সবই পেলেন এরশাদ-রওশন আমরা কী পেলাম?
জাতীয়
পার্টিতে চলছে আক্ষেপ, ক্ষোভ আর কোন্দল। দলের নির্দেশ মেনে অনেকেই এমপি
হওয়ার নিশ্চিত সুযোগ হাতছাড়া করে ক্ষুব্ধ। তাদের চোখে এখন এরশাদ একজন
'প্রতারক'। কারণ তিনি প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত হলেন; কিন্তু তার নির্দেশে
নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়ে তারা কী পেলেন_ এ আক্ষেপ এখন অনেকের। আবার দলের
নির্দেশ অমান্য করে নির্বাচনে জয়ী হয়ে মন্ত্রিত্ব না পেয়ে কেউ কেউ ক্ষুব্ধ।
তারা ক্ষুব্ধ রওশনের ওপর। রওশন এরশাদ হয়েছেন বিরোধীদলীয় নেতা। বঞ্চিতদের
প্রশ্ন 'এরশাদ-রওশন সবই পেলেন আমরা কী পেলাম?'
সরকার ও বিরোধী দল দুই ভূমিকায় থাকলেও দলটির অভ্যন্তরে সুবিধাপ্রাপ্ত ও সুবিধাবঞ্চিতদের দ্বন্দ্ব চলছে। চলছে পক্ষ বদলের খেলা। এমপি মন্ত্রিত্ব পাওয়ার আশায় যারা এতদিন বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদের সঙ্গে ছিলেন, দুই দিনের ব্যবধানে তারা পক্ষ বদল করে এখন এরশাদশিবিরে ঠাঁই নিয়েছেন। নির্বাচন বর্জনকারীরা ফাঁকা মাঠেও এমপি হতে না পেরে ক্ষুব্ধ। আর এমপিরা মন্ত্রী হতে না পেরে ক্ষুব্ধ। দীর্ঘ এক মাসের 'চিকিৎসা' শেষে এরশাদ ঘরে ফিরলেও রওশনের অনুসারীরা তার সঙ্গে দেখা করতে আসেননি। সোমবার এরশাদের বাসায় ছিলেন বঞ্চিতরা। রওশনের বাসায় ছিলেন সুবিধাপ্রাপ্তরা।
টাঙ্গাইল-৫ আসনে জাতীয় পার্টির মনোনয়ন পেয়েছিলেন মো. আবদুস সালাম চাকলাদার। এ আসনটি জাতীয় পার্টিকে ছাড় দেওয়ায় প্রার্থী দেয়নি আওয়ামী লীগ। এখানে এরশাদের নির্দেশে তিনি প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেন। এমপি হওয়ার নিশ্চিত সুযোগ হাতছাড়া হওয়ায় আক্ষেপ করে আবদুস সালাম সমকালকে বলেন, দলের চেয়ারম্যান এরশাদ স্যার নিজে ফোন করে নির্দেশ দিয়েছিলেন নির্বাচন থেকে দূরে থাকতে। দলের জন্য এমপি হওয়ার ইচ্ছা কোরবানি দিলাম।' নীলফামারী-১ আসনের সদ্য সাবেক এমপি জাফর ইকবাল সিদ্দিকী এরশাদের নির্দেশে নির্বাচন থেকে দূরে থাকলেও ভোটের ৮ দিন আগে রওশনের নির্দেশে মাঠে নামেন। এ নেতা সমকালকে বলেন, 'ওনারা সবই তো পেলেন। আমরা কী পেলাম?'
মন্ত্রিত্ব না পেয়ে দলের মহাসচিব এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার, জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু, তাজুল ইসলাম ও সালমা ইসলাম ক্ষুব্ধ। সরকারের খুব ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত জিয়াউদ্দিন বাবলু মন্ত্রিত্ব না পাওয়ায় হতাশ। মূলত তার চেষ্টাতেই এরশাদ নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দেওয়ার পর রওশনের নেতৃত্বে নির্বাচনে অংশ নিয়েছিল জাতীয় পার্টি। সর্বদলীয় সরকারে তিনি প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা ছিলেন। রুহুল আমীন হাওলাদার মন্ত্রী এবং সালমা ইসলাম প্রতিমন্ত্রী ছিলেন। সালমা ইসলাম গতকাল এরশাদের সঙ্গে দেখা করে জানান, এরশাদ অসুস্থ ছিলেন। এরশাদ গতকাল তার ঘনিষ্ঠদের বলেছেন, আমি সুস্থ থাকার পরও আটকে রাখা হয়। প্রকৃত ঘটনা দেশের মানুষ জানে, বিদেশিরাও জানে। বঞ্চিতরা সোমবার এরশাদের বাসায় দেখা করেন। জানতে চান তাদের কী হবে? বর্জনকারীদের রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে মর্যাদাপূর্ণ পদ দিতে হবে_ এরশাদ শপথ নিতে এ শর্ত দিলেও সরকার তা গ্রহণ করেনি। জাতীয় পার্টির মহাসচিব এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার বলেন, দলীয়ভাবে মূল্যায়ন করার চেষ্টা করা হচ্ছে। যারা ত্যাগ স্বীকার করেছেন তাদের ত্যাগের মূল্য অবশ্যই দেওয়া হবে। গত ২ ডিসেম্বর পর্যন্ত ২৪৮ আসনে জাতীয় পার্টির ২৯১ প্রার্থী মনোনয়নপত্র দাখিল করেন। এরশাদের নির্দেশে ১৫৮ প্রার্থী মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নিয়েছিলেন। ৮৫ জনের নাম প্রার্থিতা বহাল থাকলেও অন্তত ৩১ জন ভোট থেকে দূরে থাকেন। তাদের অনেকেরই জয়ের প্রবল সম্ভাবনা ছিল। এরশাদের নির্দেশে তার ভাই জিএম কাদেরও নির্বাচন থেকে দূরে ছিলেন। লালমনিরহাট-৩ আসনে সদ্য সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী জিএম কাদেরের প্রার্থিতা বহাল থাকলেও দলীয় সিদ্ধান্তে ভোট থেকে দূরে থাকেন। দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্যকারীরা এমপি-মন্ত্রী হয়েছেন। দলের আদেশ মেনে বঞ্চিত হয়েছেন জিএম কাদের। গত ২৩ ডিসেম্বরের পর আর প্রকাশ্যে আসেননি।
দলের নির্দেশে সরে দাঁড়িয়েছিলেন রংপুর-২ আসনের মো. আসাদুজ্জামান চৌধুরী, রংপুর-৫ এসএম ফখরুজ্জামান জাহাঙ্গীর, কুড়িগ্রাম-৪ অধ্যক্ষ মো. ইউনুস, গাইবান্ধা-১ শামীম হায়দার পাটোয়ারী ও গাইবান্ধা-৪ আসনে লুৎফর রহমান চৌধুরী। এ আসনগুলো জাতীয় পার্টির দুর্গ বলে খ্যাত। '৯১ সালের পর থেকেই এ আসনগুলোর বেশিরভাগই জাতীয় পার্টির দখলে।
এসব নেতা ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন। তারা বলেন, এরশাদ তাদের সঙ্গে প্রতারণা করেছেন। এখন তারা মন্ত্রিত্বসহ ক্ষমতার ভাগ পেলেও প্রার্থিতা প্রত্যাহারকারীরা কিছুই পাননি। পঞ্চগড়-১ এবং বগুড়া-৪ আসনে জাসদ প্রার্থীর কাছে পরাজিত হয়েছেন জাতীয় পার্টির প্রার্থীরা। পঞ্চগড়-১ আসনের জাতীয় পার্টির প্রার্থী আবু সালেক বলেন, 'দলের নির্দেশ পাওয়ার পর নির্বাচন থেকে দূরেই ছিলাম। যখন দেখলাম সবাই নির্বাচনে, তখন শেষ কয়েকদিন প্রচার চালিয়েছি।' নয়তো নৌকা-ধানের শীষবিহীন নির্বাচনে জয় নিশ্চিত ছিল বলে মনে করেন তিনি।
এরশাদের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত চারবারের এমপি এবং রংপুর-৪-এর প্রার্থী করিম উদ্দিন ভরসার প্রার্থিতা বহাল থাকলেও নির্বাচনে অংশ নেননি। তিনি সমকালকে বলেন, 'স্যার (এরশাদ) ইলেকশনে যেতে না করছিলেন। আমি সারাজীবন ওনার কথা মান্য করেছি। এবারও করেছিলাম। কী হইল তা তো দেখতেই পাইছেন।'
সরকার ও বিরোধী দল দুই ভূমিকায় থাকলেও দলটির অভ্যন্তরে সুবিধাপ্রাপ্ত ও সুবিধাবঞ্চিতদের দ্বন্দ্ব চলছে। চলছে পক্ষ বদলের খেলা। এমপি মন্ত্রিত্ব পাওয়ার আশায় যারা এতদিন বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদের সঙ্গে ছিলেন, দুই দিনের ব্যবধানে তারা পক্ষ বদল করে এখন এরশাদশিবিরে ঠাঁই নিয়েছেন। নির্বাচন বর্জনকারীরা ফাঁকা মাঠেও এমপি হতে না পেরে ক্ষুব্ধ। আর এমপিরা মন্ত্রী হতে না পেরে ক্ষুব্ধ। দীর্ঘ এক মাসের 'চিকিৎসা' শেষে এরশাদ ঘরে ফিরলেও রওশনের অনুসারীরা তার সঙ্গে দেখা করতে আসেননি। সোমবার এরশাদের বাসায় ছিলেন বঞ্চিতরা। রওশনের বাসায় ছিলেন সুবিধাপ্রাপ্তরা।
টাঙ্গাইল-৫ আসনে জাতীয় পার্টির মনোনয়ন পেয়েছিলেন মো. আবদুস সালাম চাকলাদার। এ আসনটি জাতীয় পার্টিকে ছাড় দেওয়ায় প্রার্থী দেয়নি আওয়ামী লীগ। এখানে এরশাদের নির্দেশে তিনি প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেন। এমপি হওয়ার নিশ্চিত সুযোগ হাতছাড়া হওয়ায় আক্ষেপ করে আবদুস সালাম সমকালকে বলেন, দলের চেয়ারম্যান এরশাদ স্যার নিজে ফোন করে নির্দেশ দিয়েছিলেন নির্বাচন থেকে দূরে থাকতে। দলের জন্য এমপি হওয়ার ইচ্ছা কোরবানি দিলাম।' নীলফামারী-১ আসনের সদ্য সাবেক এমপি জাফর ইকবাল সিদ্দিকী এরশাদের নির্দেশে নির্বাচন থেকে দূরে থাকলেও ভোটের ৮ দিন আগে রওশনের নির্দেশে মাঠে নামেন। এ নেতা সমকালকে বলেন, 'ওনারা সবই তো পেলেন। আমরা কী পেলাম?'
মন্ত্রিত্ব না পেয়ে দলের মহাসচিব এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার, জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু, তাজুল ইসলাম ও সালমা ইসলাম ক্ষুব্ধ। সরকারের খুব ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত জিয়াউদ্দিন বাবলু মন্ত্রিত্ব না পাওয়ায় হতাশ। মূলত তার চেষ্টাতেই এরশাদ নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দেওয়ার পর রওশনের নেতৃত্বে নির্বাচনে অংশ নিয়েছিল জাতীয় পার্টি। সর্বদলীয় সরকারে তিনি প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা ছিলেন। রুহুল আমীন হাওলাদার মন্ত্রী এবং সালমা ইসলাম প্রতিমন্ত্রী ছিলেন। সালমা ইসলাম গতকাল এরশাদের সঙ্গে দেখা করে জানান, এরশাদ অসুস্থ ছিলেন। এরশাদ গতকাল তার ঘনিষ্ঠদের বলেছেন, আমি সুস্থ থাকার পরও আটকে রাখা হয়। প্রকৃত ঘটনা দেশের মানুষ জানে, বিদেশিরাও জানে। বঞ্চিতরা সোমবার এরশাদের বাসায় দেখা করেন। জানতে চান তাদের কী হবে? বর্জনকারীদের রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে মর্যাদাপূর্ণ পদ দিতে হবে_ এরশাদ শপথ নিতে এ শর্ত দিলেও সরকার তা গ্রহণ করেনি। জাতীয় পার্টির মহাসচিব এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার বলেন, দলীয়ভাবে মূল্যায়ন করার চেষ্টা করা হচ্ছে। যারা ত্যাগ স্বীকার করেছেন তাদের ত্যাগের মূল্য অবশ্যই দেওয়া হবে। গত ২ ডিসেম্বর পর্যন্ত ২৪৮ আসনে জাতীয় পার্টির ২৯১ প্রার্থী মনোনয়নপত্র দাখিল করেন। এরশাদের নির্দেশে ১৫৮ প্রার্থী মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নিয়েছিলেন। ৮৫ জনের নাম প্রার্থিতা বহাল থাকলেও অন্তত ৩১ জন ভোট থেকে দূরে থাকেন। তাদের অনেকেরই জয়ের প্রবল সম্ভাবনা ছিল। এরশাদের নির্দেশে তার ভাই জিএম কাদেরও নির্বাচন থেকে দূরে ছিলেন। লালমনিরহাট-৩ আসনে সদ্য সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী জিএম কাদেরের প্রার্থিতা বহাল থাকলেও দলীয় সিদ্ধান্তে ভোট থেকে দূরে থাকেন। দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্যকারীরা এমপি-মন্ত্রী হয়েছেন। দলের আদেশ মেনে বঞ্চিত হয়েছেন জিএম কাদের। গত ২৩ ডিসেম্বরের পর আর প্রকাশ্যে আসেননি।
দলের নির্দেশে সরে দাঁড়িয়েছিলেন রংপুর-২ আসনের মো. আসাদুজ্জামান চৌধুরী, রংপুর-৫ এসএম ফখরুজ্জামান জাহাঙ্গীর, কুড়িগ্রাম-৪ অধ্যক্ষ মো. ইউনুস, গাইবান্ধা-১ শামীম হায়দার পাটোয়ারী ও গাইবান্ধা-৪ আসনে লুৎফর রহমান চৌধুরী। এ আসনগুলো জাতীয় পার্টির দুর্গ বলে খ্যাত। '৯১ সালের পর থেকেই এ আসনগুলোর বেশিরভাগই জাতীয় পার্টির দখলে।
এসব নেতা ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন। তারা বলেন, এরশাদ তাদের সঙ্গে প্রতারণা করেছেন। এখন তারা মন্ত্রিত্বসহ ক্ষমতার ভাগ পেলেও প্রার্থিতা প্রত্যাহারকারীরা কিছুই পাননি। পঞ্চগড়-১ এবং বগুড়া-৪ আসনে জাসদ প্রার্থীর কাছে পরাজিত হয়েছেন জাতীয় পার্টির প্রার্থীরা। পঞ্চগড়-১ আসনের জাতীয় পার্টির প্রার্থী আবু সালেক বলেন, 'দলের নির্দেশ পাওয়ার পর নির্বাচন থেকে দূরেই ছিলাম। যখন দেখলাম সবাই নির্বাচনে, তখন শেষ কয়েকদিন প্রচার চালিয়েছি।' নয়তো নৌকা-ধানের শীষবিহীন নির্বাচনে জয় নিশ্চিত ছিল বলে মনে করেন তিনি।
এরশাদের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত চারবারের এমপি এবং রংপুর-৪-এর প্রার্থী করিম উদ্দিন ভরসার প্রার্থিতা বহাল থাকলেও নির্বাচনে অংশ নেননি। তিনি সমকালকে বলেন, 'স্যার (এরশাদ) ইলেকশনে যেতে না করছিলেন। আমি সারাজীবন ওনার কথা মান্য করেছি। এবারও করেছিলাম। কী হইল তা তো দেখতেই পাইছেন।'
No comments