শেলা ও পশুর নদী থেকে নমুনা নিয়ে ফিরলো জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞ দল
সুন্দরবনে
ট্যাংকার দুর্ঘটনায় ছড়িয়ে পড়া তেলের ক্ষয়ক্ষতি ও জীববৈচিত্র্যের ওপর
প্রভাব পর্যবেক্ষণে গঠিত জাতিসংঘের ২৫ সদস্যের বিশেষজ্ঞ পর্যবেক্ষক দল
সুন্দরবন ছেড়েছে। গতকাল দুপুরে ৬ দিনের পর্যবেক্ষণ শেষে বিশেষজ্ঞ দলটি
খুলনার উদ্দেশে মংলা ত্যাগ করেছে বলে সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের বিভাগীয় বন
কর্মকর্তা আমির হোসাইন চৌধুরী জানান। সুন্দরবনে ফার্নেস অয়েল ছড়িয়ে পড়ায়
বনের ক্ষয়ক্ষতি এবং স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব পর্যবেক্ষণে দলটি ২২শে
ডিসেম্বর মংলা পৌঁছায়। ওই দিন বিকালে মংলায় পৌঁছে সন্ধ্যার পর লঞ্চে করে
সুন্দরবনে কাজ শুরু করে দলটি। জাতিসংঘ ‘জয়েন ইউএন গভর্নমেন্ট অয়েল স্পিল
রেসপন্স মিশন’-এর বিশেষজ্ঞ প্রতিনিধি দলটি ঢাকায় গিয়ে সংবাদ সম্মেলনে তাদের
পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদন তুলে ধরবেন বলে জানা গেছে। বিশেষজ্ঞ দলের প্রধান
এ্যামেলিয়া ওয়ালস্ট্রম জানান, ২৫ সদস্যের প্রতিনিধি দলটিতে ১১ জন
আন্তর্জাতিক এবং ১৪ জন জাতীয় পর্যবেক্ষক ছিলেন। তারা সবাই তেল দূষণ রোধ,
বন, বন্যপ্রাণী সম্পর্কে আন্তর্জাতিক পর্যায়ের অভিজ্ঞ। এমনকি এ প্রতিনিধি
দলের একাধিক সদস্যের আফ্রিকার জঙ্গলে তেল ছড়িয়ে পড়ার ঘটনায় কাজ করার
অভিজ্ঞতা রয়েছে। আর বাকি ১৬ জন দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক। মোট
৬টি দলে বিভক্ত হয়ে বিশেষজ্ঞ প্রতিনিধি দলটি পূর্ব সুন্দরবনের চাঁদপাই
রেঞ্জ এলাকায় কাজ করে। এসময় তারা শেলা ও পশুর নদী এবং সংলগ্ন শাখা খালগুলো
থেকে প্রয়োজনীয় বিভিন্ন নমুনা সংগ্রহ করেন। ছড়িয়ে পড়া তেলের বিস্তৃতি,
সম্ভাব্য ক্ষতিকর প্রভাব, জলজ প্রাণী ও উদ্ভিদের ওপর প্রভাব, বন্যপ্রাণীর
উপর প্রভাব, বন সংলগ্ন মানুষের জীবন-জীবিকার ওপর এবং ম্যানগ্রোভ
ইকোসিস্টেমের ওপর তেলের প্রভাব পর্যবেক্ষণ করেন তারা। গত বুধবার সুন্দরবনের
চাঁদপাই রেঞ্জের আন্ধারমানিক এলাকায় এম.এল ফ্লোটিং হোম লঞ্চে দাঁড়িয়ে
জাতিসংঘের ‘জয়েন ইউএন গভর্নমেন্ট অয়েল স্পিল রেসপন্স মিশন’-এর প্রধান
এ্যামেলিয়া ওয়ালস্ট্রম এই প্রতিবেদককে বলেছিলেন, আমরা আশা করছি আগামী ৩১শে
ডিসেম্বর সুন্দরবন বিষয়ে সরকারকে একটি প্রাথমিক সুপারিশ প্রদান করতে পারবো।
গত ৯ই ডিসেম্বর সুন্দরবনের শেলা নদীতে ট্যাঙ্কার ডুবে যাওয়ার পর ১৫ই
ডিসেম্বর সরকার জাতিসংঘের কাছে সহায়তা চায়। এরপর এই বিশেষজ্ঞ দল ক্ষয়ক্ষতি
পর্যবেক্ষণে সুন্দরবন আসে।
No comments