ইহুদিদের হারানো জীবন নিয়ে জীবন্ত জাদুঘর
ইহুদি সম্প্রদায়ের সহস্রাব্দের স্পন্দন এক নিমিষেই নিভে গিয়েছিল জার্মান নাৎসি বাহিনীর হলোকাস্টে। ইহুদিদের সেই লুপ্ত ইতিহাস ফিরিয়ে আনতে পোলান্ডে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে বিশ্বের সবচেয়ে বড় ও ‘জীবন্ত জাদুঘর’। গণহত্যার দুঃসহ অতীত শুধু নয়, জীবনের স্পন্দন উঠবে এই নতুন জাদুঘরে। এমনটাই বললেন জাদুঘরটির পরিচালক। ১৯৪৩ সালের স্মৃতি ধারণ করে পোলান্ডের তৎকালীন ইহুদিপাড়া ঘেট্টোতে নির্মিত এ জাদুঘরে রয়েছে কালো গ্রানাইট স্তম্ভের ওপর উজ্জ্বল আলোকের প্রতিফলন। কাচ দিয়ে ঘেরা মনোরম দৃশ্যের এই জাদুঘর ইতিমধ্যে আধুনিক স্থাপত্যের আইকন হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে। জাদুঘরের প্রবেশপথ ও লম্বা হলঘর খুলে দেয়ার সময় কেবল কাচের সমুদ্র যেন দু’ভাগ হয়ে যায়।
ফিনিশ স্থাপত্যবিদ রাইনার মহলামায়েকির মতে, কাচ ভাগ হয়ে যাওয়ার প্রতীকী দৃশ্যে বোঝানো হয়েছে কীভাবে লালসাগর পাড়ি দিয়ে ইহুদিরা মিসরে পালানোর চেষ্টা করেছিল। শনিবার এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আগামী মঙ্গলবার জাদুঘরটির প্রধান অংশ প্রদর্শনীর জন্য খুলে দেয়া হবে। পোলিন জাদুঘরের পরিচালক দারিয়ুজ স্টোলা বলেন, ‘আমরা এমন কিছু নির্মাণ করেছি, যা সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস করা হয়েছিল।’ তিনি বলেন, ‘ইহুদি স্মৃতি নিয়ে সব জাদুঘর যেখানে হলোকাস্টকে ফোকাস করে, আমরা সেখানে জীবনের গল্প বলতে চেয়েছি। এই গল্পের শুরু নেই, শেষও নেই। কিন্তু সেই গল্প বলার জন্য আমাদের নৈতিক বাধ্যবাধকতা আছে।’ স্টোলার মতে, পোলান্ডের রাজধানী ওয়ারসায় নির্মিত এই জাদুঘর প্রযুক্তি প্রয়োগের দিক দিয়ে ইউরোপের সেরা প্রতিষ্ঠান। হাজার হাজার বছর ধরে ইহুদিদের শতকরা ৮০ জনের বসবাস ছিল পোলান্ডে। ফ্রান্সের বাইরে পোলান্ড ছিল ইহুদিদের ‘নিরাপদ স্বর্গ’। ১৭৬৫ সালে ৭ লাখ ৫০ হাজার ইহুদির আবাস পোলান্ড ১৯৩৯ সালে ৩৩ লাখ হয়েছিল। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর মাত্র ২-৩ লাখ ইহুদি প্রাণে বেঁচে ছিলেন।
No comments