‘পিছু হটা’ নিয়ে বিএনপিতে মিশ্র প্রতিক্রিয়া- কাল দেশব্যাপী হরতাল ২০ দলের
যেকোনো মূল্যে ২৭ ডিসেম্বর গাজীপুরে জনসভা করার ঘোষণা দিয়ে পরে ওই জেলায় সকাল-সন্ধ্যা হরতাল দিয়ে পিছু হটা নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া আছে বিএনপিতে। এরই মধ্যে আগামীকাল সোমবার সারা দেশে সকাল-সন্ধ্যা হরতাল ডেকেছে বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০-দলীয় জোট। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর গতকাল শনিবার বিকেলে দলের চেয়ারপারসনের গুলশানের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে এ কর্মসূচি ঘোষণা দেন। এর আগে সেখানে ২০ দলের মহাসচিব পর্যায়ে বৈঠক হয়। এতে জামায়াতে ইসলামী ছাড়া অন্য শরিক দলের নেতারা ছিলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, ১৪৪ ধারা জারি করে গাজীপুরে জনসভা ‘বানচাল’ ও গতকালের বিক্ষোভ কর্মসূচিতে পুলিশের হয়রানি ও গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে এবং খন্দকার মোশাররফ হোসেন, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, লুৎফুজ্জামান বাবর, আবদুস সালাম পিন্টু ও নাসির উদ্দিন আহাম্মেদ পিন্টুসহ কারাবন্দী ২০-দলের শীর্ষস্থানীয় নেতাদের মুক্তির দাবিতে এ হরতাল দেওয়া হয়েছে।
বিএনপির কেন্দ্রীয় কয়েকজন নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গতকাল গাজীপুরের হরতালের মতো কালকের হরতালও যদি ঢিলেঢালাভাবে হয়, তা মাঠের কর্মীদের জন্য আরও হতাশার কারণ হবে। এর আগে যেকোনো মূল্যে গাজীপুরে জনসভা করার ঘোষণা দিয়েছিলেন বিএনপির চেয়ারপারসনসহ দলের দায়িত্বশীল নেতারা। জনসভাস্থল ও আশপাশের এলাকায় স্থানীয় প্রশাসন ১৪৪ ধারা জারি করার পর শুক্রবার রাতে আগের ঘোষণা থেকে সরে আসে বিএনপি। এ নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে বিএনপি ও জোটের নেতাদের মধ্যে।
নেতাদের একাংশ মনে করছেন, গাজীপুরের জনসভা নিয়ে শুরু থেকে অনমনীয় মনোভাব দেখিয়ে শেষ মুহূর্তে পিছু হটা ঠিক হয়নি। এতে দীর্ঘদিন পর আন্দোলনমুখী হওয়া নেতা-কর্মীরা আবার হোঁচট খেয়েছেন। এরপর বিএনপির ওপর সরকার আরও চেপে বসবে। আরেকাংশ মনে করেন, পুলিশ ও ছাত্রলীগের সমান উগ্রতা না দেখিয়ে হরতাল ও বিক্ষোভের কর্মসূচি দিয়ে বিএনপি ‘অহিংস’ মনোভাব দেখিয়েছে। সরকারকে এ বিষয়ে ভাবতে আরেকবার সুযোগ করে দেওয়া হয়েছে।
এ ছাড়া এ যাত্রায় অহিংস মনোভাব দেখিয়ে ৩ ও ৫ জানুয়ারি ঢাকায় জনসভার অনুমতি পাওয়ার যৌক্তিকতা দেশবাসীর সামনে আরেকটু শক্তভাবে তুলে ধরার কৌশলও ছিল বলে বিএনপির উচ্চপর্যায়ের একটি সূত্র জানায়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য তরিকুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘বিএনপি তো কোনো সন্ত্রাসী দল না যে ছাত্রলীগের লাঠি এবং পিস্তলের মুখে পাল্টা লাঠিসোঁটা, বন্দুক, পিস্তল নিয়ে জনসভা করতে যাবে। আমরা গণতান্ত্রিক দল। সরকার যদি সভা-সমাবেশ করার নাগরিকের গণতান্ত্রিক ও সাংবিধানিক অধিকার না দেয়, তাহলে ইচ্ছা করলে জরুরি অবস্থা দিতে পারে।’ তিনি অভিযোগ করেন, পুলিশ বিএনপির নেতাদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে হামলা করছে, গ্রেপ্তার করছে, যা আগের স্বৈরাচারকেও হার মানিয়েছে।
তবে কেন্দ্রীয় ও গাজীপুর জেলা বিএনপির একাধিক সূত্র জানায়, বস্তুত গাজীপুরে বিএনপির প্রভাবশালী কয়েকজন নেতার মধ্যে অনৈক্য এবং সেখানকার ছাত্রদল, যুবদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের সাংগঠনিক দুর্বলতার কারণে ‘যেকোনো মূল্যে’ জনসভা করার অবস্থান থেকে সরে আসেন বিএনপির শীর্ষ নেতৃত্ব। ২৭ তারিখের জনসভা নিয়ে গত এক সপ্তাহে কয়েক দফায় গাজীপুরের নেতাদের সঙ্গে খালেদা জিয়ার বৈঠকেও এ দুর্বলতা প্রকাশ পায়।
এসব বৈঠকে ছিলেন এমন একজন নেতা জানান, কয়েক দিন আগে এক বৈঠকে গাজীপুর জেলা বিএনপির সভাপতি ফজলুল হক মিলন জনসভার প্রস্তুতিতে পুলিশ হয়রানি এবং ক্ষমতাসীন দলের বাধা ও ভয়ভীতির নানা অনুযোগ করেন খালেদা জিয়ার কাছে। এ সময় গাজীপুরের নেতাদের কাছে কেন্দ্রীয় একজন নেতা জানতে চান, তাঁরা ২৭ ডিসেম্বর জনসভার আয়োজন করতে পারবেন কি না। জবাবে ফজলুল হক বলেন, তাঁরা জনসভার আয়োজন করতে পারবেন। ওই সূত্রটি জানায়, ছাত্রলীগ জনসভা প্রতিহত করে পাল্টা সমাবেশ ডাকার পর বিএনপির চেয়ারপারসন গাজীপুর জেলা বিএনপির সক্ষমতা পর্যবেক্ষণে রাখেন।
স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর সমালোচনা: বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব শাহজাহানপুরে পরিত্যক্ত পানির পাইপে শিশু জিহাদের মর্মান্তিক মৃত্যুতে গভীর শোক ও তার বাবা-মায়ের প্রতি সমবেদনা জানান। তিনি এ ঘটনায় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানের ভূমিকার সমালোচনা করেন। ফখরুল বলেন, দেশের মানুষ যখন জিহাদকে জীবন্ত উদ্ধারে আল্লাহর কাছে দোয়া করছে, তখন গভীর রাতে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বিষয়টিকে গুজব বলে উড়িয়ে দেন। একজন মন্ত্রীর সীমাহীন দায়িত্বহীন বক্তব্য গোটা দেশবাসীকে ক্ষুব্ধ ও হতাশ করেছে।
মির্জা ফখরুল বলেন, ১৪৪ ধারা জারি করে গাজীপুরে জনসভা ‘বানচাল’ ও গতকালের বিক্ষোভ কর্মসূচিতে পুলিশের হয়রানি ও গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে এবং খন্দকার মোশাররফ হোসেন, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, লুৎফুজ্জামান বাবর, আবদুস সালাম পিন্টু ও নাসির উদ্দিন আহাম্মেদ পিন্টুসহ কারাবন্দী ২০-দলের শীর্ষস্থানীয় নেতাদের মুক্তির দাবিতে এ হরতাল দেওয়া হয়েছে।
বিএনপির কেন্দ্রীয় কয়েকজন নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গতকাল গাজীপুরের হরতালের মতো কালকের হরতালও যদি ঢিলেঢালাভাবে হয়, তা মাঠের কর্মীদের জন্য আরও হতাশার কারণ হবে। এর আগে যেকোনো মূল্যে গাজীপুরে জনসভা করার ঘোষণা দিয়েছিলেন বিএনপির চেয়ারপারসনসহ দলের দায়িত্বশীল নেতারা। জনসভাস্থল ও আশপাশের এলাকায় স্থানীয় প্রশাসন ১৪৪ ধারা জারি করার পর শুক্রবার রাতে আগের ঘোষণা থেকে সরে আসে বিএনপি। এ নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে বিএনপি ও জোটের নেতাদের মধ্যে।
নেতাদের একাংশ মনে করছেন, গাজীপুরের জনসভা নিয়ে শুরু থেকে অনমনীয় মনোভাব দেখিয়ে শেষ মুহূর্তে পিছু হটা ঠিক হয়নি। এতে দীর্ঘদিন পর আন্দোলনমুখী হওয়া নেতা-কর্মীরা আবার হোঁচট খেয়েছেন। এরপর বিএনপির ওপর সরকার আরও চেপে বসবে। আরেকাংশ মনে করেন, পুলিশ ও ছাত্রলীগের সমান উগ্রতা না দেখিয়ে হরতাল ও বিক্ষোভের কর্মসূচি দিয়ে বিএনপি ‘অহিংস’ মনোভাব দেখিয়েছে। সরকারকে এ বিষয়ে ভাবতে আরেকবার সুযোগ করে দেওয়া হয়েছে।
এ ছাড়া এ যাত্রায় অহিংস মনোভাব দেখিয়ে ৩ ও ৫ জানুয়ারি ঢাকায় জনসভার অনুমতি পাওয়ার যৌক্তিকতা দেশবাসীর সামনে আরেকটু শক্তভাবে তুলে ধরার কৌশলও ছিল বলে বিএনপির উচ্চপর্যায়ের একটি সূত্র জানায়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য তরিকুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘বিএনপি তো কোনো সন্ত্রাসী দল না যে ছাত্রলীগের লাঠি এবং পিস্তলের মুখে পাল্টা লাঠিসোঁটা, বন্দুক, পিস্তল নিয়ে জনসভা করতে যাবে। আমরা গণতান্ত্রিক দল। সরকার যদি সভা-সমাবেশ করার নাগরিকের গণতান্ত্রিক ও সাংবিধানিক অধিকার না দেয়, তাহলে ইচ্ছা করলে জরুরি অবস্থা দিতে পারে।’ তিনি অভিযোগ করেন, পুলিশ বিএনপির নেতাদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে হামলা করছে, গ্রেপ্তার করছে, যা আগের স্বৈরাচারকেও হার মানিয়েছে।
তবে কেন্দ্রীয় ও গাজীপুর জেলা বিএনপির একাধিক সূত্র জানায়, বস্তুত গাজীপুরে বিএনপির প্রভাবশালী কয়েকজন নেতার মধ্যে অনৈক্য এবং সেখানকার ছাত্রদল, যুবদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের সাংগঠনিক দুর্বলতার কারণে ‘যেকোনো মূল্যে’ জনসভা করার অবস্থান থেকে সরে আসেন বিএনপির শীর্ষ নেতৃত্ব। ২৭ তারিখের জনসভা নিয়ে গত এক সপ্তাহে কয়েক দফায় গাজীপুরের নেতাদের সঙ্গে খালেদা জিয়ার বৈঠকেও এ দুর্বলতা প্রকাশ পায়।
এসব বৈঠকে ছিলেন এমন একজন নেতা জানান, কয়েক দিন আগে এক বৈঠকে গাজীপুর জেলা বিএনপির সভাপতি ফজলুল হক মিলন জনসভার প্রস্তুতিতে পুলিশ হয়রানি এবং ক্ষমতাসীন দলের বাধা ও ভয়ভীতির নানা অনুযোগ করেন খালেদা জিয়ার কাছে। এ সময় গাজীপুরের নেতাদের কাছে কেন্দ্রীয় একজন নেতা জানতে চান, তাঁরা ২৭ ডিসেম্বর জনসভার আয়োজন করতে পারবেন কি না। জবাবে ফজলুল হক বলেন, তাঁরা জনসভার আয়োজন করতে পারবেন। ওই সূত্রটি জানায়, ছাত্রলীগ জনসভা প্রতিহত করে পাল্টা সমাবেশ ডাকার পর বিএনপির চেয়ারপারসন গাজীপুর জেলা বিএনপির সক্ষমতা পর্যবেক্ষণে রাখেন।
স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর সমালোচনা: বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব শাহজাহানপুরে পরিত্যক্ত পানির পাইপে শিশু জিহাদের মর্মান্তিক মৃত্যুতে গভীর শোক ও তার বাবা-মায়ের প্রতি সমবেদনা জানান। তিনি এ ঘটনায় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানের ভূমিকার সমালোচনা করেন। ফখরুল বলেন, দেশের মানুষ যখন জিহাদকে জীবন্ত উদ্ধারে আল্লাহর কাছে দোয়া করছে, তখন গভীর রাতে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বিষয়টিকে গুজব বলে উড়িয়ে দেন। একজন মন্ত্রীর সীমাহীন দায়িত্বহীন বক্তব্য গোটা দেশবাসীকে ক্ষুব্ধ ও হতাশ করেছে।
No comments