অনৈতিক সম্পর্কের কারণেই খুন
অনৈতিক সম্পর্কের কারণেই খুন হয়েছেন সিলেটের মাওলানা আবদুল হামিদ শুকুর ও গাড়িচালক আরশ আলী। সিলেটের আদালতে জবানবন্দিকালে খুনের ঘটনা স্বীকার করে ঘাতক আফিয়া বেগম ও তার ছেলে মারজানুল আলম শিমুল। শুক্রবার রাতে সিলেটের বালাগঞ্জে আদালতে তাদের দুই জনের জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়। আদালতে তারা জানায়, প্রথমে তাবিজ-কবচ দেয়ার কথা বলে আফিয়া বেগমের চিকিৎসা শুরু করেছিলেন দুলাভাই মাওলানা শুকুর। এক পর্যায়ে স্বামীর অবর্তমানে আফিয়া বেগমের সঙ্গে দৈহিক সম্পর্ক গড়ে ওঠে। আর বিষয়টি ধরা পড়ার পর মোবাইল ফোনে ডেকে আনা হয় মাওলানা শুকুরকে। পরিকল্পনা মতো শোয়ার ঘরেই তাকে খুন করা হয়। এর আগে চালক আরশ আলীকে বারবার ফিরে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করেছিল শিমুল। কিন্তু আরশ আলী না যাওয়ায় তাকেও খুন করা হয়। আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়ার পর রাতেই আফিয়া বেগম ও শিমুলকে কারাগারে পাঠিয়ে দেয়া হয়। এর আগে পুলিশের কাছেও একই কথা স্বীকার করে আফিয়া ও শিমুল। তবে, তাদের ভাষ্য থেকে কখনওই টাকার বিষয়টি প্রকাশ হচ্ছে না। তারা অনৈতিক সম্পর্কের বিষয়টিকেই প্রাধান্য দিয়ে খুনের ঘটনার কথা স্বীকার করে। পুলিশ জানিয়েছে, দুই আসামির ভাষ্য থেকে পাওয়া তথ্যের যাচাই-বাছাই করা হবে। ইতিমধ্যে পুলিশের কাছেও খবর এসেছে টাকা-পয়সা লেনদেনের বিষয়টি। এলাকার লোকজন লাশ উদ্ধারের দিন জানিয়েছিলেন, মাওলানা শুকুরের সঙ্গে ঘাতক শিমুলের একাউন্ট ছিল। ওই একাউন্টে মাওলানা শুকুরের ৫০ থেকে ৬০ লাখ টাকা ছিলো। এই টাকার জন্যই খুন করা হতে পারে মাওলানা শুকুরকে। আর ধরা পড়ার পর খুনের ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে অনৈতিক সম্পর্কের বিষয়টি প্রকাশ করা হচ্ছে। বালাগঞ্জ সদরের লোকজন মানবজমিনের কাছে জানিয়েছেন, মাওলানা আব্দুস শুকুর ছিলেন সর্বজনশ্রদ্ধেয় ইমাম। এ কারণে তিনি গুমের পর উপজেলা সদরের সকল পেশার মানুষ তার সন্ধান দাবিতে একাট্টা হয়েছিলেন। যে মাওলানার ত্রুটি কখনও মুসল্লিরা খুঁজে পাননি সেখানে অনৈতিক সম্পর্কের বিষয়টি তারা বিশ্বাস করতে পারছেন না। তবে, পুলিশের সিনিয়র কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, আসামি দুই জনের বক্তব্য সহ ঘটনার সংশ্লিষ্ট সব বিষয় নিয়েই এগোচ্ছে তদন্ত কাজ।
No comments