জ্বালানি সঙ্কট, ভেঙে পড়েছে পরিবহনব্যবস্থা
বিএনপি
নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের ডাকা টানা অবরোধে ভেঙে পড়েছে পরিবহনব্যবস্থা।
নিরাপত্তার অভাবে মহাসড়কগুলোতে যান চলাচল করছে না। এর প্রভাব পড়েছে
জ্বালানি তেল সরবরাহে। পাম্পগুলোতে জ্বালানি তেলের সঙ্কট প্রকট আকার ধারণ
করেছে। ডিপোগুলোতে তেলের মজুত থাকলেও নিরাপত্তার অভাবে সেখান থেকে পাম্পে
তেল যাচ্ছে না। দেশের কয়েকটি বিভাগীয় শহরে অকটেন, পেট্রল ও ডিজেলের মজুত
প্রায় ফুরিয়ে এসেছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রতিশ্রুতিতেও ভরসা
পাচ্ছেন না ডিলাররা। বিশেষ করে ডিজেলের সরবরাহ না থাকায় বিপাকে পড়েছেন
কৃষকরা। চলতি বোর মওসুমে ব্যাহত হচ্ছে সেচকাজ। সঙ্কটের সুযোগে দাম বাড়িয়ে
দিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। অন্যদিকে সারা দেশে তেলের বিক্রি কমে গেছে ৯০ শতাংশ।
অবরোধে কার্যত অচল শাহজাদপুরের বাঘাবাড়ী নৌবন্দর। ফলে সেখান থেকে জ্বালানি
তেল সরবরাহ স্বাভাবিক হচ্ছে না। হরতাল-অবরোধে উত্তরের ১৬ জেলায় ৪০০ তেল
পাম্পে সঙ্কট চরমে পৌঁছায়। টানা অবরোধে রাজশাহীতে জ্বালানি তেলের সঙ্কট
দেখা দিয়েছে। খুলনাসহ ১৫ জেলায় জ্বালানি তেল সরবরাহে অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে।
অবরোধ অব্যাহত থাকলে দু-একদিনের মধ্যে ময়মনসিংহে পেট্রল ও অকটেন সঙ্কট
দেখা দেবে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় ডিলাররা। এদিকে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম
করপোরেশন (বিপিসি) দাবি করেছে, ডিপোগুলোতে জ্বালানি তেলের কোন সঙ্কট নেই।
ডিলারদের নিজ দায়িত্বে ডিপো থেকে তেল সংগ্রহ করতে হবে। চাইলে তারা
প্রশাসনের সহযোগিতা নিতে পারেন।
পেট্রলপাম্প ও ট্যাংকলরি মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদের সভাপতি নাজমুল হক বলেন, জ্বালানি তেলের বিক্রি দশ ভাগের একভাগে নেমে এসেছে। একদিকে সরবরাহে নিরাপত্তা ঝুঁকি, অন্যদিকে গাড়ি বন্ধ থাকায় তেল বিক্রি কমে গেছে। সারা দেশে একই অবস্থা। চাহিদা না থাকায় তেল আসছে না। বিশেষ করে হাইওয়ে পাম্পগুলোতে অবস্থা আরও খারাপ। বিক্রি একদম তলানিতে ঠেকেছে। পরিস্থিতির উন্নতি না হলে পাম্পমালিকরা আন্দোলনে যাবেন- এমন ইঙ্গিত দিয়ে তিনি বলেন, আগামী সপ্তাহে আমরা প্রেস ব্রিফিংয়ে যাবো। সেখানে বিশেষ করে রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি কিছু আহ্বান থাকবে। সরকার ও বিরোধী জোটকে সমঝোতায় আসতে হবে। আমাদের কিছু প্রস্তাবনাও থাকবে। যদিও জানি আমাদের প্রস্তাবনা তারা গ্রহণ করবে না। না হলে আমরা ব্যবসায়ীরা রাস্তায় নামবো। ডিপোগুলোতে কোন সঙ্কট নেই দাবি করেছেন বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি) চেয়ারম্যান এম বদরুদ্দোজা। তিনি বলেন, জ্বালানি তেলের কোন সঙ্কট নেই। তবে পাম্পে তেল নিতে ডিলাররা অসুবিধার সম্মুখীন হচ্ছেন। আমাদের দায়িত্ব ফিলিং স্টেশনে পৌঁছে দেয়া। তার পরেও যেখানে প্রয়োজন আমরা স্থানীয় প্রশাসনকে বলেছি তেল পরিবহনে নিরাপত্তা দিতে। পতেঙ্গা থেকে পুলিশ ও বিজিবি দিয়ে আমরা তেল পৌঁছে দিচ্ছি।
শাহজাদপুর (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি জানান, বিএনপির টানা অবরোধের কারণে উত্তরবঙ্গের বৃহত্তম শাহজাদপুরের বাঘাবাড়ী নৌবন্দর কার্যত অচল হয়ে পড়েছে। বাঘাবাড়ী বন্দর থেকে শাহজাদপুরসহ উত্তরাঞ্চলের ১৬ জেলায় পরিবহন সঙ্কটে সার ও জ্বালানি তেল সরবরাহ হচ্ছে পুলিশ ও বিজিবির পাহারায়। বাঘাবাড়ী ডিপো থেকে টাঙ্গাইল ও জামালপুর জেলায়ও তেল সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। উত্তরাঞ্চলের চাহিদার শতকরা ৮০ ভাগ জ্বালানি তেল ও সারের চাহিদা মেটানো হয় বাঘাবাড়ী বন্দর থেকে। প্রতিদিন পেট্রলের চাহিদা ৩ লাখ লিটার এবং ডিজেলের চাহিদা ২২ লাখ লিটার থাকলেও গতকাল দুপুর ১টা পর্যন্ত বিপিসি’র বাঘাবাড়ী অয়েল ডিপোর পদ্মা, মেঘনা ও যমুনা তেল বিপণন কেন্দ্র থেকে পেট্রল ১৫ হাজার লিটার এবং ডিজেল ১-দেড় লাখ লিটার সরবরাহ হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। লেবার হ্যান্ডেলিং এজেন্টের পরিচালক আবুল হোসেন জানান, বাঘাবাড়ী বন্দর থেকে পুলিশ ও সেনাসদস্যদের বিশেষ ব্যবস্থাপনায় উত্তরাঞ্চলে বিভিন্ন জেলায় তেল ও সার সরবরাহ স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করা হচ্ছে।
স্টাফ রিপোর্টার, বগুড়া থেকে জানান, হরতাল-অবরোধে উত্তর জনপদের ১৬ জেলার ৪০০ তেল পাম্প তেল সঙ্কটে পড়েছে। কেউ কেউ ভয়ে তেল পাম্পগুলো বন্ধও রেখেছে। পাম্পগুলোতে তেল সঙ্কটে বিপাকে পড়েছেন গ্রামের শ্যালোচালিত মেশিনে ইরি-বোরোচাষীরা। টানা ৮ দিনের হরতাল-অবরোধে রাস্তায় যানবাহন ভাঙচুর এবং অগ্নিসংযোগের ঘটনায় অনেকেই বাঘাবাড়ী তেলডিপো থেকে তেল উত্তোলন করছে না। এ কারণে পাম্পগুলো এখন তেল সঙ্কটে রয়েছে। আবার পাম্পগুলো খোলা রাখলে কেউ যদি পাম্পে আগুন লাগিয়ে দেয় সে ভয়েও মালিকরা খুলছেন না। এরই মধ্যেও কেউ কেউ ঝুঁকি নিয়ে বাঘাবাড়ী থেকে তেল নিয়ে আসছেন। আবার অনেকেই ভাবছেন যদি গাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেয় তাহলে আর কিছুই থাকবে না। বাস ভাঙচুর করলে কিংবা আগুন লাগিয়ে দিলেও কিছু থাকে; কিন্তু তেলের গাড়িতে আগুন লাগালে কিছুই থাকবে না। গ্রামাঞ্চলের তেল দোকানদাররাও পড়েছেন বিপাকে। তারাও ভয়ে ডিপো থেকে তেল নিয়ে যেতে ভয় পাচ্ছেন। ওই ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের ধারণা, প্রতিবারই তেলের দাম বেড়ে যায়। তাই আগাম তেল নিতে পারলে ভাল হয়। কিন্তু এভাবে হরতাল-অবরোধ চললে হয়তোবা তারা তেল সংগ্রহ করতে পারবেন না। পরে হঠাৎ তেলের দাম বেড়ে গেলেও তাদেরও বাজারে বিক্রি করতে সঙ্কটে পড়তে হবে। কোন কোন পাম্পমালিক পাম্প খোলা রাখলেও বলছেন, কিছু তেল থাকলেও তেল বিক্রি নেই। কেননা, একদিকে যানবাহন বন্ধ, অন্যদিকে গ্রামাঞ্চলের ব্যবসায়ীরা হরতাল-অবরোধে তেল নিয়ে যেতে পারছেন না। এ রকম অবস্থাই কর্মচারীদের বেতন দেয়াও দুঃসাধ্য হয়ে পড়েছে।
রাজশাহী বিভাগীয় পেট্রল পাম্পমালিক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মো. আবদুল মমিন দুলাল জানান, ডিপোগুলোতে তেলের কোন ঘাটতি নেই। কিন্তু তেল পরিবহনে সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে হরতাল-অবরোধের কারণে। ঝুঁকি নিয়ে কেউ তেল আনতে সাহস পাচ্ছেন না। বগুড়া পর্যন্ত কেউ কেউ কোনভাবে কিছু তেল নিয়ে এলেও নওগাঁ, জয়পুরহাট, চাঁপাই নবাবগঞ্জ, রংপুর, নীলফামারী, কুড়িগ্রামসহ উত্তরের অন্যান্য জেলায় তেল বহন করা হরতাল-অবরোধকারীদের জন্য কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ কারণে বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে রাজশাহী-রংপুর বিভাগের ১৬ জেলার ৪০০ তেল পাম্প। পাশাপাশি গ্রামাঞ্চলের খুচরা ব্যবসায়ীরাও তেল নিতে পারছেন না। ডিজেলচালিত শ্যালো মেশিন দিয়ে যারা ইরি-বোরো চাষ করেন তারাও পড়েছেন বিপাকে।
স্টাফ রিপোর্টার, রাজশাহী থেকে: বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের ডাকা অনির্দিষ্টকালের অবরোধে রাজশাহীতে জ্বালানি তেলের তীব্র সঙ্কট দেখা দিয়েছে। এদিকে বোরো মওসুমের শুরুতে জ্বালানি তেলের এমন সঙ্কট দেখা দেয়ায় রাজশাহী অঞ্চলের শ’ শ’ কৃষক পড়েছেন মহাবিপাকে। এমন অবস্থা চলতে থাকলে এ অঞ্চলের বোরো চাষ চরম হুমকির মুখে পড়বে বলে সংশ্লিষ্টরা আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন।
রাজশাহী নগরীর বিভিন্ন ফিলিং স্টেশনে সরজমিন গিয়ে দেখা গেছে, পাম্পে পেট্রল না থাকায় মোটরসাইকেল আরোহীরা ফিরে যাচ্ছেন। নগরীর ভদ্রা এলাকায় অবস্থিত বাবুল ফিলিং স্টেশন ও বাসস্টেশন এলাকায় শুভ ফিলিং স্টেশনে তেল না পেয়ে ফিরে যাচ্ছেন অনেকেই। তবে রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (রুয়েট) পাশে অবস্থিত নয়েন ফিলিং স্টেশন, শাহ মখদুম কলেজের পার্শ্ববর্তী আফরিন ফিলিং স্টেশন নিয়মিত খোলা থাকায় মোটরসাইকেল আরোহী সেখানেই ভিড় করছেন। মহানগর আওয়ামী লীগ অফিসের পেছনে অবিস্থিত গুলগফুর ফিলিং স্টেশনের কর্মচারী সোহেল রানা জানান, অনেক আশঙ্কার ভেতরে গতকাল থেকে তেল বিক্রি শুরু করেছেন। এর আগে পেট্রল, অকটেন ও ডিজেল না থাকায় পেট্রল পাম্পটি বন্ধ রেখেছিলেন। এদিকে তানোর উপজেলার মণ্ডুমালা এলাকার চাষি মোজাম্মেল হক জানান, তিনি ২০ বিঘা জমিতে বোরো ধান লাগানোর প্রস্তুতি নিয়েছেন। কিন্তু ডিজেলের অভাবে সেচকাজ শুরু করতে পারছেন না। এতে বোরো আবাদে বড় ধরনের ক্ষতির আশঙ্কার মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন তিনি।
স্টাফ রিপোর্টার, সিলেট থেকে জানান, সিলেটে পুলিশি পাহারায় আনা হচ্ছে জ্বালানি, চাহিদা পূরণ হচ্ছে না। অবরোধের কারণে সিলেটে জ্বালানি সঙ্কট তীব্র আকার ধারণ করেছেন। পেট্রল পাম্পগুলোতে পাওয়া যাচ্ছে না জ্বালানি তেল। ব্যবসায়ীরা বলেছেন, চট্টগ্রাম থেকে তেলবাহী ওয়াগন ট্রেন না আসার কারণে সিলেটে এই জ্বালানি সঙ্কট দেখা দিয়েছে। এতে লোকসান গুনতে হচ্ছে ব্যবসায়ীদের। ওদিকে, সিলেটের জ্বালানি সঙ্কট দূর করতে স্থানীয়ভাবে সংগ্রহ করা জ্বালানির কয়েকটি ট্রাক গোলাপগঞ্জ থেকে সিলেটে এসেছে। গোলাপগঞ্জের কৈলাশটিলার এনজিএলএফ-এ আটকা পড়েছিল জ্বালানিবাহী শ’ শ’ ট্রাক। সিলেটের প্রশাসনের সহায়তায় গতকাল সকাল ৮টা থেকে এসব ট্রাক পুলিশের পাহারায় সিলেটে নিয়ে আসা হয়েছে। বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের বিভাগীয় সাধারণ সম্পাদক জুবায়ের আহমদ চৌধুরী গতকাল বিকালে মানবজমিনকে জানিয়েছেন, পুলিশি পাহারায় গতকাল সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত গোলাপগঞ্জের কৈলাশটিলা থেকে ৫ লাখ লিটার পেট্রল সিলেটে নিয়ে আসা হয়েছে। এ ছাড়া আরও ৫০ হাজার লিটার ডিজেল সিলেটে নিয়ে আসা হয়। তবে, যে জ্বালানি সিলেটে এসে পৌঁছেছে সেগুলো প্রয়োজনের তুলনায় খুব নগণ্য বলে জানান তিনি। তিনি বলেন, ওয়াগন না আসা পর্যন্ত সিলেটের জ্বালানি সঙ্কট পূরণ হবে না।
স্টাফ রিপোর্টার, ময়মনসিংহ থেকে জানান, অবরোধ অব্যাহত থাকলে ময়মনসিংহ পেট্রল ও অকটেন সঙ্কট দেখা দেবে। পাম্পগুলোতে মজুত শেষপর্যায়ে। কোন পাম্পে শেষ হয়ে গেছে, আবার কোনটিতে ২-১ দিনের মজুত আছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, অবরোধ শুরু হওয়ার পর থেকে পেট্রল ও অকটেন উত্তোলন এবং পরিবহন ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে যাওয়ায় কেউ উত্তোলন করে ময়মনসিংহ নিয়ে আসতে সাহস পাচ্ছেন না। সঙ্কটের কারণে পেট্রল ও অকটেনচালিত যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যেতে পারে। ময়মনসিংহ পেট্রল পাম্প মালিকদদের সঙ্গে অসব তথ্য মিলেছে।
পাম্পমালিকরা জানান, ময়মনসিংহ জেলায় ৪০টিরও বেশি তেলের পাম্প রয়েছে। নারায়ণগঞ্জ ডিপো ছাড়া বৃহত্তর ময়মনসিংহে কোন ডিপো না থাকায় পেট্রল ও অকেটন নারায়ণগঞ্জ ডিপো থেকে পেট্রল ও অকটেন উত্তোলন করে নিরাপদে ময়মনসিংহ নিয়ে আসার সাহস পাচ্ছে না। অবরোধের শুরুতে কেউ কেউ ব্যক্তিগত উদ্যোগে ঝুঁকি নিয়ে এলেও এখন আর সাহস পাচ্ছেন না। এ ব্যাপারে পাম্পমালিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রশাসনের সহায়তা ছাড়া তেল উত্তোলন ও পরিবহন করা সম্ভব নয়। তবে কেউ কেউ অবরোধ থাকা সত্ত্বেও কৃষকদের কথা চিন্তা করে ডিজেল উত্তোলন করে নিয়ে আসছে। আন্দোলন অব্যাহত সঙ্কট বাড়বে।
স্টাফ রিপোর্টার, খুলনা থেকে জানান, খুলনাসহ দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ১৫ জেলায় জ্বালানি তেলের চরম সঙ্কটের সৃষ্টি হয়েছে। পেট্রল পাম্প ও কৃষকদের কাছে তেল পৌঁছাতে পারছেন না ব্যবসায়ীরা। ফলে চলতি কৃষি মওসুমে কৃষকদের কাছে ও পেট্রল পাম্পগুলোতে জ্বালানি তেল সরবরাহে আতঙ্কে ভুগছে জ্বালানি তেল ব্যবসায়ী, ট্যাংকলরি মালিক ও চালকরা। বাংলাদেশ জ্বলানি তেল পরিবেশক ও ট্যাংকলরি ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের নেতারা এ সঙ্কটের কথা বলেন। সারা দেশে বিরাজমান রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে খুলনা বিভাগের ১০টি জেলা ও ফরিদপুরের ৫ জেলায় পেট্রল, ডিজেল, অকটেন, কেরোসিন, ফার্নেস অয়েলসহ জ্বালানি তেলসামগ্রী সরবরাহ করতে পারছেন না জ্বালানি তেল ব্যবসায়ীরা। হরতাল, অবরোধ, ধর্মঘটসহ নানা রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে সড়কে ট্যাংকলরি চলাচলে চরম বিঘ্ন ঘটছে। খুলনা বিভাগীয় ট্যাংকলরি ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সহসভাপতি এম মাহবুব আলম সাংবাদিকদের এ সঙ্কটের কথা জানান। একইভাবে অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক শেখ হারুন আর রশিদ ও জ্বালানি তেল পরিবেশক সমিতির সহসভাপতি হাবিবুর রহমান খুলনাসহ দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ১৫ জেলায় জ্বালানি তেলের চরম সঙ্কটের কথা স্বীকার করে বলেন, এভাবে অবরোধ চলতে থাকলে চাহিদানুযায়ী তেল সরবরাহ করা সম্ভাব হবে না। তখন কৃষকরা চরম ভোগান্তিতে পড়বেন।
পেট্রলপাম্প ও ট্যাংকলরি মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদের সভাপতি নাজমুল হক বলেন, জ্বালানি তেলের বিক্রি দশ ভাগের একভাগে নেমে এসেছে। একদিকে সরবরাহে নিরাপত্তা ঝুঁকি, অন্যদিকে গাড়ি বন্ধ থাকায় তেল বিক্রি কমে গেছে। সারা দেশে একই অবস্থা। চাহিদা না থাকায় তেল আসছে না। বিশেষ করে হাইওয়ে পাম্পগুলোতে অবস্থা আরও খারাপ। বিক্রি একদম তলানিতে ঠেকেছে। পরিস্থিতির উন্নতি না হলে পাম্পমালিকরা আন্দোলনে যাবেন- এমন ইঙ্গিত দিয়ে তিনি বলেন, আগামী সপ্তাহে আমরা প্রেস ব্রিফিংয়ে যাবো। সেখানে বিশেষ করে রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি কিছু আহ্বান থাকবে। সরকার ও বিরোধী জোটকে সমঝোতায় আসতে হবে। আমাদের কিছু প্রস্তাবনাও থাকবে। যদিও জানি আমাদের প্রস্তাবনা তারা গ্রহণ করবে না। না হলে আমরা ব্যবসায়ীরা রাস্তায় নামবো। ডিপোগুলোতে কোন সঙ্কট নেই দাবি করেছেন বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি) চেয়ারম্যান এম বদরুদ্দোজা। তিনি বলেন, জ্বালানি তেলের কোন সঙ্কট নেই। তবে পাম্পে তেল নিতে ডিলাররা অসুবিধার সম্মুখীন হচ্ছেন। আমাদের দায়িত্ব ফিলিং স্টেশনে পৌঁছে দেয়া। তার পরেও যেখানে প্রয়োজন আমরা স্থানীয় প্রশাসনকে বলেছি তেল পরিবহনে নিরাপত্তা দিতে। পতেঙ্গা থেকে পুলিশ ও বিজিবি দিয়ে আমরা তেল পৌঁছে দিচ্ছি।
শাহজাদপুর (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি জানান, বিএনপির টানা অবরোধের কারণে উত্তরবঙ্গের বৃহত্তম শাহজাদপুরের বাঘাবাড়ী নৌবন্দর কার্যত অচল হয়ে পড়েছে। বাঘাবাড়ী বন্দর থেকে শাহজাদপুরসহ উত্তরাঞ্চলের ১৬ জেলায় পরিবহন সঙ্কটে সার ও জ্বালানি তেল সরবরাহ হচ্ছে পুলিশ ও বিজিবির পাহারায়। বাঘাবাড়ী ডিপো থেকে টাঙ্গাইল ও জামালপুর জেলায়ও তেল সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। উত্তরাঞ্চলের চাহিদার শতকরা ৮০ ভাগ জ্বালানি তেল ও সারের চাহিদা মেটানো হয় বাঘাবাড়ী বন্দর থেকে। প্রতিদিন পেট্রলের চাহিদা ৩ লাখ লিটার এবং ডিজেলের চাহিদা ২২ লাখ লিটার থাকলেও গতকাল দুপুর ১টা পর্যন্ত বিপিসি’র বাঘাবাড়ী অয়েল ডিপোর পদ্মা, মেঘনা ও যমুনা তেল বিপণন কেন্দ্র থেকে পেট্রল ১৫ হাজার লিটার এবং ডিজেল ১-দেড় লাখ লিটার সরবরাহ হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। লেবার হ্যান্ডেলিং এজেন্টের পরিচালক আবুল হোসেন জানান, বাঘাবাড়ী বন্দর থেকে পুলিশ ও সেনাসদস্যদের বিশেষ ব্যবস্থাপনায় উত্তরাঞ্চলে বিভিন্ন জেলায় তেল ও সার সরবরাহ স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করা হচ্ছে।
স্টাফ রিপোর্টার, বগুড়া থেকে জানান, হরতাল-অবরোধে উত্তর জনপদের ১৬ জেলার ৪০০ তেল পাম্প তেল সঙ্কটে পড়েছে। কেউ কেউ ভয়ে তেল পাম্পগুলো বন্ধও রেখেছে। পাম্পগুলোতে তেল সঙ্কটে বিপাকে পড়েছেন গ্রামের শ্যালোচালিত মেশিনে ইরি-বোরোচাষীরা। টানা ৮ দিনের হরতাল-অবরোধে রাস্তায় যানবাহন ভাঙচুর এবং অগ্নিসংযোগের ঘটনায় অনেকেই বাঘাবাড়ী তেলডিপো থেকে তেল উত্তোলন করছে না। এ কারণে পাম্পগুলো এখন তেল সঙ্কটে রয়েছে। আবার পাম্পগুলো খোলা রাখলে কেউ যদি পাম্পে আগুন লাগিয়ে দেয় সে ভয়েও মালিকরা খুলছেন না। এরই মধ্যেও কেউ কেউ ঝুঁকি নিয়ে বাঘাবাড়ী থেকে তেল নিয়ে আসছেন। আবার অনেকেই ভাবছেন যদি গাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেয় তাহলে আর কিছুই থাকবে না। বাস ভাঙচুর করলে কিংবা আগুন লাগিয়ে দিলেও কিছু থাকে; কিন্তু তেলের গাড়িতে আগুন লাগালে কিছুই থাকবে না। গ্রামাঞ্চলের তেল দোকানদাররাও পড়েছেন বিপাকে। তারাও ভয়ে ডিপো থেকে তেল নিয়ে যেতে ভয় পাচ্ছেন। ওই ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের ধারণা, প্রতিবারই তেলের দাম বেড়ে যায়। তাই আগাম তেল নিতে পারলে ভাল হয়। কিন্তু এভাবে হরতাল-অবরোধ চললে হয়তোবা তারা তেল সংগ্রহ করতে পারবেন না। পরে হঠাৎ তেলের দাম বেড়ে গেলেও তাদেরও বাজারে বিক্রি করতে সঙ্কটে পড়তে হবে। কোন কোন পাম্পমালিক পাম্প খোলা রাখলেও বলছেন, কিছু তেল থাকলেও তেল বিক্রি নেই। কেননা, একদিকে যানবাহন বন্ধ, অন্যদিকে গ্রামাঞ্চলের ব্যবসায়ীরা হরতাল-অবরোধে তেল নিয়ে যেতে পারছেন না। এ রকম অবস্থাই কর্মচারীদের বেতন দেয়াও দুঃসাধ্য হয়ে পড়েছে।
রাজশাহী বিভাগীয় পেট্রল পাম্পমালিক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মো. আবদুল মমিন দুলাল জানান, ডিপোগুলোতে তেলের কোন ঘাটতি নেই। কিন্তু তেল পরিবহনে সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে হরতাল-অবরোধের কারণে। ঝুঁকি নিয়ে কেউ তেল আনতে সাহস পাচ্ছেন না। বগুড়া পর্যন্ত কেউ কেউ কোনভাবে কিছু তেল নিয়ে এলেও নওগাঁ, জয়পুরহাট, চাঁপাই নবাবগঞ্জ, রংপুর, নীলফামারী, কুড়িগ্রামসহ উত্তরের অন্যান্য জেলায় তেল বহন করা হরতাল-অবরোধকারীদের জন্য কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ কারণে বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে রাজশাহী-রংপুর বিভাগের ১৬ জেলার ৪০০ তেল পাম্প। পাশাপাশি গ্রামাঞ্চলের খুচরা ব্যবসায়ীরাও তেল নিতে পারছেন না। ডিজেলচালিত শ্যালো মেশিন দিয়ে যারা ইরি-বোরো চাষ করেন তারাও পড়েছেন বিপাকে।
স্টাফ রিপোর্টার, রাজশাহী থেকে: বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের ডাকা অনির্দিষ্টকালের অবরোধে রাজশাহীতে জ্বালানি তেলের তীব্র সঙ্কট দেখা দিয়েছে। এদিকে বোরো মওসুমের শুরুতে জ্বালানি তেলের এমন সঙ্কট দেখা দেয়ায় রাজশাহী অঞ্চলের শ’ শ’ কৃষক পড়েছেন মহাবিপাকে। এমন অবস্থা চলতে থাকলে এ অঞ্চলের বোরো চাষ চরম হুমকির মুখে পড়বে বলে সংশ্লিষ্টরা আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন।
রাজশাহী নগরীর বিভিন্ন ফিলিং স্টেশনে সরজমিন গিয়ে দেখা গেছে, পাম্পে পেট্রল না থাকায় মোটরসাইকেল আরোহীরা ফিরে যাচ্ছেন। নগরীর ভদ্রা এলাকায় অবস্থিত বাবুল ফিলিং স্টেশন ও বাসস্টেশন এলাকায় শুভ ফিলিং স্টেশনে তেল না পেয়ে ফিরে যাচ্ছেন অনেকেই। তবে রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (রুয়েট) পাশে অবস্থিত নয়েন ফিলিং স্টেশন, শাহ মখদুম কলেজের পার্শ্ববর্তী আফরিন ফিলিং স্টেশন নিয়মিত খোলা থাকায় মোটরসাইকেল আরোহী সেখানেই ভিড় করছেন। মহানগর আওয়ামী লীগ অফিসের পেছনে অবিস্থিত গুলগফুর ফিলিং স্টেশনের কর্মচারী সোহেল রানা জানান, অনেক আশঙ্কার ভেতরে গতকাল থেকে তেল বিক্রি শুরু করেছেন। এর আগে পেট্রল, অকটেন ও ডিজেল না থাকায় পেট্রল পাম্পটি বন্ধ রেখেছিলেন। এদিকে তানোর উপজেলার মণ্ডুমালা এলাকার চাষি মোজাম্মেল হক জানান, তিনি ২০ বিঘা জমিতে বোরো ধান লাগানোর প্রস্তুতি নিয়েছেন। কিন্তু ডিজেলের অভাবে সেচকাজ শুরু করতে পারছেন না। এতে বোরো আবাদে বড় ধরনের ক্ষতির আশঙ্কার মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন তিনি।
স্টাফ রিপোর্টার, সিলেট থেকে জানান, সিলেটে পুলিশি পাহারায় আনা হচ্ছে জ্বালানি, চাহিদা পূরণ হচ্ছে না। অবরোধের কারণে সিলেটে জ্বালানি সঙ্কট তীব্র আকার ধারণ করেছেন। পেট্রল পাম্পগুলোতে পাওয়া যাচ্ছে না জ্বালানি তেল। ব্যবসায়ীরা বলেছেন, চট্টগ্রাম থেকে তেলবাহী ওয়াগন ট্রেন না আসার কারণে সিলেটে এই জ্বালানি সঙ্কট দেখা দিয়েছে। এতে লোকসান গুনতে হচ্ছে ব্যবসায়ীদের। ওদিকে, সিলেটের জ্বালানি সঙ্কট দূর করতে স্থানীয়ভাবে সংগ্রহ করা জ্বালানির কয়েকটি ট্রাক গোলাপগঞ্জ থেকে সিলেটে এসেছে। গোলাপগঞ্জের কৈলাশটিলার এনজিএলএফ-এ আটকা পড়েছিল জ্বালানিবাহী শ’ শ’ ট্রাক। সিলেটের প্রশাসনের সহায়তায় গতকাল সকাল ৮টা থেকে এসব ট্রাক পুলিশের পাহারায় সিলেটে নিয়ে আসা হয়েছে। বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের বিভাগীয় সাধারণ সম্পাদক জুবায়ের আহমদ চৌধুরী গতকাল বিকালে মানবজমিনকে জানিয়েছেন, পুলিশি পাহারায় গতকাল সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত গোলাপগঞ্জের কৈলাশটিলা থেকে ৫ লাখ লিটার পেট্রল সিলেটে নিয়ে আসা হয়েছে। এ ছাড়া আরও ৫০ হাজার লিটার ডিজেল সিলেটে নিয়ে আসা হয়। তবে, যে জ্বালানি সিলেটে এসে পৌঁছেছে সেগুলো প্রয়োজনের তুলনায় খুব নগণ্য বলে জানান তিনি। তিনি বলেন, ওয়াগন না আসা পর্যন্ত সিলেটের জ্বালানি সঙ্কট পূরণ হবে না।
স্টাফ রিপোর্টার, ময়মনসিংহ থেকে জানান, অবরোধ অব্যাহত থাকলে ময়মনসিংহ পেট্রল ও অকটেন সঙ্কট দেখা দেবে। পাম্পগুলোতে মজুত শেষপর্যায়ে। কোন পাম্পে শেষ হয়ে গেছে, আবার কোনটিতে ২-১ দিনের মজুত আছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, অবরোধ শুরু হওয়ার পর থেকে পেট্রল ও অকটেন উত্তোলন এবং পরিবহন ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে যাওয়ায় কেউ উত্তোলন করে ময়মনসিংহ নিয়ে আসতে সাহস পাচ্ছেন না। সঙ্কটের কারণে পেট্রল ও অকটেনচালিত যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যেতে পারে। ময়মনসিংহ পেট্রল পাম্প মালিকদদের সঙ্গে অসব তথ্য মিলেছে।
পাম্পমালিকরা জানান, ময়মনসিংহ জেলায় ৪০টিরও বেশি তেলের পাম্প রয়েছে। নারায়ণগঞ্জ ডিপো ছাড়া বৃহত্তর ময়মনসিংহে কোন ডিপো না থাকায় পেট্রল ও অকেটন নারায়ণগঞ্জ ডিপো থেকে পেট্রল ও অকটেন উত্তোলন করে নিরাপদে ময়মনসিংহ নিয়ে আসার সাহস পাচ্ছে না। অবরোধের শুরুতে কেউ কেউ ব্যক্তিগত উদ্যোগে ঝুঁকি নিয়ে এলেও এখন আর সাহস পাচ্ছেন না। এ ব্যাপারে পাম্পমালিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রশাসনের সহায়তা ছাড়া তেল উত্তোলন ও পরিবহন করা সম্ভব নয়। তবে কেউ কেউ অবরোধ থাকা সত্ত্বেও কৃষকদের কথা চিন্তা করে ডিজেল উত্তোলন করে নিয়ে আসছে। আন্দোলন অব্যাহত সঙ্কট বাড়বে।
স্টাফ রিপোর্টার, খুলনা থেকে জানান, খুলনাসহ দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ১৫ জেলায় জ্বালানি তেলের চরম সঙ্কটের সৃষ্টি হয়েছে। পেট্রল পাম্প ও কৃষকদের কাছে তেল পৌঁছাতে পারছেন না ব্যবসায়ীরা। ফলে চলতি কৃষি মওসুমে কৃষকদের কাছে ও পেট্রল পাম্পগুলোতে জ্বালানি তেল সরবরাহে আতঙ্কে ভুগছে জ্বালানি তেল ব্যবসায়ী, ট্যাংকলরি মালিক ও চালকরা। বাংলাদেশ জ্বলানি তেল পরিবেশক ও ট্যাংকলরি ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের নেতারা এ সঙ্কটের কথা বলেন। সারা দেশে বিরাজমান রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে খুলনা বিভাগের ১০টি জেলা ও ফরিদপুরের ৫ জেলায় পেট্রল, ডিজেল, অকটেন, কেরোসিন, ফার্নেস অয়েলসহ জ্বালানি তেলসামগ্রী সরবরাহ করতে পারছেন না জ্বালানি তেল ব্যবসায়ীরা। হরতাল, অবরোধ, ধর্মঘটসহ নানা রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে সড়কে ট্যাংকলরি চলাচলে চরম বিঘ্ন ঘটছে। খুলনা বিভাগীয় ট্যাংকলরি ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সহসভাপতি এম মাহবুব আলম সাংবাদিকদের এ সঙ্কটের কথা জানান। একইভাবে অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক শেখ হারুন আর রশিদ ও জ্বালানি তেল পরিবেশক সমিতির সহসভাপতি হাবিবুর রহমান খুলনাসহ দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ১৫ জেলায় জ্বালানি তেলের চরম সঙ্কটের কথা স্বীকার করে বলেন, এভাবে অবরোধ চলতে থাকলে চাহিদানুযায়ী তেল সরবরাহ করা সম্ভাব হবে না। তখন কৃষকরা চরম ভোগান্তিতে পড়বেন।
No comments