অসমাপ্ত স্বাধীনতাস্তম্ভ
পাকিস্তানের ভাগ্য নির্ধারিত হয়ে গিয়েছিল আসলে ঐতিহাসিক সাতই মার্চের জনসভায়। সোহরাওয়ার্দী উদ্যান থেকে সংকল্পবদ্ধ জনস্রোতই সারা বাংলায় স্বাধীনতার বাণী ছড়িয়ে দিয়েছিল। একাত্তরের ১৬ ডিসেম্বর এই সোহরাওয়ার্দী উদ্যানেই দখলদার পাকিস্তানি বাহিনী আত্মসমর্পণ করে। এখান থেকে স্বাধীনতার শুরু এবং এখানেই ঔপনিবেশিক পাকিস্তানের সমাপ্তি। এই বিরাট কীর্তি অমর করে রাখা গত ৪০ বছরে সম্ভব হয়নি। স্বাধীনতাস্তম্ভ নির্মাণও গত ১৩ বছরে সম্পূর্ণ না হওয়া দুর্ভাগ্যজনক। অসমাপ্ত অবস্থাতেই আজ স্বাধীনতাস্তম্ভ উদ্বোধন করা হচ্ছে। একে অভিনন্দন। কিন্তু কেন এই গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পটি এত দিন ধরে ঝুলে আছে, সেই প্রশ্নের উত্তরও পাওয়া প্রয়োজন।
১৯৯৮ সালে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে স্বাধীনতাস্তম্ভের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়। আগের বছরই এর পাশে শিখা অনির্বাণের উদ্বোধন হয়। শিখা অনির্বাণের শিখা এখনো অনির্বাণ আছে, কিন্তু স্বাধীনতাস্তম্ভ পুরোপুরি মাথা তোলেনি। প্রকল্পের বাস্তবায়নকারী মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় ও গণপূর্ত অধিদপ্তর বলছে, ৬০ শতাংশ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। খাতা-কলমে যা শেষ, বাস্তবে তা অনেকটাই অসম্পূর্ণ। স্বাধীনতাস্তম্ভের কাচের স্তম্ভটি নির্মিতই হয়নি। এ অবস্থায় সরকার আজ এটি সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করে দিচ্ছে। মাত্র এক সপ্তাহ আগেও স্থানটি অগোছালো, অরক্ষিত ও আবর্জনাপূর্ণ ছিল। বোঝা যায়, স্বাধীনতা দিবসের প্রাক্কালে শেষমুহূর্তে ব্যর্থতা ঢাকতেই এই উদ্বোধনের আয়োজন।
প্রকল্পটি বারবার বাধার মুখে পড়েছে। ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপিত হয় গত আওয়ামী লীগ সরকারের সময়, ১৯৯৮ সালে। ২০০১ সালে বিএনপি ক্ষমতাসীন হয়ে প্রকল্পটি বাস্তবায়নে বাধা সৃষ্টি করে। দুর্নীতির অভিযোগ তোলা হয়, বরাদ্দ কমানো হয়; মূল নকশাতেও পরিবর্তন আসে। এর পরে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দুই বছর পেরিয়ে এখন নির্বাচিত মহাজোট সরকারেরও দুই বছর পার হয়েছে। কিন্তু তারাও প্রকল্পটির কাজ শেষ করতে পারেনি। এরই মধ্যে মন্ত্রীর একটি মন্তব্যের জের ধরে অধ্যাপক জামিলুর রেজা চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন বিশেষজ্ঞ কমিটি পদত্যাগ করে। গত রোববারের প্রথম আলোর সংবাদ অনুসারে, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী এই কমিটিকে নতুন করে সক্রিয় করতে ইচ্ছুক নন। অন্যদিকে, দীর্ঘসূত্রতায় প্রকল্পের ব্যয় বেড়েছে ১৬৫ কোটি টাকা। এসবের ব্যাখ্যা তো মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়, তথা সরকারকেই দিতে হবে।
মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতাসংগ্রাম, একাত্তরের আত্মদান—সবই যেন আবেগ আর উদ্যাপনের আনুষ্ঠানিকতায় বন্দী। তা না হলে বঙ্গবন্ু্লর যুগান্তকারী সাতই মার্চের ভাষণ, ১৬ ডিসেম্বরে পাকিস্তানের ইতিহাস সৃষ্টিকারী আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠানের পীঠস্থানকে স্মরণীয় করে রাখতে এত বিলম্ব হতো না। সরকার বলছে, ২০১২ সালের জুলাই মাসে প্রকল্পটি সম্পূর্ণ হবে। আশা করি, এ কথা রক্ষিত হবে। একই সঙ্গে প্রকল্পের সঙ্গে জড়িত বিশেষজ্ঞ ও বুদ্ধিজীবীদেরও তাঁদের ভূমিকা পালন করতে দিতে হবে। স্বাধীনতাস্তম্ভ কেবল ভবন বা কাঠামো নয়, তা ফুটিয়ে তুলবে স্বাধীনতার আবহ। সেই আবহ জীবন্ত করে তোলা কারিগরি কাজ নয়, আন্তরিক সৃজনশীলতার বিষয়। বিশেষজ্ঞদের প্রয়োজন তাই ফুরায়নি।
১৯৯৮ সালে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে স্বাধীনতাস্তম্ভের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়। আগের বছরই এর পাশে শিখা অনির্বাণের উদ্বোধন হয়। শিখা অনির্বাণের শিখা এখনো অনির্বাণ আছে, কিন্তু স্বাধীনতাস্তম্ভ পুরোপুরি মাথা তোলেনি। প্রকল্পের বাস্তবায়নকারী মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় ও গণপূর্ত অধিদপ্তর বলছে, ৬০ শতাংশ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। খাতা-কলমে যা শেষ, বাস্তবে তা অনেকটাই অসম্পূর্ণ। স্বাধীনতাস্তম্ভের কাচের স্তম্ভটি নির্মিতই হয়নি। এ অবস্থায় সরকার আজ এটি সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করে দিচ্ছে। মাত্র এক সপ্তাহ আগেও স্থানটি অগোছালো, অরক্ষিত ও আবর্জনাপূর্ণ ছিল। বোঝা যায়, স্বাধীনতা দিবসের প্রাক্কালে শেষমুহূর্তে ব্যর্থতা ঢাকতেই এই উদ্বোধনের আয়োজন।
প্রকল্পটি বারবার বাধার মুখে পড়েছে। ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপিত হয় গত আওয়ামী লীগ সরকারের সময়, ১৯৯৮ সালে। ২০০১ সালে বিএনপি ক্ষমতাসীন হয়ে প্রকল্পটি বাস্তবায়নে বাধা সৃষ্টি করে। দুর্নীতির অভিযোগ তোলা হয়, বরাদ্দ কমানো হয়; মূল নকশাতেও পরিবর্তন আসে। এর পরে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দুই বছর পেরিয়ে এখন নির্বাচিত মহাজোট সরকারেরও দুই বছর পার হয়েছে। কিন্তু তারাও প্রকল্পটির কাজ শেষ করতে পারেনি। এরই মধ্যে মন্ত্রীর একটি মন্তব্যের জের ধরে অধ্যাপক জামিলুর রেজা চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন বিশেষজ্ঞ কমিটি পদত্যাগ করে। গত রোববারের প্রথম আলোর সংবাদ অনুসারে, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী এই কমিটিকে নতুন করে সক্রিয় করতে ইচ্ছুক নন। অন্যদিকে, দীর্ঘসূত্রতায় প্রকল্পের ব্যয় বেড়েছে ১৬৫ কোটি টাকা। এসবের ব্যাখ্যা তো মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়, তথা সরকারকেই দিতে হবে।
মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতাসংগ্রাম, একাত্তরের আত্মদান—সবই যেন আবেগ আর উদ্যাপনের আনুষ্ঠানিকতায় বন্দী। তা না হলে বঙ্গবন্ু্লর যুগান্তকারী সাতই মার্চের ভাষণ, ১৬ ডিসেম্বরে পাকিস্তানের ইতিহাস সৃষ্টিকারী আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠানের পীঠস্থানকে স্মরণীয় করে রাখতে এত বিলম্ব হতো না। সরকার বলছে, ২০১২ সালের জুলাই মাসে প্রকল্পটি সম্পূর্ণ হবে। আশা করি, এ কথা রক্ষিত হবে। একই সঙ্গে প্রকল্পের সঙ্গে জড়িত বিশেষজ্ঞ ও বুদ্ধিজীবীদেরও তাঁদের ভূমিকা পালন করতে দিতে হবে। স্বাধীনতাস্তম্ভ কেবল ভবন বা কাঠামো নয়, তা ফুটিয়ে তুলবে স্বাধীনতার আবহ। সেই আবহ জীবন্ত করে তোলা কারিগরি কাজ নয়, আন্তরিক সৃজনশীলতার বিষয়। বিশেষজ্ঞদের প্রয়োজন তাই ফুরায়নি।
No comments