এ কে খন্দকারকে আর মুক্তিযোদ্ধা বলা যাবে না
মুক্তিযুদ্ধের উপ-সর্বাধিনায়ক এ কে খন্দকারকে এখন আর মুক্তিযোদ্ধা বলা যাবে না বলে মন্তব্য করেছেন সেক্টরস কমান্ডারস ফোরামের সভাপতি কে এম সফিউল্লাহ। তিনি বলেছেন, একে খন্দকার ‘১৯৭১: ভেতরে বাইরে’ বই লিখে মুক্তিযুদ্ধকে বিকৃত করেছেন। যিনি মুক্তিযুদ্ধের বিকৃত ইতিহাস রচনা করতে পারেন তিনি আর মুক্তিযোদ্ধা থাকতে পারেন না। গতকাল শনিবার জাতীয় জাদুঘরের সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে সেক্টরস কমান্ডারস ফোরাম ঢাকা বিভাগ আয়োজিত আলোচনা সভায় এ মন্তব্য করেন তিনি। মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতি প্রতিরোধ ও যুদ্ধাপরাধীদের বিচার দ্রুত কার্যকরের দাবিতে ওই আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। এ কে খন্দকারের সমালোচনা করে কে এম সফিউল্লাহ বলেন, এ কে খন্দকার স্বাধীনতাযুদ্ধে যাননি। তিনি বিশেষ উদ্দেশ্য নিয়ে কলকাতায় যান। আমরা যুদ্ধে গেছি মার্চ মাসে। আর উনি গেলেন মে মাসে। গিয়ে সোজা উঠলেন হেডকোয়ার্টারে। বাকি সময় তিনি সেখানেই ছিলেন। তাহলে তিনি কোথায় যুদ্ধ করেছেন? আবার ইতিহাস বিকৃতি করে বইও লিখেছেন। এখন তাকে আর মুক্তিযোদ্ধা বলা যাবে না। এ সময় বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ঘোষণার প্রমাণ হিসেবে বিভিন্ন বই ও দলিলপত্র তুলে ধরে কেএম সফিউল্লাহ বলেন, শেখ মুজিবুর রহমান তার ভাষণে জয় পাকিস্তান বলেছেন- এমন কখনও শুনিনি। আমার জীবদ্দশায় কখনও “জয় পাকিস্তান” শুনিনি। কিন্তু উনি (একে খন্দকার) কিভাবে জানলেন? হয়তো “জয় জিন্দাবাদ”ও বলতে পারতেন। কিন্তু সেটা তো একে খন্দকার সাহেব লেখেননি।’ তিনি বলেন, একে খন্দকার বলেছেন স্বাধীনতা যুদ্ধের নাকি কোন রাজনৈতিক প্রস্তুতি ছিল না। কিন্তু সিদ্দিক সালিক তার “উইটনেস টু সারেন্ডার” গ্রন্থের ৭৫ পৃষ্ঠায় বলেছেন ২৫শে মার্চ রাতে ফার্মগেটে পাকিস্তানি বাহিনী বাধার সম্মুখীন হয়। বিশিষ্ট মুক্তিযোদ্ধা আবুল কালাম আজাদ পাটোয়ারীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় সেক্টরস কমান্ডারস ফোরামের ভাইস চেয়ারম্যান আবু ওসমান চৌধুরী বলেন, যারা ইতিহাস বিকৃতি করেন তাদের প্রতিরোধ করতে তরুণ প্রজন্মকে সঠিক ইতিহাস শেখাতে হবে। সেক্টরস কমান্ডারস ফোরামের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক হারুন হাবীব বলেন, ষড়যন্ত্রকারীরা স্বাধীনতার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে আর আওয়ামী লীগ আত্মতুষ্টিতে ভুগছে। কিন্তু বর্তমান অবস্থায় কারও আত্মতুষ্টিতে ভোগার সুযোগ নেই। আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক, সেক্টর কমান্ডার চিত্তরঞ্জন দত্ত, জিয়াউদ্দিন আহম্মেদ প্রমুখ।
No comments