সড়কে মৃত্যুর মিছিল by নূর মোহাম্মদ
মৃত্যুর
মিছিল চলছে সড়কে। প্রতিদিনই কোথাও না কোথাও মারা যাচ্ছেন কেউ। এসব
মৃত্যুতে যেন দায় নেই কারোই। নীরব দায়িত্বশীল সব মহল। অনাকাঙ্ক্ষিত মৃত্যু
প্রতিরোধে এগিয়ে আসছেন না তারা। বিভিন্ন গণমাধ্যমের খবর ও গবেষণার
তথ্যানুযায়ী প্রতিদিন গড়ে সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যাচ্ছেন ১৮ জন। চলতি বছর
জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত সড়ক দুর্ঘটনা হয়েছে ১ হাজার ২৮২টি। এসব
দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ১ হাজার ৬৬০ জন। আহত হয়েছেন ৪ হাজার ৫৪ এবং পঙ্গুত্ব
বরণ করছেন ৬১৮ জন। এ ছাড়া চলতি মাসে ফরিদপুরে ভাঙ্গায় মর্মান্তিক সড়ক
দুর্ঘটনায় নিহত ২৫ জনসহ মোট নিহতের সংখ্যা ২২৬ জন। বাংলাদেশ যাত্রী
কল্যাণ সমিতির তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছর জানুয়ারি মাসে সারা দেশে সড়ক
দুর্ঘটনা হয়েছে ৩৮৭টি। এতে নিহত হয়েছেন ৪৬৯ জন, আহত হয়েছেন ১ হাজার ৪৪১ জন,
পঙ্গু হয়েছেন ২৩০ জন। ফেব্রুয়ারি মাসে সড়ক দুর্ঘটনা হয়েছে ৪০৮টি, নিহত
হয়েছেন ৬১৮ জন, পঙ্গুত্ব বরণ করেছে ২১১ জন। মার্চে সড়ক দুর্ঘটনা হয়েছে
৪৮৭টি এতে নিহত হয়েছেন ৫৭৩ জন, আহত ১ হাজার ৩২৩ এবং পঙ্গু হয়েছেন ১৭৭ জন।
গত বছর সড়ক ৫ হাজার ৯২৮টি ছোট-বড় সড়ক দুর্ঘটনার ঘটনা ঘটেছে। এসব দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ৫ হাজার ৬২৮ জন, আহত হয়েছে ১৭ হাজার ৫২৩ জন। এর মধ্যে হাত-পা বা অন্য কোন অঙ্গ হারিয়ে চিরতরে পঙ্গু হয়েছেন ১ হাজার ৬২৩ জন। এসব সড়ক দুর্ঘটনার জন্য ১২টি কারণ চিহ্নিত করা হয়েছে। এটি রোধ করতে বিভিন্ন সংগঠন ৮ দফা দাবি তুলে ধরেন। কিন্তু একটিও বাস্তবায়ন হয়নি। ফলে প্রতিদিন প্রাণ হারাচ্ছেন মানুষ, পঙ্গুত্ব বরণ করে সারাজীবন পরিবারের বোঝা হচ্ছে হাজার হাজার মানুষ। আর আহতের বেশির ভাগই কর্মক্ষমতা হারাচ্ছেন। বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির সম্প্রতি গেল বছরের সড়ক দুর্ঘটনার উপর এক গবেষণায় এসব তথ্য প্রকাশ করেন।
সংগঠনটির মহাসচিব মোজোম্মেল হক চৌধুরী মানবজমিনকে বলেন, সড়ক দুর্ঘটনা পর্যবেক্ষণ করে দেখা গেছে, জাতীয় ও আঞ্চলিক মহাসড়কে ৫৩ ভাগ শহর এলাকায় ২৬ ভাগ গ্রাম বা ফিডার রোডে ২১ ভাগ সড়ক দুর্ঘটনা সংঘটিত হয়েছে। তবে শহর ও গ্রামে হাট বাজারে ফুটপাত দখলের কারণে পথচারীর মৃত্যুর হার ৬০ শতাংশে পৌঁছেছে। এ ছাড়াও এসব দুর্ঘটনায় নিহতের প্রায় ৫৩ ভাগই পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। তিনি বলেন, সড়ক দুর্ঘটনা রোধ করতে সরকারের কাছে কয়েক দফা সুপারিশ করেও কোন ফল হয়নি। ‘নিরাপদ সড়ক চাই’ আন্দোলনের চেয়ারম্যান ইলিয়াস কাঞ্চন বলেন, চালককে বাঁচানোর জন্য যে দুর্বল আইন করে রাখা হয়েছে দুর্ঘটনার অন্যতম কারণ এটি। তিনি বলেন, বিনা লাইসেন্সে কিংবা ভুয়া লাইসেন্স নিয়ে কোন চালক দুর্ঘটনা ঘটালে এবং তাতে প্রাণহানি ঘটলে অবশ্যই ওই চালকের বিরুদ্ধে ৩০২ ধারায় হত্যা মামলা করতে হবে। ৩০৪ (খ) ধারাটিকে সংশোধনীর পূর্বাবস্থায় ফিরিয়ে না আনা পর্যন্ত সড়ক দুর্ঘটনার অপরাধে ৩০২ এবং ৩০৪-এ মামলা করার দাবি ইলিয়াস কাঞ্চনের।
নিরাপদ সড়ক চাই, যাত্রী কল্যাণ সমিতির পর্যবেক্ষণে দুর্ঘটনার জন্য প্রধানত ১২টি কারণকে চিহ্নিত করা হয়েছে। সেগুলো হলো, ফুটপাথ দখল, ওভার টেকিং, ওভার স্পিড ও ওভার লোড, হেলপার দিয়ে গাড়ি চালানো, রাস্তা-ব্রিজের নির্মাণ ত্রুটি, গাড়ির ত্রুটি, যাত্রীদের অসতর্কতা, ট্রাফিক আইন না মানা, সড়কে জেব্রাক্রসিং না থাকা ও জেব্রাক্রসিং গাড়ি চালকের না মানা, চলন্ত অবস্থায় মোবাইল ফোন বা হেড ফোন ব্যবহার করা। এগুলো ছাড়াও বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি ৮ দফা সুপারিশ করেছে। এসব সুপারিশ হচ্ছে, ট্রাফিক আইন ও মোটরযান আইন সম্পর্কে স্কুল-কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র-ছাত্রীদের পাঠদান, মসজিদ, মন্দির, গির্জায় ব্যাপক প্রচারের ব্যবস্থা করা, টিভি চ্যানেল ও সংবাদপত্রসমূহে সড়ক দুর্ঘটনা সম্পর্কে ব্যাপক প্রচারের ব্যবস্থা করা, জাতীয় ও আঞ্চলিক মহাসড়কের পাশ থেকে হাট-বাজার অপসারণ, ফুটপাথ দখলমুক্ত করা, রোড সাইন (ট্রাফিক চিহ্ন) স্থাপন করা, জেব্রাক্রসিং অংকন করা, চালকদের প্রফেশনাল ট্রেনিং এর ব্যবস্থা করা, চালকদের বিশ্রাম ও কর্মবিরতির সুযোগ দেয়া, বিদ্যমান মোটরযান আইন যুগোপযোগী করা এবং গাড়ির ফিটনেস প্রদান পদ্ধতি ডিজিটাল করা।
দুর্ঘটনা গবেষণা কেন্দ্রের পরিচালক ড. হাসিব মোহাম্মদ হাসান বলেন, সড়ক দুর্ঘটনার মূল কারণগুলো সবারই জানা। কিন্তু এটা রোধ করতে কেউ এগিয়ে আসছে না। জরুরি ভিত্তিতে কার্যকর উদ্যোগ না নিলে এক সময় শত চেষ্টা করেও সড়ক দুর্ঘটনা রোধ করা সম্ভব হবে না। বিআরটিসি ডিজিএম (অপারেশন) মেজর কাজী শফিক উদ্দীন বলেন, সড়ক দুর্ঘটনার রোধ করতে বেশ কিছু উদ্যোগ সফল হয়েছে। এর ফলে সড়ক দুর্ঘটনা এখন অনেকটা কমে এসেছে। ড্রাইভারদের প্রশিক্ষণ বাড়াতে পারলে দুর্ঘটনার গ্রহণযোগ্য পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া যাবে জানান তিনি।
গত বছর সড়ক ৫ হাজার ৯২৮টি ছোট-বড় সড়ক দুর্ঘটনার ঘটনা ঘটেছে। এসব দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ৫ হাজার ৬২৮ জন, আহত হয়েছে ১৭ হাজার ৫২৩ জন। এর মধ্যে হাত-পা বা অন্য কোন অঙ্গ হারিয়ে চিরতরে পঙ্গু হয়েছেন ১ হাজার ৬২৩ জন। এসব সড়ক দুর্ঘটনার জন্য ১২টি কারণ চিহ্নিত করা হয়েছে। এটি রোধ করতে বিভিন্ন সংগঠন ৮ দফা দাবি তুলে ধরেন। কিন্তু একটিও বাস্তবায়ন হয়নি। ফলে প্রতিদিন প্রাণ হারাচ্ছেন মানুষ, পঙ্গুত্ব বরণ করে সারাজীবন পরিবারের বোঝা হচ্ছে হাজার হাজার মানুষ। আর আহতের বেশির ভাগই কর্মক্ষমতা হারাচ্ছেন। বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির সম্প্রতি গেল বছরের সড়ক দুর্ঘটনার উপর এক গবেষণায় এসব তথ্য প্রকাশ করেন।
সংগঠনটির মহাসচিব মোজোম্মেল হক চৌধুরী মানবজমিনকে বলেন, সড়ক দুর্ঘটনা পর্যবেক্ষণ করে দেখা গেছে, জাতীয় ও আঞ্চলিক মহাসড়কে ৫৩ ভাগ শহর এলাকায় ২৬ ভাগ গ্রাম বা ফিডার রোডে ২১ ভাগ সড়ক দুর্ঘটনা সংঘটিত হয়েছে। তবে শহর ও গ্রামে হাট বাজারে ফুটপাত দখলের কারণে পথচারীর মৃত্যুর হার ৬০ শতাংশে পৌঁছেছে। এ ছাড়াও এসব দুর্ঘটনায় নিহতের প্রায় ৫৩ ভাগই পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। তিনি বলেন, সড়ক দুর্ঘটনা রোধ করতে সরকারের কাছে কয়েক দফা সুপারিশ করেও কোন ফল হয়নি। ‘নিরাপদ সড়ক চাই’ আন্দোলনের চেয়ারম্যান ইলিয়াস কাঞ্চন বলেন, চালককে বাঁচানোর জন্য যে দুর্বল আইন করে রাখা হয়েছে দুর্ঘটনার অন্যতম কারণ এটি। তিনি বলেন, বিনা লাইসেন্সে কিংবা ভুয়া লাইসেন্স নিয়ে কোন চালক দুর্ঘটনা ঘটালে এবং তাতে প্রাণহানি ঘটলে অবশ্যই ওই চালকের বিরুদ্ধে ৩০২ ধারায় হত্যা মামলা করতে হবে। ৩০৪ (খ) ধারাটিকে সংশোধনীর পূর্বাবস্থায় ফিরিয়ে না আনা পর্যন্ত সড়ক দুর্ঘটনার অপরাধে ৩০২ এবং ৩০৪-এ মামলা করার দাবি ইলিয়াস কাঞ্চনের।
নিরাপদ সড়ক চাই, যাত্রী কল্যাণ সমিতির পর্যবেক্ষণে দুর্ঘটনার জন্য প্রধানত ১২টি কারণকে চিহ্নিত করা হয়েছে। সেগুলো হলো, ফুটপাথ দখল, ওভার টেকিং, ওভার স্পিড ও ওভার লোড, হেলপার দিয়ে গাড়ি চালানো, রাস্তা-ব্রিজের নির্মাণ ত্রুটি, গাড়ির ত্রুটি, যাত্রীদের অসতর্কতা, ট্রাফিক আইন না মানা, সড়কে জেব্রাক্রসিং না থাকা ও জেব্রাক্রসিং গাড়ি চালকের না মানা, চলন্ত অবস্থায় মোবাইল ফোন বা হেড ফোন ব্যবহার করা। এগুলো ছাড়াও বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি ৮ দফা সুপারিশ করেছে। এসব সুপারিশ হচ্ছে, ট্রাফিক আইন ও মোটরযান আইন সম্পর্কে স্কুল-কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র-ছাত্রীদের পাঠদান, মসজিদ, মন্দির, গির্জায় ব্যাপক প্রচারের ব্যবস্থা করা, টিভি চ্যানেল ও সংবাদপত্রসমূহে সড়ক দুর্ঘটনা সম্পর্কে ব্যাপক প্রচারের ব্যবস্থা করা, জাতীয় ও আঞ্চলিক মহাসড়কের পাশ থেকে হাট-বাজার অপসারণ, ফুটপাথ দখলমুক্ত করা, রোড সাইন (ট্রাফিক চিহ্ন) স্থাপন করা, জেব্রাক্রসিং অংকন করা, চালকদের প্রফেশনাল ট্রেনিং এর ব্যবস্থা করা, চালকদের বিশ্রাম ও কর্মবিরতির সুযোগ দেয়া, বিদ্যমান মোটরযান আইন যুগোপযোগী করা এবং গাড়ির ফিটনেস প্রদান পদ্ধতি ডিজিটাল করা।
দুর্ঘটনা গবেষণা কেন্দ্রের পরিচালক ড. হাসিব মোহাম্মদ হাসান বলেন, সড়ক দুর্ঘটনার মূল কারণগুলো সবারই জানা। কিন্তু এটা রোধ করতে কেউ এগিয়ে আসছে না। জরুরি ভিত্তিতে কার্যকর উদ্যোগ না নিলে এক সময় শত চেষ্টা করেও সড়ক দুর্ঘটনা রোধ করা সম্ভব হবে না। বিআরটিসি ডিজিএম (অপারেশন) মেজর কাজী শফিক উদ্দীন বলেন, সড়ক দুর্ঘটনার রোধ করতে বেশ কিছু উদ্যোগ সফল হয়েছে। এর ফলে সড়ক দুর্ঘটনা এখন অনেকটা কমে এসেছে। ড্রাইভারদের প্রশিক্ষণ বাড়াতে পারলে দুর্ঘটনার গ্রহণযোগ্য পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া যাবে জানান তিনি।
No comments