সাম্প্রতিক বিতর্ক ও উত্তরণের উপায় by মোহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম
জাতীয় সংসদের কাছে বিচার বিভাগের জবাবদিহি সাম্প্রতিক সময়ের অন্যতম আলোচিত বিষয়। এটি আলোচনায় আসে যখন সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিরা গত ৩ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত সুপ্রিম কোর্টের একটি পূর্ণাঙ্গ সভায় সংসদের কাছে বিচার বিভাগের জবাবদিহি করার বিপক্ষে মত দেন এবং সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে বিচার বিভাগের কোনো কর্মকর্তাকে ডেকে পাঠানোকে বিচার বিভাগের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপের শামিল বলে অভিহিত করেন। এরই ধারাবাহিকতায় প্রধান বিচারপতি গত ১৫ জানুয়ারি বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে অনুষ্ঠিত একটি বই প্রকাশনা অনুষ্ঠানে বলেন, সংসদ, বিচার বিভাগ এবং নির্বাহী বিভাগ—কেউ কারও কাছে জবাবদিহি করবে না; জবাবদিহি থাকবে কেবল জনগণের কাছে। জাতীয় সংসদের কাছে জবাবদিহি না করার বিচার বিভাগের এ অবস্থানের সূত্রপাত হয় মূলত আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়-সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি কর্তৃক সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রারকে (সুপ্রিম কোর্টের প্রতিনিধি হিসেবে) ডেকে পাঠানোকে কেন্দ্র করে।
জবাবদিহি ছাড়া ক্ষমতার প্রয়োগ যেকোনো প্রতিষ্ঠানকে স্বেচ্ছাচারী করে তুলতে পারে। তাই বিচার বিভাগও জবাবদিহির ঊর্ধ্বে থাকতে পারে না। এখন দেখা দরকার, এই জবাবদিহি নিশ্চিতকরণে সংসদ সাংবিধানিকভাবে আদৌ কোনো ভূমিকা রাখতে পারে কি না। দেশের সর্বোচ্চ আইন সংবিধানের ভাষ্য হচ্ছে, ‘প্রজাতন্ত্রের সকল ক্ষমতার মালিক জনগণ; এবং জনগণের পক্ষে সেই ক্ষমতার প্রয়োগ কেবল এই সংবিধানের অধীন ও কর্তৃত্বে কার্যকর হইবে’ [অনুচ্ছেদ ৭(১), বাংলাদেশ সংবিধান]। জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে গঠিত হয় জাতীয় সংসদ। সংবিধানের বিধানাবলি সাপেক্ষে প্রজাতন্ত্রের আইন প্রণয়নের ক্ষমতা এই সংসদের ওপর ন্যস্ত করা হয়েছে এবং এ ক্ষমতা প্রয়োগের ক্ষেত্রে সংসদ ও সাংসদদেরকে যেকোনো কোর্টের দায়মুক্তি দেওয়া হয়েছে [অনুচ্ছেদ ৬৫(১) এবং অনুচ্ছেদ ৭৮(১), বাংলাদেশ সংবিধান]। অন্যদিকে, বিচারকার্য সম্পাদনের ক্ষমতা বিচার বিভাগের ওপর ন্যস্ত করা হয়েছে এবং এ ক্ষমতা প্রয়োগের ক্ষেত্রে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিগণ স্বাধীন থাকবেন [অনুচ্ছেদ ৯৫(৪), বাংলাদেশ সংবিধান]। তাঁরা রাষ্ট্রপতি কর্তৃক নিযুক্ত হবেন এবং নিযুক্ত হবার পর সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের প্রক্রিয়া ব্যতিরেকে কোনো বিচারককে স্বীয় পদ থেকে অপসারণ করা যাবে না। অতএব, বিচারকার্য সম্পাদনের ক্ষেত্রে অথবা বিচারক নিয়োগে বা অপসারণে বিচার বিভাগের ওপর সংসদের আপাত সাংবিধানিক কোনো কর্তত্ব নেই। এমনকি, সংসদীয় কমিটি কর্তৃক অনুসন্ধান ও সাক্ষ্য গ্রহণ কেবল সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য, বিচার বিভাগের ক্ষেত্রে নয়। এ ক্ষেত্রে সংসদ যা করতে পারে তা হলো, সাংবিধানিক ক্ষমতা প্রয়োগ করে বিচার বিভাগের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিতকরণে আইন প্রণয়ন করা। যেমন—সম্প্রতি (২৯ নভেম্বর ২০১০) ভারতের লোকসভায় ‘জুডিশিয়াল স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড অ্যাকাউন্টিবিলিটি বিল, ২০১০’ নামে একটি বিল উত্থাপন করা হয়েছে। বিলে কর্মস্থলে যোগদানের ৩০ দিনের মধ্যে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতিসহ অন্য বিচারপতিদের সম্পত্তি ও দায়দেনা (assets and liabilities) সম্পর্কে ঘোষণা করে তা সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে প্রদর্শনের কথা বলা হয়েছে। সাবেক একজন প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে ‘ন্যাশনাল জুডিশিয়াল ওভারসাইট কমিটি’ (National Judicial Oversight Committee) এবং কমিটির কাজে সহায়তার জন্য যাচাই-বাছাই (scrutiny) কমিটি গঠনের বিধান রাখা হয়েছে। ওভারসাইট কমিটি গুরুতর অসদাচরণে অভিযুক্ত যেকোনো বিচারককে পদ থেকে সরে দাঁড়াতে বলবে। অভিযুক্ত কোনো বিচারক এ নির্দেশনা পালনে ব্যর্থ হলে তাঁকে অপসারণের জন্য সংসদীয় প্রক্রিয়া শুরু করতে কমিটি রাষ্ট্রপতিকে সুপারিশ করবে। বিলে সাধারণ জনগণকেও বিচারকদের অসদাচরণ সম্পর্কে অভিযোগ দায়েরের সুযোগ দেওয়া হয়েছে। এসব বিষয় বিবেচনায় নিয়ে বাংলাদেশের জাতীয় সংসদ বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে এ ধরনের একটি আইন প্রণয়নের উদ্যোগ নিতে পারে।
আদালত অবমাননার বর্তমান আইনটি (The Contempt of Court Act, 1926) অনেকটা নিবর্তনমূলক। এ আইনে আদালতের কার্যক্রম সম্পর্কে মন্তব্য, বিচারকের ব্যক্তিগত আচরণ এবং রায়ের সমালোচনাকে আদালত অবমাননা হিসেবে অভিহিত করা হয়েছে এবং অভিযুক্তকে সর্বোচ্চ ছয় মাসের কারাদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে। এর ফলে আদালত সম্পর্কে এমনকি যুক্তিসংগত সমালোচনা করা থেকে সবাই বিরত থাকে। একুশ শতকের অবাধ তথ্যপ্রবাহের এ যুগে ১৯২৬ সালের আইনের প্রাসঙ্গিকতা কতটুকু রয়েছে, তা পর্যালোচনা করা দরকার। তাই আইজিএস আদালত অবমাননার একটি নতুন আইন প্রণয়নের সুপারিশ করেছে, যেটি মতপ্রকাশের স্বাধীনতা এবং বিচার বিভাগের সুরক্ষার মধ্যে ভারসাম্য রক্ষা করবে। নতুন আইনে আদালত অবমাননার একটি বৃহত্তর সংজ্ঞা থাকবে, যাতে করে গণমাধ্যম আদালতের কার্যক্রম সম্পর্কে বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশন করার সুযোগ পাবে।
বিচারকদের আচরণবিধি যথাযথভাবে অনুসৃত হয় কি না, তা দেখভাল করার জন্য সুপ্রিম কোর্টে একটি সেল হতে পারে। বর্তমান ব্যবস্থায় কোনো বিচারকের দক্ষতা ও আচরণ সম্পর্কে অভিযোগ জানানোর কোনো সুযোগ নেই। এ শূন্যতা পূরণে আইজিএস সুপ্রিম কোর্টে প্রধান বিচারপতির তত্ত্বাবধানে একটি গ্রিভেন্স সেল হতে পারে।
তথ্য অধিকার আইন, ২০০৯ অনুযায়ী সুপ্রিম কোর্ট তথ্য অধিকার আইনের আওতায় পড়ে। সুপ্রিম কোর্টে এ আইনের বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে কোর্টের আদেশ ও রায়সমূহ সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে নিয়মিত প্রকাশ করতে পারে।
অধস্তন আদালতে বিচারকদের কার্যসম্পাদন মূল্যায়নপদ্ধতির আধুনিকায়ন দরকার। কারণ বার্ষিক গোপনীয় প্রতিবেদন বা এসিআরের মাধ্যমে অধস্তন আদালতে বিচারকদের কার্যসম্পাদন মূল্যায়নের যে পদ্ধতি প্রচলিত রয়েছে, তা বিচারকদের মধ্যে জবাবদিহির অনুভূতি জাগিয়ে তুলতে ব্যর্থ হয়েছে। বাংলাদেশে সংবিধান সংশোধনের জন্য গঠিত কমিটি বিচারক নিয়োগের জন্য প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে একটি কমিশন/কলেজিয়ামকে সংবিধানে অন্তর্ভুক্তির প্রস্তাব করতে পারে।
গণতান্ত্রিক সমাজে রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্ব হলো জনগণের সার্বভৌমত্ব। তাই জনগণের প্রয়োজনে আমাদের আইন বিভাগ, নির্বাহী বিভাগ ও বিচার বিভাগ সংবিধানে অর্পিত দায়িত্ব সততা, নিষ্ঠা, দক্ষতা ও জবাবদিহির সঙ্গে পালন করবে। জবাবদিহির সংস্কৃতি গড়ে তোলার জন্য প্রাতিষ্ঠানিক উদ্যোগ নিতে হবে। যেমন—আইন বিভাগ একটি যুগোপযোগী আইন প্রণয়নের মাধ্যমে বিচার বিভাগের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহির প্রক্রিয়াকে সুগম করতে পারে।
মোহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম: গবেষণা সহযোগী/প্রভাষক, ইনস্টিটিউট অব গভর্নেন্স স্টাডিজ (আইজিএস), ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়।
i.sirajul@yahoo.com
জবাবদিহি ছাড়া ক্ষমতার প্রয়োগ যেকোনো প্রতিষ্ঠানকে স্বেচ্ছাচারী করে তুলতে পারে। তাই বিচার বিভাগও জবাবদিহির ঊর্ধ্বে থাকতে পারে না। এখন দেখা দরকার, এই জবাবদিহি নিশ্চিতকরণে সংসদ সাংবিধানিকভাবে আদৌ কোনো ভূমিকা রাখতে পারে কি না। দেশের সর্বোচ্চ আইন সংবিধানের ভাষ্য হচ্ছে, ‘প্রজাতন্ত্রের সকল ক্ষমতার মালিক জনগণ; এবং জনগণের পক্ষে সেই ক্ষমতার প্রয়োগ কেবল এই সংবিধানের অধীন ও কর্তৃত্বে কার্যকর হইবে’ [অনুচ্ছেদ ৭(১), বাংলাদেশ সংবিধান]। জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে গঠিত হয় জাতীয় সংসদ। সংবিধানের বিধানাবলি সাপেক্ষে প্রজাতন্ত্রের আইন প্রণয়নের ক্ষমতা এই সংসদের ওপর ন্যস্ত করা হয়েছে এবং এ ক্ষমতা প্রয়োগের ক্ষেত্রে সংসদ ও সাংসদদেরকে যেকোনো কোর্টের দায়মুক্তি দেওয়া হয়েছে [অনুচ্ছেদ ৬৫(১) এবং অনুচ্ছেদ ৭৮(১), বাংলাদেশ সংবিধান]। অন্যদিকে, বিচারকার্য সম্পাদনের ক্ষমতা বিচার বিভাগের ওপর ন্যস্ত করা হয়েছে এবং এ ক্ষমতা প্রয়োগের ক্ষেত্রে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিগণ স্বাধীন থাকবেন [অনুচ্ছেদ ৯৫(৪), বাংলাদেশ সংবিধান]। তাঁরা রাষ্ট্রপতি কর্তৃক নিযুক্ত হবেন এবং নিযুক্ত হবার পর সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের প্রক্রিয়া ব্যতিরেকে কোনো বিচারককে স্বীয় পদ থেকে অপসারণ করা যাবে না। অতএব, বিচারকার্য সম্পাদনের ক্ষেত্রে অথবা বিচারক নিয়োগে বা অপসারণে বিচার বিভাগের ওপর সংসদের আপাত সাংবিধানিক কোনো কর্তত্ব নেই। এমনকি, সংসদীয় কমিটি কর্তৃক অনুসন্ধান ও সাক্ষ্য গ্রহণ কেবল সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য, বিচার বিভাগের ক্ষেত্রে নয়। এ ক্ষেত্রে সংসদ যা করতে পারে তা হলো, সাংবিধানিক ক্ষমতা প্রয়োগ করে বিচার বিভাগের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিতকরণে আইন প্রণয়ন করা। যেমন—সম্প্রতি (২৯ নভেম্বর ২০১০) ভারতের লোকসভায় ‘জুডিশিয়াল স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড অ্যাকাউন্টিবিলিটি বিল, ২০১০’ নামে একটি বিল উত্থাপন করা হয়েছে। বিলে কর্মস্থলে যোগদানের ৩০ দিনের মধ্যে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতিসহ অন্য বিচারপতিদের সম্পত্তি ও দায়দেনা (assets and liabilities) সম্পর্কে ঘোষণা করে তা সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে প্রদর্শনের কথা বলা হয়েছে। সাবেক একজন প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে ‘ন্যাশনাল জুডিশিয়াল ওভারসাইট কমিটি’ (National Judicial Oversight Committee) এবং কমিটির কাজে সহায়তার জন্য যাচাই-বাছাই (scrutiny) কমিটি গঠনের বিধান রাখা হয়েছে। ওভারসাইট কমিটি গুরুতর অসদাচরণে অভিযুক্ত যেকোনো বিচারককে পদ থেকে সরে দাঁড়াতে বলবে। অভিযুক্ত কোনো বিচারক এ নির্দেশনা পালনে ব্যর্থ হলে তাঁকে অপসারণের জন্য সংসদীয় প্রক্রিয়া শুরু করতে কমিটি রাষ্ট্রপতিকে সুপারিশ করবে। বিলে সাধারণ জনগণকেও বিচারকদের অসদাচরণ সম্পর্কে অভিযোগ দায়েরের সুযোগ দেওয়া হয়েছে। এসব বিষয় বিবেচনায় নিয়ে বাংলাদেশের জাতীয় সংসদ বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে এ ধরনের একটি আইন প্রণয়নের উদ্যোগ নিতে পারে।
আদালত অবমাননার বর্তমান আইনটি (The Contempt of Court Act, 1926) অনেকটা নিবর্তনমূলক। এ আইনে আদালতের কার্যক্রম সম্পর্কে মন্তব্য, বিচারকের ব্যক্তিগত আচরণ এবং রায়ের সমালোচনাকে আদালত অবমাননা হিসেবে অভিহিত করা হয়েছে এবং অভিযুক্তকে সর্বোচ্চ ছয় মাসের কারাদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে। এর ফলে আদালত সম্পর্কে এমনকি যুক্তিসংগত সমালোচনা করা থেকে সবাই বিরত থাকে। একুশ শতকের অবাধ তথ্যপ্রবাহের এ যুগে ১৯২৬ সালের আইনের প্রাসঙ্গিকতা কতটুকু রয়েছে, তা পর্যালোচনা করা দরকার। তাই আইজিএস আদালত অবমাননার একটি নতুন আইন প্রণয়নের সুপারিশ করেছে, যেটি মতপ্রকাশের স্বাধীনতা এবং বিচার বিভাগের সুরক্ষার মধ্যে ভারসাম্য রক্ষা করবে। নতুন আইনে আদালত অবমাননার একটি বৃহত্তর সংজ্ঞা থাকবে, যাতে করে গণমাধ্যম আদালতের কার্যক্রম সম্পর্কে বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশন করার সুযোগ পাবে।
বিচারকদের আচরণবিধি যথাযথভাবে অনুসৃত হয় কি না, তা দেখভাল করার জন্য সুপ্রিম কোর্টে একটি সেল হতে পারে। বর্তমান ব্যবস্থায় কোনো বিচারকের দক্ষতা ও আচরণ সম্পর্কে অভিযোগ জানানোর কোনো সুযোগ নেই। এ শূন্যতা পূরণে আইজিএস সুপ্রিম কোর্টে প্রধান বিচারপতির তত্ত্বাবধানে একটি গ্রিভেন্স সেল হতে পারে।
তথ্য অধিকার আইন, ২০০৯ অনুযায়ী সুপ্রিম কোর্ট তথ্য অধিকার আইনের আওতায় পড়ে। সুপ্রিম কোর্টে এ আইনের বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে কোর্টের আদেশ ও রায়সমূহ সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে নিয়মিত প্রকাশ করতে পারে।
অধস্তন আদালতে বিচারকদের কার্যসম্পাদন মূল্যায়নপদ্ধতির আধুনিকায়ন দরকার। কারণ বার্ষিক গোপনীয় প্রতিবেদন বা এসিআরের মাধ্যমে অধস্তন আদালতে বিচারকদের কার্যসম্পাদন মূল্যায়নের যে পদ্ধতি প্রচলিত রয়েছে, তা বিচারকদের মধ্যে জবাবদিহির অনুভূতি জাগিয়ে তুলতে ব্যর্থ হয়েছে। বাংলাদেশে সংবিধান সংশোধনের জন্য গঠিত কমিটি বিচারক নিয়োগের জন্য প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে একটি কমিশন/কলেজিয়ামকে সংবিধানে অন্তর্ভুক্তির প্রস্তাব করতে পারে।
গণতান্ত্রিক সমাজে রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্ব হলো জনগণের সার্বভৌমত্ব। তাই জনগণের প্রয়োজনে আমাদের আইন বিভাগ, নির্বাহী বিভাগ ও বিচার বিভাগ সংবিধানে অর্পিত দায়িত্ব সততা, নিষ্ঠা, দক্ষতা ও জবাবদিহির সঙ্গে পালন করবে। জবাবদিহির সংস্কৃতি গড়ে তোলার জন্য প্রাতিষ্ঠানিক উদ্যোগ নিতে হবে। যেমন—আইন বিভাগ একটি যুগোপযোগী আইন প্রণয়নের মাধ্যমে বিচার বিভাগের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহির প্রক্রিয়াকে সুগম করতে পারে।
মোহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম: গবেষণা সহযোগী/প্রভাষক, ইনস্টিটিউট অব গভর্নেন্স স্টাডিজ (আইজিএস), ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়।
i.sirajul@yahoo.com
No comments