মদ্যপ পিতা শিশুপুত্রকে গাড়িতে রেখে যাওয়ার পর গরমে করুণ মৃত্যু
মর্মান্তিক
এক ঘটনা ঘটলো যুক্তরাষ্ট্রের অ্যারিজোনা অঙ্গরাজ্যের রাজধানী ফীনিক্সে।
পিতা জেমস করিওর (৪১) তার ২ বছর বয়সী শিশুপুত্র আলফা করিওরকে গাড়ির মধ্যে
ফেলে রেখে যাওয়ার পর অতিরিক্ত গরমে শিশুটির করুণ মৃত্যু হয়েছে। আদালতে
শুনানির সময় কান্নায় ভেঙে পড়েন ওই পিতা। ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদছিলেন তিনি।
ঘটনার দিন মদ্যপ অবস্থায় ছিলেন জেমস। অতিরিক্ত মদপানে আসক্ত অবস্থায়
হিতাহিত জ্ঞান না থাকায় মর্মান্তিক এ দুর্ঘটনা ঘটেছে। এ খবর দিয়েছে বার্তা
সংস্থা পিটিআই। মানুষ হত্যা ও শিশু নির্যাতনে দায়ী সন্দেহে জেমসকে আটক করা
হয়েছে। ঘটনা তদন্তে জানা গেছে, পিতা জেমস তার শিশুপুত্রকে নিয়ে একটি মদের
দোকানে গিয়েছিলেন। সেখান থেকে এক বোতল মদ কেনেন তিনি। গাড়ি চালিয়ে বাড়ি
যাওয়ার সময় তিনি মদ পান করেন এবং বাড়িতে গিয়ে ঘুমিয়ে পড়েন। এদিকে মদ্যপ
অবস্থায় গাড়ির ভেতরে নিজের সন্তানকে ফেলে যান তিনি। ফিনিক্স এলাকায়
তাপমাত্রা বেড়ে ৩২ ডিগ্রি সেলসিয়াসে উন্নীত হওয়ায়, গাড়ির ভেতরের আবহাওয়া
বেশ উত্তপ্ত ছিল এবং সে কারণেই শিশুটির মৃত্যু হয়। গোয়েন্দা কর্মকর্তারা
জানিয়েছেন, মৃত্যুর আগে শিশুটি গাড়ি থেকে বের হওয়ার অনেক চেষ্টা করেও
ব্যর্থ হয়। আদালতের প্রাথমিক শুনানিতে গতকাল উপস্থিত হয়েছিলেন জেমস। সরকারি
পক্ষের আইনজীবীরা আরও বড় অঙ্কের জরিমানার জন্য সুপারিশ করলেও, আদালতের
বিচারক জরিমানা বাবদ ৫০,০০০ ডলার ধার্য করেন। শুনানিতে জেমস করিওরের পক্ষে
কোন আইনজীবী ছিলেন না। এদিকে নিহত শিশু আলফার বড় ভাই ৫ বছরের শিশুটি হয়
নিজে গাড়ির দরজা খুলে বেরিয়ে গিয়েছিল কিংবা তার পিতা জেমস করিওর তাকে নিজেই
গাড়ির দরজা খুলে বাড়িতে নিয়ে গেছেন। পরিবারের সদস্যরা যখন তার বড় ভাইকে
জিজ্ঞেস করলো, আলফা কোথায়? তখন ৫ বছরের ভাইটি বলেছিল, ও ঘুমিয়ে আছে। আলফার
মা কয়েক ঘণ্টা পর তাকে গাড়ির পেছনের আসনে সংজ্ঞাহীন অবস্থায় পান। ২ বছরের
শিশুটিকে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় এবং সেখানেই তার মৃত্যু হয়।
লাইবেরিয়া, আইভরি কোস্ট ও ঘানায় তার যোগাযোগ রয়েছে এবং জেমস পালিয়ে যেতে
পারেন বলে যুক্তি উপস্থাপন করেন সরকারি পক্ষের আইনজীবীরা। পুত্র হারানোর
শোকে ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদতে থাকা পিতা বলেন, জরিমানার অর্থ প্রদানের মতো
অর্থ নেই তার কাছে। তিনি বারবার এভাবে ফুঁপিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়ার এক
পর্যায়ে বিচারক তাকে এক বাক্স টিস্যু দিতে চান। বিচারক আরও বলেন, জরিমানা
দেয়ার পর জেমস আর মদ পান করতে পারবেন না। বিচারক তার রায়ে বলেন, আপনি যে
বাড়িতেই থাকেন না কেন, সেখানে অ্যালকোহল সেবন করতে পারবেন না। তিনি আরও
বলেন, মদ একদম নয়। অবিলম্বে সব মদ সরিয়ে ফেলতে হবে। আপনার পরিবার ও সমাজের
মানুষদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের জন্যই এসব করা হচ্ছে। ওই বিচারক বলেন,
খোলাখুলিভাবেই বলছি, আপনি নিজের কাছ থেকে নিজে নিরাপদ থাকুন সেটাও আমি
নিশ্চিত করতে চাই।
No comments