কি পরিবর্তন আনবে ভোট?
সিটি
করপোরেশন নির্বাচন হতে যাচ্ছে। কিন্তু তা জাতীয় জীবনে ও জাতীয় রাজনীতিতে
কি পরিবর্তন বয়ে আনবে তা পরিষ্কার নয়। আইন বলছে, সিটি করপোরেশন চালানোর সব
সিদ্ধান্ত নেবে কাউন্সিলরদের অংশগ্রহণে গড়ে ওঠা মিনি পার্লামেন্ট। কিন্তু
মিনি পার্লামেন্টকে কার্যকর করা নিয়ে কারো মুখে কোন কথা নেই। এটা মেয়রশাসিত
সরকার ব্যবস্থা নয়। কিন্তু বাস্তবে তেমন ধারণা দেয়াই হচ্ছে। মেয়ররা যে
ইশতেহার জারি করেছেন তাতে কাউন্সিলরদের সম্পর্কে কোন কথা নেই। মেয়ররা
এককভাবে স্বপ্ন ফেরি করছেন। মেয়রদের ইশতেহারও মিডিয়ায় বড় হয়ে উঠেছে। সেখানে
কাউন্সিলরদের বিষয়ে কোন কথা নেই। মেয়রপ্রার্থীরা এমনভাবে প্রতিশ্রুতি
দিচ্ছেন যেন এসব বলতে ও বাস্তবায়নে তাদের ম্যান্ডেট রয়েছে, তারা এসব করতে
স্বাধীন থাকবেন। অথচ আইনে আছে, যে কোন প্রকল্প বা সিদ্ধান্ত কাউন্সিলরদের
ভোটে চূড়ান্ত হবে। আর তাদের পক্ষে তা বাস্তবায়ন করবেন মেয়র।
আবার উন্নয়ন প্যাকেজ বা পরিবর্তন আনার যে কথা বলা হচ্ছে তা ভবিষ্যতে রক্ষা করার দায়দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট মেয়র প্রার্থীর রাজনৈতিক দল স্বীকার করছে না বা করতেও হচ্ছে না।
বিএনপি এখনও পর্যন্ত বলছে যে, সামনে যাই ঘটুক তারা নির্বাচন প্রক্রিয়া থেকে সরে দাঁড়াবে না। গতকাল এমনকি বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া নিজেই প্রচারণায় নেমেছেন। দীর্ঘ বিরতির পরে বিএনপি নেত্রীকে খোলা ময়দানে প্রত্যক্ষ রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় শামিল হতে দেখা গেল। কিন্তু বিএনপি সমর্থিত মেয়র প্রার্থিতা নিয়ে নানা অস্পষ্টতা ও অনিশ্চয়তা চলছে। নানা হিসাব নিকাশের কথাও বাতাসে ভাসছে।
দুই প্রধান দলের সমর্থিত মেয়র প্রার্থীদের যে বা যারাই জিতুন, তাদের পক্ষে জনগণের জীবনমান বৃদ্ধিতে খুব বড় মাপের কোন পরিবর্তন বয়ে আনার সুযোগ সীমিত। নগর সরকারের ধারণা খোদ প্রয়াত মেয়র হানিফের ছেলেও মুখে আনছেন না। কিন্তু এই নির্বাচনের জয়পরাজয় দুই প্রতিদ্বন্দ্বী দল বিশেষ করে দুই নেত্রীর জন্য প্রতীকী তাৎপর্য বয়ে আনবে। সেদিক থেকে অনেকের মতে এটা হতে পারে দুই নেত্রীর প্রেস্টিজ ইস্যু। আবার অনেকে বলছেন, এই নির্বাচনটাই একটি দাবার চাল। যে চালটি এমন একটি মোক্ষম সময়ে দেয়া হয়েছে, যখন বিএনপি ও তাদের মিত্রদের সামনে বয়কট করার বিকল্প ছিল না বললেই চলে। কারণ তারা তাদের লাগাতার অবরোধ কর্মসূচি থেকে বেরিয়ে আসতে চাইছিল। সর্বত্র একটা স্বস্তি প্রত্যাশিত হয়ে উঠেছিল। এরকম একটি সময়ে সরকার একতরফা সিটি করপোরেশন নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে। তবে অনেকের মতে বিষয়টি আবার এমনও নয় যে, এর ফলাফল যাই হোক, লাভের ষোলো আনাই সরকারের ঘরে উঠবে।
অনেক পর্যবেক্ষক মনে করেন, এই নির্বাচনে অবশ্যই সরকারের জন্য দ্বিমুখী ঝুঁকি আছে। প্রথমত সরকার যদি জয়লাভ করে তাহলে সমালোচনা উঠবে যে, ক্ষমতাসীন দলকে রেখে যে সুষ্ঠু নির্বাচন আশা করা যায় না, সেটাই প্রমাণিত হলো। আর দ্বিতীয়ত, যদি বিএনপি জয়লাভ করে তাহলে বিএনপি বলতে পারে, প্রমাণিত হলো যে, জনগণ সরকারের সঙ্গে নেই। তাদের বিজয় হলো তাদের চলমান আন্দোলনের বিজয়। সরকারের বিরুদ্ধে ভোটাররা অনাস্থা ব্যক্ত করেছে। সুতরাং এখন আগাম নির্বাচন দিতে হবে। অবশ্য বাস্তবতা হলো ফলাফল যাই হোক সরকার ২০১৯ সালের আগে পুনঃনির্বাচিত হওয়ার চান্স না থাকলে কোন সাধারণ নির্বাচন দিতে চাইবে না।
সিটি নির্বাচনের প্রতীকী মূল্য যে অসামান্য তার একটি লক্ষণ হলো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নির্বাচনটি পর্যবেক্ষণ করবে। গত ৫ই জানুয়ারির সাধারণ নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হয়নি বলে যুক্তরাষ্ট্র সহ উন্নয়ন অংশীদারদের অনেকেই নির্বাচনে পর্যবেক্ষক প্রেরণ করেনি।
এবারের নির্বাচন কতটা অবাধ ও শান্তিপূর্ণ হবে তা এখনও নিশ্চিত নয়। কত মানুষ ভোট কেন্দ্রে আসবেন তা অনিশ্চিত। নানা ধরনের অনিশ্চয়তা, ভয়ভীতি, গ্রেপ্তার বা হয়রানি আতংকের কারণে নির্বাচনী প্রচারণা তৃণমূলে জমে ওঠেনি। ২৩ লাখ ভোটার ও ১২/১৩ জন সংসদ সদস্যের এলাকায় নির্বাচন হচ্ছে। কিন্তু সে অনুযায়ী জমজমাট আওয়াজ নেই।
বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা করছেন যে, এই নির্বাচনে মানুষ খুব বেশি সংখ্যায় ভোট দিতে যাবেন তা এখনও স্পষ্ট নয়। কারা ভোট নেবেন তা নিয়েও সন্দেহ সংশয় আছে। তিনটি সিটি নির্বাচনে ১৫ হাজারের বেশি বুথ সামলাতে ২৫ হাজার ‘নির্দলীয়’ কর্মকর্তা লাগবে। ইতিমধ্যে খবর বেরিয়েছে যে, পোলিং অফিসার পদে ঝাড়ুদার, দারোয়ানের নামও ঢুকে পড়েছিল। কিন্তু তার চেয়েও বড় প্রশ্ন ওই ২৫ হাজার কর্মী কি প্রক্রিয়ায় বাছাই হবেন। এবিষয়ে প্রার্থীদের কোন মতামত নেয়া হবে কিনা তা পরিষ্কার করেনি ইসি। ইসি সূত্র বলেছে, সেনা মোতায়েনের সিদ্ধান্ত তারা নেবে না।
এদিকে নির্বাচনকে সামনে রেখে দায়িত্বশীল মহল বলছেন, ২০০৬ সাল থেকে পরবর্তী আড়াই বছর মেয়র খোকার সঙ্গে কাউন্সিলরদের কোন বৈঠক হয়নি। কাউন্সিলররা নীতিনির্ধারণী প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণের চেয়ে টেন্ডার বা কোন নতুন প্রকল্পে অংশীদারিত্ব পাওয়ার দিকে বেশি মনোযোগী ছিলেন।
আশংকা করা হচ্ছে যে, ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণে নির্বাচনের পরে আমলানির্ভর প্রশাসনের উত্থান ঘটতে পারে। ২০১১ থেকে শতকরা ১শ’ ভাগ আমলাশাসিত নগর প্রশাসনে তাদের প্রভাব এতটাই বেড়েছে যে, নতুন মেয়ররা তাদেরকে অগ্রাহ্য করতে পারবেন না। সর্বত্র তাদের নিয়োগ ও পদোন্নতি দেয়া লোক যাতে থাকে, সে ব্যবস্থা পাকাকরণ চলছে। নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার পরে সিটি করপোরশেনগুলোতে শত শত লোক নিয়োগ ও পদোন্নতি দেয়ার প্রক্রিয়া চালানো হচ্ছে।
তাই আসন্ন নির্বাচন স্থানীয় সরকারের হলেও কিছুটা হলেও পরিবর্তনের মেজাজটা থাকছে কেন্দ্রীর সরকার নির্বাচনের। কিন্তু তার জট কি আদৌ খুলবে?
আবার উন্নয়ন প্যাকেজ বা পরিবর্তন আনার যে কথা বলা হচ্ছে তা ভবিষ্যতে রক্ষা করার দায়দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট মেয়র প্রার্থীর রাজনৈতিক দল স্বীকার করছে না বা করতেও হচ্ছে না।
বিএনপি এখনও পর্যন্ত বলছে যে, সামনে যাই ঘটুক তারা নির্বাচন প্রক্রিয়া থেকে সরে দাঁড়াবে না। গতকাল এমনকি বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া নিজেই প্রচারণায় নেমেছেন। দীর্ঘ বিরতির পরে বিএনপি নেত্রীকে খোলা ময়দানে প্রত্যক্ষ রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় শামিল হতে দেখা গেল। কিন্তু বিএনপি সমর্থিত মেয়র প্রার্থিতা নিয়ে নানা অস্পষ্টতা ও অনিশ্চয়তা চলছে। নানা হিসাব নিকাশের কথাও বাতাসে ভাসছে।
দুই প্রধান দলের সমর্থিত মেয়র প্রার্থীদের যে বা যারাই জিতুন, তাদের পক্ষে জনগণের জীবনমান বৃদ্ধিতে খুব বড় মাপের কোন পরিবর্তন বয়ে আনার সুযোগ সীমিত। নগর সরকারের ধারণা খোদ প্রয়াত মেয়র হানিফের ছেলেও মুখে আনছেন না। কিন্তু এই নির্বাচনের জয়পরাজয় দুই প্রতিদ্বন্দ্বী দল বিশেষ করে দুই নেত্রীর জন্য প্রতীকী তাৎপর্য বয়ে আনবে। সেদিক থেকে অনেকের মতে এটা হতে পারে দুই নেত্রীর প্রেস্টিজ ইস্যু। আবার অনেকে বলছেন, এই নির্বাচনটাই একটি দাবার চাল। যে চালটি এমন একটি মোক্ষম সময়ে দেয়া হয়েছে, যখন বিএনপি ও তাদের মিত্রদের সামনে বয়কট করার বিকল্প ছিল না বললেই চলে। কারণ তারা তাদের লাগাতার অবরোধ কর্মসূচি থেকে বেরিয়ে আসতে চাইছিল। সর্বত্র একটা স্বস্তি প্রত্যাশিত হয়ে উঠেছিল। এরকম একটি সময়ে সরকার একতরফা সিটি করপোরেশন নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে। তবে অনেকের মতে বিষয়টি আবার এমনও নয় যে, এর ফলাফল যাই হোক, লাভের ষোলো আনাই সরকারের ঘরে উঠবে।
অনেক পর্যবেক্ষক মনে করেন, এই নির্বাচনে অবশ্যই সরকারের জন্য দ্বিমুখী ঝুঁকি আছে। প্রথমত সরকার যদি জয়লাভ করে তাহলে সমালোচনা উঠবে যে, ক্ষমতাসীন দলকে রেখে যে সুষ্ঠু নির্বাচন আশা করা যায় না, সেটাই প্রমাণিত হলো। আর দ্বিতীয়ত, যদি বিএনপি জয়লাভ করে তাহলে বিএনপি বলতে পারে, প্রমাণিত হলো যে, জনগণ সরকারের সঙ্গে নেই। তাদের বিজয় হলো তাদের চলমান আন্দোলনের বিজয়। সরকারের বিরুদ্ধে ভোটাররা অনাস্থা ব্যক্ত করেছে। সুতরাং এখন আগাম নির্বাচন দিতে হবে। অবশ্য বাস্তবতা হলো ফলাফল যাই হোক সরকার ২০১৯ সালের আগে পুনঃনির্বাচিত হওয়ার চান্স না থাকলে কোন সাধারণ নির্বাচন দিতে চাইবে না।
সিটি নির্বাচনের প্রতীকী মূল্য যে অসামান্য তার একটি লক্ষণ হলো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নির্বাচনটি পর্যবেক্ষণ করবে। গত ৫ই জানুয়ারির সাধারণ নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হয়নি বলে যুক্তরাষ্ট্র সহ উন্নয়ন অংশীদারদের অনেকেই নির্বাচনে পর্যবেক্ষক প্রেরণ করেনি।
এবারের নির্বাচন কতটা অবাধ ও শান্তিপূর্ণ হবে তা এখনও নিশ্চিত নয়। কত মানুষ ভোট কেন্দ্রে আসবেন তা অনিশ্চিত। নানা ধরনের অনিশ্চয়তা, ভয়ভীতি, গ্রেপ্তার বা হয়রানি আতংকের কারণে নির্বাচনী প্রচারণা তৃণমূলে জমে ওঠেনি। ২৩ লাখ ভোটার ও ১২/১৩ জন সংসদ সদস্যের এলাকায় নির্বাচন হচ্ছে। কিন্তু সে অনুযায়ী জমজমাট আওয়াজ নেই।
বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা করছেন যে, এই নির্বাচনে মানুষ খুব বেশি সংখ্যায় ভোট দিতে যাবেন তা এখনও স্পষ্ট নয়। কারা ভোট নেবেন তা নিয়েও সন্দেহ সংশয় আছে। তিনটি সিটি নির্বাচনে ১৫ হাজারের বেশি বুথ সামলাতে ২৫ হাজার ‘নির্দলীয়’ কর্মকর্তা লাগবে। ইতিমধ্যে খবর বেরিয়েছে যে, পোলিং অফিসার পদে ঝাড়ুদার, দারোয়ানের নামও ঢুকে পড়েছিল। কিন্তু তার চেয়েও বড় প্রশ্ন ওই ২৫ হাজার কর্মী কি প্রক্রিয়ায় বাছাই হবেন। এবিষয়ে প্রার্থীদের কোন মতামত নেয়া হবে কিনা তা পরিষ্কার করেনি ইসি। ইসি সূত্র বলেছে, সেনা মোতায়েনের সিদ্ধান্ত তারা নেবে না।
এদিকে নির্বাচনকে সামনে রেখে দায়িত্বশীল মহল বলছেন, ২০০৬ সাল থেকে পরবর্তী আড়াই বছর মেয়র খোকার সঙ্গে কাউন্সিলরদের কোন বৈঠক হয়নি। কাউন্সিলররা নীতিনির্ধারণী প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণের চেয়ে টেন্ডার বা কোন নতুন প্রকল্পে অংশীদারিত্ব পাওয়ার দিকে বেশি মনোযোগী ছিলেন।
আশংকা করা হচ্ছে যে, ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণে নির্বাচনের পরে আমলানির্ভর প্রশাসনের উত্থান ঘটতে পারে। ২০১১ থেকে শতকরা ১শ’ ভাগ আমলাশাসিত নগর প্রশাসনে তাদের প্রভাব এতটাই বেড়েছে যে, নতুন মেয়ররা তাদেরকে অগ্রাহ্য করতে পারবেন না। সর্বত্র তাদের নিয়োগ ও পদোন্নতি দেয়া লোক যাতে থাকে, সে ব্যবস্থা পাকাকরণ চলছে। নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার পরে সিটি করপোরশেনগুলোতে শত শত লোক নিয়োগ ও পদোন্নতি দেয়ার প্রক্রিয়া চালানো হচ্ছে।
তাই আসন্ন নির্বাচন স্থানীয় সরকারের হলেও কিছুটা হলেও পরিবর্তনের মেজাজটা থাকছে কেন্দ্রীর সরকার নির্বাচনের। কিন্তু তার জট কি আদৌ খুলবে?
No comments