জবানবন্দিতে যা বলেছে রুবেল by নুরুজ্জামান লাবু ও রুদ্র মিজান
ইতালিয়ান
নাগরিক সিজার তাভেলা হত্যা মামলায় আটক তামজীদ আহমেদ রুবেল ওরফে মোবাইল
রুবেল ওরফে শুটার রুবেল সোমবার আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে।
সূত্রে জানা গেছে, ওই জবানবন্দিতে রুবেল নিজের দোষ স্বীকার করেছে। তবে ওই
জবানবন্দিতে কথিত বড় ভাই বা ওই ভাইয়ের নির্দেশ সম্পর্কেও কিছু বলেনি। ওই
জবানবন্দিতে রুবেল বলেছে, আমি বাড্ডার হল্যান্ড সেন্টার হোসেন মার্কেটের ৩য়
তলায় ২১৭ নম্বর দোকান মোবাইল সলিউশনে মোবাইল সার্ভিসিংয়ের কাজ করতাম। আমি
কালা রাসেল ভাইয়ের বাসার কাছেই থাকতাম। কালা রাসেল ভাইয়ের বোন আর আমার
খালাত বোন বান্ধবী। আমি কালা রাসেল ভাইয়ের বাসায় আসা-যাওয়া করতাম এবং তার
সঙ্গে আড্ডা দিতাম।
আমার এক বন্ধু দক্ষিণ বাড্ডার জনি ইয়াবা ব্যবসা করতো। কালা রাসেল ভাই আমাকে ৫শ’ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট দেয় বেচে দেয়ার জন্য। আমি ওই ইয়াবাগুলো জনিকে দেই। জনি প্রথম এক শ’ পিস ইয়াবা বিক্রি করে টাকা দিলেও ৪ শ’ পিস ইয়াবার কোন টাকা দেয় নাই। সে পালাইয়া যায়। ঐ ইয়াবা বেচার পঞ্চাশ হাজার টাকা কালা রাসেল ভাই চাইতো। এই টাকা নিয়ে আমি একটু পেরেশানির মধ্যে ছিলাম। গত কোরবানির ঈদের দিন আমার বন্ধু বিপুসহ আমি আর কালা রাসেল ভাই তার বন্ধু চাক্কী রাসেল ভাইয়ের বাসায় যাই দক্ষিণ বাড্ডা বাজার গলিতে। সেখানে কালা রাসেল ভাই আমাদেরকে আইসক্রিম খাওয়ায়। চাক্কী রাসেল ভাই এক ফাঁকে আমাকে বলে, ‘একটা কাজ আছে থাইকো, কালা রাসেল তোমাকে পরে বিস্তারিত বলবে।’ এরপর আমি আর বিপু তাদের বাসায় যাই। বিপুর বাসায় রাতে দাওয়াত খাই। আমি কালা রাসেলের বোনের ফ্ল্যাটে মাঝে মধ্যে ঘুমাইতাম। ঐ রাত অনুমান সাড়ে ১১টার দিকে আমি ঐ ফ্ল্যাটে ঘুমাইতে যাই। ফ্ল্যাটটা কালা রাসেলের বাসার পেছনে জেনারেটরের গলিতে।
কোরবানির ঈদের পরের দিন অর্থাৎ ২৬শে সেপ্টেম্বর দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে কালা রাসেল ভাই এবং চাক্কী রাসেল ভাই এসে আমাকে ঘুম থেকে তুলে। আমাকে বলে জরুরি কথা আছে। আমি বাসায় যাইয়া নাস্তা করে আসলে তারা দুজনই আমারে বলে যে, গুলশান-২ এ গুলি কইরা আতঙ্ক সৃষ্টি করতে হবে। তারা দুজন আমার সঙ্গে থাকবে বলে। চাক্কী রাসেল আমাকে বলে কালা রাসেল ভাই ইয়াবা বিক্রির যে চল্লিশ হাজার টাকা আমার কাছে পায় সেটা আর দিতে হবে না। এর আগে ঈদের আগে আমি দশ হাজার টাকা কালা রাসেল ভাইকে দিই।
গত ২৭শে সেপ্টেম্বর দুপুর ১ ঘটিকার সময় আমি কালা রাসেল ভাইয়ের বাসায় যাওয়ার সময় কমার্স কলেজের গলিতে কালা রাসেল ভাই এবং চাক্কী রাসেল ভাইকে দেখতে পাই। তারা দাঁড়াইয়া ছিল। চাক্কী রাসেল আমাকে বলে, কাজটা দ্রুত করতে হবে। কালা রাসেল ভাই আমাকে বলে মধ্য বাড্ডা বাজারের কসাই গলি থেকে ভাঙ্গারি সোহেল এর কাছ থেকে একটা পিস্তল নিয়ে আসার জন্য বলে। ভাঙ্গারি সোহেলের সঙ্গে গলিতে দেখা করতেই সে আমাকে পিস্তল দিবে। আমি কসাইগলিতে যাইয়া ভাঙ্গারি সোহেল থেকে পিস্তলটা নেই। ঐটা কাগজে মোড়ানো ছিল। সে ঐ সময় আমাকে জিজ্ঞাসা করে পিস্তলটা কোন এলাকায় যাবে। আমি কিছু জানি না- বলি তাকে। আমি কালা রাসেল ভাইয়ের বাসার নিচে এসে পিস্তলটা চাক্কী রাসেল ভাইয়ের নিকট দিই। আমি তার কাছে কিছু খুচরা টাকা চাইলে সে আমাকে বিশ টাকা দেয় এবং আমি ঐ টাকা নিয়া বাসায় চইলা আসি।
গত ২৮শে সেপ্টেম্বর বিকাল ৪টার দিকে আমি প্ল্যান অনুযায়ী কালা রাসেল ভাইয়ের বাসার সামনে যাই। যাইয়া খাম্বার সামনে তারা দুজনকে হোন্ডা নিয়া দাঁড়ানো দেখি। এফজেড হোন্ডা সাদা রংয়ের। ঐ হোন্ডাটা শরীফ ভাইয়ের। চাক্কী রাসেল ভাই কালা রাসেল ভাইয়ের বাসার নিচে পিস্তল থেকে কিভাবে গুলি করতে হবে আমাকে অনেকবার দেখাইয়া দেয়। পিস্তলে পাঁচটা গুলি আছে। ঐটাও দেখাইয়া দেয়। সে বলে, ‘কোন চিন্তা করিও না। কালা রাসেল যে টাকা পাইত সেটা তোমাকে দিতে হবে না। কামটা হইলে আরও কিছু বাড়তি টাকা পাইবা।’ সে এ কথা বইলা চইলা যায় এবং বলে সিটি করপোরেশনের গেটে দেখা হবে।
আমি আর কালা রাসেল ভাই কিছুক্ষণ সেখানে থাইকা হোন্ডা নিয়া গুলশান-২ এর সিটি করপোরেশনের গেটের সামনে যাই। কালা রাসেল ভাই হোন্ডা চালাইছে। সেখানে যাইয়া চাক্কী রাসেল ভাইয়ের সঙ্গে দেখা হয়। কালা রাসেল ভাই আর চাক্কী রাসেল ভাই অনেকক্ষণ নিজেরা কথা বলে। এর কিছুক্ষণ পর চাক্কী রাসেল একটা বিদেশী লোকরে দেখাইয়া দেয় ৯০ নম্বর রোডে। ঐ লোকটা হেঁটে হেঁটে যাচ্ছিল। সে বলে ঐ লোকটারে গুলি করতে হবে। তখন আমি কালা রাসেল ভাইয়ের হোন্ডায় উঠি। কালা রাসেল ভাই হোন্ডা চালায়। আমরা ঐ লোকটিকে ওভারটেক কইরা ঘুইরা আসি। তখন সন্ধ্যা হয় হয়। ৬টা থেকে সাড়ে ৬টা হবে। ঈদের পর হওয়ায় মানুষজনও তেমন একটা ছিল না। হোন্ডা ঘুরাইয়া ঐ বিদেশী লোকটার কাছাকাছি আসলে আমি হোন্ডা থেকে নেমে ঐ লোকটাকে পরপর চারটা গুলি করি। তারপর হোন্ডায় উইঠা চাক্কী রাসেলরে নিয়া গলি গলি ঘুইরা দ্রুত চইলা আসি। আমি ১২ নম্বর গলির মাথায় নাইমা যাই। তারা দুজন কালা রাসেল ভাইয়ের বাসার নিকট যায়। আমি সেখানে যাইয়া দুজনকে দেখি। আমি পিস্তলটা চাক্কী রাসেলকে দিয়া বাসায় চলে আসি।
পরেরদিন দুপুর বেলা আমাকে কালা রাসেল ভাই খবর দেয়। আমি সন্ধ্যার দিকে প্রাণআরএফএলের মাঠে যাইয়া কালা রাসেলকে দেখতে পাই। আমরা দুজন কথা বলতে বলতে কালা রাসেল ভাইয়ের বোনের ফ্ল্যাটের গলিতে যাই। সেখানে চাক্কী রাসেল আমাকে পিস্তলটা ভাঙ্গারি সোহেলকে দিয়া আসতে বলে। আমি কসাই গলিতে পিস্তলটা সোহেলকে দিয়ে আসি। আবার তাদের কাছে গেলে হাসতে হাসতে বলি ‘আমাকে দিয়া অনেক বড় কাজ করাইয়া ফেলাইছেন কিছু টাকা-পয়সা কি পাবো না?’ তখন তারা একজনের দিকে আরেকজন তাকাইয়া হাসে। বলে, টাকা তারা পায় নাই। পাইলে আমাকে দিবে। ঘটনার পরও কালা রাসেল ভাইয়ের সঙ্গে দেখা হয়। এরপর পুলিশ আমাকে ধরে। পুলিশ ধরার আগ পর্যন্ত আমি এলাকায়ই ছিলাম। আমি এ ধরনের কাজ করার জন্য দুঃখিত। এই আমার বক্তব্য।
সেই প্রত্যক্ষদর্শী এখন নেই: সিজার তাভেলা হত্যাকাণ্ডের পর প্রত্যক্ষদর্শীরা গণমাধ্যমে এ বিষয়ে নানা তথ্য দেন। কিন্তু গত সোমবার এ ঘটনায় গ্রেপ্তারকৃতদের গণমাধ্যমের সামনে নিয়ে আসার পর প্রত্যক্ষদর্শীরা আগের মতো আর তথ্য দিচ্ছেন না। এমনকি আগে যে তথ্য দিয়েছেন তাও স্বীকার করতে চান না তারা। গতকাল দুপুরে গুলশানের ৯০ নম্বর সড়কে ঘটনাস্থলে গেলে কথা হয় রিকশা মেরামতকারী জয়নাল আবেদিনের সঙ্গে। সিজার তাভেলা হত্যার পর সাংবাদিকদের কাছে ঘটনার বর্ণনা দিয়েছিলেন জয়নাল। কিন্তু গতকাল সুর পাল্টে কথা বলেন তিনি। জয়নাল জানান, ২৮শে সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় স্ত্রীর সঙ্গে ফোনে কথা বলছিলেন তিনি। এসময় গুলির শব্দ শুনে ৯০ নম্বর সড়কের ঘটনাস্থলের দিকে তাকান। দৌড়ে দুই যুবক তখন মুহূর্তের মধ্যে ৮৩ নম্বর সড়কে রাখা মোটরসাইকেলে উঠে বসে তারা। মোটরসাইকেলে আগ থেকে অবস্থান করছিলো এক যুবক। তারা ওই সড়ক দিয়ে চলে যায়। এরআগে জয়নাল চেহারার বর্ণনা দিলেও গতকাল জানান, সন্ধ্যার সময় তাই চেহারা ও মোটরসাইকেল সেভাবে দেখতে পাননি তিনি।
আমার এক বন্ধু দক্ষিণ বাড্ডার জনি ইয়াবা ব্যবসা করতো। কালা রাসেল ভাই আমাকে ৫শ’ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট দেয় বেচে দেয়ার জন্য। আমি ওই ইয়াবাগুলো জনিকে দেই। জনি প্রথম এক শ’ পিস ইয়াবা বিক্রি করে টাকা দিলেও ৪ শ’ পিস ইয়াবার কোন টাকা দেয় নাই। সে পালাইয়া যায়। ঐ ইয়াবা বেচার পঞ্চাশ হাজার টাকা কালা রাসেল ভাই চাইতো। এই টাকা নিয়ে আমি একটু পেরেশানির মধ্যে ছিলাম। গত কোরবানির ঈদের দিন আমার বন্ধু বিপুসহ আমি আর কালা রাসেল ভাই তার বন্ধু চাক্কী রাসেল ভাইয়ের বাসায় যাই দক্ষিণ বাড্ডা বাজার গলিতে। সেখানে কালা রাসেল ভাই আমাদেরকে আইসক্রিম খাওয়ায়। চাক্কী রাসেল ভাই এক ফাঁকে আমাকে বলে, ‘একটা কাজ আছে থাইকো, কালা রাসেল তোমাকে পরে বিস্তারিত বলবে।’ এরপর আমি আর বিপু তাদের বাসায় যাই। বিপুর বাসায় রাতে দাওয়াত খাই। আমি কালা রাসেলের বোনের ফ্ল্যাটে মাঝে মধ্যে ঘুমাইতাম। ঐ রাত অনুমান সাড়ে ১১টার দিকে আমি ঐ ফ্ল্যাটে ঘুমাইতে যাই। ফ্ল্যাটটা কালা রাসেলের বাসার পেছনে জেনারেটরের গলিতে।
কোরবানির ঈদের পরের দিন অর্থাৎ ২৬শে সেপ্টেম্বর দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে কালা রাসেল ভাই এবং চাক্কী রাসেল ভাই এসে আমাকে ঘুম থেকে তুলে। আমাকে বলে জরুরি কথা আছে। আমি বাসায় যাইয়া নাস্তা করে আসলে তারা দুজনই আমারে বলে যে, গুলশান-২ এ গুলি কইরা আতঙ্ক সৃষ্টি করতে হবে। তারা দুজন আমার সঙ্গে থাকবে বলে। চাক্কী রাসেল আমাকে বলে কালা রাসেল ভাই ইয়াবা বিক্রির যে চল্লিশ হাজার টাকা আমার কাছে পায় সেটা আর দিতে হবে না। এর আগে ঈদের আগে আমি দশ হাজার টাকা কালা রাসেল ভাইকে দিই।
গত ২৭শে সেপ্টেম্বর দুপুর ১ ঘটিকার সময় আমি কালা রাসেল ভাইয়ের বাসায় যাওয়ার সময় কমার্স কলেজের গলিতে কালা রাসেল ভাই এবং চাক্কী রাসেল ভাইকে দেখতে পাই। তারা দাঁড়াইয়া ছিল। চাক্কী রাসেল আমাকে বলে, কাজটা দ্রুত করতে হবে। কালা রাসেল ভাই আমাকে বলে মধ্য বাড্ডা বাজারের কসাই গলি থেকে ভাঙ্গারি সোহেল এর কাছ থেকে একটা পিস্তল নিয়ে আসার জন্য বলে। ভাঙ্গারি সোহেলের সঙ্গে গলিতে দেখা করতেই সে আমাকে পিস্তল দিবে। আমি কসাইগলিতে যাইয়া ভাঙ্গারি সোহেল থেকে পিস্তলটা নেই। ঐটা কাগজে মোড়ানো ছিল। সে ঐ সময় আমাকে জিজ্ঞাসা করে পিস্তলটা কোন এলাকায় যাবে। আমি কিছু জানি না- বলি তাকে। আমি কালা রাসেল ভাইয়ের বাসার নিচে এসে পিস্তলটা চাক্কী রাসেল ভাইয়ের নিকট দিই। আমি তার কাছে কিছু খুচরা টাকা চাইলে সে আমাকে বিশ টাকা দেয় এবং আমি ঐ টাকা নিয়া বাসায় চইলা আসি।
গত ২৮শে সেপ্টেম্বর বিকাল ৪টার দিকে আমি প্ল্যান অনুযায়ী কালা রাসেল ভাইয়ের বাসার সামনে যাই। যাইয়া খাম্বার সামনে তারা দুজনকে হোন্ডা নিয়া দাঁড়ানো দেখি। এফজেড হোন্ডা সাদা রংয়ের। ঐ হোন্ডাটা শরীফ ভাইয়ের। চাক্কী রাসেল ভাই কালা রাসেল ভাইয়ের বাসার নিচে পিস্তল থেকে কিভাবে গুলি করতে হবে আমাকে অনেকবার দেখাইয়া দেয়। পিস্তলে পাঁচটা গুলি আছে। ঐটাও দেখাইয়া দেয়। সে বলে, ‘কোন চিন্তা করিও না। কালা রাসেল যে টাকা পাইত সেটা তোমাকে দিতে হবে না। কামটা হইলে আরও কিছু বাড়তি টাকা পাইবা।’ সে এ কথা বইলা চইলা যায় এবং বলে সিটি করপোরেশনের গেটে দেখা হবে।
আমি আর কালা রাসেল ভাই কিছুক্ষণ সেখানে থাইকা হোন্ডা নিয়া গুলশান-২ এর সিটি করপোরেশনের গেটের সামনে যাই। কালা রাসেল ভাই হোন্ডা চালাইছে। সেখানে যাইয়া চাক্কী রাসেল ভাইয়ের সঙ্গে দেখা হয়। কালা রাসেল ভাই আর চাক্কী রাসেল ভাই অনেকক্ষণ নিজেরা কথা বলে। এর কিছুক্ষণ পর চাক্কী রাসেল একটা বিদেশী লোকরে দেখাইয়া দেয় ৯০ নম্বর রোডে। ঐ লোকটা হেঁটে হেঁটে যাচ্ছিল। সে বলে ঐ লোকটারে গুলি করতে হবে। তখন আমি কালা রাসেল ভাইয়ের হোন্ডায় উঠি। কালা রাসেল ভাই হোন্ডা চালায়। আমরা ঐ লোকটিকে ওভারটেক কইরা ঘুইরা আসি। তখন সন্ধ্যা হয় হয়। ৬টা থেকে সাড়ে ৬টা হবে। ঈদের পর হওয়ায় মানুষজনও তেমন একটা ছিল না। হোন্ডা ঘুরাইয়া ঐ বিদেশী লোকটার কাছাকাছি আসলে আমি হোন্ডা থেকে নেমে ঐ লোকটাকে পরপর চারটা গুলি করি। তারপর হোন্ডায় উইঠা চাক্কী রাসেলরে নিয়া গলি গলি ঘুইরা দ্রুত চইলা আসি। আমি ১২ নম্বর গলির মাথায় নাইমা যাই। তারা দুজন কালা রাসেল ভাইয়ের বাসার নিকট যায়। আমি সেখানে যাইয়া দুজনকে দেখি। আমি পিস্তলটা চাক্কী রাসেলকে দিয়া বাসায় চলে আসি।
পরেরদিন দুপুর বেলা আমাকে কালা রাসেল ভাই খবর দেয়। আমি সন্ধ্যার দিকে প্রাণআরএফএলের মাঠে যাইয়া কালা রাসেলকে দেখতে পাই। আমরা দুজন কথা বলতে বলতে কালা রাসেল ভাইয়ের বোনের ফ্ল্যাটের গলিতে যাই। সেখানে চাক্কী রাসেল আমাকে পিস্তলটা ভাঙ্গারি সোহেলকে দিয়া আসতে বলে। আমি কসাই গলিতে পিস্তলটা সোহেলকে দিয়ে আসি। আবার তাদের কাছে গেলে হাসতে হাসতে বলি ‘আমাকে দিয়া অনেক বড় কাজ করাইয়া ফেলাইছেন কিছু টাকা-পয়সা কি পাবো না?’ তখন তারা একজনের দিকে আরেকজন তাকাইয়া হাসে। বলে, টাকা তারা পায় নাই। পাইলে আমাকে দিবে। ঘটনার পরও কালা রাসেল ভাইয়ের সঙ্গে দেখা হয়। এরপর পুলিশ আমাকে ধরে। পুলিশ ধরার আগ পর্যন্ত আমি এলাকায়ই ছিলাম। আমি এ ধরনের কাজ করার জন্য দুঃখিত। এই আমার বক্তব্য।
সেই প্রত্যক্ষদর্শী এখন নেই: সিজার তাভেলা হত্যাকাণ্ডের পর প্রত্যক্ষদর্শীরা গণমাধ্যমে এ বিষয়ে নানা তথ্য দেন। কিন্তু গত সোমবার এ ঘটনায় গ্রেপ্তারকৃতদের গণমাধ্যমের সামনে নিয়ে আসার পর প্রত্যক্ষদর্শীরা আগের মতো আর তথ্য দিচ্ছেন না। এমনকি আগে যে তথ্য দিয়েছেন তাও স্বীকার করতে চান না তারা। গতকাল দুপুরে গুলশানের ৯০ নম্বর সড়কে ঘটনাস্থলে গেলে কথা হয় রিকশা মেরামতকারী জয়নাল আবেদিনের সঙ্গে। সিজার তাভেলা হত্যার পর সাংবাদিকদের কাছে ঘটনার বর্ণনা দিয়েছিলেন জয়নাল। কিন্তু গতকাল সুর পাল্টে কথা বলেন তিনি। জয়নাল জানান, ২৮শে সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় স্ত্রীর সঙ্গে ফোনে কথা বলছিলেন তিনি। এসময় গুলির শব্দ শুনে ৯০ নম্বর সড়কের ঘটনাস্থলের দিকে তাকান। দৌড়ে দুই যুবক তখন মুহূর্তের মধ্যে ৮৩ নম্বর সড়কে রাখা মোটরসাইকেলে উঠে বসে তারা। মোটরসাইকেলে আগ থেকে অবস্থান করছিলো এক যুবক। তারা ওই সড়ক দিয়ে চলে যায়। এরআগে জয়নাল চেহারার বর্ণনা দিলেও গতকাল জানান, সন্ধ্যার সময় তাই চেহারা ও মোটরসাইকেল সেভাবে দেখতে পাননি তিনি।
এ ঘটনার আরেক
প্রত্যক্ষদর্শী সেতারা বেগম। দীর্ঘ ১৮ বছর ধরে ৯০ ও ৮৩ নম্বর সড়কের মোড়ে
ভিক্ষা করেন তিনি। পঙ্গু এই নারী রাতদিন সেখানেই থাকেন। গতকাল দুপুরে
ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা গেছে সেতারা বেগম সেখানে নেই। আশপাশের লোকজন জানান,
সোমবার সকাল থেকেই তাকে দেখা যাচ্ছে না। পরবর্তীতে ফোনে তার সঙ্গে যোগাযোগ
করা হলে তিনি জানান, গাজীপুরের সাইনবোর্ড এলাকায় আছেন তিনি। মা অসুস্থ
থাকায় তাকে দেখতে সেখানে গিয়েছেন বলে জানান তিনি। সেতারা বেগম জানান,
ওইদিন মোটরসাইকেল চালাচ্ছিলো যে ব্যক্তি তার পরনে ছিলো দুই দিকে লাল ও
মধ্যে সামান্য সাদা রঙের ডোরাকাটা শার্ট। অন্য দুজনের পরনে ছিলো কালো
গেঞ্জি। তবে মোটরসাইকেলের রঙের বিষয়টি তার মনে নেই বলে জানান।
No comments