অস্ট্রেলিয়ার জয়রথ থামাল বৃষ্টি
বিশ্বকাপে দুটি দল সর্বশেষ খেলেছে প্রায় অন্ধকারে। ২০০৭ বিশ্বকাপ ফাইনালের শেষ কটি ওভার আলো-আঁধারির মাঝে তবু স্পিন বোলিং দিয়ে চালিয়ে নেওয়া গেছে। কিন্তু বৃষ্টিতে তো সেটাও সম্ভব নয়। ২০০৩ বিশ্বকাপের দুই দলের সেমিফাইনাল পুরো হতে পারেনি বৃষ্টিতে। কাল হলো মাত্র ৩২.৫ ওভার। সম্ভাব্য উত্তেজনাময় আর রোমাঞ্চকর ম্যাচটার হলো অপমৃত্যু! ভাগাভাগি হলো পয়েন্ট।
কলম্বোর বৃষ্টির সঙ্গে ক্রিকেট-বিশ্বের পরিচয় ভালো রকমই আছে। হুটহাট নেমে পড়বে, একবার নামলে যাওয়ার নামগন্ধ নেই। শ্রীলঙ্কায় বিশ্বকাপের ম্যাচগুলোর ভবিষ্যৎ নিয়ে তাই শঙ্কা ছিলই। আগের ৫ ম্যাচে সেই শঙ্কা সত্যি হয়নি। কাল স্থানীয় সময় বিকেল পাঁচটা পাঁচে হঠাৎই দেখা মিলল সেই অনাহূত অতিথির। আধা ঘণ্টা হলো মুষলধারে, এরপর টিপটিপ, কিন্তু টানা। আর থামলই না। হয়তো বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়ার জয়রথ থামাতে প্রয়োজন ছিল এটাই। ১৯৯৯ বিশ্বকাপের সেই বিখ্যাত ‘টাই’ সেমিফাইনালের পর এই প্রথম বিশ্বকাপের ম্যাচে জয় ছাড়া অন্য কিছু পেল অস্ট্রেলিয়া। মাঝখানের ২৫ ম্যাচে টানা জয়! জয়যাত্রায় ছেদ পড়লেও অপরাজেয় যাত্রা কিন্তু ঠিকই অব্যাহত থাকল। ১৯৯৯ বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্বে পাকিস্তানের কাছে ১০ রানে হারার পর এই নিয়ে টানা অপরাজিত টানা ৩২ ম্যাচ!
প্রেমাদাসায় কালই প্রথম সত্যিকার অর্থে দেখা গেল উৎসবের আবহ। গ্যালারিভর্তি দর্শক, নাচ-গান, ব্যান্ড-ড্রাম, উল্লাস আর প্রাণ—সবই ছিল। কিন্তু হাজার তিরিশেক দর্শক বাড়ি ফিরল হতাশা নিয়ে। এর আগে অবশ্য ঝিমিয়ে পড়া আবহে প্রাণ আনার চেষ্টা করেছিলেন কয়েকজন দুঃসাহসী দর্শক। রেলিং টপকে মাঠের ভেতরে ঢুকে ব্যাট-বলের কৃত্রিম লড়াই দেখালেন কয়েকজন, কয়েকজন মেতে উঠলেন পিচ কাভারে স্লাইডিং খেলা, দু-একজন দেখালেন নাচের প্রতিভা। মাঠের মাঝখানে মাইকেল জ্যাকসনের ‘মুনওয়াক’ দেখিয়ে গ্যালারি মাতালেন একজন। কিন্তু বেরসিক নিরাপত্তাকর্মীদের বাধায় এই বিনোদনও পণ্ড।
দুপুরে মাঠের লড়াই শুরু হয়েছিল প্রত্যাশিত আগুন ছড়িয়েই। ম্যাচের দ্বিতীয় ওভারেই শন টেইটের একটি গোলা তিলকরত্নে দিলশানের ব্যাটের কানা ছুঁয়ে স্লিপের পাশ দিয়ে চার। ফাস্ট বোলারের মেজাজ বিগড়ে দেওয়ার জন্য যথেষ্ট। দিলশানের নাকের ডগায় গিয়ে ‘শুভেচ্ছা বিনিময়’ করে এলেন টেইট। নিজের দেশের মাটি, পাল্টা শাসাতে সময় নেননি দিলশান। পরের বলে ডেলিভারির একেবারে শেষ মুহূর্তে সরে দাঁঁড়ালেন দিলশান, সাইট স্ক্রিনের পেছনে কোনো একটা সমস্যা দেখালেন। যদিও আসল উদ্দেশ্য যে টেইটকে পাল্টা জবাব দেওয়া, এটা বুঝতে কারও সমস্যা হওয়ার কথা নয়।
ছোট্ট কিন্তু দারুণ উপভোগ্য দ্বৈরথটি জিতলেন টেইটই। ব্যক্তিগত জয়ের দিকেই বেশি মনোযোগ ছিল বলেই কি না, ক্ষণিকের জন্য আসল জায়গাটায় মনোযোগ হারিয়ে ফেললেন দিলশান। হয়তো ভেবেছিলেন, খেপে গিয়ে বাউন্সার ছুড়বেন টেইট, অন্তত ফুটওয়ার্ক বলছিল এটাই। অফ স্টাম্পের বাইরের বলে জায়গায় দাঁড়িয়ে ব্যাট চালিয়ে স্লিপে ক্যাচ।
এরপর শ্রীলঙ্কার উইকেট পড়েছে দুটি। একটিতেও বোলারের নাম স্টিভেন স্মিথ ছিল না, কিন্তু দুটি উইকেটই বলতে হবে তরুণ অলরাউন্ডারের। অফ স্টাম্পের বাইরে ব্রেট লির শর্ট বলটিতে চার লেখাই ছিল, উপুল থারাঙ্গা মেরেছিলেনও গায়ের জোরে। সেই বুলেটকে পয়েন্টে অবিশ্বাস্য ক্ষিপ্রতায় তালুবন্দী করলেন স্মিথ। বিপজ্জনক মনে হতে থাকা মাহেলা জয়াবর্ধনেকে রানআউট করলেন বুলেট গতির এক সরাসরি থ্রোতে। সামারাবীরাকে নিয়ে এরপর ভালোভাবেই এগিয়ে যাচ্ছিলেন সাঙ্গাকারা। জুটিটা ঠিক ডানা মেলতে পারেনি, রান উঠেছে ওভারপ্রতি মাত্র চার করে। কিন্তু ৭১ রানের জুটিটায় শ্রীলঙ্কাকে এনে দিচ্ছিল ২৬০-৭০ রান করার একটা ভিত্তি। আর সেটা হয়ে গেলেই জমে উঠত মালিঙ্গা আর তিন স্পিনারের সঙ্গে অস্ট্রেলীয় ব্যাটসম্যানদের জমজমাট লড়াই। বেরসিক বৃষ্টি কি আর সেই রোমাঞ্চ বোঝে?
কলম্বোর বৃষ্টির সঙ্গে ক্রিকেট-বিশ্বের পরিচয় ভালো রকমই আছে। হুটহাট নেমে পড়বে, একবার নামলে যাওয়ার নামগন্ধ নেই। শ্রীলঙ্কায় বিশ্বকাপের ম্যাচগুলোর ভবিষ্যৎ নিয়ে তাই শঙ্কা ছিলই। আগের ৫ ম্যাচে সেই শঙ্কা সত্যি হয়নি। কাল স্থানীয় সময় বিকেল পাঁচটা পাঁচে হঠাৎই দেখা মিলল সেই অনাহূত অতিথির। আধা ঘণ্টা হলো মুষলধারে, এরপর টিপটিপ, কিন্তু টানা। আর থামলই না। হয়তো বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়ার জয়রথ থামাতে প্রয়োজন ছিল এটাই। ১৯৯৯ বিশ্বকাপের সেই বিখ্যাত ‘টাই’ সেমিফাইনালের পর এই প্রথম বিশ্বকাপের ম্যাচে জয় ছাড়া অন্য কিছু পেল অস্ট্রেলিয়া। মাঝখানের ২৫ ম্যাচে টানা জয়! জয়যাত্রায় ছেদ পড়লেও অপরাজেয় যাত্রা কিন্তু ঠিকই অব্যাহত থাকল। ১৯৯৯ বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্বে পাকিস্তানের কাছে ১০ রানে হারার পর এই নিয়ে টানা অপরাজিত টানা ৩২ ম্যাচ!
প্রেমাদাসায় কালই প্রথম সত্যিকার অর্থে দেখা গেল উৎসবের আবহ। গ্যালারিভর্তি দর্শক, নাচ-গান, ব্যান্ড-ড্রাম, উল্লাস আর প্রাণ—সবই ছিল। কিন্তু হাজার তিরিশেক দর্শক বাড়ি ফিরল হতাশা নিয়ে। এর আগে অবশ্য ঝিমিয়ে পড়া আবহে প্রাণ আনার চেষ্টা করেছিলেন কয়েকজন দুঃসাহসী দর্শক। রেলিং টপকে মাঠের ভেতরে ঢুকে ব্যাট-বলের কৃত্রিম লড়াই দেখালেন কয়েকজন, কয়েকজন মেতে উঠলেন পিচ কাভারে স্লাইডিং খেলা, দু-একজন দেখালেন নাচের প্রতিভা। মাঠের মাঝখানে মাইকেল জ্যাকসনের ‘মুনওয়াক’ দেখিয়ে গ্যালারি মাতালেন একজন। কিন্তু বেরসিক নিরাপত্তাকর্মীদের বাধায় এই বিনোদনও পণ্ড।
দুপুরে মাঠের লড়াই শুরু হয়েছিল প্রত্যাশিত আগুন ছড়িয়েই। ম্যাচের দ্বিতীয় ওভারেই শন টেইটের একটি গোলা তিলকরত্নে দিলশানের ব্যাটের কানা ছুঁয়ে স্লিপের পাশ দিয়ে চার। ফাস্ট বোলারের মেজাজ বিগড়ে দেওয়ার জন্য যথেষ্ট। দিলশানের নাকের ডগায় গিয়ে ‘শুভেচ্ছা বিনিময়’ করে এলেন টেইট। নিজের দেশের মাটি, পাল্টা শাসাতে সময় নেননি দিলশান। পরের বলে ডেলিভারির একেবারে শেষ মুহূর্তে সরে দাঁঁড়ালেন দিলশান, সাইট স্ক্রিনের পেছনে কোনো একটা সমস্যা দেখালেন। যদিও আসল উদ্দেশ্য যে টেইটকে পাল্টা জবাব দেওয়া, এটা বুঝতে কারও সমস্যা হওয়ার কথা নয়।
ছোট্ট কিন্তু দারুণ উপভোগ্য দ্বৈরথটি জিতলেন টেইটই। ব্যক্তিগত জয়ের দিকেই বেশি মনোযোগ ছিল বলেই কি না, ক্ষণিকের জন্য আসল জায়গাটায় মনোযোগ হারিয়ে ফেললেন দিলশান। হয়তো ভেবেছিলেন, খেপে গিয়ে বাউন্সার ছুড়বেন টেইট, অন্তত ফুটওয়ার্ক বলছিল এটাই। অফ স্টাম্পের বাইরের বলে জায়গায় দাঁড়িয়ে ব্যাট চালিয়ে স্লিপে ক্যাচ।
এরপর শ্রীলঙ্কার উইকেট পড়েছে দুটি। একটিতেও বোলারের নাম স্টিভেন স্মিথ ছিল না, কিন্তু দুটি উইকেটই বলতে হবে তরুণ অলরাউন্ডারের। অফ স্টাম্পের বাইরে ব্রেট লির শর্ট বলটিতে চার লেখাই ছিল, উপুল থারাঙ্গা মেরেছিলেনও গায়ের জোরে। সেই বুলেটকে পয়েন্টে অবিশ্বাস্য ক্ষিপ্রতায় তালুবন্দী করলেন স্মিথ। বিপজ্জনক মনে হতে থাকা মাহেলা জয়াবর্ধনেকে রানআউট করলেন বুলেট গতির এক সরাসরি থ্রোতে। সামারাবীরাকে নিয়ে এরপর ভালোভাবেই এগিয়ে যাচ্ছিলেন সাঙ্গাকারা। জুটিটা ঠিক ডানা মেলতে পারেনি, রান উঠেছে ওভারপ্রতি মাত্র চার করে। কিন্তু ৭১ রানের জুটিটায় শ্রীলঙ্কাকে এনে দিচ্ছিল ২৬০-৭০ রান করার একটা ভিত্তি। আর সেটা হয়ে গেলেই জমে উঠত মালিঙ্গা আর তিন স্পিনারের সঙ্গে অস্ট্রেলীয় ব্যাটসম্যানদের জমজমাট লড়াই। বেরসিক বৃষ্টি কি আর সেই রোমাঞ্চ বোঝে?
No comments