন্নয়নের পথে আসে তখনই বাধা দেয়া হয়। যখনই যুদ্ধাপরাধের বিচার হচ্ছে তখনই বাধা দেয়া হচ্ছে।
নিরাপত্তার বিষয়ে তিনি বলেন, বরং অন্যান্য রাষ্ট্র যা না করে আমরা তার চেয়ে বেশি করেছি। আমি চাইবো যে জনসচেতনতা তৈরি করা, জনগণের মাঝে সেই বোধটা আনা, কারা এভাবে একটার পর একটা ঘটনা ঘটাচ্ছে। কারা এভাবে সাংবাদিক, লেখক, প্রকাশক ও রাজনীতিবিদদের হুমকি দিচ্ছে তাদের চিহ্নিত করা। তাদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো। এদেরকে ধরার জন্য আমি সাংবাদিকদের সহযোগিতা চাই, দেশবাসীর সহযোগিতা চাই।
আর লেখার ব্যাপারে আমি একটা কথা বলবো, আমরা সেক্যুলার রাজনীতিতে বিশ্বাস করি। প্রত্যেক ধর্ম পালনের স্বাধীনতা আমরা নিশ্চিত করেছি। কিন্তু আমি একটা ধর্ম পালন করি। আমি আল্লাহকে মানি, নবী করিম (সা.)-কে মানি। আমার এ ধর্ম নিয়ে যদি কেউ বিকৃত লেখা লেখে, নোংরা খেলা লেখে তাতে আমার অনুভূতিতে লাগে। হিন্দু ধর্ম, বৌদ্ধ বা অন্য ধর্মের বিষয়েও এভাবে লিখলে অনুভূতিতে লাগবে।
আমি সব জায়গায় যাই, গির্জা, মসজিদ, মন্দির বা প্যাগোডা। কিন্তু আমি আমার ধর্ম পালন করি। নামাজ পড়ে কোরআন তিলাওয়াত দিয়ে আমি দিন শুরু করি। কিন্তু অন্য ধর্মকেও আমি সম্মান করি।
তিনি বলেন, লেখালেখির বিষয়ে সতর্ক হওয়ার মানে হলো কারও ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দিয়ে যেন লেখালেখি না হয়। কারও ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত লাগে এমন কোন কথা যেন বলা না হয়। কারণ, সেক্যুলারিজম মানে ধর্মহীনতা না। কেউ যদি ধর্ম মানতে না চায় সেটা তার ব্যাপার। সে তার বিশ্বাস নিয়ে থাকবে কিন্তু অন্য ধর্মে আঘাত দিতে পারবে না। এটাই হচ্ছে মানবিক গুণ। তিনি বলেন, বিএনপির আন্দোলনের সময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ২০ জন সদস্যকে হত্যা করা হয়েছে। পুলিশকে পুড়িয়ে মারা হয়েছে। পুলিশ, আর্মি, বিজিবি, প্রত্যেককে আক্রান্ত করা হয়েছে। তাদের মানসিকভাবে দুর্বল করার জন্য, মানসিক শক্তি নষ্ট করার জন্য এটি করা হয়েছে। এই যে ইব্রাহিমকে মারা হলো, এ ঘটনায় একজনকে ধরা হলো। এরপর প্রমাণ হলো আশুরার সময় তাদের কী পরিকল্পনা ছিল। কাজেই নিরাপত্তা রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে যেটুকু দেয়ার আমরা দিয়ে যাবো। আর প্রত্যেকের যেটুকু করা দরকার করতে হবে। মনে সাহস থাকতে হবে। যে কোন পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রস্তুত থাকতে হবে। আমরা নিশ্চয়ই নন্দনাল হতে চাই না।
বিএনপি চেয়ারপারসন সম্প্রতি এক বিবৃতিতে বলেছেন একটি জাতীয় সংলাপ এবং নির্বাচনই পারে বর্তমান সঙ্কট থেকে উত্তরণ ঘটাতে। তাহলে বর্তমান পরিস্থিতির সঙ্গে তাদের কোন যোগসূত্র আছে বলে মনে করেন কি- একজন সাংবাদিকের এমন প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতীয় সংলাপ হলে এটি বন্ধ হয়ে যাবে, তার মানে এখানে তার হাত আছে। অথবা তার সুপুত্রকে নিয়ে লন্ডনে বসে গুট পাকাচ্ছেন। যেখানে তিনি জাতীয় সংলাপের কথা বলেছেন সেখানে আমাকে তিনি কী হিসেবে অভিহিত করেছেন? আমাকে এভাবে অভিহিত করবেন আবার আমার সঙ্গে বসতে চাইবেন এটি কেমন কথা। তার নিজের কথায়ই বেরিয়ে এসেছে যেখানেই যা ঘটছে তার একটা সংযোগ আছে। এটি যে তারই উৎসাহে হচ্ছে এটিতো স্পষ্ট।
আপনি বলছেন যে কারও ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত না দিয়ে লেখার জন্য। আপনার এ বক্তব্যে হত্যাকারীরা উৎসাহিত হতে পারে, এমন প্রশ্ন অনেকে করেন। এছাড়া এ ধরনের খুনের বিচার না হওয়ার কারণে মানুষ অনিরাপদবোধ করছেন। এ বিষয়ে আপনার বক্তব্য কী- সাংবাদিকের এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, আমি মনে করি এসব ঘটনা ঘটানো হচ্ছে পরিকল্পিতভাবে। প্রত্যেকটা বিচারই দ্রুত হোক আমরা চাই। যুদ্ধাপরাধের যে বিচার হচ্ছে সেটিও আমরা চাই দ্রুত হোক। এই ব্লগার হত্যার বিচার যে হচ্ছে না তা না। যখন যে ঘটনা ঘটছে তাকে ধরা হচ্ছে। ধরছে না তা কিন্তু নয়। ঘটনার পরপরই পুলিশ তদন্ত করছে। সূত্রও পাওয়া যাচ্ছে। আমার বক্তব্যে তারা উৎসাহিত হবে আমি তা বিশ্বাস করি না। এখানে একজন আরেকজনকে হত্যা করছে। এখানে আমরা হত্যাকারীকে হত্যাকারী হিসেবেই দেখবো। তাদের বিচারও আমরা করবো।
একজন সাংবাদিক কোন প্রশ্ন না করে প্রধানমন্ত্রীকে নিজের অভিজ্ঞতার আলোকে পরামর্শ দেন। তিনি বলেন, বিভিন্ন দেশ বাংলাদেশে তাদের নাগরিকদের ভ্রমণে সতর্কতা জারি করেছে। কিন্তু ওইসব দেশের দূত এবং বিভিন্ন সংস্থার প্রধানরাই আবার বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অংশ নিচ্ছেন। এটি অনেকটা তাদের দ্বৈত অবস্থান প্রকাশ করে।
তার এ বক্তব্যের সূত্র ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আসলে এগুলো পরিকল্পিত। এ পর্যন্ত আওয়ামী লীগের লোক কতজন মারা গেছে। অবশ্য আওয়ামী লীগের লোক মারা গেলে কারও কান্নাকাটি দেখা যায় না। জ্ঞানী-গুণী কেউ কিছু বলে না। আর তালিকার কথা বলেছেন, এই তালিকায় আমি এক নম্বরে।
অনেক জায়গায় অনেকে ভালো সেজে তারা আওয়ামী লীগে ঢুকে। ঢুকে খুন করে পরে বলে এটি আওয়ামী লীগের কর্মীর কাজ। যেজন্য আমি আওয়ামী লীগের লোকজনকে বলি, আমাদের অনেক লোকবল আছে। বিএনপি-জামায়াতের লোকজন যদি ভালোও হয়ে যায় তারপরও এদের আমাদের দলে নেয়ার দরকার নেই। কোথাও যেন ওদের গ্রহণ করা না হয়। কারণ, এরা যেসব কাজ করেছে, এরা মানুষের জাত নয়।
গত ২৭শে অক্টোবর অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল যুদ্ধাপরাধের বিচার নিয়ে যে বিবৃতি দিয়েছে এ বিষয়ে সরকারের অবস্থান কী জানতে চাইলে প্রধানমন্ত্রী বলেন, অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল যে বক্তব্য দিয়েছে তা অত্যন্ত গর্হিত কাজ। সাকা, মুজাহিদ বা যুদ্ধাপরাধী যে অপরাধ করেছে এটা তো তাদের স্মরণ করতে হবে। এ বিষয়ে তারা যে কথা বলেছে এটি আমাদের কাছে গ্রহণযোগ্য নয়। এ ধরনের বক্তব্য যেখান থেকে আসবে আমরা তা গ্রহণ করবো না। অ্যামনেস্টির বক্তব্যেও আমরা প্রতিবাদ জানিয়েছি এবং প্রতিবাদ জানাবো।
এদিকে লিখিত বক্তব্যে নেদারল্যান্ডসের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে ‘বাংলাদেশ ডেল্টা প্ল্যান ২১০০’ বাস্তবায়নে কমিশন গঠন করা হবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। বাংলাদেশের কৃষি, শিল্প, অবকাঠামো ও পানিসম্পদ খাতকে নেদারল্যান্ডসের ব্যবসায়ীরা বিনিয়োগের জন্য আকর্ষণীয় খাত হিসেবে চিহ্নিত করেছেন বলে প্রধানমন্ত্রী জানান। ডাচ প্রধানমন্ত্রী মার্ক রুটের আমন্ত্রণে গত মঙ্গলবার দেশটিতে সফরে যান প্রধানমন্ত্রী। শুক্রবার সন্ধ্যায় তিনি দেশে ফেরেন।
কারও ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দিয়ে লেখা ও বক্তব্য দেয়া থেকে বিরত থাকার পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেছেন, ধর্মনিরপেক্ষতা মানে ধর্মহীনতা নয়। প্রত্যেক হত্যাকাণ্ডকে হত্যাকাণ্ড হিসেবে নিয়ে বিচার করা হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, সাম্প্রতিক ঘটনাবলী বিচ্ছিন্ন হলেও পরিকল্পিত ঘটনা। এসব ঘটনা যাতে না ঘটে সেজন্য দেশের জনগণকে সচেতন হওয়ার আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী। একই সঙ্গে এসব ঘটনার নেপথ্যে থাকাদের খুঁজে বের করতে জনগণ ও দেশবাসীর সহযোগিতা কামনা করেন প্রধানমন্ত্রী।
গণভবনের ব্যাঙ্কুইট হলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে প্রথমে নেদারল্যান্ডস সফরের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনান প্রধানমন্ত্রী। এরপর সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন। এ সময় আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম, পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী, প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, প্রধানমন্ত্রীর তথ্য উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী প্রধানমন্ত্রীর পাশে ছিলেন।
প্রশ্নোত্তর পর্বের শুরুতেই একজন সাংবাদিক ‘বাংলাদেশ ডেল্টা প্ল্যান ২১০০’ এর বিষয়ে জানতে চান প্রধানমন্ত্রীর কাছে। এরপর তিনি প্রশ্ন রাখেন, সাম্প্রতিক কিছু ঘটনার কারণে বিদেশীরা তাদের নাগরিকদের জন্য ভ্রমণ সতর্কতা দিয়েছে। সাধারণ নাগরিকদের মধ্যেও নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ রয়েছে। এ অবস্থায় সরকার প্রধানের অবস্থান কি।
নিরাপত্তার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আপনারা জানেন যে, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন ঘটনা ঘটছে। বাংলাদেশকে কোনমতে অনিরাপদ ঘোষণা করা, বাংলাদেশে ওই আইএস আছে, জঙ্গি আছে এ ধরনের একটা স্বীকার করানো। আর এটা যদি কারনো যায় তাহলে বাংলাদেশের ওপর তারা হামলে পড়তে পারে। সে ধরনের একটা পরিকল্পনা কিন্তু অনেকের আছে। এই ব্যাপারে আমি বাংলাদেশের জনগণকে আহ্বান করবো যে, বাংলাদেশ একটি শান্তিপূর্ণ দেশ হিসেবে থাকতে চায়। একসময় এখানে জঙ্গির উত্থান হয়েছিল। কিন্তু আমরা তা কঠোর হাতে দমন করেছি এবং জনগণের সাহায্য আমরা পেয়েছি। বাংলাদেশে সরকার উৎখাতের নাম করে জ্বালাও পোড়াও থেকে শুরু করে মানুষ খুন করা, ২০১৩ থেকে ২০১৪ সালের ৫ই জানুয়ারি নির্বাচন ঠোকনোর নামে ৩টা মাস যেভাবে মানুষ খুন করা, ককটেল আগুন দিয়ে মানুষকে পুড়িয়ে মারা, এসব করার পরেও যখন দেখেছে যে না কিছু করা যাচ্ছে না তখন স্বাভাবিকভাবে একটা শ্রেণী গুপ্ত হত্যায় নেমে পড়েছে। বিভিন্ন গুপ্ত হত্যার মাধ্যমে দেশকে অস্থিতিশীলতায় নিয়ে আসা।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের মানুষ ভেবে দেখবেন আজকে ইরাকে কি হয়েছে, সিরিয়া, মিশরে কি হয়েছে। আফগানিস্তান ও পাকিস্তানের কথাই চিন্তা করেন। এই সব জায়গায় যে ঘটনাগুলো ঘটে যাচ্ছে বাংলাদেশকে ঠিক এমন জায়গায় নিয়ে আসার যে ষড়যন্ত্র এটি আন্তর্জাতিকভাবেও যেমন আছে, তেমনি আমাদের দেশের কিছু মানুষও এতে সম্পৃক্ত আছে। এ ব্যাপারে জাতি হিসেবে আমরা যদি সচেতনতা অর্জন না করি তাহলে এদেশের সর্বনাশ হবে। বাংলাদেশে ইরাক, সিরিয়া, লিবিয়া এসব দেশের অবস্থা সৃষ্টি হোক তা আমাদের কাম্য নয়।
তিনি বলেন, মুসলমান হয়ে মুসলমানদের কেন মারবে? শেষ বিচার করবেন আল্লাহ রাব্বুল আলামিন। তো আল্লাহর উপর কি ভরসা নেই? জুমার নামাজের সময়ও মসজিদে বোমা মেরে মুসলমানদের হত্যা করা বা এক মুসলমান আরেক মুসলমানকে হত্যা করছে। যদি বিশ্বের দিকে তাকাই তাহলে দেখবো মুসলমানই কিন্তু মুসলমানদের হত্যা করছে। কিন্তু খেলছেটা কে? সুতোটা কার হাতে? তাদের হাতের ক্রীড়নক কেন হচ্ছে? কেন এদের সচেতনতা আসবে না। কাজেই এ বিষয়গুলোতে বাংলাদেশের মানুষের আরও সচেতন হতে হবে। আমরা চাইনা আমাদের এই ভূখণ্ড কেউ ব্যবহার করুক বা এখানে কোন ঘটনা ঘটুক। আপনারা জানেন, প্রচণ্ড চাপ, আমরা কেন স্বীকার করি না। আমার কথা স্পষ্ট যে, আমরাতো দেখতে পাচ্ছি এসব কারা করছে। আমাদের যে সমাজ একে অপরের খুব চেনা। অচেনা কেউ না। কাজেই যে-ই এসব করছে সে-ই ধরা পড়ছে। আমরা দেখছি যে তারা একটি বিশেষ দলের সদস্য। ছাত্রজীবনে তারা হয়তো শিবির করেছে অথবা বিএনপি করেছে। তারাই এর সঙ্গে সম্পৃক্ত রয়েছে। তারাই একেকটা ঘটনা ঘটাচ্ছে। এর বাইরেতো আমরা কাউকে দেখছি না।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, যখন আমরা এগিয়ে যাচ্ছি তখন বাংলাদেশকে একটি ‘অনিরাপদ’ ‘অনিরাপদ’ বলে আওয়াজ তোলা হচ্ছে। আমি আপনাদের মাধ্যমে এটুক চাইবো যে অন্তত আপনারাও (সাংবাদিক) গণসচেতনতা সৃষ্টির জন্য সাহায্য করুন। আমি দেশবাাসীকে বলবো, বাংলাদেশকে যারা অনিরাপদ, জঙ্গি, সন্ত্রাস এসব করতে চাইছে এগুলোতো কৃত্রিমভাবে তৈরি করা হচ্ছে। আমাদের দেশের মানুষতো এ ধরনের নয়। আমাদের মধ্যে সবসময় একটা সামপ্রদায়িক সমপ্রীতি বজায় আছে। ইমামবাড়ায় যে বোমা হামলা হলো সেখানে যারা মারা গেলো তারাও সুন্নি, যারা আহত হলো তারাও সুন্নি। এখানেও শিয়া সুন্নি গোলমাল দেখানোর একটা চেষ্টা ছিল। বাংলাদেশে কিন্তু সেই গোলমাল হয় না, হবেও না। কাজেই আমরা দেখতে পাচ্ছি যে সবসময় এরকম একটা প্রচেষ্টা চলছে। আর অর্থের উৎসের বিষয়ে আমরা যথেষ্ট সচেতন। কারা এসব ঘটনায় অর্থায়ন করছে তা আমরা খুঁজে বের করার চেষ্টা করছি। এ বিষয়ে কিছু তথ্যও আমরা পেয়েছি। মূলত একটি দল অর্থায়ন করছে আর মাঠে এই খুন খারাবি করছে আরেকটি দল। এটি একেবারেই স্পষ্ট। এর বেশকিছু তথ্য আমাদের কাছে আছে। এ বিষয়ে আরও তথ্য সংগ্রহের জন্য আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি।
প্রধানমন্ত্রীর কাছে প্রশ্ন ছিল সাম্প্রতিক ঘটনাগুলোর বিষয়ে সরকারের মন্ত্রী ও দলের নেতারা বিচ্ছিন্ন বলে বক্তব্য দিচ্ছেন। প্রধানমন্ত্রী হিসেবে আপনি কি এগুলোকে বিচ্ছিন্ন ঘটনা মনে করেন নাকি রাজনৈতিক সংকট বা আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি মনে করেন।
জবাবে পাল্টা প্রশ্ন রেখে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কিছু দিন আগে আমেরিকায় আওয়ামী লীগের ভাইস প্রেসিডেন্ট নজমুলকে নিউ ইয়র্ক শহরের রাস্তায় হত্যা করা হয়েছে। কানেকটিকাটে আওয়ামী লীগের জয়েন্ট সেক্রেটারি এবং পরবর্তী সময়ে ইউএস আওয়ামী লীগের জয়েন্ট সেক্রেটারি তাকেও নিউ ইয়র্কের রাস্তায় হত্যা করা হয়েছে। ফ্লোরিডায় একজন মুক্তিযোদ্ধাকে হত্যা করা হয়েছে। আপনি যে প্রশ্নটা আমাকে করেছেন সেই প্রশ্নটা আমেরিকানদের করতে পারবেন? আমেরিকার প্রেসিডেন্টকে জিজ্ঞাসা করেন যে এটা কি ঘটনা?
তিনি বলেন, এই ঘটনাগুলোতো পরিকল্পিতভাবে ঘটানো হয়েছে। সামনে তাদের আরও পরিকল্পনা রয়েছে। তারা শুধু একটা উদ্দেশ্য নিয়ে আরও বেশি দূর যেতে চায় সেটা হলো বাংলাদেশ অনিরাপদ। বাংলাদেশে যেন আফগানিস্তান, পাকিস্তানের মতো যখন তখন হামলা হতে পারে। তারা সেই ধরনের একটি পরিবেশ সৃষ্টি করতে চায়। তো আপনারা কি সেই পরিবেশ সৃষ্টি করতে দিতে চান? আমি জানি আমার কথাগুলো খুবই স্পষ্ট। এত স্পষ্ট করে কোন সরকার প্রধান কখনও বলবে না। কিন্তু আমার দেশকে আমি ভালোবাসি।
আর আমি আমার মা, বাবা, ভাইকে হারিয়েছি। তারপরও আমি এদেশে রাজনীতি করছি। অনেক বাধা অতিক্রম করেছি। এজন্য কাউকে পরোয়া বা ভয় আমি করি না। তিনি বলেন, ১৬ কোটি মানুষের দেশ, ৫৪ হাজার বর্গমাইল। ১ মাইলের মধ্যে ৮শ থেকে ১২শ মানুষ বাস করে। সেখানে এরকম ঘটনা যে খুব অস্বাভাবিক তা নয়। আমেরিকা, ইংল্যান্ড বা অন্য শহরে প্রতিদিন প্রতি মিনিটে যত মানুষ মারা যাচ্ছে তা খোঁজ নিয়ে দেখেন। তারপর তুলনা করেন। এতটুকু জায়গায় ১৬ কোটি মানুষের দেশ। ওখানে প্রতি মিনিটে কত অপরাধ হচ্ছে আর আমাদের এখানে কত অপরাধ হচ্ছে সেই তুলনায় বাংলাদেশ অনেক নিরাপদ। মোটেও অনিরাপদ নয়।
পরিস্থিতি উত্তরণে খালেদা জিয়া জাতীয় ঐক্যের আহ্বান জানিয়েছেন। এ বিষয়ে সরকার প্রধান হিসেবে অবস্থান জানতে চাইলে প্রধানমন্ত্রী প্রশ্নকারী সাংবাদিকের দিকে পাল্টা প্রশ্ন রেখে বলেন, আপনি যদি কারও বাড়িতে যান আর তিনি যদি দরজা বন্ধ করে দেন তাহলে তার সঙ্গে আপনি সংলাপ করবেন কিনা? জবাব দেন? তাহলে আমাকে প্রশ্ন করেন কেন? আমি মানুষ। আমার একটি দেশ আছে, দল আছে। আমি তাকে ফোন করেছি। ফোন করে কী ধরনের কথা শুনতে হয়েছে। কী ধরনের ঝাড়ি খেতে হয়েছে। আপনাকে যদি কেউ ঝাড়ি মারে আপনি কী তার সঙ্গে কথা বলবেন। আমি নির্বাচনের আগে তাকে অফার দিয়েছিলাম, আসুন আমরা সর্বদলীয় সরকার গঠন করি। এমনকি এটাও বলেছিলাম, আপনি যে মন্ত্রণালয় চান সেটি দেবো। তিনি কী এসেছিলেন? যখন সত্যিকারভাবে জাতীয় ঐক্যমতের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছিল তখন তিনি সাড়া দিলেন না। তিনি নির্বাচন বানচাল করার জন্য শত শত মানুষকে হত্যা করেছেন। পুড়িয়ে পুড়িয়ে মানুষ হত্যা করেছেন। ওনার কাছে গেলেই তো পোড়া মানুষের গন্ধ পাওয়া যাবে। এত রাজনৈতিক সঙ্কটে দেশ পড়েনি যে এ ধরনের একটা খুনির সঙ্গে বসতে হবে। তাকে বলবো, যেসব মানুষ পুড়িয়ে মারা হয়েছে তাদের ফিরিয়ে দেয়া হোক। তাদের জীবন ফিরিয়ে দিক। তারপর ভেবে দেখবো। যে মানুষ পোড়ে তার সঙ্গে বসার আমার কোন ইচ্ছা নেই। তারপরও আমি অনেক সহ্য করেছি। রাজনীতির স্বার্থে, দেশের স্বার্থে তারপরও তার সঙ্গে বসেছি।
তিনি বসার যোগ্যতা তখনই অর্জন করবেন যখন বলবেন যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হওয়া উচিত। বিচার হোক, যা হচ্ছে তা সঠিক হচ্ছে। ওদের সঙ্গ ছাড়তে বলেন। দয়া করে আমাকে ওই খুনির সঙ্গে বসতে বলবেন না।
একজন সাংবাদিক সাম্প্রতিক ঘটনাবলীর প্রেক্ষিতে নিজের পেশার জায়গায় নিরাপত্তাহীনতাবোধ করছেন উল্লেখ করে বলেন, সাংবাদিকদের নাম, লেখক প্রকাশক ও মন্ত্রিসভার সদস্যদের নামও তালিকায় দেয়া হচ্ছে। ঘটনাগুলো জঙ্গিবাদ কিনা, আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র কিনা সেটা না, আমি আমার কাজের জায়গায় নিরাপত্তা চাই। এই যে আমি আপনার সামনে কথা বলছি এতেও আমি নিরাপদবোধ করছি না। পুলিশ সদস্যরা নিরাপদবোধ করছেন না। আপনার কাছ থেকে আমরা আশার কথা শুনতে চাই। যাতে আমি এখান থেকে বাইরে যাওয়ার পর আমাকে নিয়ে আমার পরিবারের সদস্যরা নিরাপদবোধ করবে। এছাড়া সরকারের কারও কারও পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে লেখালেখির ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বনের জন্য। এই সতর্কতার মাত্রা কী এ বিষয়টি আপনার কাছ থেকে আমরা জানতে চাই।
জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, একটা কথা আছে, বাংলাদেশে বনের বাঘ খায় না মনের বাঘ খায়। বনের বাঘের চেয়ে মনের বাঘ বেশি ভয়ের। আপনারা দেখতে পাচ্ছেন, জানতে পারছেন যে এটি একটি গভীর চক্রান্ত। বাংলাদেশ যখনই উন্নয়নের পথে আসে তখনই বাধা দেয়া হয়। যখনই যুদ্ধাপরাধের বিচার হচ্ছে তখনই বাধা দেয়া হচ্ছে।
নিরাপত্তার বিষয়ে তিনি বলেন, বরং অন্যান্য রাষ্ট্র যা না করে আমরা তার চেয়ে বেশি করেছি। আমি চাইবো যে জনসচেতনতা তৈরি করা, জনগণের মাঝে সেই বোধটা আনা, কারা এভাবে একটার পর একটা ঘটনা ঘটাচ্ছে। কারা এভাবে সাংবাদিক, লেখক, প্রকাশক ও রাজনীতিবিদদের হুমকি দিচ্ছে তাদের চিহ্নিত করা। তাদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো। এদেরকে ধরার জন্য আমি সাংবাদিকদের সহযোগিতা চাই, দেশবাসীর সহযোগিতা চাই।
আর লেখার ব্যাপারে আমি একটা কথা বলবো, আমরা সেক্যুলার রাজনীতিতে বিশ্বাস করি। প্রত্যেক ধর্ম পালনের স্বাধীনতা আমরা নিশ্চিত করেছি। কিন্তু আমি একটা ধর্ম পালন করি। আমি আল্লাহকে মানি, নবী করিম (সা.)-কে মানি। আমার এ ধর্ম নিয়ে যদি কেউ বিকৃত লেখা লেখে, নোংরা খেলা লেখে তাতে আমার অনুভূতিতে লাগে। হিন্দু ধর্ম, বৌদ্ধ বা অন্য ধর্মের বিষয়েও এভাবে লিখলে অনুভূতিতে লাগবে।
আমি সব জায়গায় যাই, গির্জা, মসজিদ, মন্দির বা প্যাগোডা। কিন্তু আমি আমার ধর্ম পালন করি। নামাজ পড়ে কোরআন তিলাওয়াত দিয়ে আমি দিন শুরু করি। কিন্তু অন্য ধর্মকেও আমি সম্মান করি।
তিনি বলেন, লেখালেখির বিষয়ে সতর্ক হওয়ার মানে হলো কারও ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দিয়ে যেন লেখালেখি না হয়। কারও ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত লাগে এমন কোন কথা যেন বলা না হয়। কারণ, সেক্যুলারিজম মানে ধর্মহীনতা না। কেউ যদি ধর্ম মানতে না চায় সেটা তার ব্যাপার। সে তার বিশ্বাস নিয়ে থাকবে কিন্তু অন্য ধর্মে আঘাত দিতে পারবে না। এটাই হচ্ছে মানবিক গুণ। তিনি বলেন, বিএনপির আন্দোলনের সময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ২০ জন সদস্যকে হত্যা করা হয়েছে। পুলিশকে পুড়িয়ে মারা হয়েছে। পুলিশ, আর্মি, বিজিবি, প্রত্যেককে আক্রান্ত করা হয়েছে। তাদের মানসিকভাবে দুর্বল করার জন্য, মানসিক শক্তি নষ্ট করার জন্য এটি করা হয়েছে। এই যে ইব্রাহিমকে মারা হলো, এ ঘটনায় একজনকে ধরা হলো। এরপর প্রমাণ হলো আশুরার সময় তাদের কী পরিকল্পনা ছিল। কাজেই নিরাপত্তা রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে যেটুকু দেয়ার আমরা দিয়ে যাবো। আর প্রত্যেকের যেটুকু করা দরকার করতে হবে। মনে সাহস থাকতে হবে। যে কোন পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রস্তুত থাকতে হবে। আমরা নিশ্চয়ই নন্দনাল হতে চাই না।
বিএনপি চেয়ারপারসন সম্প্রতি এক বিবৃতিতে বলেছেন একটি জাতীয় সংলাপ এবং নির্বাচনই পারে বর্তমান সঙ্কট থেকে উত্তরণ ঘটাতে। তাহলে বর্তমান পরিস্থিতির সঙ্গে তাদের কোন যোগসূত্র আছে বলে মনে করেন কি- একজন সাংবাদিকের এমন প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতীয় সংলাপ হলে এটি বন্ধ হয়ে যাবে, তার মানে এখানে তার হাত আছে। অথবা তার সুপুত্রকে নিয়ে লন্ডনে বসে গুট পাকাচ্ছেন। যেখানে তিনি জাতীয় সংলাপের কথা বলেছেন সেখানে আমাকে তিনি কী হিসেবে অভিহিত করেছেন? আমাকে এভাবে অভিহিত করবেন আবার আমার সঙ্গে বসতে চাইবেন এটি কেমন কথা। তার নিজের কথায়ই বেরিয়ে এসেছে যেখানেই যা ঘটছে তার একটা সংযোগ আছে। এটি যে তারই উৎসাহে হচ্ছে এটিতো স্পষ্ট।
আপনি বলছেন যে কারও ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত না দিয়ে লেখার জন্য। আপনার এ বক্তব্যে হত্যাকারীরা উৎসাহিত হতে পারে, এমন প্রশ্ন অনেকে করেন। এছাড়া এ ধরনের খুনের বিচার না হওয়ার কারণে মানুষ অনিরাপদবোধ করছেন। এ বিষয়ে আপনার বক্তব্য কী- সাংবাদিকের এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, আমি মনে করি এসব ঘটনা ঘটানো হচ্ছে পরিকল্পিতভাবে। প্রত্যেকটা বিচারই দ্রুত হোক আমরা চাই। যুদ্ধাপরাধের যে বিচার হচ্ছে সেটিও আমরা চাই দ্রুত হোক। এই ব্লগার হত্যার বিচার যে হচ্ছে না তা না। যখন যে ঘটনা ঘটছে তাকে ধরা হচ্ছে। ধরছে না তা কিন্তু নয়। ঘটনার পরপরই পুলিশ তদন্ত করছে। সূত্রও পাওয়া যাচ্ছে। আমার বক্তব্যে তারা উৎসাহিত হবে আমি তা বিশ্বাস করি না। এখানে একজন আরেকজনকে হত্যা করছে। এখানে আমরা হত্যাকারীকে হত্যাকারী হিসেবেই দেখবো। তাদের বিচারও আমরা করবো।
একজন সাংবাদিক কোন প্রশ্ন না করে প্রধানমন্ত্রীকে নিজের অভিজ্ঞতার আলোকে পরামর্শ দেন। তিনি বলেন, বিভিন্ন দেশ বাংলাদেশে তাদের নাগরিকদের ভ্রমণে সতর্কতা জারি করেছে। কিন্তু ওইসব দেশের দূত এবং বিভিন্ন সংস্থার প্রধানরাই আবার বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অংশ নিচ্ছেন। এটি অনেকটা তাদের দ্বৈত অবস্থান প্রকাশ করে।
তার এ বক্তব্যের সূত্র ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আসলে এগুলো পরিকল্পিত। এ পর্যন্ত আওয়ামী লীগের লোক কতজন মারা গেছে। অবশ্য আওয়ামী লীগের লোক মারা গেলে কারও কান্নাকাটি দেখা যায় না। জ্ঞানী-গুণী কেউ কিছু বলে না। আর তালিকার কথা বলেছেন, এই তালিকায় আমি এক নম্বরে।
অনেক জায়গায় অনেকে ভালো সেজে তারা আওয়ামী লীগে ঢুকে। ঢুকে খুন করে পরে বলে এটি আওয়ামী লীগের কর্মীর কাজ। যেজন্য আমি আওয়ামী লীগের লোকজনকে বলি, আমাদের অনেক লোকবল আছে। বিএনপি-জামায়াতের লোকজন যদি ভালোও হয়ে যায় তারপরও এদের আমাদের দলে নেয়ার দরকার নেই। কোথাও যেন ওদের গ্রহণ করা না হয়। কারণ, এরা যেসব কাজ করেছে, এরা মানুষের জাত নয়।
গত ২৭শে অক্টোবর অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল যুদ্ধাপরাধের বিচার নিয়ে যে বিবৃতি দিয়েছে এ বিষয়ে সরকারের অবস্থান কী জানতে চাইলে প্রধানমন্ত্রী বলেন, অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল যে বক্তব্য দিয়েছে তা অত্যন্ত গর্হিত কাজ। সাকা, মুজাহিদ বা যুদ্ধাপরাধী যে অপরাধ করেছে এটা তো তাদের স্মরণ করতে হবে। এ বিষয়ে তারা যে কথা বলেছে এটি আমাদের কাছে গ্রহণযোগ্য নয়। এ ধরনের বক্তব্য যেখান থেকে আসবে আমরা তা গ্রহণ করবো না। অ্যামনেস্টির বক্তব্যেও আমরা প্রতিবাদ জানিয়েছি এবং প্রতিবাদ জানাবো।
এদিকে লিখিত বক্তব্যে নেদারল্যান্ডসের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে ‘বাংলাদেশ ডেল্টা প্ল্যান ২১০০’ বাস্তবায়নে কমিশন গঠন করা হবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। বাংলাদেশের কৃষি, শিল্প, অবকাঠামো ও পানিসম্পদ খাতকে নেদারল্যান্ডসের ব্যবসায়ীরা বিনিয়োগের জন্য আকর্ষণীয় খাত হিসেবে চিহ্নিত করেছেন বলে প্রধানমন্ত্রী জানান। ডাচ প্রধানমন্ত্রী মার্ক রুটের আমন্ত্রণে গত মঙ্গলবার দেশটিতে সফরে যান প্রধানমন্ত্রী। শুক্রবার সন্ধ্যায় তিনি দেশে ফেরেন।
No comments