বস্তিতে আগুন, শিশুর মৃত্যু- সবকিছু হারাল প্রায় ৫০০ পরিবার
(রাজধানীর
মোহাম্মদপুরের জাফরাবাদ এলাকার পুলপাড় বটতলায় বস্তিতে গতকাল আগুন লেগে
১৯টি বাড়ি পুড়ে যায় l সন্তানকে হারিয়ে মা আসমা বেগমের আহাজারি। হাতে থাকা
ছবির ছোট মেয়েটিকে চিরদিনের মতো হারিয়েছেন তিনি l প্রথম আলো)
তিন বছরের মেয়ে ফাতেমার পুড়ে যাওয়া নিস্প্রাণ ছোট্ট শরীরটা কাপড়ে পেঁচিয়ে
বুকে চেপে ধরে নির্বাক বসেছিলেন অটোরিকশাচালক বাবা জয়নাল আবেদীন। পাশে
বসে বিলাপ করছেন তাঁর স্ত্রী আসমা খাতুন। আগুনে সন্তান ও সর্বস্বহারা এই
দম্পতিকে সান্ত্বনা দেওয়ার সময় নেই প্রতিবেশীদের। সবাই ছোটাছুটি ও বিলাপ
করছে। আগুনে তারা হারিয়েছে ঘরে থাকা সবকিছু। রাজধানীর মোহাম্মদপুরের এক
বস্তিতে গতকাল রোববার আগুন নিঃস্ব করে দিয়েছে প্রায় ৫০০ পরিবারকে। এই শীতে
খোলা আকাশের নিচে কীভাবে রাত কাটাবেন তা নিয়ে অনিশ্চয়তায় পড়েছে
ক্ষতিগ্রস্ত মানুষ। তবে তারা জানায়, থাকার জায়গা ও খাবার দেওয়ার আশ্বাস
দিয়ে গেছেন স্থানীয় সাংসদ জাহাঙ্গীর কবীর নানক।
শহীদ বুদ্ধিজীবী সড়কের জাফরাবাদে পুলপাড়, বটতলা নামে পরিচিত এই বস্তিটিতে আগুন লাগে সকাল সোয়া আটটার দিকে। ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা সোয়া এক ঘণ্টা পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন। এর আগেই পুড়ে যায় বস্তির ১৯টি বাড়ির প্রায় ৫০০টি পরিবারের ঘর, প্রাণ হারায় ঘরে ঘুমিয়ে থাকা শিশু ফাতেমা। বাঁশ, কাঠ, টিন দিয়ে বানানো দোতলা, তিনতলা বাড়িগুলোতে আগুন খুব দ্রুত ছড়ায়। ফায়ার সার্ভিসের নিয়ন্ত্রণকক্ষ থেকে জানানো হয়, সকাল আটটা ২৮ মিনিটে বস্তিতে আগুন লাগার খবর আসে। এরপর ফায়ার সার্ভিসের মোহাম্মদপুর, লালবাগ, পলাশী ও সদর দপ্তর থেকে ১০টি ইউনিট আগুন নেভানোর জন্য যায়। বাতাসের কারণে আগুন নেভাতে বেগ পেতে হয়।
সকাল সাড়ে নয়টার দিকে ওই বস্তিতে গিয়ে দেখা যায়, আগুনের শিখা তেমন নেই। চারদিকে প্রচণ্ড ধোঁয়া। মানুষ ছোটাছুটি করছে। আগুন নেভানোর চেষ্টা করছেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। বাঁশ-কাঠ পুড়ে গিয়ে টিন ও লোহার তৈজসপত্র ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে। বাসিন্দাদের বেশির ভাগই গৃহকর্মী, পোশাকশ্রমিক, ভাসমান ব্যবসায়ী, রিকশা-অটোরিকশার চালক, দোকানকর্মী, পরিবহন শ্রমিকসহ নিম্ন আয়ের মানুষ। সকালে উঠে কাজে যাওয়ায় বাসিন্দারা প্রাণে বাঁচলেও ঘরে থাকা সহায় সম্পদ সঞ্চয় সবই পুড়ে গেছে। দুপুরে দেখা যায়, ধোঁয়া বের হতে থাকা ধ্বংসস্তূপ থেকে নিজেদের ট্রাংক, স্টিলের আলমারি, থালা-বাসন রাখার স্ট্যান্ডসহ জিনিসপত্র খুঁজে বের করছে বস্তিবাসীরা। পোশাকশ্রমিক নাজমা ধ্বংসস্তূপ থেকে তাঁর ট্রাংকটি বের করেন। ট্রাংক খুলে জমানো ৪০ হাজার টাকার আধা পোড়া নোটগুলো দেখে বিলাপ শুরু করেন তিনি। অনেক কষ্টের টাকাগুলো এখন মূল্যহীন। একই অবস্থা অন্যদেরও।
আসমার বিলাপ: বিলাপ করতে করতে আসমা বলেন, সকালে ঘুমন্ত ছোট মেয়ে ফাতেমাকে কম্বল দিয়ে ঢেকে রেখে বড় মেয়ে জয়নাবকে বিদ্যালয়ে পৌঁছে দিতে গিয়েছিলেন তিনি। ফেরার পথে বস্তিতে আগুন লাগার খবর পান। দৌড়ে এসে দেখেন, ঘরে আগুন। তিনি ঘরের কাছে যেতে চাইলেও লোকজন তাঁকে আটকে রাখে। পরে মেয়ের লাশ পান। আসমা বলতে থাকেন, ‘মাইয়াডা ঘুমে ছিল। আগুনের তাপে মনে হয় আরও ওম পাইছিল। কেউ আমার বাচ্চাডারে বাঁচাইল না।’ পরে ময়নাতদন্ত ছাড়াই ফাতেমার লাশ বাবা-মার কাছে হস্তান্তর করা হয় বলে জানান মোহাম্মদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আজিজুল হক। বস্তির বাসিন্দারা জানান, একেক মালিকের বাড়িতে ২৫ থেকে ৩০টি ঘর রয়েছে। একটি ঘরের ভাড়া মাসে দুই থেকে তিন হাজার টাকা। ক্ষতিগ্রস্ত টাইলস মিস্ত্রি ফয়সাল তাঁর নাম ক্ষতিগ্রস্তের তালিকায় তুলতে ছোটাছুটি করছিলেন। হাতে খাতা-কলম দেখে তিনি এই প্রতিবেদককে বলেন, ঘরে ১২ হাজারের বেশি টাকা ছিল। সব শেষ। কোথায় থাকবেন, কী খাবেন, জানেন না। তাঁর মতো অনেকেই তালিকায় নাম ওঠাতে ছোটাছুটি করছিলেন। স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের তালিকা করছিলেন। তাঁরা জানান, দুপুরে ও রাতে ক্ষতিগ্রস্ত লোকদের খাবারের ব্যবস্থা করবেন তাঁরা। আগুনের সূত্রপাত ও ক্ষয়ক্ষতি সম্পর্কে ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক (অপারেশনস) এ কে এম শাকিল নেওয়াজ বলেন, আগুন লাগার কারণ এবং এ পর্যন্ত কত ক্ষতি হলো, তা তদন্ত সাপেক্ষে বলা যাবে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, ৫০০ পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
শহীদ বুদ্ধিজীবী সড়কের জাফরাবাদে পুলপাড়, বটতলা নামে পরিচিত এই বস্তিটিতে আগুন লাগে সকাল সোয়া আটটার দিকে। ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা সোয়া এক ঘণ্টা পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন। এর আগেই পুড়ে যায় বস্তির ১৯টি বাড়ির প্রায় ৫০০টি পরিবারের ঘর, প্রাণ হারায় ঘরে ঘুমিয়ে থাকা শিশু ফাতেমা। বাঁশ, কাঠ, টিন দিয়ে বানানো দোতলা, তিনতলা বাড়িগুলোতে আগুন খুব দ্রুত ছড়ায়। ফায়ার সার্ভিসের নিয়ন্ত্রণকক্ষ থেকে জানানো হয়, সকাল আটটা ২৮ মিনিটে বস্তিতে আগুন লাগার খবর আসে। এরপর ফায়ার সার্ভিসের মোহাম্মদপুর, লালবাগ, পলাশী ও সদর দপ্তর থেকে ১০টি ইউনিট আগুন নেভানোর জন্য যায়। বাতাসের কারণে আগুন নেভাতে বেগ পেতে হয়।
সকাল সাড়ে নয়টার দিকে ওই বস্তিতে গিয়ে দেখা যায়, আগুনের শিখা তেমন নেই। চারদিকে প্রচণ্ড ধোঁয়া। মানুষ ছোটাছুটি করছে। আগুন নেভানোর চেষ্টা করছেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। বাঁশ-কাঠ পুড়ে গিয়ে টিন ও লোহার তৈজসপত্র ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে। বাসিন্দাদের বেশির ভাগই গৃহকর্মী, পোশাকশ্রমিক, ভাসমান ব্যবসায়ী, রিকশা-অটোরিকশার চালক, দোকানকর্মী, পরিবহন শ্রমিকসহ নিম্ন আয়ের মানুষ। সকালে উঠে কাজে যাওয়ায় বাসিন্দারা প্রাণে বাঁচলেও ঘরে থাকা সহায় সম্পদ সঞ্চয় সবই পুড়ে গেছে। দুপুরে দেখা যায়, ধোঁয়া বের হতে থাকা ধ্বংসস্তূপ থেকে নিজেদের ট্রাংক, স্টিলের আলমারি, থালা-বাসন রাখার স্ট্যান্ডসহ জিনিসপত্র খুঁজে বের করছে বস্তিবাসীরা। পোশাকশ্রমিক নাজমা ধ্বংসস্তূপ থেকে তাঁর ট্রাংকটি বের করেন। ট্রাংক খুলে জমানো ৪০ হাজার টাকার আধা পোড়া নোটগুলো দেখে বিলাপ শুরু করেন তিনি। অনেক কষ্টের টাকাগুলো এখন মূল্যহীন। একই অবস্থা অন্যদেরও।
আসমার বিলাপ: বিলাপ করতে করতে আসমা বলেন, সকালে ঘুমন্ত ছোট মেয়ে ফাতেমাকে কম্বল দিয়ে ঢেকে রেখে বড় মেয়ে জয়নাবকে বিদ্যালয়ে পৌঁছে দিতে গিয়েছিলেন তিনি। ফেরার পথে বস্তিতে আগুন লাগার খবর পান। দৌড়ে এসে দেখেন, ঘরে আগুন। তিনি ঘরের কাছে যেতে চাইলেও লোকজন তাঁকে আটকে রাখে। পরে মেয়ের লাশ পান। আসমা বলতে থাকেন, ‘মাইয়াডা ঘুমে ছিল। আগুনের তাপে মনে হয় আরও ওম পাইছিল। কেউ আমার বাচ্চাডারে বাঁচাইল না।’ পরে ময়নাতদন্ত ছাড়াই ফাতেমার লাশ বাবা-মার কাছে হস্তান্তর করা হয় বলে জানান মোহাম্মদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আজিজুল হক। বস্তির বাসিন্দারা জানান, একেক মালিকের বাড়িতে ২৫ থেকে ৩০টি ঘর রয়েছে। একটি ঘরের ভাড়া মাসে দুই থেকে তিন হাজার টাকা। ক্ষতিগ্রস্ত টাইলস মিস্ত্রি ফয়সাল তাঁর নাম ক্ষতিগ্রস্তের তালিকায় তুলতে ছোটাছুটি করছিলেন। হাতে খাতা-কলম দেখে তিনি এই প্রতিবেদককে বলেন, ঘরে ১২ হাজারের বেশি টাকা ছিল। সব শেষ। কোথায় থাকবেন, কী খাবেন, জানেন না। তাঁর মতো অনেকেই তালিকায় নাম ওঠাতে ছোটাছুটি করছিলেন। স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের তালিকা করছিলেন। তাঁরা জানান, দুপুরে ও রাতে ক্ষতিগ্রস্ত লোকদের খাবারের ব্যবস্থা করবেন তাঁরা। আগুনের সূত্রপাত ও ক্ষয়ক্ষতি সম্পর্কে ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক (অপারেশনস) এ কে এম শাকিল নেওয়াজ বলেন, আগুন লাগার কারণ এবং এ পর্যন্ত কত ক্ষতি হলো, তা তদন্ত সাপেক্ষে বলা যাবে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, ৫০০ পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
No comments