জয়ললিতার জামিন আবেদন নামঞ্জুর
ভারতের তামিলনাড়ুর সাবেক মুখ্যমন্ত্রী জয়ললিতার জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেছে কর্নাটকের হাইকোর্ট। ফলে তিনি এখন মুক্তি পাচ্ছেন না। আজ আদালত জামিন আবেদন নাকচ করে বলেছেন যে দুর্নীতির ব্যাপারে তাড়াহুড়া না করার ব্যাপারে সুপ্রিম কোর্টের সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা রয়েছে। এর আগে কৌঁসুলির উদ্ধৃতি দিয়ে ভারতের বেশ কয়েকটি সংবাদমাধ্যম জানিয়েছিল যে জয়ললিতার জামিন মঞ্জুর করা হয়েছে।
গত ২৭ সেপ্টেম্বর আয়ের সঙ্গে সঙ্গতিহীন মামলায় অভিযুক্ত হন তামিলনাড়ুর প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী জয়ললিতা। বেঙ্গালুরুর বিশেষ আদালত সে দিন তার চার বছরের কারাদণ্ডের নির্দেশের পাশাপাশি একশো কোটি রুপি জরিমানা করে। আদালতের সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে নিজেকে ‘নির্দোষ’ দাবি করে কর্নাটক হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন তিনি। মঙ্গলবার সেই আবেদনের শুনানিশেষে রায় হয়।
‘আম্মা’র জামিনের আবেদন গ্রাহ্য হবে কি না এ দিন সকাল থেকে সেই জল্পনা উড়ে বেড়াচ্ছিল বেঙ্গালুরু জুড়ে। পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখেই সকাল থেকেই নিñিদ্র নিরাপত্তায় মুড়ে ফেলা হয় বেঙ্গালুরু সেন্ট্রাল জেল। জেলের কাছাকাছি যাতে কোনো রকম উত্তেজনা তৈরি না হয় সেই ব্যবস্থাও করে প্রশাসন। প্রশাসনের আশঙ্কা ছিল, যদি কোনোভাবে জয়ললিতার জামিনের আবেদন খারিজ হয়ে যায়, সে ক্ষেত্রে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে। নিরাপত্তাজনিত কোনো ঝুঁকি নিতে চায়নি তারা। পারপান্না জেল ও কর্নাটক হাইকোর্টের এক কিলোমিটার চৌহদ্দির মধ্যে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়।
এ দিন সকালেই যাতে ‘আম্মা’র মামলাটির শুনানি হয়, সেই বিষয়ে আদালতে আবেদন জানান তার আইনজীবী রাম জেঠমালানি। কিন্তু সেই আবেদন খারিজ হয়ে যায়।
গত মাসে আম্মাকে গ্রেফতারের পর থেকেই তার ঠিকানা হয় বেঙ্গালুরুর পারাপান্না জেল। দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পর জয় দাবি করেছিলেন, তার সঞ্চিত সম্পত্তি বৈধ উপায়েই অর্জন করা। সেখানে লুকোচুরির কোনো প্রশ্ন নেই। এর পর আম্মার জামিন ও শাস্তি রদের জন্য দুটি পিটিশন দাখিল করেন তার আইনজীবীরা। ৩০ সেপ্টেম্বর আদালতের অবসর বেঞ্চে সেই মামলার শুনানি হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু দশেরা উপলক্ষে আদালতে ছুটি থাকার কারণে সেই শুনানির উপর ৬ অক্টোবর পর্যন্ত স্থগিতাদেশ জারি করা হয়। জয়ললিতার কৌঁসুলি জেঠমালানি ফের ১ অক্টোবর জামিনের আবেদন করেন। কিন্তু সে দিন তার বিরোধিতা করেন সরকারের বিশেষ আইনজীবী ভবানী সিংহ।
তাদের প্রিয় ‘আম্মা’ অভিযুক্ত হওয়ার পর থেকেই গোটা তামিলনাড়ুতে বিক্ষোভ-আন্দোলনের ঝড় বয়ে যায়। সোমবার রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে জয়ললিতার সমর্থকরা অনশনে বসেন। কিন্তু এ দিন জামিনের আবেদন মঞ্জুর হয়েছে, এমন গুজব ছড়িয়ে পড়ার পর পাল্টে যায় গোটা পরিস্থিতি। তামিলনাড়ুর চার দিকে উৎসবের মেজাজ দেখা যায়। রাস্তায় নেমে পড়েন অসংখ্য মানুষ। বাজি পুড়িয়ে, দলীয় পতাকা উড়িয়ে, মিষ্টি বিতরণ করে মানুষ তাদের প্রিয় আম্মার আপাত ‘মুক্তি’তে উচ্ছ্বাসে মেতে ওঠেন। কিন্তু তাদের সেই আনন্দ বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি।
No comments