রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়- বিদ্যাশৃঙ্খলা নিয়ে ভাবুন by সাইফুদ্দীন চৌধুরী
পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে, অবশেষে দেশে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নামে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে। ওই বিশ্ববিদ্যালয়ে কী কী বিদ্যাশৃঙ্খলা বা বিভাগ থাকবে, পত্রিকায় তা-ও ছাপা হয়েছে। এই সংবাদ পড়ে বিস্মিত হয়েছেন রবীন্দ্রগবেষক, রবীন্দ্রভক্ত ও দেশের বিশিষ্টজনেরা। রবীন্দ্রনাথের নামে প্রতিষ্ঠিত হলেও এটি হচ্ছে একেবারেই দেশের আর দশটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো, সাধারণ বিশ্ববিদ্যালয়। প্রস্তাবিত রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের খসড়া অধ্যাদেশ থেকে জানা গেছে, কিছু মানবিক বিভাগ থাকলেও সর্বাধিক গুরুত্ব পাচ্ছে বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, ব্যবসায় প্রশাসন, আইন, জীব এবং সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ। এতে করে আদতে এটি হবে গতানুগতিক ধারারই একটি বিশ্ববিদ্যালয়।
দেশের মানুষের দীর্ঘদিনের দাবি ছিল, রবীন্দ্রনাথের নামে একটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার। যে বিশ্ববিদ্যালয় হবে রবীন্দ্রনাথের সমাজভাবনা ও শিক্ষাভাবনার আলোকে একটি পূর্ণাঙ্গ সাংস্কৃতিক চরিত্রের বিশ্ববিদ্যালয়। রবীন্দ্রানুরাগী ও বিশিষ্টজনেরা মনে করেন, পূর্ববঙ্গে জমিদারি তদারকির উদ্দেশ্যে বসবাসকালে সমাজ ও শিক্ষা বিষয়ে রবীন্দ্রনাথের মধ্যে এক নতুন ধারার চিন্তা-চেতনার জন্ম হয়েছিল। রবীন্দ্রনাথ শিক্ষা নিয়ে গভীরভাবে ভাবনা-চিন্তা করেছেন, বহু লিখেছেন। শুধু তা–ই নয়, তিনি নিজে শিক্ষকতাও করেছেন। রবীন্দ্রনাথের চিন্তায় এসেছিল শিক্ষার মূল লক্ষ্যই হলো—মনুষ্যত্বের পূর্ণ উন্মোচন; ব্যক্তির সঙ্গে সমাজের সংযোগ; ব্যক্তির সঙ্গে প্রকৃতির সংযোগ; শিক্ষিত ও অশিক্ষিতের বৈষম্য তিরোহিতকরণ; জ্ঞানবোধ-কল্পনা ও সৌন্দর্য চেতনার কর্ষণ ও তার বিকাশ সাধন।
তিনি মনে করতেন, কর্মে জ্ঞান প্রয়োগের দ্বারা জীবনে পূর্ণতা আসে, সমৃদ্ধি অর্জিত হয়, সৃজনশীলতার সাহায্যে মনুষ্যত্বের পরিচর্যা বিকাশ এবং ব্যক্তির সব শুভ সম্ভাবনার স্ফুরণ ঘটে। শিক্ষা বিষয়ে রবীন্দ্রনাথের আরও চিন্তা ছিল শিক্ষাকে বিশ্বমুখীন করতে হবে, যাতে করে তার মাধ্যমে দেশে দেশে, সভ্যতায় সভ্যতায় যোগাযোগ স্থাপন এবং জ্ঞানের সঙ্গে সভ্যতার মেলবন্ধন সৃষ্টি করা সম্ভব হয়। তিনি লিখেছেন, পশ্চিমের লোকে যে বিদ্যার জোরে বিশ্বজয় করেছে, সেই বিদ্যাকে গাল পাড়তে থাকলে দুঃখ কমবে না, কেবল অপরাধ বাড়বে। কেননা বিদ্যা যে সত্য।
বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কে তাঁর অভিমত, পশ্চিমা দেশের বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা থেকে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাব্যবস্থায় অনেক ফারাক রয়েছে। পশ্চিমা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে যেখানে চিত্ত মন্থনের যোগ বিচ্ছিন্ন নয়, পক্ষান্তরে আমাদের দেশের ক্ষেত্রে তার উল্টোটা রয়েছে। বলা বাহুল্য, যে রবীন্দ্রনাথ তাঁর শিক্ষা বিষয়ে অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে শিক্ষার যে আদর্শ গড়ে তুলেছিলেন, তা বাস্তবায়নের জন্য প্রতিষ্ঠানও গড়ে তুলেছিলেন। সেই চিন্তার তিনি প্রথম বাস্তবায়ন ঘটান, নিজস্ব জমিদারি পূর্ববঙ্গের কালিগ্রাম পরগনায়, যার সদর ছিল পতিসর। জমিদারি পরিচালনাকালেই শিক্ষার বিষয় নিয়ে ভাবতে ভাবতে তিনি একবার এখানেই ক্ষোভের সঙ্গে লিখেছিলেন, ‘শিক্ষার অভিসেচন ক্রিয়া সমাজের উপরের স্তরকেই দুই-এক ইঞ্চি মাত্র ভিজিয়ে দেবে আর নিচের স্তর পরস্পরায় নীরস কাঠিন্যে মরুময়তা বিরাজ করবে, এ এক “চিত্তঘাতী মূর্খতা” যা মানা যায় না।’
এই উদ্দেশ্য সামনে রেখেই তিনি কালিগ্রামে প্রজাদের কল্যাণার্থে ‘কালিগ্রাম হিতৈষী সভা’ গঠন করে রাস্তাঘাট সংস্কার, জলকষ্ট নিবারণের জন্য মজাপুকুর, কূপ খনন, দাতব্য চিকিৎসালয় প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি প্রজাদের সন্তানদের শিক্ষিত করে তোলার উদ্যোগ গ্রহণ করেন। পরগনায় তিনটি মধ্য ইংরেজি স্কুলসহ ২০০টি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন বলে একজন খ্যাতিমান রবীন্দ্রগবেষক তাঁর বইয়ে উল্লেখ করেছেন। উল্লেখ্য, এর একটি মধ্য ইংরেজি স্কুলকে রবীন্দ্রনাথ ১৯৩৭ সালে শেষ যাত্রায় পূর্ববঙ্গে এসে ছেলের নামে ‘রথীন্দ্রনাথ ইনস্টিটিউশন’ রূপে হাইস্কুলে উন্নীত করেন।
রবীন্দ্রনাথ প্রতিষ্ঠিত দিবা-নৈশ উভয় বিদ্যালয়ে শিশু ও বয়োবৃদ্ধদের পড়ালেখার ব্যবস্থা ছিল। রবীন্দ্রনাথ তাঁর প্রজাদের কল্যাণের কথা চিন্তা করেই ছেলে রথীন্দ্রনাথকে আমেরিকার ইলিনয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কৃষিতে স্নাতক করে নিয়ে এসেছিলেন। কালিগ্রামে ফিরে এসে রথীন্দ্রনাথ নিজে ট্রাক্টর চালিয়ে জমি চাষ করে সহায়তা করেছেন প্রজা-চাষিদের। এই প্রজাদের কথা ভেবেই নোবেল পুরস্কার হিসেবে পাওয়া অর্থের একটি বড় অংশ দিয়ে রবীন্দ্রনাথ জমিদারিতে ‘পতিসর গ্রামীণ ব্যাংক’ পর্যন্ত প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।
যে কারণেই হোক, পূর্ববঙ্গের কালিগ্রামের সব প্রকল্প স্থানান্তরিত হয় ১৯২৯ সালে বোলপুরের শান্তিনিকেতনে। এই শান্তিনিকেতনে পরিপূরক হিসেবে যে শ্রীনিকেতন গড়ে তোলা হয়, তাঁর সব প্রকল্পই ছিল কালিগ্রাম পরগনার। রবীন্দ্রনাথ তাঁর অকৃপণ অবদান দিয়ে বাংলা সাহিত্যের প্রতিটি শাখাকে সমৃদ্ধ করেছেন। বলা হয়, তিনি বাংলা সাহিত্যকে এক শতাব্দী বা তারও বেশি এগিয়ে দিয়ে গেছেন। রবীন্দ্রসাহিত্যের এই অগ্রযাত্রায় সবচেয়ে বড় ভূমিকা যে পূর্ববঙ্গের, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।
এসব বিষয় বিবেচনা করেই দাবি উঠেছে, প্রস্তাবিত রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ্যক্রমে পূর্ববঙ্গে কবির গৃহীত বিভিন্ন উদ্যোগের অনুষঙ্গ অর্থাৎ সমাজ-শিক্ষা প্রভৃতি দর্শনের প্রসঙ্গ যেন অঙ্গীভূত করা হয়। মানববিদ্যার অন্য বিষয়গুলোও যেন বিদ্যাশৃঙ্খলা হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। বিশিষ্টজনদের অভিমত হলো, রবীন্দ্র অধ্যয়ন, তুলনামূলক ধর্ম, দর্শন, সাহিত্য, ফোকলোর, ইতিহাস, পুরাতত্ত্ব, নৃতত্ত্ব, জাতিতত্ত্ব, ভাষাতত্ত্ব, নন্দনতত্ত্ব, সংগীত, নাটক, চারুকলা, ভূগোল ও পরিবেশ, পল্লি উন্নয়ন প্রভৃতি বিভাগের সংযোজন করে এটিকে পূর্ণাঙ্গ একটি সাংস্কৃতিক বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে গড়ে তুলতে হবে।
রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের খসড়া আইন চূড়ান্ত হওয়ার আগে এসব বিষয় কর্তৃপক্ষ অবশ্যই বিবেচনায় আনবেন, সেটাই আমাদের প্রত্যাশা।
ড. সাইফুদ্দীন চৌধুরী: গবেষক, অধ্যাপক, ফোকলোর বিভাগ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়।
pr_saif@yahoo.com
দেশের মানুষের দীর্ঘদিনের দাবি ছিল, রবীন্দ্রনাথের নামে একটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার। যে বিশ্ববিদ্যালয় হবে রবীন্দ্রনাথের সমাজভাবনা ও শিক্ষাভাবনার আলোকে একটি পূর্ণাঙ্গ সাংস্কৃতিক চরিত্রের বিশ্ববিদ্যালয়। রবীন্দ্রানুরাগী ও বিশিষ্টজনেরা মনে করেন, পূর্ববঙ্গে জমিদারি তদারকির উদ্দেশ্যে বসবাসকালে সমাজ ও শিক্ষা বিষয়ে রবীন্দ্রনাথের মধ্যে এক নতুন ধারার চিন্তা-চেতনার জন্ম হয়েছিল। রবীন্দ্রনাথ শিক্ষা নিয়ে গভীরভাবে ভাবনা-চিন্তা করেছেন, বহু লিখেছেন। শুধু তা–ই নয়, তিনি নিজে শিক্ষকতাও করেছেন। রবীন্দ্রনাথের চিন্তায় এসেছিল শিক্ষার মূল লক্ষ্যই হলো—মনুষ্যত্বের পূর্ণ উন্মোচন; ব্যক্তির সঙ্গে সমাজের সংযোগ; ব্যক্তির সঙ্গে প্রকৃতির সংযোগ; শিক্ষিত ও অশিক্ষিতের বৈষম্য তিরোহিতকরণ; জ্ঞানবোধ-কল্পনা ও সৌন্দর্য চেতনার কর্ষণ ও তার বিকাশ সাধন।
তিনি মনে করতেন, কর্মে জ্ঞান প্রয়োগের দ্বারা জীবনে পূর্ণতা আসে, সমৃদ্ধি অর্জিত হয়, সৃজনশীলতার সাহায্যে মনুষ্যত্বের পরিচর্যা বিকাশ এবং ব্যক্তির সব শুভ সম্ভাবনার স্ফুরণ ঘটে। শিক্ষা বিষয়ে রবীন্দ্রনাথের আরও চিন্তা ছিল শিক্ষাকে বিশ্বমুখীন করতে হবে, যাতে করে তার মাধ্যমে দেশে দেশে, সভ্যতায় সভ্যতায় যোগাযোগ স্থাপন এবং জ্ঞানের সঙ্গে সভ্যতার মেলবন্ধন সৃষ্টি করা সম্ভব হয়। তিনি লিখেছেন, পশ্চিমের লোকে যে বিদ্যার জোরে বিশ্বজয় করেছে, সেই বিদ্যাকে গাল পাড়তে থাকলে দুঃখ কমবে না, কেবল অপরাধ বাড়বে। কেননা বিদ্যা যে সত্য।
বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কে তাঁর অভিমত, পশ্চিমা দেশের বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা থেকে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাব্যবস্থায় অনেক ফারাক রয়েছে। পশ্চিমা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে যেখানে চিত্ত মন্থনের যোগ বিচ্ছিন্ন নয়, পক্ষান্তরে আমাদের দেশের ক্ষেত্রে তার উল্টোটা রয়েছে। বলা বাহুল্য, যে রবীন্দ্রনাথ তাঁর শিক্ষা বিষয়ে অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে শিক্ষার যে আদর্শ গড়ে তুলেছিলেন, তা বাস্তবায়নের জন্য প্রতিষ্ঠানও গড়ে তুলেছিলেন। সেই চিন্তার তিনি প্রথম বাস্তবায়ন ঘটান, নিজস্ব জমিদারি পূর্ববঙ্গের কালিগ্রাম পরগনায়, যার সদর ছিল পতিসর। জমিদারি পরিচালনাকালেই শিক্ষার বিষয় নিয়ে ভাবতে ভাবতে তিনি একবার এখানেই ক্ষোভের সঙ্গে লিখেছিলেন, ‘শিক্ষার অভিসেচন ক্রিয়া সমাজের উপরের স্তরকেই দুই-এক ইঞ্চি মাত্র ভিজিয়ে দেবে আর নিচের স্তর পরস্পরায় নীরস কাঠিন্যে মরুময়তা বিরাজ করবে, এ এক “চিত্তঘাতী মূর্খতা” যা মানা যায় না।’
এই উদ্দেশ্য সামনে রেখেই তিনি কালিগ্রামে প্রজাদের কল্যাণার্থে ‘কালিগ্রাম হিতৈষী সভা’ গঠন করে রাস্তাঘাট সংস্কার, জলকষ্ট নিবারণের জন্য মজাপুকুর, কূপ খনন, দাতব্য চিকিৎসালয় প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি প্রজাদের সন্তানদের শিক্ষিত করে তোলার উদ্যোগ গ্রহণ করেন। পরগনায় তিনটি মধ্য ইংরেজি স্কুলসহ ২০০টি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন বলে একজন খ্যাতিমান রবীন্দ্রগবেষক তাঁর বইয়ে উল্লেখ করেছেন। উল্লেখ্য, এর একটি মধ্য ইংরেজি স্কুলকে রবীন্দ্রনাথ ১৯৩৭ সালে শেষ যাত্রায় পূর্ববঙ্গে এসে ছেলের নামে ‘রথীন্দ্রনাথ ইনস্টিটিউশন’ রূপে হাইস্কুলে উন্নীত করেন।
রবীন্দ্রনাথ প্রতিষ্ঠিত দিবা-নৈশ উভয় বিদ্যালয়ে শিশু ও বয়োবৃদ্ধদের পড়ালেখার ব্যবস্থা ছিল। রবীন্দ্রনাথ তাঁর প্রজাদের কল্যাণের কথা চিন্তা করেই ছেলে রথীন্দ্রনাথকে আমেরিকার ইলিনয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কৃষিতে স্নাতক করে নিয়ে এসেছিলেন। কালিগ্রামে ফিরে এসে রথীন্দ্রনাথ নিজে ট্রাক্টর চালিয়ে জমি চাষ করে সহায়তা করেছেন প্রজা-চাষিদের। এই প্রজাদের কথা ভেবেই নোবেল পুরস্কার হিসেবে পাওয়া অর্থের একটি বড় অংশ দিয়ে রবীন্দ্রনাথ জমিদারিতে ‘পতিসর গ্রামীণ ব্যাংক’ পর্যন্ত প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।
যে কারণেই হোক, পূর্ববঙ্গের কালিগ্রামের সব প্রকল্প স্থানান্তরিত হয় ১৯২৯ সালে বোলপুরের শান্তিনিকেতনে। এই শান্তিনিকেতনে পরিপূরক হিসেবে যে শ্রীনিকেতন গড়ে তোলা হয়, তাঁর সব প্রকল্পই ছিল কালিগ্রাম পরগনার। রবীন্দ্রনাথ তাঁর অকৃপণ অবদান দিয়ে বাংলা সাহিত্যের প্রতিটি শাখাকে সমৃদ্ধ করেছেন। বলা হয়, তিনি বাংলা সাহিত্যকে এক শতাব্দী বা তারও বেশি এগিয়ে দিয়ে গেছেন। রবীন্দ্রসাহিত্যের এই অগ্রযাত্রায় সবচেয়ে বড় ভূমিকা যে পূর্ববঙ্গের, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।
এসব বিষয় বিবেচনা করেই দাবি উঠেছে, প্রস্তাবিত রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ্যক্রমে পূর্ববঙ্গে কবির গৃহীত বিভিন্ন উদ্যোগের অনুষঙ্গ অর্থাৎ সমাজ-শিক্ষা প্রভৃতি দর্শনের প্রসঙ্গ যেন অঙ্গীভূত করা হয়। মানববিদ্যার অন্য বিষয়গুলোও যেন বিদ্যাশৃঙ্খলা হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। বিশিষ্টজনদের অভিমত হলো, রবীন্দ্র অধ্যয়ন, তুলনামূলক ধর্ম, দর্শন, সাহিত্য, ফোকলোর, ইতিহাস, পুরাতত্ত্ব, নৃতত্ত্ব, জাতিতত্ত্ব, ভাষাতত্ত্ব, নন্দনতত্ত্ব, সংগীত, নাটক, চারুকলা, ভূগোল ও পরিবেশ, পল্লি উন্নয়ন প্রভৃতি বিভাগের সংযোজন করে এটিকে পূর্ণাঙ্গ একটি সাংস্কৃতিক বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে গড়ে তুলতে হবে।
রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের খসড়া আইন চূড়ান্ত হওয়ার আগে এসব বিষয় কর্তৃপক্ষ অবশ্যই বিবেচনায় আনবেন, সেটাই আমাদের প্রত্যাশা।
ড. সাইফুদ্দীন চৌধুরী: গবেষক, অধ্যাপক, ফোকলোর বিভাগ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়।
pr_saif@yahoo.com
No comments