কিষাণ সমাবেশে কৃষকের আত্মহত্যা
দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী ও আম আদমি পার্টির (এএপি) প্রধান অরবিন্দ কেজরিওয়ালের কিষাণ সমাবেশে আত্মহত্যা করলেন এক কৃষক। বুধবার সমাবেশ চলাকালীন গাছের ডালে ঝুলে আত্মহত্যা করেন ওই কৃষক। এএপির কর্মীরা দ্রুত তাকে নিচে নামিয়ে এনে রাম মনোহর লোহিয়া হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। বুধবার মোদি সরকারের জমি অধিগ্রহণ বিলের বিরুদ্ধে যন্তর মন্তরে এএপির সভা চলছিল। তখনই গাছ থেকে ঝুলে পড়েন ওই কৃষক।
মৃত্যুর আগে একটি চিরকুট লিখে যান ওই কৃষক। সেখানে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করতেই আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে উল্লেখ করেছেন রাজস্থানের দাউসা জেলার বাসিন্দা গজেন্দ্র সিং রাজপুত। সুইসাইড নোটে তিনি লিখেছেন, ‘আমার তিনটি সন্তান রয়েছে। ঘরে খাবার কিছু নেই। খরায় সব ফসল নষ্ট হয়ে গেছে। বাবা আমাকে বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছে!’ পূর্বঘোষিত তারিখ অনুযায়ী এদিন যন্তর মন্তরে র্যালিতে অংশ নেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী ও এএপি প্রধান অরবিন্দ কেজরিওয়াল। মোদি সরকারের ভূমি অধিগ্রহণ বিলের প্রতিবাদে অনুষ্ঠিত ওই র্যালিতে যোগ দেয় অনেক কৃষক। র্যালিতে অংশ নেয়া ওই কৃষক গাছের উপর উঠে যায়। সেখানে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করলে এএপি কর্মীরা নেমে আসার আহ্বান জানায়। এক পর্যায়ে এএপি কর্মীরা গাছে উঠে তাকে নামায়। এরপর ওই কৃষককে দ্রুত হাসপাতালে নেয়া হলে তাকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক। আম আদমি নেতা কেজরিওয়াল তার ভাষণের পর ওই কৃষকের অবস্থা জানতে হাসপাতালে যান। এ সময় তিনি বলেন, ‘আমি দুঃখ পেয়েছি যে, সে যখন সবার সামনেই গাছে উঠল তখন কেউ বাধা দেয়নি।’ এএপি নেতা কুমার বিশ্বাস তখন বক্তব্য রাখছিলেন।
কুমার বিশ্বাস এ ঘটনায় পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন। তিনি প্রশ্ন করেন, পুলিশ কেন সক্রিয় হল না। তিনি বলেন, কেন পুলিশ দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে পুরো ঘটনা দেখল। মনে হচ্ছে এটা মোদি-সরকারের ষড়যন্ত্র। ভারতে নতুন ভূমি অধিগ্রহণ আইন প্রণয়ন করতে যাচ্ছে বিজেপি সরকার। এ আইন অনুযায়ী, স্থানীয়দের মতামত ছাড়াই সরকার কল-কারখানার জন্য কৃষি জমি বরাদ্দ দিতে পারবে। সমাবেশে মোদিকে কটাক্ষ করে কেজরিওয়াল বলেন, কৃষকরা এখন আর প্রধানমন্ত্রীকে বিশ্বাস করে না। কারণ, তিনি কৃষকদের জমি চুরি করে ধনীদের মধ্যে বিলিয়ে দিচ্ছেন। আর এ জন্যই জরুরিভিত্তিতে জমি অধিগ্রহণ আইনের প্রয়োজন হয়ে পড়েছে। এ বিলটি বাস্তবায়ন না করার জন্য কৃষকরা ছাড়াও বিক্ষোভে অংশ নিয়েছে দেশটির বিভিন্ন রাজনৈতিক দল। কংগ্রেস, আম আদমিসহ সব দল সংসদের পাশাপাশি মাঠেও নেমেছে।
No comments