ডিএফএ যেন ঠুঁটো জগন্নাথ!
জেলা ও বিভাগীয় ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন (ডিএফএ) শুধু নামেই আছে, কাজে নেই!
সব ডিএফএ অবশ্য সারা বছর হাত-পা গুটিয়ে বসে থাকে না। তার পরও মোটের ওপর বিশ্লেষণটা এমনই দাঁড়ায়। ডিএফএর স্থবিরতায় সারা দেশের ফুটবলের চাকাও অচল। ডিএফএ গঠনের আসল উদ্দেশ্যই মাঠে মারা যাচ্ছে।
ডিএফএ গঠন-প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত বাফুফের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমানে সহসভাপতি মনজুর হোসেন খুবই হতাশ, ‘ডিএফএর কার্যক্রম না থাকার জন্য বাফুফে যতটা দায়ী তার চেয়ে অনেক বেশি দায়ী সরকার। কারণ, সরকার মাঠ দিচ্ছে না। এছাড়া বাফুফে থেকে ডিএফএর কার্যক্রম মনিটর করা হয়নি। এ জন্য ফেডারেশনের সিনিয়র সহসভাপতি সালাম মুর্শেদীর নেতৃত্বে একটা কমিটি করা হয়েছিল, কিন্তু সালাম কোনো পদক্ষেপ নেননি। ডিএফএ এখন কোমর ভাঙা একটা প্রতিষ্ঠান।’
ঠাকুরগাঁও ডিএফএর সভাপতি মমিনুল হক তীর্যকভাবে বলেন, ‘ডিএফএ করার সময় বাফুফের প্রতিশ্রুতি ছিল সারা দেশের ফুটবল উজ্জীবিত করা হবে। কিন্তু উল্টো অবনতি হয়েছে। কী বলব, ভাষা নেই। ফেডারেশনের নির্বাচন হয়ে গেছে, ব্যস ওই পর্যন্তই। ফেডারেশন কোনো সহযোগিতা করে না। ডিএফএর বসার একটু জায়গা পর্যন্ত হলো না। জেলা পর্যায়ে ফেডারেশন কিছুই করল না। নির্বাচনের জন্যই এটা করা হয়েছে।’
২০০৮ সালের এপ্রিলে বাফুফের নির্বাচনের আগে ফিফার নির্দেশে গঠিত হয়েছিল ডিএফএ। সারা বিশ্বেই ফুটবলের এমন বিকেন্দ্রীকরণ আছে। বাংলাদেশে ডিএফএ গঠনের পক্ষে-বিপক্ষে মত ছিল। শেষ পর্যন্ত সময়ের চাহিদায় ডিএফএ গঠন করতেই হয়েছে।
সাড়ে তিন বছর বয়সী ডিএফএ নিয়ে এখন হিসাব করার সময়। কেননা, একটা সময় ঢাকার ফুটবল নিয়মিত আয়োজনই ছিল ফুটবল অঙ্গনের সবচেয়ে বড় চাওয়া। এখন ঢাকার ফুটবল মোটামুটি নিয়মিত। মেসিরা খেলে গেছেন কয়েক দিন আগে। বলা হচ্ছে, ঢাকায় আর্জেন্টিনা-নাইজেরিয়া ম্যাচের পর সারা দেশে ফুটবলের প্রতি মানুষের আগ্রহ বাড়বে। এখন ঢাকার বাইরের ফুটবলটা চালু করার ওপরই জোর দিচ্ছেন সবাই। কিন্তু ডিএফএ কতটা প্রস্তুত?
বাফুফের সহসভাপতি বাদল রায় বলছেন, ‘ডিএফএকে আমরা দুর্বল করে ফেলেছি। এটিকে শক্তিশালী করতে হবে। ডিসি-এসপিকে ডিএফএতে সম্পৃক্ত করা দরকার। জেলা পর্যায়ে তাঁদের সহযোগিতা ছাড়া কিছু করা সম্ভব নয়। ডিএফএ একটা নতুন শিশু, এই শিশুর পরিচর্যা হয়নি। তাই এটি বিকলাঙ্গ হয়ে আছে।’
মজার ব্যাপার, বাফুফে জানে না কোন ডিএফএ কী করছে! তারা শুধু জানে, গাজীপুর ও সিলেট বাদে ৬২টি ডিএফএ আছে, ঢাকা ও সিলেট বাদে আছে চারটি বিভাগীয় ডিএফএ।
এটা ঘটনা যে, জেলার ক্রীড়াঙ্গন চালায় স্থানীয় জেলা ক্রীড়া সংস্থা। ডিএফএ হওয়ার আগে জেলা ও বিভাগের ফুটবল চালাত ডিএসএ। পদাধিকার বলে ডিএসএর প্রধান স্থানীয় জেলা প্রশাসক। এখন ডিএসএ থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়ায় নাকি ডিএসএ মাঠ দেয় না ফুটবলকে। আর্থিক সংকট। তাই এটি ঠুঁটো জগন্নাথ!
নতুন ধারণা চালু করতে গেলে কিছু সমস্যা হতেই পারে। কিন্তু সেগুলো সমাধানের উদ্যোগ কই? সালাম মুর্শেদীর উত্তর, ‘আমরা তো ডিএফএর খোঁজখবর নিচ্ছি। হয়তো আগে বেশি পারিনি। তবে এখন প্রতিদিনই কথা হয়। কারও হয়তো মাঠ নেই, কারও টাকার অভাব। এগুলো নিয়ে কী করা যায় দেখছি।’
মাঠপর্যায়ে ছবিটা অবশ্য ভিন্ন। হবিগঞ্জ ডিএসএর সভাপতি শফিকুল বারী কাল ফোনে বলছিলেন, ‘তিন বছর ধরে ডিএফএ চালাচ্ছি। মোটামুটি চালিয়ে নিচ্ছি। তবে এর দিকে কারও নজর নেই। হাজারো সমস্যা। মাঠ পেলে টাকা নেই, টাকা পেলে মাঠ নেই।’
বরিশাল ডিএসএর সভাপতি আলমগীর খানের কথা, ‘কী আর বলব, ডিএফএর খোঁজ কেউ রাখে না। নিজেরা যা পারছি করছি, কিন্তু এভাবে চলে না।’
বাগেরহাট ডিএফএর সভাপতি হাবিবুর রহমান বলছেন, ‘ঢাকায় কোটি টাকার টুর্নামেন্ট না করে ফেডারেশনের উচিত প্রতিটি ডিএফএকে টাকা দেওয়া। ফুটবলার তুলে আনতে জেলা লিগ দরকার। লিগের জন্য স্পনসর লাগে। স্পনসর পাই না।’
বাফুফের আগামী এপ্রিলের নির্বাচনে ডিএফএ ইস্যু বড় হয়ে উঠতে পারে। কারণ, ওটা বড় ভোট ব্যাংক। এই ভোট ব্যাংক কাছে টানার নানা তৎপরতা শুরু হয়েছে। মেসিদের ম্যাচের দুটি করে টিকিট দেওয়া হয়েছে প্রতিটি ডিএফএকে। এতে তারা খুশি নয়। তারা চায় ডিএফএকে সক্রিয় করার উদ্যোগ, সঙ্গে কাউন্সিল।
কী ভাবছেন সালাউদ্দিন? কাল বললেন, ‘১৫-২০ দিনের মধ্যে ডিএফএগুলোকে ডাকব, তাদের কথা শুনব। ঢাকার ফুটবল নিয়মিত মাঠে রাখা নিশ্চিত করেছি। এখন জেলার দিকে আরও বেশি নজর দেব।’
তবে ‘নজর’টা অতি শিগগির না দিলে দেশের ফুটবলের সামগ্রিক উন্নয়ন হবে না।
সব ডিএফএ অবশ্য সারা বছর হাত-পা গুটিয়ে বসে থাকে না। তার পরও মোটের ওপর বিশ্লেষণটা এমনই দাঁড়ায়। ডিএফএর স্থবিরতায় সারা দেশের ফুটবলের চাকাও অচল। ডিএফএ গঠনের আসল উদ্দেশ্যই মাঠে মারা যাচ্ছে।
ডিএফএ গঠন-প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত বাফুফের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমানে সহসভাপতি মনজুর হোসেন খুবই হতাশ, ‘ডিএফএর কার্যক্রম না থাকার জন্য বাফুফে যতটা দায়ী তার চেয়ে অনেক বেশি দায়ী সরকার। কারণ, সরকার মাঠ দিচ্ছে না। এছাড়া বাফুফে থেকে ডিএফএর কার্যক্রম মনিটর করা হয়নি। এ জন্য ফেডারেশনের সিনিয়র সহসভাপতি সালাম মুর্শেদীর নেতৃত্বে একটা কমিটি করা হয়েছিল, কিন্তু সালাম কোনো পদক্ষেপ নেননি। ডিএফএ এখন কোমর ভাঙা একটা প্রতিষ্ঠান।’
ঠাকুরগাঁও ডিএফএর সভাপতি মমিনুল হক তীর্যকভাবে বলেন, ‘ডিএফএ করার সময় বাফুফের প্রতিশ্রুতি ছিল সারা দেশের ফুটবল উজ্জীবিত করা হবে। কিন্তু উল্টো অবনতি হয়েছে। কী বলব, ভাষা নেই। ফেডারেশনের নির্বাচন হয়ে গেছে, ব্যস ওই পর্যন্তই। ফেডারেশন কোনো সহযোগিতা করে না। ডিএফএর বসার একটু জায়গা পর্যন্ত হলো না। জেলা পর্যায়ে ফেডারেশন কিছুই করল না। নির্বাচনের জন্যই এটা করা হয়েছে।’
২০০৮ সালের এপ্রিলে বাফুফের নির্বাচনের আগে ফিফার নির্দেশে গঠিত হয়েছিল ডিএফএ। সারা বিশ্বেই ফুটবলের এমন বিকেন্দ্রীকরণ আছে। বাংলাদেশে ডিএফএ গঠনের পক্ষে-বিপক্ষে মত ছিল। শেষ পর্যন্ত সময়ের চাহিদায় ডিএফএ গঠন করতেই হয়েছে।
সাড়ে তিন বছর বয়সী ডিএফএ নিয়ে এখন হিসাব করার সময়। কেননা, একটা সময় ঢাকার ফুটবল নিয়মিত আয়োজনই ছিল ফুটবল অঙ্গনের সবচেয়ে বড় চাওয়া। এখন ঢাকার ফুটবল মোটামুটি নিয়মিত। মেসিরা খেলে গেছেন কয়েক দিন আগে। বলা হচ্ছে, ঢাকায় আর্জেন্টিনা-নাইজেরিয়া ম্যাচের পর সারা দেশে ফুটবলের প্রতি মানুষের আগ্রহ বাড়বে। এখন ঢাকার বাইরের ফুটবলটা চালু করার ওপরই জোর দিচ্ছেন সবাই। কিন্তু ডিএফএ কতটা প্রস্তুত?
বাফুফের সহসভাপতি বাদল রায় বলছেন, ‘ডিএফএকে আমরা দুর্বল করে ফেলেছি। এটিকে শক্তিশালী করতে হবে। ডিসি-এসপিকে ডিএফএতে সম্পৃক্ত করা দরকার। জেলা পর্যায়ে তাঁদের সহযোগিতা ছাড়া কিছু করা সম্ভব নয়। ডিএফএ একটা নতুন শিশু, এই শিশুর পরিচর্যা হয়নি। তাই এটি বিকলাঙ্গ হয়ে আছে।’
মজার ব্যাপার, বাফুফে জানে না কোন ডিএফএ কী করছে! তারা শুধু জানে, গাজীপুর ও সিলেট বাদে ৬২টি ডিএফএ আছে, ঢাকা ও সিলেট বাদে আছে চারটি বিভাগীয় ডিএফএ।
এটা ঘটনা যে, জেলার ক্রীড়াঙ্গন চালায় স্থানীয় জেলা ক্রীড়া সংস্থা। ডিএফএ হওয়ার আগে জেলা ও বিভাগের ফুটবল চালাত ডিএসএ। পদাধিকার বলে ডিএসএর প্রধান স্থানীয় জেলা প্রশাসক। এখন ডিএসএ থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়ায় নাকি ডিএসএ মাঠ দেয় না ফুটবলকে। আর্থিক সংকট। তাই এটি ঠুঁটো জগন্নাথ!
নতুন ধারণা চালু করতে গেলে কিছু সমস্যা হতেই পারে। কিন্তু সেগুলো সমাধানের উদ্যোগ কই? সালাম মুর্শেদীর উত্তর, ‘আমরা তো ডিএফএর খোঁজখবর নিচ্ছি। হয়তো আগে বেশি পারিনি। তবে এখন প্রতিদিনই কথা হয়। কারও হয়তো মাঠ নেই, কারও টাকার অভাব। এগুলো নিয়ে কী করা যায় দেখছি।’
মাঠপর্যায়ে ছবিটা অবশ্য ভিন্ন। হবিগঞ্জ ডিএসএর সভাপতি শফিকুল বারী কাল ফোনে বলছিলেন, ‘তিন বছর ধরে ডিএফএ চালাচ্ছি। মোটামুটি চালিয়ে নিচ্ছি। তবে এর দিকে কারও নজর নেই। হাজারো সমস্যা। মাঠ পেলে টাকা নেই, টাকা পেলে মাঠ নেই।’
বরিশাল ডিএসএর সভাপতি আলমগীর খানের কথা, ‘কী আর বলব, ডিএফএর খোঁজ কেউ রাখে না। নিজেরা যা পারছি করছি, কিন্তু এভাবে চলে না।’
বাগেরহাট ডিএফএর সভাপতি হাবিবুর রহমান বলছেন, ‘ঢাকায় কোটি টাকার টুর্নামেন্ট না করে ফেডারেশনের উচিত প্রতিটি ডিএফএকে টাকা দেওয়া। ফুটবলার তুলে আনতে জেলা লিগ দরকার। লিগের জন্য স্পনসর লাগে। স্পনসর পাই না।’
বাফুফের আগামী এপ্রিলের নির্বাচনে ডিএফএ ইস্যু বড় হয়ে উঠতে পারে। কারণ, ওটা বড় ভোট ব্যাংক। এই ভোট ব্যাংক কাছে টানার নানা তৎপরতা শুরু হয়েছে। মেসিদের ম্যাচের দুটি করে টিকিট দেওয়া হয়েছে প্রতিটি ডিএফএকে। এতে তারা খুশি নয়। তারা চায় ডিএফএকে সক্রিয় করার উদ্যোগ, সঙ্গে কাউন্সিল।
কী ভাবছেন সালাউদ্দিন? কাল বললেন, ‘১৫-২০ দিনের মধ্যে ডিএফএগুলোকে ডাকব, তাদের কথা শুনব। ঢাকার ফুটবল নিয়মিত মাঠে রাখা নিশ্চিত করেছি। এখন জেলার দিকে আরও বেশি নজর দেব।’
তবে ‘নজর’টা অতি শিগগির না দিলে দেশের ফুটবলের সামগ্রিক উন্নয়ন হবে না।
No comments