মায়ের কবরে সমাহিত হবেন চাষী নজরুল
একুশে
পদক পাওয়া দেশের প্রখ্যাত চলচ্চিত্র নির্মাতা চাষী নজরুল ইসলামকে তাঁর মা
শায়েস্তা খানমের কবরে সমাহিত করা হবে বলেই জানিয়েছেন তাঁর ছোট মেয়ে
আন্নী ইসলাম। আজ বিকালের কোনো এক সময়ে শ্রীনগর থানার সমষপুর গ্রামে মায়ের
কবরে চিরনিদ্রায় শায়িত হবেন এই গুণী চলচ্চিত্র নির্মাতা। পারিবারিক
সূত্রে জানা গেছে, চাষী নজরুল ইসলামের মরদেহ এখন কমলাপুরের জসীম উদদীন
রোডের বাসায় রাখা আছে। সেখানে প্রয়োজনীয় আনুষ্ঠানিকতা শেষে বাদ জোহর
গোপীবাগ জামে মসজিদে প্রথম ও কমলাপুর ইডেন জামে মসজিদে দ্বিতীয় জানাজা
অনুষ্ঠিত হবে। এরপর মরদেহ নিয়ে যাওয়া হবে বারডেম হাসপাতালের শব হিমাগারে।
আজ সকাল ১০টায় চাষী নজরুল ইসলামের মরদেহ নিয়ে যাওয়া হবে তাঁর
দীর্ঘদিনের কর্মস্থল এফডিসিতে। সেখানে সহকর্মী, শিল্পী ও কলাকুশলীদের
শ্রদ্ধা নিবেদন ও জানাজা শেষে বাদ জোহর নিয়ে যাওয়া হবে বায়তুল মোকাররম
জাতীয় মসজিদে। সেখানেও আরেকবার জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। সব ধরনের
আনুষ্ঠানিকতা শেষে চাষী নজরুল ইসলামকে নিয়ে যাওয়া হবে শ্রীনগর থানার
সমষপুর গ্রামে। সেখানে মা শায়েস্তা খানমের কবরে সমাহিত হবেন চাষী নজরুল।
দীর্ঘ কয়েক মাস রোগভোগের পর আজ রোববার ভোর পাঁচটা ৫১ মিনিটে শেষনিঃশ্বাস
ত্যাগ করেন চাষী নজরুল ইসলাম। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, দুই মেয়ে
নাতি-নাতনিসহ অসংখ্য ভক্ত ও গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। চাষী নজরুল ইসলাম ১৯৪১
সালের ২৩ অক্টোবর শ্রীনগর থানার সমষপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বাবার
নাম মোসলেহ উদ্দিন খান। মা শায়েস্তা খানম। চার ভাই ও তিন বোনের মধ্যে তিনি
ছিলেন সবার বড়। ১৯৫৫ সালে টাটানগরে নির্মিত একটি প্রামাণ্যচিত্রে প্রথম
অভিনয় করেন প্রখ্যাত এই নির্মাতা। ১৯৬০ সালে ফতেহ লোহানীর সঙ্গে ‘আসিয়া’
ছবিতে সহকারী পরিচালক হিসেবে কাজ শুরু করেন। এরপর কাজ করেন ওবায়েদ উল হকসহ
আরও অনেকের সঙ্গে। অভিনয়ও করেন কিছু ছবিতে। ১৯৭২ সালে পরিচালনা করেন
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক প্রথম পূর্ণাঙ্গ ছবি ‘ওরা ১১ জন’। ছবিটি
দারুণ প্রশংসিত হয়। চাষী নজরুল ইসলাম সব মিলিয়ে ৩৫টির মতো ছবি
নির্মাণ করেন। এর মধ্যে ছয়টি ছবি মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক। তাঁর পরিচালিত
উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্রগুলোর মধ্যে রয়েছে—‘সংগ্রাম’, ‘হাঙর নদী গ্রেনেড’,
‘মেঘের পরে মেঘ’, ‘ধ্রুবতারা’, ‘শহীদ ক্যাপ্টেন সালাউদ্দীন’, ‘দেবদাস’,
‘শুভদা’, ‘পদ্মা মেঘনা যমুনা’, ‘হাছন রাজা’, ‘শাস্তি’, ‘সুভা’।
No comments